জেনে নিন কালো জামের 10টি উপকারিতা – Benefits of Black Jack In Bengali

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম।   আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আমরা কালো জাম অনেকেই চিনি বা জানি বা অনেকেই খেয়েছি। আমি তো খেয়েছি অনেক আমার মামা বাড়িতে। তা বন্ধুরা আজ আমি তোমাদের এই কালোজামের ব্যাপারে বলবো যে এই কালোজাম এর কি কি উপকারিতা আছে। আমরা আরও জন্য যে – জামের বীজের উপকারিতা, কালো জামের বিচির উপকারিতা, কালো জামের অপকারিতা, জাম পাতার উপকারিতা, কালো জামের পুষ্টিগুণ, জাম গাছের উপকারিতা, জাম পাতার বৈশিষ্ট্য, জাম ফল in english ইত্যাদি ইত্যাদি। চলো তাহলে শুরু করা যাক।

কালোজাম গ্রীষ্মকালের একটি জনপ্রিয় ফল। ছোট্টবেলায় মনে পরে সেই পুরোনো কথা যে আমরা কিভাবে এই কালোজাম ঢিল মেরে পারতাম আর খেতাম। জামের অনেক কাহিনী মনে পরে আমাদের

জাম বিভিন্ন ধরণের পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। জাম খাওয়াও খুব সহজ কারণ এর খোসা ছারাতে হয়না। জাম গাছের উত্‍পত্তি ভারতেই । এরপর ধীরে ধীরে এই গাছ ছাড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে । এই গাছের ফলের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নাম যেমন ব্ল্যাক প্লাম, জাম্বুল, জাম্বোলান, জাম্বাস, মালাবার প্লাম, রজামান, নেরেডু, কালা জামুন, নাভাল, জামালি, জাভা প্লাম ইত্যাদি । এই ফল জুন আর জুলাই মাসে পাওয়া যায় । আজকে রইলো এই ফল খাওয়ার উপকারিতা ।

1. হার্ট ভালো রাখে 

জামের মধ্যে উপস্থিত পটাসিয়াম হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে । একই সঙ্গে উচ্চ রক্ত চাপ কমায় ফলে কার্ডিও ভাসকুলার ডিজিজ দূরে রাখে ।

2. চোখ ও ত্বকের জন্য ভালো 

এতে ভিটামিন A আর ভিটামিন C আছে । এছাড়াও এতে থাকে বিভিন্ন মিনারেল যা আমাদের চোখ এবং ত্বকের জন্য খুব উপকারী ।

3. হজমে সাহায্য করে 

জাম খেলে পেট ঠান্ডা হয় ফলে দ্রুত হজম হয় । তাই যাদের অম্বলের সমস্যা আছে তারা বেশি করে জাম খেলে উপকার পাবেন ।

4. ত্বক ফ্রেশ রাখে 

অ্যাসট্রিনজেন্ট প্রপার্টি থাকার ফলে জাম ত্বক অয়েল ফ্রি রাখে । এছাড়াও অ্যাকনে আর কালো ছোপ দূর হয়

5. ইনফেকশনের হাত থেকেও রক্ষা করে 

জামে উপস্থিত অক্সিলিক অ্যাসিড, গ্যালিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড, ট্যানিন, বেটুলিক অ্যাসিড ইনফেকশন দূরে রাখে । এছাড়াও জাম অ্যান্টি ম্যালেরিয়াল এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়ালও ।

6. রক্তে চিনির মাত্র নিয়ন্ত্রণ করে 

যাদের ডায়বেটিস হয়েছে তাদের জন্য জাম খুব ভালো । এতে অ্যান্টি ডায়েবেটিক প্রপার্টি আছে যা রক্তে চিনির মাত্রা কমায় ।

7. দাঁত এবং মাড়ি সুস্থ রাখে 

আগেই বলেছি এতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি আছে, এর সাহায্যে দাঁত এবং মাড়ি ভালো থাকে । এছাড়াও মুখের দুর্গন্ধ দূরে রাখতেও সাহায্য করে ।

8. সিজনল ডিজিজ থেকে রক্ষা করে 

জামে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন C থাকে ফলে শরীর ইমিউনিটি বাড়িয়ে দেয় । ফলে শরীরকে কমন সিজানাল ডিজিজ এর হাত থেকে রক্ষা করে ।

9. শরীরে Free Radical তৈরি হতে দেয় না 

জামের উপস্থিত anthocyanins যার থেকে জামের গাঢ বেগুনি রং আসে তা এক ধরণের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা শরীরে free radical তৈরি হতে দেয় না । এর ফলে বিভিন্ন ইনফেকশন এবং প্রি ম্যাচিওর এজিং হতে দেয় না ।

10.  রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে 

জামে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে । আর আয়রন থাকার ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বেড়ে যায় ফলে রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে । যারা রক্তল্পতায় ভুগছেন তাদের জন্য জাম খুবই ভালো ।

কালো জামের পুষ্টিগুণ

কালো জাম বিভিন্ন ধরণের পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। জাম খাওয়াও খুব সহজ কারণ এর খোসা ছারাতে হয়না। এর মিষ্টি রসালো স্বাদ ছোটদের খুব প্রিয়। ত্বক, চুল ও সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী জাম। জামের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা জেনে নিই চলুন।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়

ঐতিহ্যগতভাবেই জাম ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জামের গ্লিসামিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিসের জন্য ভালো বলে বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত। কমপ্লিমেন্ট থার মেড এ প্রকাশিত একটি গবেষণা পর্যালোচনায় জানা যায় যে, জামের ডায়াবেটিক বিরোধী গুণ আছে। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে জামের বীচি রক্তের সুগার লেভেল ৩০% পর্যন্ত কমাতে সাহায্য করে। এই ফলটি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

জামে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যেমন- ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন সি থাকে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জাম অতুলনীয়ভাবে কাজ করে। এছাড়াও শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে জাম।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

জামে এলাজিক এসিড বা এলাজিটেনিন্স, এন্থোসায়ানিন এবং এন্থোসায়ানিডিন্স থাকে যা প্রদাহরোধী হিসেবে কাজ করে। এই উপাদানগুলো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে বলে কোলেস্টেরলের জারণ রোধ করে এবং হৃদরোগ সৃষ্টিকারী প্লাক গঠনে বাধা দেয়। এছাড়াও হাইপারটেনশন প্রতিরোধেও সাহায্য করে জাম। কারণ এতে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে। ১০০ গ্রাম জামে ৫৫ গ্রাম পটাসিয়াম থাকে।

ইনফেকশন ভালো করে

ঐতিহ্যগতভাবেই জাম গাছের বাকল, পাতা ও বীজ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে আসছে। ম্যালিক এসিড, গ্যালিক এসিড, অক্সালিক এসিড এবং ট্যানিন থাকে জাম উদ্ভিদে। একারণেই জাম উদ্ভিদ ও এর ফল ম্যালেরিয়া রোধী, ব্যাকটেরিয়ারোধী এবং গ্যাস্ট্রোপ্রোটেক্টিভ হিসেবে কাজ করে।

পরিপাকে সাহায্য করে

আয়ুর্বেদিক ঔষধে জাম পাতা ব্যবহার করা হয় ডায়রিয়াআলসার নিরাময়ে। এছাড়াও মুখের স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যার ঔষধ তৈরিতেও ব্যবহার হয় জামপাতা। জাম খেলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়, দাঁত ও মাড়ি শক্ত ও মজবুত করে এবং দাঁতের মাড়ির ক্ষয় রোধে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে

বিভিন্ন গবেষণায় জামের কেমোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য প্রমাণিত হয়েছে। জাগেতিয়া জিসি এন্ড কলিগস এর করা এক গবেষণা মতে জানা যায় যে, জাম ফলের নির্যাসে রেডিওপ্রোটেক্টিভ উপাদান আছে। এতে আরো বলা হয় জামের নির্যাস ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র‍্যাডিকেলের কাজে এবং বিকিরণে বাধা দেয়।

শেষ কথা 

এই ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ার ফলে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে।  এছাড়াও অতিরিক্ত তেষ্টা পাওয়া বা বারবার মূত্রত্যাগ যা ডায়বেটিসের লক্ষণ এগুলো ও নিয়ন্ত্রণে রাখে।  শুধু ফল নয়, এই গাছের পাতা, ডাল, ফলের বিচি সব কিছু দিয়েই ডায়েবেটিসের ট্রিটমেন্ট করা হয়।