পালং শাকের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম।   আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আজ আমরা পালং শাক নিয়ে কথা বলবো। পালং শাকের অনেক উপকার আছে। আমরা এমনিতেও জানি যে শাক সবজির কতটা উপকার। তবে আমি তোমাদের আজকে পালং শাকের ব্যাপারে অনেক কিছু এমন তথ্য দেব যেটা তোমাদের সকলের ও বাকি অন্যদেরও অনেক কাজে লাগবে। আমরা আজ জন্য যে –  পালং শাকের অপকারিতা, পালং শাক এর বৈজ্ঞানিক নাম, পালং শাকের ছবি, পালংশাকের উপকারিতা, পালং শাক in english, পালন শাক, পুঁই শাকের উপকারিতা ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে আর সময় নষ্ট না করে আমরা চলে যাই মূল পর্বে।

পালং শাক যেমন খেতে ভালো, তেমনি কাজেও দারুণ। পালং শাক খাওয়ার রয়েছে অনেক উপকারিতা। তাই খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখুন পালং শাক।

অনেকেই আছেন যারা শাক হিসেবে পালং শাক খেতে পছন্দ করেন না। পালং শাককে বলা হয়। এই একটি শাকে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি২, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, কপার, ফসফরাস সহ রয়েছে আরো অনেক পুষ্টি উপাদান ।

টবে পালংশাক চাষের এখনি সময়। পালং শুধু একটি শাক নয়, রুপ চর্চাতেও অনেক কাজে লাগে,ব্রনের সমস্যা দূর করে পালংশাক আমাদের আজকের পোস্টের প্রথম অংশে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে ছাদে বা বারান্দায় পালং চাষ করতে হয়। দ্বিতীয় অংশে থাকছে কিভাবে রুপ চর্চায় পালং ব্যবহার করা যায় পালং শাক একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ শীতকালীন সবজি। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের যে কোনো সময় এটি জমিতে অথবা ছাদে চাষ করা যায়।

পালং শাক In English

পালং শাক (Spinacia oleracea)

পালং শাক এর বৈজ্ঞানিক নাম

বৈজ্ঞানিক নাম Spinacea Olerocea

১। পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ এবং বিটা কেরোটিন থাকায় তা কোলনের কোষগুলোকে রক্ষা করে।

২। বাতের ব্যথা, অস্টিওপোরোসিস, মাইগ্রেশন, মাথাব্যথা দূর করতে প্রদাহনাশক হিসেবে পালং শাক কাজ করে।

৩। পালং শাক স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকর।

৪। পালং শাকে প্রচুর আয়রন ও ভিটামিন ‘সি’ থাকায় রক্তস্বল্পতা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

৫। পালং শাক পেট পরিষ্কার রাখতে অপরিহার্য। তাছাড়া রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে, দৃষ্টিশক্তিও বাড়ায়।

৬। কিডনিতে পাথর থাকলে, তা গুড়ো করতে সাহায্য করে। দেহ ঠাণ্ডা ও স্নিগ্ধ রাখে পালং শাক।

৭। অনেকের মেদবৃদ্ধি ও দুর্বলতায় হাঁফ ধরে, তারা পালং পাতার রস খেলে উপকার পাবেন। পালং শাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

৮। পালং শাকে ১৩ প্রকার ফাভোনয়েডস আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।

৯। পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেলস থাকায় এটি মাসিকজনিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।

১০। পালং শাক দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পালং শাক খুব উপকারী।

1. দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়

পালং শাক-এ আছে বিটা ক্যারোটিন‚ লিউটেনিন এবং জ্যানথিন।  ভিটামিন A-এর ডেফিসিয়েন্সি কমায় পালং শাক।  চোখের শুষ্কতা দূর করতে‚ চোখের আলসার সারাতে কাজ করে ।  এমনকি চোখ কড়কড় করা থেকে শুরু করে ফোলা ভাবও কমায় পালং ।

2 . ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখে

ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রনে রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা নেয় পালং শাক । উচ্চ পরিমাণে পটাসিয়াম এবং অত্যন্ত সামান্য পরিমাণ সোডিয়াম আছে পালং শাক-এ । এচাড়াও উপস্থিত ফোলেট হাইপারটেনশন কমায় ও রক্ত জালিকাকে রিল্যাক্স করে ।

3. ছানি পড়া প্রতিরোধ করে

উপস্থিত লিউটেনিন ও জ্যানথিন খুব শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে‚ যা সূর্যের ক্ষতিকর  ÚV  রশ্মি থেকে চোখকে বাঁচায়। এছাড়াও পালং-এ উপস্থিত ফ্রি রেডিকাল-এর ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে চোখের অন্যান্য সমস্যা ও ছনি পড়া আটকায়।

4. ক্যানসার প্রতিরোধী

পালং-এ উপস্থিত টোকোফেরল‚ ফোলেট ও ক্লোরোফাইলিন ক্যানসার প্রতিরোধে ও রোগীর চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকরী। ব্লাডার‚ প্রস্টেট‚ লিভার ও লাং ক্যানসারের প্রতিরোধে ও চিকিৎসায় পালং-এর ভূমিকা প্রমাণিত।

5. ত্বকের সুরক্ষা

বিভিন্ন ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট্স ও পিগমেন্টের উপস্থিতি ত্বককে ক্ষতিকর  UV  রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষা দেয়।  এবং ত্বকের ক্যানসারের প্রতিরোধ হিসেবেও কাজ করে।

6. মেটাবলিজম বাড়ায়

পালং-এ উপস্থিত বিভিন্ন ভিটামিনকে খুব সহজেই এনজাইম ভেঙে দিয়ে তৈরি করে অ্যামাইনো অ্যাসিডস।  যা আমাদের বিভিন্ন ক্ষত নিরাময়ে‚ পেশীর বৃদ্ধি ও সার্বিক মেটাবলিজম বাড়ায়।

7. ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট

পালং শাক-এ থাকা আলফা লিপোয়িক অ্যাসিড নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গ্লোকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ও শরীরে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায়।

8. অ্যাজমা প্রতিরোধ করে

এমন কিছু পুষ্টিকর পদার্থ আছে যা অ্যাজমা প্রতিরোধে সাহায্য করে। তার মধ্যে একটি হলো বিটা ক্যারোটিন। পালং শাক-এ প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন আছে।

9. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

ফাইবার এবং প্রচুর পরিমাণে জল আছে পালং শাক-এ।  ফলে পালং শাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক-কে সুস্থ রাখে।কোষ্ঠকাঠিন্য

10. হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

পালং শাক-এ বেশ ভালো পরিমাণে ভিটামিন  K  থাকে। মজবুত হাড়ের গঠনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান ভিটামিন  K  .যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন  K  আমাদের খাদ্যতালিকায় থাকলে তা ক্যালসিয়াম অ্যাবজর্পশনে সাহায্য  করে এবং মূত্রের মাধ্যমে ক্যালসিয়ামের অতিরিক্ত বেরিয়ে যাওয়া আটকায়।

শেষ কথা 

শেষ কথা বলতে এখানে তেমন কিছু নেই। একটাই কথা বলতে চাই যে ভালো টাটকা শাক সবজি খান দেখবেন অনেকটাই ভালো সাস্থ হবে। আর পালং শাক খাবেন। ভালো থাকবেন।