নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ও স্বাগতম আমার এই পেজ এ। আশা করবো আমার প্রত্যেক লেখা আপনাদের অনেকটাই উপকার করতে সাহায্য করবে ও আশা করবো ভালো লাগবে আপনাদের। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করি। বন্ধুরা আগে জানা দরকার হিমোগ্লোবিন কি ? আমরা যে কোনো জিনিস যদি সঠিক ভাবে না জানতে পারি তালে আমাদের কোনো লাভ নেই বা আমরা তার চিকিৎসাও করতে পারবো না।
হিমোগ্লোবিন একটি অক্সিজেনবাহী লৌহসমৃদ্ধ মেটালোপ্রোটিন যা মেরুদণ্ডী প্রাণিদের লোহিত কণিকা। বা আরেকটু অন্য ভাবে বলতে গেলে হিমোগ্লোবিন একটি লোহিত অণু ধারণকারী লাল রক্ত কোষ পাওয়া জটিল প্রোটিন। হিমোগ্লোবিনের প্রধান ফাংশন ফুসফুস থেকে শরীরের টিস্যু থেকে অক্সিজেন বহন করা এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের সাথে অক্সিজেন বিনিময় করা এবং তারপর কার্বন ডাই অক্সাইডকে ফুসফুসের দিকে নিয়ে যায় । হিমোগ্লোবিনের আয়রন অণু লাল রক্ত কোষের স্বাভাবিক আকৃতি বজায় রাখতে সহায়তা করে।
হিমোগ্লোবিন এর নরমাল রেঞ্জ শিশু
জন্ম: 13.5 থেকে ২4.0 গ্রাম / ডিএল
বয়স 1-2 মাস: 10.0 থেকে 18.0 গ্রাম / ডিএল
2-6 মাস বয়স: 9.5 থেকে 14.0 গ্রাম / ডিএল
বয়স 0.5 থেকে 2 বছর: 10.5 থেকে 13.5 গ্রাম / ডিএল
বয়স 2 থেকে 6 বছর: 11.5 থেকে 13.5 গ্রাম / ডিএল
বয়স 6-12 বছর: 11.5 থেকে 15.5 গ্রাম / ডিএল
মহিলা
বয়স 1২-18 বছর: 1২.0 থেকে 16.0 গ্রাম / ডিএল
বয়স> 18 বছর: 1২.1 থেকে 15.1 গ্রাম / ডিএল
পুরুষ
বয়স 1২-18 বছর: 13.0 থেকে 16.0 গ্রাম / ডিএল
বয়স> 18 বছর: 13.6 থেকে 17.7 গ্রাম / ডিএল
হিমোগ্লোবিনের অভাবে কি হয়
রক্তশূন্যতা – আমাদের শরীরে রক্তের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান লোহিত রক্তকণিকা, আর লোহিত রক্তকণিকার প্রাণ হচ্ছে হিমোগ্লোবিন। এই হিমোগ্লোবিনের কাজ হলো ফুসফুস থেকে দেহকোষে অক্সিজেন পরিবহন করা। আবার আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন অক্সিজেন। কোনো কারণে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বা পরিমাণ কমে গেলে সেই অবস্থাকে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা বলা হয়।
লক্ষণ
বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই অ্যানিমিয়ার নির্দিষ্ট লক্ষণ শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। তবে এ ক্ষেত্রে বেশকিছু লক্ষণ প্রায় একই সঙ্গে থাকলে রক্ত পরীক্ষা করা খুবই জরুরি। যেমন –
- শরীর ফ্যাকাসে থাকবে ও প্রচুর ঘাম হবে।
- বুক ধড়পড় করবে।
- নাড়ির স্পন্দন দ্রুত হবে।
- মাথা ঘোরার সঙ্গে মাথা ব্যথাও থাকতে পারে।
- চোখে ঝাপসা কিংবা কম দেখবে।
- মুখের কোণে ও জিহ্বায় ঘা হতে পারে।
- দুর্বলতা ও ক্লান্তিভাব। হজমে সমস্যা এবং পুরো শরীর ফুলে যায়।
- পা ফুলে যাওয়া সঙ্গে শ্বাসকষ্টও থাকতে পারে।
- অনিদ্রা কিংবা ঘুম কম হতে পারে। হৃৎপিন্ড বড় হয়ে যায় এবং দ্রুত হার্টবিট হতে থাকে।
হিমোগ্লোবিন বেড়ে গেলে কি হয়
রক্তে হিমোগ্লোবিন একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। রক্তে সাধারণত পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৮.৫ আর নারীদের ক্ষেত্রে ১৬.৫ শতাংশ হিমোগ্লোবিন থাকা উচিত। তবে এর বেশি হয়ে গেলেই তা পলিসাইথিমিয়া নামের রোগের প্রধান লক্ষণ।
চিকিৎসকদের মতে, হিমোগ্লোবিন বেড়ে গেলে রক্ত ঘন হয়ে যায়। এতে ছোট ছোট রক্তের দলা তৈরি হওয়ার সুযোগ বাড়ে। পলিসাইথিমিয়া দুই রকম হয়। একটি প্রাইমারি ও অন্যটি সেকেন্ডারি।
প্রাইমারি রোগ হয় অস্থিমজ্জা বা বোনম্যারোতে। যদি এখানে রক্ত তৈরি হওয়ার পদ্ধতিতে কোনো সমস্যা হয়। লাখে একজন মানুষের এই সমস্যা হতে পারে আর এটি একেবারেই বংশগত নয়। অন্যদিকে সেকেন্ডারি পলিসাইথিমিয়া তুলনামূলক বেশি হয়। যার প্রধান কারণ-
কিছু বংশগত সমস্যা, কিডনি বা লিভার ক্যান্সার জাতীয় সমস্যায় এই রোগ হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর ধূমপান বা খুব বেশি পরিবেশ দূষণের মধ্যে কাজ করলে এই অসুখ হয়।
অনেক দিন গ্যারেজে, মাটির নীচে খনি বা খোদাই এর কাজ করলে এই রোগের আশঙ্কা থাকে৷
কায়িক পরিশ্রমের কাজ করেন এমন উদ্বেগের মধ্যে থাকা মধ্যবয়সী পুরুষদের এ ধরনের রোগ হতে পারে।
সায়ানোটিক হার্ট ডিজিজ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া ইত্যাদি অসুখ থাকলে বেশি হিমোগ্লোবিন তৈরি হয়।
চিকিৎসা
রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে প্রচুর আয়রন, ভিটামিন ও ফলেটযুক্ত খাদ্য ও ওষুধ সেবন করতে হবে। তবে সমস্যা বেশি হলে যথাযথ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।