Forsha Hobar Upay – Tok Forsa Korar Tips

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ও স্বাগতম আমার এই পেজ এ। আশা করবো আমার প্রত্যেক লেখা আপনাদের অনেকটাই উপকার করতে সাহায্য করবে বা আশা করবো ভালো লাগবে আপনাদের। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করি। আমি চেষ্টা করবো আপনাদের সাথে বা আপনাদের পাশে থাকতে। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের কাছে এমন একটা জিনিসের ব্যাপারে আলোচনা করবো সেটা আমি জানি আপনাদের অনেকটাই ভালো লাগবে। আমাদের সমাজে অনেক মানুষই আছেন যাদের চামড়া শ্যামলা বা কালো তাই আমরা অনেকেই চাই একটু ফর্সা বা চকচ কে দেখতে। তাই তাদের জন্য বা তাদের কথা মাথায় রেখে আজ আমাদের এই সম্ভার।

প্রাকৃতিক ঘরোয়া উপায় অথবা নিয়ম ব্যবহার করে দ্রুত ত্বক ফর্সা করার অনেক পদ্ধতি প্রচলিত আছে আমাদের সমাজে। ত্বক ফর্সা করার ঔষধ হিসেবে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার  জন্য অনেকেই নানারকম ক্রিম বাজার থেকে কিনে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু বাজারের বেশিরভাগ ক্রিমেই চড়া রাসায়নিক পদার্থ থাকায় ত্বক ফর্সা হওয়া দুরের কথা বরং বেশিরভাগ ফলাফলই উল্টো হয় ।

সুতরাং ত্বকে উজ্জ্বল্য আনার জন্য ঘরোয়া উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে বা বজায় রাখতে ঘরোয়া উপকরণই এখন সৌন্দর্য্য চর্চ্চা প্রাধান্য পাচ্ছে। নানা ধরনের ঘরোয়া ফেসপ্যাক রয়েছে ত্বকের উজ্জ্বলতায়। এর মধ্যে অতি সহজ বেশ কিছু উপায় যেটা আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো জেনে নিন কি কি সেই উপায়। দেখবেন ব্যবহারে কেমন তাড়াতাড়ি ত্বক ফর্সা হয়ে উঠছে। চলুন তাহলে দেখা যাক পদ্ধতি সমূহ কি কি ?

1. তেঁতুলের পাল্প ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে ২দিন এর ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।

2. লেবুমধু একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করে নিন। মুখ ভালো করে প রিষ্কার করে মিশ্রণটি লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। মিনিট ১৫ পর ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ৩-৪ দিন এর ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।

3. মুসুর ডাল বেশ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভেজা মুসুর ডাল বেটে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।

আরও পড়ুন – ত্বক ফর্সা করার টিপস – Skin Whitening Tips

 

দুধ ও কাঁচা হলুদ

রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। প্রতিদিন এক গ্লাস উষ্ণ গরম দুধে আধা চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়ে পান করুন। এভাবে পান করতে না পারলে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিন। নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ পান করলে আপনার রং হয়ে উঠবে ভেতর থেকে ফর্সা।

দুধে কাঁচা হলুদ বাটা না মিশিয়ে করতে পারেন আরেকটি কাজ। দেড় ইঞ্চি সাইজের এক টুকরো হলুদ নিন। তারপর টুকরো করে কেটে এক গ্লাস দুধে দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। দুধ গাঢ় হলুদ রঙ ধারণ করলে পান করুন। এভাবে প্রতিদিন একবার করে পান করতে থাকুন।

কাঁচা হলুদ 

শুধু দুধের সঙ্গে নয়, বাহ্যিক রূপচর্চাতেও হলুদ আপনার রঙ ফর্সা করতে সহায়তা করবে। বিশেষ করে কালচে ছোপ দূর করতে এই পদ্ধতি খুব কার্যকর।

উপকরণ : দুধ ৩ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, এবং কাঁচা হলুদ বাটা ১ চা চামচ।

কীভাবে ব্যবহার করবেন?

দুধ, লেবুর রস ও হলুদ বাটা একসঙ্গে মিশিয়ে একটি মিশ্রন বা পেস্ট তৈরি করুন। সারা মুখে এই পেস্ট ভালভাবে লাগিয়ে প্যাকটি শুকনো হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়ে নরম তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুছে নিন। গরম জলে   মুখ ধোবেন না এবং অন্তত ১২ ঘণ্টা রোদে যাবেন না। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বকের রং হয়ে উঠবে ফর্সা, কোমল, দাগমুক্ত ও সুন্দর।

অলিভ অয়েল

অনেকেই হয়তো ভেবে থাকেন যে তৈলাক্ত ত্বকে তেল ব্যবহার করলে ত্বকের আরো বেশি ক্ষতি হবে কিংবা ব্রণ উঠবে। কিন্তু অলিভ অয়েলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বককে সজীব এবং পরিষ্কার করে। সূর্যরশ্মির ক্ষতির থেকেও ত্বককে রক্ষা করে এ তেল। অলিভ অয়েল সেনসিটিভ স্কিনের জন্যও নিরাপদ। নারকেল তেল এবং ফিস অয়েলের মাধ্যমে এক সপ্তাহ ব্যবহার করলে ফল পাবেন।

গোলাপ জল

খুব অল্প সময়ে সুন্দর ত্বক পেতে গোলাপ জল অনন্য। ব্রণ বা লালচে ভাব আক্রান্ত ও ফেটে যাওয়া মুখের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। গোলাপ জলে আছে আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান। বিষণ্ণতা দূর করে শিথিলতাও এনে দিতে এর কোনো বিকল্প নেই। তবে গোলাপ জল রাতে ব্যবহার করাই ভালো। কারণ দিনের বেলা যে জীবাণুগুলো মুখের মধ্যে বাসা বাঁধে এগুলোকে ধ্বংস করতে এর কোনো বিকল্প নেই। এমনকি এ জল ব্যবহারে মুখের বিষাক্ত উপাদানও দূর হয়। গোলাপ জলের সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। গোলাপ জল বর্ণ উজ্জ্বল করে আর নারকেল তেল ত্বককে বানায় কোমল।

গোলাপ ফুল কিনে পাপড়িগুলো আলাদা করে একদিন জলে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর প্রতিদিন মুখে ব্যবহার করুন। সম্ভব হলে যতোবার মুখ ধোবেন, ততোবারই গোলাপ জল ব্যবহার করবেন। মনে রাখবেন এ জলে মুখ ধোয়ার সময় কোনো ধরনের সাবান ব্যবহার করবেন না।

কোকো বাটার

লোশন বা ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহৃত হয় কোকো বাটার। এটা যেহেতু খাওয়াও যায়, তাই এ দিয়ে তৈরি লিপ বাম ব্যবহারের নেই কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কোকো বাটারের সঙ্গে ভার্জিন অয়েল বাড়িতে বানানো সবচেয়ে ভালো রাতের ক্রিম। দু’সপ্তাহ প্রয়োগ করে দেখুন, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বেই। তাছাড়া ১ টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার, ১ টেবিল চামচ কোকো বাটার, ২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা, ২ টেবিল চামচ কর্ড লিভার অয়েল এবং ২ টেবিল চামচ রসুনের তেল মিশিয়ে ক্রিম তৈরি করে নিন। যা দিনে একবার ব্যবহার করলে দূর হবে কালো দাগ।

গ্রিন টি

আপনি কি জানেন গ্রিন টি’র ত্বকের বর্ণ উজ্জ্বল করতে অবিশ্বাস্য গুণের কথা? এক কাপ গ্রিন টিতে নারকেল তেল, লেবু আর আলমণ্ড তেল দিন। উজ্জ্বল ত্বকের জন্য সপ্তাহে একবার লাগান।

অ্যালোভেরা (ঘৃতকুমারী)

অ্যালোভেরা অন্যতম সেরা ও নিরাপদ ত্বক চর্চার ক্রিম। ত্বক বর্ণোজ্জ্বল বানাতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরা ও ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে প্যাক বানান। মিশ্রণটি মুখে লাগান সারারাতের জন্য।

দুধের সর

সবচেয়ে সেরা ফর্সা হওয়ার রাতের ক্রিম হলো দুধের সর (মিল্ক ক্রিম)। সারারাতের জন্য দুধের সর মুখে লাগিয়ে ঘুমান, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবেই।

আরও পড়ুন – Face Pack For Oily Skin – Home Remedies For Oily Skin

শেষ কথা 

তাছাড়া শহুরে পার্লারগুলোতে আছে রঙ ফর্সা করার নানান আয়োজন। যেমন স্কিন ব্লিচ, ফেয়ার পলিশসহ আরও কত কী। কিন্তু জেনে রাখুন, এই সবই আপনার ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাহলে কী করবেন? প্রাকৃতিক উপায়ে এবং ঘরোয়াভাবে গায়ের রং ফর্সা করার রয়েছে সহজ উপায়। শুধু তাই নয়, এভাবে যে ফর্সা রঙটা আপনি পাবেন সেটা হবে স্থায়ী। সৌন্দর্য সেটাই, যা ভেতর থেকে আসে। তাহলে আর দেরি কেন বাড়িতে বসে প্রাকৃতিক উপায়ে নিজে থেকে হয়ে উঠুন ফর্সা, সুন্দর। ধন্যবাদ সবাইকে। ভাললাগলে শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিন।