চুল পড়া রোধে ও দেহের ইনফেকশন দূর করনে নিমপাতার উপকারিতা

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম।   আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের এমন একটা জিনিসের নাম আলোচনা করবো যেটা আমার আপনার বা অনেকেরই বাড়িতে আছে। সেটা হলো নিম পাতা। আজ আমি জানাবো যে – মুখে নিম পাতা দেওয়ার উপকারিতা, নিম পাতা ও মধুর উপকারিতা, নিম পাতার বড়ি, নিম পাতার গুণাগুণ, নিম পাতার অপকারিতা কি, নিম পাতা এলার্জি, নিম পাতা মুখে দিলে কি হয়, ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার,  ইত্যাদি ইত্যাদি। চলো দেখে নেওয়া যাক।

নিয়মিত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন? কয়েকটি চুল পড়া রোধ করার উপায় নিয়ে কথা বলব। এমন কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা ও তার গুণাগুণ যেগুলো খুব সহজেই আপনার চুল পড়া রোধ করবে।

চুল পড়া সমস্যা নিয়ে জর্জরিত নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই। একটা সময় আমরা দেখেছি যে আমাদের দিদিমা ঠাকুমার তাদের শেষ বয়সে এসেও মাথা ভর্তি চুল নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন, আর যা এখন অনেকটা গল্পের মতো শোনায়। না এটা আপনারাও জানেন এর সত্যতা। বর্তমানে দেখা যায় অনেক কম বয়সী ছেলে মেয়েরাই চুল পড়া সমস্যা নিয়ে বিব্রত হচ্ছে । অল্প বয়সে মাথায় টাক পড়ে যাওয়ার মতো লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না। চুল পড়ে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট একটি কারণকে দায়ী করা যায়না। বিভিন্ন কারণে চুল পড়ে যেতে পারে, যেমন- পরিবেশ দূষণ, জল সমস্যা, খাবারের সমস্যা, অতিরিক্ত কেমিক্যাল হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা, শারীরিক অসুস্থতা ও চুলের সঠিক যত্ন না করা। আমি জানিনা যে আজকের আলোচনায় কতটা তোমাদের লাভ হবে বা কতটা সফল হবে লেখাটা পরে। তবে এইটুকু বলতে পারি বন্ধুরা যে তুমি বা তোমরা আমার কোনো লেখায় পরে থকবে না। এক ঝলক পরে নিন বা দেখে নিন।

ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্য রক্ষার্থে নিম পাতার ব্যবহার

1. নিয়মিত নিম পাতার সাথে কাঁচা হলুদ পেস্ট করে লাগালে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি ও স্কিনটোন ঠিক হয়। তবে হলুদ ব্যবহার করলে রোদ এড়িয়ে চলাই ভালো। নিম পাতার চেয়ে হলুদের পরিমাণ  কিন্তু কম হবে!

2. নিমের তেলে প্রচুর ভিটামিন ই এবং ফ্যাটি এসিড থাকে যা ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী

3. নিমের পাতা খেলে আমাদের শরীরের আজে বাজে জিনিস ভালো হয়ে যায় মানে শরীরের পরিপাক তন্ত্রের গতি বাড়ে সেই সাথে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দেয় এবং রক্তের শুদ্ধতা বাড়ায়। ফলাফল হিসেবে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে আপনার ত্বক পরিষ্কার থাকবে। এ জন্য নিমের পাতা ৩/৪ টি প্রতিদিন চিবিয়ে খেতে হবে। জানি অনেকটাই কষ্টকর জিনিস। তাও করতেই হবে। আরে সহজ সমাধান দেই!  নিমপাতা বেটে ছোট ছোট বড়ি তৈরি করে রোদে শুকাতে দিন। ভালো ভাবে শুকিয়ে গেলে কাঁচের বয়ামে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে ২/৩ টি বড়ি জল দিয়ে পেটে চালান করে দিন!

4. নিমের ডাল যে দাঁতের জন্য উপকারী সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মুখের দুর্গন্ধ ও দাঁতের জীবাণু রোধে এটি বেশ কার্যকরী।

5. কাটা ছেড়া বা পোড়া স্থানে নিম পাতার রস ভেষজ ওষুধের মতো কাজ করে।

6. নিম পাতা সেদ্ধ জল বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। কোন ফেইস প্যাক পেস্ট করার সময় জলের বদলে এই নিম জল ব্যবহার করতে পারেন।

7. নিম পাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী। তাই ত্বকের সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। ব্রণের সংক্রমণ হলেই নিম পাতা থেঁতো করে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত!

8. মাথার ত্বকে অনেকেরই চুলকানি ভাব হয়।  নিম পাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে এই চুলকানি কমে, চুল শক্ত হয়, চুলের শুষ্কতা কমে যায় এবং নতুন চুল গজায়।

9. শুধুমাত্র চুলের নয় ত্বকের চুলকানিতেও নিম পাতা বেটে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

10. নিম পাতা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে রেখে দিতে পারেন। পরবর্তীতে ফেস মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।

11. নিম পাতা সেদ্ধ জল স্নানের জলের সাথে মিশিয়ে নিন। যাদের স্কিন ইরিটেশন এবং চুলকানি আছে তাদের এতে আরাম হবে আর গায়ে দুর্গন্ধের ব্যাপারটাও কমে যাবে আশা করা যায়।

12. মেথি – চুল পড়ার অনেক কারন হতে পারে। তবে চুল পড়া রোধ করার উপায় হিসেবে মেথি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। রাতে ঘুমনোর আগে মেথি জলে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে মেথির জল ঝরিয়ে নিয়ে একটা ঘন পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর ঐ পেস্টটি সারা মাথায় আর চুলে লাগিয়ে নিন। ১ ঘণ্টা রেখে যখন দেখবেন একটু শুকিয়ে এসেছে তখন জল দিয়ে ভালো করে মাথাটা ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পেতে চাইলে এই পেস্টটি মাসে অন্তত ২ বার ব্যাবহার করুন। দেখবেন অনেকটাই চুল ঝরা ..

শেষ কথা 

আসলে নিমের গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। নিম পাতার এত্ত গুনাগুন রয়েছে যে বলতে বলতে পাতা শেষ হয়ে যাবে। সত্যি কথা বলতে বন্ধুরা আমাদের সমাজে  যত্ন তিতা স্বাদের খাবার আছে তার মধ্যে সব থেকে উপকারী করলা , উচ্ছে  আর হলেও নিম পাতা। এটা আমার সম্পূর্ণ বেক্তিগত মতামত। আমরা কিন্তু এখন যেহেতু শীত কাল তাই আমরা অনেকেই নিম চা খেতে ভালোবাসি। যদিও আমরা অনেকেই গরমেও খাই বা ১২ মাস খাওয়া যেতে পারে আপনি যদি চান বা আপনি যদি মনে করেন।

তাই আজকে আপনাদের একটা নিমের চা এর রেসিপি দিয়ে লেখা শেষ করছি। এমনিতেই ভেষজ চা অনেক উপকারী!  নিজেকে সতেজ ও সুস্থ রাখতে নিম চা এর তুলনা হয় না! যারা ইতোমধ্যে চিরতার রস খেয়ে অভ্যস্থ তাদের কাছে নিম চা দুধভাত মনে হবে। যারা নতুন তারা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। ভালো থাকবেন আর সুস্থ থাকবেন।