পুদিনা পাতার বৈশিষ্ট্য – Benefits Of Mint Leaves On Skin

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম।  বন্ধুরা পুদিনা পাতার ব্যাপারে এর আগেও আমি অনেক কিছু বলেছি আজ আপনাদের বলবো এই পুদিনা পাতার বৈশিষ্ট আসলে কি ?  আমরা আরও জানবো যে – পুদিনা পাতার অপকারিতা, পুদিনা পাতা কোথায় পাওয়া যায়, পুদিনা পাতার বীজ, পুদিনা পাতার জুসের উপকারিতা, পুদিনা পাতার রেসিপি, পুদিনা পাতার ছবি, পুদিনা পাতার দাম ইত্যদি ইত্যাদি।

কাঁচা পুদিনা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় চাটনি ও সালাদে।  ইদানিং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে টক দই এবং বোরহানি তৈরির জন্য পুদিনার ব্যবহার বাড়ছে। এছাড়া মাছ, মাংস, সস, স্যুপ, স্টু, চা, তামাক, শরবত তৈরিতে পুদিনা পাতা ব্যবহার হয়।  বিভিন্ন দেশে পুদিনার বেশি ব্যবহার হচ্ছে তেল তৈরিতে। পুদিনার গাছ থেকে পাওয়া এ তেলের নাম পিপারমেন্ট অয়েল। এ তেল বেশ মূল্যবান। বিভিন্ন শিল্প বিশেষ করে ওষুধ, টুথপেস্ট, মিন্ট চকোলেট, ক্যান্ডি, চুইয়িংগাম ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এসবে এটি ব্যবহার হয়। কোনো কোনো ব্র্যান্ডের সিগারেটেও মেন্থল ব্যবহার হয়। তাই পুদিনা গাছের শিল্প মূল্য অনেক বেশি। পুদিনা পাতার তীব্র ঘ্রানের জন্য দায়ী উপাদান  মেন্থল ও মেন্থোন।  পুদিনা পাতার ওপর ভিত্তি করে পিপারমেন্ট অয়েল শিল্প স্থাপন করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সাথে সাথে প্রচুর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতে পারে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রতি বছর ১০ টনের ও অধিক পিপারমেন্ট তেলের চাহিদা রয়েছে। হিসাব করে দেখা গেছে, এ পরিমাণ তেল উৎপাদনের জন্য ১০ হাজার একর জমি প্রয়োজন। কিন্তু উৎপাদন অনেক কম হওয়ায় ভারতে প্রতি বছর কোটি টাকার পিপারমেন্ট তেল আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশের বাজারে মূলত কাঁচা পুদিনার চাহিদাই বেশি। বিরুৎ অর্থাৎ খুবই ছোট আকারের প্রকৃতির গাছ পুদিনা। কা- ও পাতা নরম। পাতা ডিম্বাকার, কিনারা খাঁজকাটা। পাতা লোমশ, তীব্র মিষ্ট গন্ধযুক্ত। গাছের উচ্চতা ৫০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার। গাছের গোড়া থেকে ধাবক বা রানার বের হয়। গাছ দ্রুত বাড়ে ও ঝোপ  তৈরি করে। এর জাপানি জাতটি চাষের জন্য ভালো। আমাদের দেশে যে পুদিনা চাষ হয় তার কোনো ফল হয় না। অতীত থেকে এ দেশে পুদিনা পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে। এক সময় ছিল যখন বাড়ির আঙিনায় ২ থেকে ৪টি পুদিনা গাছ লাগিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটানো হতো। কিন্তু এখন অবস্থা বদলে গেছে। শহরাঞ্চলে পুদিনার চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। পুদিনার চাষ এখন অন্যান্য ফসলের মতো বাণিজ্যিকভাবে করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

পুদিনা পাতার বিশেষ বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য

 

1. ব্রণ দূর করতেত্বকের তৈলাক্তভাব কমাতে তাজা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান। দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের দাগ দূর করতে প্রতিদিন রাতে পুদিনা পাতার রস আক্রান্ত স্থানে লাগান। সম্ভব হলে সারারাত রাখুন। নতুন কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা। তারপর ধুয়ে ফেলুন। মাস খানেকের মাঝেই দাগ দূর হবে।

2. পুদিনা পাতার রস শ্বাস-প্রশ্বাসের নালী খুলে দেওয়ার কাজে সহায়তা করে। ফলে যারা অ্যাজমা এবং কাশির সমস্যায় পড়েন তাদের সমস্যা তাত্‍ক্ষণিক উপশমে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরী। খুব বেশি নিঃশ্বাসের এবং কাশির সমস্যায় পড়লে পুদিনা পাতা গরম জলতে ফুটিয়ে সেই জলর ভাপ নিন এবং তা দিয়ে গার্গল করার অভ্যাস তৈরি করুন।

3 . পেটের পীড়ায় এটি ইরেটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস) এবং দীর্ঘস্থায়ী বদহজমের বিরুদ্ধে খুবই কার্যকর। এছাড়াও পুদিনা কোলনের পেশী সংকোচন নিয়ন্ত্রন করে।

4 . অ্যাজমা পুদিনায় রোজমেরিক এসিড নামের এক ধরনের উপাদান থাকে। এটি প্রাকপ্রদাহী পদার্থ তৈরীতে বাধা দেয়। ফলে অ্যাজমা হয় না। এছাড়াও এ ঔষধি প্রোস্টসাইক্লিন তৈরীতে বাধা দেয়। তাতে শাসনালী পরিষ্কার থাকে।

5. রোদে পোড়া ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে পুদিনা পাতার রসঅ্যালোভেরার রস একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। পনেরো মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

6. পুদিনা পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে। পুদিনা পাতার পেরিলেল অ্যালকোহল যা ফাইটোনিউরিয়েন্টসের একটি উপাদান দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে।

7. পুদিনার তাজা পাতা পিষে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর যদি তা ধুয়ে ফেলা যায়, তা হলে মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায়। ব্রণ ওঠাও বন্ধ হয়

8. পুদিনার পাতা ভালো করে পিষে তার রস ভালো করে মাথায় ব্যবহার করেন। যাদের চুলে উকুন আছে, তারা খুব উপকার পাবেন।

9.  অরুচিতে রোগে ভোগার পর, পেটে বায়ু জমে ও কোষ্ঠ বদ্ধতায় অরুচি আসে। একই রকম খাদ্য দীর্ঘদিন খেলে অরুচি আসে। এ সব ক্ষেত্রে পুদিনার সরবত ( পুদিনার রস ২ চা চামচ, সামান্য লবন, কাগজী লেবুর রস্‌৮/১০ ফোঁটা, হাল্কা গরম জল পোয়া খানিক একত্রে মিশয়ে ) সকাল বিকাল দিনে দুই বার ৫/৭ দিন খেলে অরুচি চলে যায়। পুদিনা পাতা বেটে জলতে গুলে শরবত করা যায়। সে ক্ষেত্রে কাঁচা পাতা ৮/১০ গ্রাম নিতে হবে।

10. অনেক রোগে প্রস্রাব কম হয়। কিন্তু যে ক্ষেত্রে ঠান্ডা গরমের ফলে সাময়িক ভাবে অল্প অল্প প্রস্রাব হতে থাকে কোনো কোনো সময় দাহ হতে থাকে, সে ক্ষেত্রে পুদিনা পাতা ৮/১০ গ্রাম বেটে তাতে সামান্য লবন ও কাগজী লেবুর রসের সাথে ঠান্ডা জল মিশিয়ে শরবত করে দিনে ২/৩ বার খেতে হবে। অন্য কোনো রোগে মূত্রাল্পতা হলে সেক্ষেত্রে এটা ব্যবহার করা যাবে কিনা সেটা নির্ভর করবে রোগের ধরনের ঊপর এবং চিকিত্‍সকের বিচার ধারার উপর।

11.  শিশুদের অতিসারে পাতলা দাস্ত, সেই সাথে পেট মোচড় দিয়ে ব্যথা, কোন কোন ক্ষেত্রে অল্প আম -সংযুক্ত দাস্ত, সেই সাথে পেট ফাঁপা, হিক্কা বমি বমি ভাব, প্রস্রাবও সরলি হচ্ছেনা, শিশু কিছুই খেতে চাচ্ছেনা। এক্ষেত্রে পুদিনা পাতার রস্‌ ৮/১০ ফোঁটা আল্প একটু চিনি ও লবন সহযোগে এক ঘন্টা অন্তর কয়েকবার খাওয়াতে হবে। কখন কি ভাবে কতবার খাওয়াতে হবে সেটা নির্ভর করবে রোগীর সুস্থতার ক্রমের দিকে লক্ষ রেখে। বয়স আনুপাতে মাত্রাটা ঠিক করে নিতে হবে।

12. যাদের হজমশক্তি কম তারা পুদিনার শরবত ও চাটনি খেলে উপকার পাবেন।

13.  পুদিনার চা বেশী চা খেলে শরীর খারাপ হতে পারে। ঠিক চাএর মত করে চায়ের পাতার বদলে পুদিনা পাতা ও সেই সাথে দুধ চিনি গোল মরিচ ও মৌরি দিয়ে এই চা তৈরী করতে হবে। এই চা খেতে সুস্বাদু এবং খেলে তৃপ্তি হয়।

14. পাতলা পায়খানা হলে পুদিনাপাতা বেশ উপকারী।

15.  হঠাত্‍ সানস্ট্রোক করলে পুদিনার শরবত খেলে উপকার পাবেন।

16.  পুদিনাপাতার সালাদ খেলে পেটে গ্যাস হয় না হজম হয়।

17.  পুদিনা মেয়েদের রক্তশূন্যতা পূরণ করে।

18. মায়ের বুকে দুধ বাড়ে।

19.  যারা প্রস্রাব সমস্যায় ভুগছেন তারা এক গ্লাস জলতে কয়েক ফোঁটা পুদিনা পাতার রস, সামান্য লবণ ও অল্প চিনি দিয়ে শরবত খান প্রস্রাব পরিষ্কার হবে।

20.  মাইগ্রেন বা আধকপালে মাথা ধরায় পুদিনাপাতা বেটে মাথায় লাগালে মাথাব্যথা ভালো হয়।

21.  যাদের বুক ধড়ফড় করে তারা পুদিনাপাতা খেলে উপকার হবে।