খেজুর এমন একটা জিনিস ব্যাপারে যত বলবো ততই কম বলা হবে। হ্যা সত্যি তাই। এক অদ্ভুত উপকার আছে এই খেজুরের মধ্যে। আজ আমরা জানবো যে খেজুরের ১ ডজন অর্থাৎ ১২ রকমের উপকারিতা। খেজুর নামক জিনিসটা কে না চেনে এর ইংরেজি নাম Dates। কিন্তু বন্ধুরা একটা কথা মাথায় রাখবেন যে খেজুর খাওয়া তো খুউব ভালো সেটা ঠিক আছে। কিন্তু খেজুর অনেক ধরণের হয়ে থাকে। একটু ভালো খেজুর খাবার চেষ্টা করবেন। হয়তো একটু দাম নেবে কিন্তু দাম দিয়ে হলেও ভালো খেজুর খাওয়া ভালো। আমরা সচর আঁচড় যে পুজোতে খেজুর ব্যবহার করে থাকি সেটা না খাওয়াই ভালো। এমনি প্রসাদ হিসাবে খান সমস্যা নেই। কিন্তু সাস্থের জন্য বা উপকারে জন্য আপনাকে ভালো খেজুর খেতে হবে। আমাদের এই আর্টিকেল এ ভালো খেজুরের ছবি আমি দিয়ে দেব। ওই ধরণের খেজুর কিনে খাবেন। আরেকটা কথা মাথায় রাখবেন সকালে কিছু খেয়ে বা ব্রাশ করে ৪ টে খেজুর খাবেন। খেয়ে এক গ্লাস জল খাবেন। বেশি খাবেন না। এটাই নিয়মিয়ত খেয়ে যান টানা ৬ মাস। ফল আর আমাকে বলতে হবে না।
বন্ধুরা আমাদের সমাজে অনেকেই বিশ্বাস করেন যে মিষ্টি খাবার মানেই তা শরীরের জন্য ভালো নয় বা মিষ্টি কম খাওয়া উচিত, যদিও কথা টা খুউব যে অসত্য তা কিন্তু নয়। তবে এই ধারণা সব কিছুর ক্ষেত্রে কিন্তু ঠিক নয়। কারণ খেজুর একটা মিষ্টি ফল, তবু এর মধ্য কোনও ক্ষতিকর উপাদান নেই। বরং এটি খেলে শরীর অনেক চাঙ্গা থাকে। খেজুরের মধ্য বিপুল পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, ক্য়ালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম এবং ফাইবার থাকার কারণে শীতকালে এই ফলটি খাওয়া খুব জরুরি। তবে আমি বলবো যে শীতকালে তো খাবেনই তা ছাড়া অন্য যে কোনো সময়ে আপনি খেতেই পারেন কোনো সমস্যা নেই। চলে যাবো আবার খেজুরের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা পর্বে।
খেজুরের ৫৩টি উপকারিতা
1. খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি থাকে বিধায় যারা একটু দূর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী, সামান্য পরিশ্রমে হয়রান হয়ে যায় তাদের জন্য খেজুর একটি উৎকৃষ্ট পথ্য।
2. খেজুর মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে খেজুর।
3. ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির যোগান দেয় খেজুর।
4. সুস্থ হৃদপিন্ডে দেহযন্ত্রে স্বাচ্ছন্দ এবং সতেজ বিধান করে এমন শক্তিদায়ক বা বলবর্ধক ঔষধ হিসেবে খেজুরের জুড়ি নেই।
5. প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর ব্লেন্ড করা জুস খেলে হার্টের সমস্যায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি ভাল সমাধান পাবেন।
6. খেজুরের প্রচুর খাদ্য উপাদান রয়েছে
7. খেজুর রক্ত উৎপাদনকারী
8. খেজুরে আছে ডায়েটরই ফাইবার যা কলেস্টোরল থেকে মুক্তি দেয়।
9. ক্ষুধা নিবারণের বিকল্প খাদ্য হিসেবে আমরা ২-৪টি খেজুর খেয়ে এক গ্লাস পানি পান করতে পারি।
10. পক্ষঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী ফুসফুসের সুরক্ষার পাশাপাশি মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীর সন্তান জন্মের সময় খেজুর খেলে জরায়ুর মাংসপেশির দ্রুত সংকোচন-প্রসারণ ঘটিয়ে, প্রসব হতে সাহায্য করে প্রসব-পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তক্ষরণ কমিয়ে দেয়।
11. যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য খেজুর খুবই উপকারী।
12. দুর্বলতা কাটাতে অনেক সাহায্য করে এবং ডেলিভারীর পর মায়েদের অতিরিক্ত রক্তপাত বন্ধ করতে ও খেজুর সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং পরবর্তী সময়ে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে খেজুর কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
13. খেজুর লাংস ও ক্যাভিটি ক্যান্সার থেকে শরীরকে দূরে রাখে।
14. খেজুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম বিদ্যমান যা আমাদের শরীরের নার্ভ সিস্টেমকে সচল রাখার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, খেজুরের মধ্যে প্রায় ৪০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম বিদ্যমান থাকে যা মানুষের ষ্ট্রোক হওয়ার ভয়াবহতাকে ৪০% কমিয়ে দেয়।
15. প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে ৩২৪ মিলিগ্রাম ক্যালরি থাকে। ক্যালরির পরিমাণ বেশি থাকে, তাই খেজুর শিশুদের জন্যও অনেক উপকারী একটি ফল।
16. দেহকে সচল ও কার্যক্ষম রাখতে শক্তির প্রয়োজন। এর অভাবে দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়,শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মানসিক অবসাদ সৃষ্টি হয়। এসব ক্ষেত্রে শর্করা জাতীয় খাদ্য শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে।আর এই শর্করা জাতীয় খাদ্য হিসেবে খেজুর খাদ্য শক্তির উল্লেখযোগ্য উৎস হিসেবে কাজ করে।
17. খনিজ পদার্থ দৈহিক পুষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করে। খেজুর দেহে ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে।
18. খেজুরে অনেক গ্লুকোজ থাকায় এ ঘাটতি পূরণ হয়
19. খেজুর লৌহসমৃদ্ধ ফল হিসেবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। রক্তে লৌহিত কণিকার প্রধান উপাদানের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। খেজুর লৌহসমৃদ্ধ বলে এই রক্তশূন্যতা দূরীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
20. নারীদের শ্বেতপ্রদর ও শিশুর রিকেট নিরাময়ে খেজুরের কার্যকারিতা প্রশ্নাতীত।
21. খেজুর হৃদরোগ, জ্বর ও পেটের পীড়ায় উপকারী এবং বলবর্ধক ঔষধ হিসেবে কাজ করে ।
22. রোজায় অনেকক্ষন খালি পেটে থাকা হয় বলে দেহের প্রচুর গ্লুকোজের দরকার হয়
23. ৭/৮ মাস সময় থেকে গর্ভবতী মায়েদের জন্য খেজুর একটি উৎকৃষ্ট খাদ্য। এসময় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে অনেক দুর্বলতা কাজ করে।
24. আজওয়া খেজুর বিষের মহৌষধ।
25. খেজুরে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল, যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সহায়তা করে।
26. আয়রনের পরিমাণও রয়েছে খেজুরে। তাই রক্তস্বল্পতা ও শরীরের ক্ষয়রোধ করতে খেজুরের রয়েছে বিশেষ গুণ।
27. স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করে
28. মুখের অর্ধাঙ্গ রোগ, পক্ষঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী। খেজুরের বিচিও রোগ নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
29. ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ এই ফল দৃষ্টিশক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
30. খেজুরে আছে ডায়েটরই ফাইবার যা কলেস্টোরল থেকে মুক্তি দেয়।
31. তুলনামূলকভাবে শক্ত খেজুরকে জলে ভিজিয়ে (সারা রাত) সেই পানি খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
32. সারাদিন রোজা রাখার পর পেট খালি থাকে বলে শরীরে গ্লুকোজের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। খেজুর সেটা দ্রুত পূরণে সাহায্য করে।
33. মুখের লালাকে ভালোভাবে খাবারের সঙ্গে মিশতে সাহায্য করে খেজুর। ফলে বদহজম দূর হয়। হৃদরোগ কমাতেও খেজুর বেশ উপকারী।
34. খেজুর পেটের গ্যাস, শ্লেষ্মা, কফ দূর করে, শুষ্ক কাশি এবং এজমায় উপকারী।
35. এর চুর্ণ মাজন হিসেবে ব্যবহার করলে দাঁত পরিষ্কার হয়।
36. হৃদরোগীদের জন্যও খেজুর বেশ উপকারী
37. হজমশক্তি বর্ধক, যকৃৎ ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক
38. খাদ্যশক্তি থাকায় দুর্বলতা দূর হয়।
39. উচ্চমাত্রার শর্করা, ক্যালরি ও ফ্যাট সম্পন্ন খেজুর জ্বর, মূত্রথলির ইনফেকশন, যৌনরোগ, গনোরিয়া, কণ্ঠনালির ব্যথা বা ঠান্ডাজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী।
40. পেটের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে খেজুর। এছাড়াও মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধেও এই ফল বেশ কার্যকরী।
41. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও রুচি বাড়ায় ত্বক ভালো রাখে
42. খেজুরে রয়েছে ৬৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ৭.৩ মিলিগ্রাম লৌহ – যা হাড়, দাঁত, নখ, ত্বক, চুল ভালো রাখতে সহয়তা করে।
43. খেজুরে রয়েছে ৭৭.৫% কার্বহাইড্রেট, যা অন্যান্য খাদ্যের বিকল্প শক্তি হিসেবে কাজ করে।
44. খেজুর লাংস ও ক্যাভিটি ক্যান্সার থেকে শরীরকে দূরে রাখে।
45. নেশাগ্রস্তদের অঙ্গক্ষয় প্রতিরোধ করে খেজুর। স্বাস্থ্য ভালো করতে বাড়িতে তৈরী ঘিয়ে ভাজা খেজুর ভাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
শেষ কথা