লেবুর উপকারিতা – Benefits Of Lemon, Lebu

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ও স্বাগতম আমার এই পেজ এ। আশা করবো আমার প্রত্যেক লেখা আপনাদের অনেকটাই উপকার করতে সাহায্য করবে বা আশা করবো ভালো লাগবে আপনাদের। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করি। বন্ধুরা আমরা লেবুর ব্যাপারে বা লেবুর  সমন্ধে সবাই জানি কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে লেবুর  উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম। আমরা আজকে সেই আমাদের আদি পরিচিত ও বেশির ভাগ বা বলাই যেতে পারে প্রতিটি রান্নার অন্যতম সঙ্গী লেবুর  উপকারিতা জানবো। তার সাথে আরও জানবো  যে কি কি লেবুর কি কি গুনাগুন

কিছু অজানা কথা 

লেবু হল সাইট্রাস লিমন (Citrus limon) সাধারণ নাম। বংশবৃদ্ধিকারী টিস্যু আবৃতবীজী লেবুর বীজকে ঘিরে রাখে। লেবু রান্না করে বা রান্না না করে – উভয়ভাবেই খাওয়া হয়। ফল এর কদর মূলত রসের জন্যেই , যদিও এর শাঁস ও খোসাও ব্যবহৃত হয়, প্রধানত রান্না ও বেকারির কাজে। লেবুর রসে প্রায় ৫ শতাংশ (প্রতি লিটারে 0.3 মোলের কাছাকাছি) সাইট্রিক এসিড থাকে যার কারণে এর স্বাদ টক হয় এবং pH 2-3 হয়।

লেবুর অনেক গুণ। লেবুর শরবত একটি আদর্শ স্বাস্থ্যসম্মত পানীয়। মাত্র একটি মাঝারি আকৃতির লেবু থেকে চল্লিশ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি বা এসকরবিক এসিড পাওয়া যা একজন মানুষের দৈনিক চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট। ভিটামিন ‘সি’ দেহের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে বা ক্ষত হলে দ্রুতগতিতে কোলাজেন কোষ উপাদান তৈরি করে ক্ষত নিরাময়েও সাহায্য করে এই ভিটামিন ‘সি’। লেবুতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সাইট্রিক এসিড বিদ্যমান যা ক্যালসিয়াম নির্গমন হ্রাস করে পাথুরী রোগ প্রতিহত করতে পারে। লেবুর খোসার ভেতরের অংশে ‘রুটিন’ নামের বিশেষ ফ্ল্যাভানয়েড উপাদান আছে যা শিরা এবং রক্তজালিকার প্রাচীরকে যথেষ্ট শক্তিশালী এবং সুরক্ষা দেয়। ফলে স্বভাবতই হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে। লেবুর অন্যান্য ব্যবহারও কম নয়। রান্নায় বা আহারে লেবুর ব্যবহার বিজ্ঞানসম্মতভাবেই স্বাস্থ্যপ্রদ। ত্বক বা রূপচর্চায় লেবুর ব্যবহার ঐতিহ্যগত ভাবেই সুপ্রচলিত। বয়সজনিত মুখের স্পট বা দাগ সারাতে লেবুর রস যথেষ্ট কার্যকরী। লেবুর রস ব্যবহারে মুখের ব্রণও দ্রুত সারে। বাজারের ভেজাল মিশ্রিত পানীয় না খেয়ে টাটকা লেবুর রসের সাথে সামান্য চিনি বা মধু মিশিয়ে লেমোনেড তৈরি করা হয় যা একই সাথে তৃষ্ণা মেটায়। বন্ধুরা আমরা জানি লেবু অনেক ধরেন হয়ে থাকে আমরা যথাযত জন্য লেবুর সব রকম উপকারিতা।

লেবুর খোসা

লেবুর খোসায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘সি’, পেকটিন, ফাইবার এবং মিনারেলস। লেবুর রসের এসব উপাদান শরীরের নিরাময় এবং আরোগ্যে কাজ করে। লেবুর খোসা বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমায়। এর মধ্যে পটাশিয়াম থাকার কারণে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে। লেবুর খোসায় থাকা ভিটামিন ‘সি’ রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। ঠান্ডা, ফ্লু এবং গলার ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে। লেবুর খোসার মধ্যে উপস্থিত ফাইবার বা আঁশ অন্ত্রকে পরিষ্কার রাখে এবং বাউয়েল মুভমেন্ট ভালো করে। এটি হজমে সাহায্য করে এবং পেট ফোলাভাব রোধেও সহায়তা করে। লেবুর খোসা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এর মধ্যে যে পেকটিন রয়েছে তা অন্ত্রের শর্করা শোষণ করতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করেডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্যও লেবুর খোসা বেশ ভালো। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিপাকে সাহায্য করে। এটি হাড়ের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। শরীরের দৈনিক ভিটামিন ‘সি’ – এর চাহিদার 30 শতাংশ লেবু পূরণ করতে পারে। ভিটামিন ‘সি’ – এর আছে নিরাময় ক্ষমতা। এটি প্রোটিনের বাঁধনে সাহায্য করে, যা টেনডনস, লিগামেন্ট এবং ত্বকের জন্য ভালো। লেবুর খোসা কালো দাগ, বলি রেখা, বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।

মুসম্বি লেবুর উপকারিতা

সিট্রাস জাতীয় যেকোনো ফল সাধারণত শরীরের জন্য খুব উপকারী হয়। কমলালেবু, পাতিলেবু , মুসাম্বি ইত্যাদি সবই সাইট্রাস জাতীয় ফল। আজকের আলোচ্য মুসাম্বি। এই ফলটি কমলালেবুর মতোই অত্যন্ত উপকারী। এটি সাধারণত সারাবছরই পাওয়া যায়। প্রতিদিন একটি করে মুসাম্বি আমাদের অনেক রকম রোগমুক্তি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আসুন দেখেনি মুসাম্বির উপকারিতা।

হজম ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে

মুসাম্বি আমাদের হজম ক্ষমতা কে বাড়িয়ে তোলে। এতে প্রচুর মাত্রায় ফ্লাভোনোইড থাকে যা আমাদের হজমে সাহায্যকারী অ্যাসিড গুলিকে বেশি মাত্রায় নির্গত হতে সাহায্য করে। চিকিৎসকেরা ও হজমের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার জন্য মুসাম্বি খাওয়ার উপদেশ দিয়ে থাকেন। এছাড়া এটি আমাদের শরীরের অশুদ্ধি গুলিকে স্বাভাবিক উপায়ে নির্গত করতে সাহায্য করে। ফলত কনস্টিপেশনকে কম করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন সি

মুসম্বিতে বর্তমান ভিটামিন সি আমাদের শরীরে রক্ত চলাচলকে স্বাভাবিক রাখে। আমাদের রক্তের অশুদ্ধিকে দূর করে,আমাদের হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখে।

অন্যান্য সমস্যা দূর করে 

অনেক সময় আমাদের দাঁতের গোড়া বা মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে দেখা যায়। যারা মুখের ভেতর ছোট ছোট যন্ত্রনাদায়ী ফোঁড়া, ঠোঁটের আশেপাশে ফোঁড়া হতে দেখা যায়। এগুলি সবই আমাদের শরীরে ভিটামিন সি র অভাবে হয়ে থাকে। এছাড়া অনেক সময়ই অনেকের সারা বছরই সর্দিকাশি হতে দেখা যায়। মুসম্বিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি বর্তমান। প্রতিদিন মুসাম্বির রসে এক চিমটি বিটনুন মিশিয়ে খেলে এই সমস্ত রকম রোগগুলি থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।

শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে 

মুসম্বিতে বর্তমান ভিটামিন সি এবং আমাদের শরীরের জন্য জরুরি নিউট্রিশনস গুলি প্রচুর মাত্রায় থাকে। ফলত এটি আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

মিনারেলস এর অভাব পূরণ করে

গরমকালে আমাদের শরীর ডিহাইড্রেড হয়ে যায়। অর্থাৎ জলের অভাব দেখা যায়। আমরা অনেকেই বেশিরভাগ সময়ে কোল্ড ড্রিংক পান করে সাময়িক আরাম পেয়ে থাকি। কিন্তু এইগুলি সবই আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। মুসাম্বি বা মুসাম্বির রস গরম কালে রোজ খেলে আমাদের শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলস এর অভাব পূরণ করে এবং আমাদের শরীরকে ডিহাইড্রেড হতে দেয় না।

লেবুর খোসার উপকারিতা

হার্টের জন্য

লেবুর খোসা খাওয়া হার্টের জন্য ভালো। লেবুর খোসা বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমায়। এর মধ্যে পটাশিয়াম থাকার কারণে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

লেবুর খোসায় থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। ঠান্ডা, ফ্লু এবং গলার ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠ কাঠিন্য রোধে

লেবুর খোসার মধ্যে উপস্থিত ফাইবার বা আঁশ অন্ত্রকে পরিষ্কার রাখে এবং বাউয়েল মুভমেন্ট ভালো করে। এটি হজমে সাহায্য করে এবং পেট ফোলাভাব ও কোষ্ঠ কাঠিন্য রোধে ও সহায়তা করে।

ওজন কমায়

লেবুর খোসা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এর মধ্যে যে পেকটিন রয়েছে তা অন্ত্রের শর্করা শোষণ করতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্যও লেবুর খোসা বেশ ভালো। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিপাকে সাহায্য করে।

হাড়ের স্বাস্থ্য

আশ্চর্য হলেও সত্যি লেবুর খোসায় রয়েছে ক্যালসিয়াম। এটি হাড়ের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে।

গেরোর ব্যথা

শরীরের দৈনিক ভিটামিন সি-এর চাহিদার ৩০ শতাংশ লেবু পূরণ করতে পারে। ভিটামিন সি-এর আছে নিরাময় ক্ষমতা। এটি প্রোটিনের বাঁধনে সাহায্য করে, যা টেনডনস, লিগামেন্ট এবং ত্বকের জন্য ভালো। তাই লেবু এবং লেবুর খোসা খেতে পারেন।

স্বাস্থ্যকর ত্বক

লেবুর খোসা কালো দাগ, বলি রেখা, বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বক ভালো রাখতে এটা খেতেও পারেন এবং সরাসরি ত্বকে লাগাতেও পারেন।

লেবু গরম জল

লেবু, সাধারণত আমরা খাবারের স্বাদ বাড়াতে এবং গরমের দিনে শরবত তৈরি করতে ব্যবহার করি। কিন্তু ঈষদুষ্ণ গরম জলে দু-চার ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে সেটি পান করুন। নিয়মিত পানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর গুণাগুণ প্রচুর। বিশেষ করে এর ভিটামিন সি এবং খনিজ উপাদানসমূহ আমাদের প্রচুর উপকার করে। হৃদযন্ত্রের ধড়ফড়ানি কমানো থেকে ফুসফুসকে ঠিকভাবে কাজ করতে পর্যন্ত সাহায্য করে এই লেবু ও গরম জল।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

এক গ্লাস লেবুর শরবত সমস্ত দেহটাকে পশান্ত করে দিতে পারে । বিশেষ করে গরমেতে কথাই নেই। গরমে লেবুর শরবত সবারই পছন্দ। সেই সাথে রয়েছে এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও। শুধু শরবত হিসেবেই নয়, ওজন কমাতেও অনেকেই সকালে লেবুর শরবত খান। শুধু ওজন কমানো ছাড়াও রয়েছে এর কিছু বিশেষ উপকারিতা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে পেট পরিষ্কার রাখার মতো প্রচুর উপকার করে লেবু।