কিডনি রোগের লক্ষণ কি কি – Signs Of Kidney Disease

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ও স্বাগতম আমার এই পেজ এ। আশা করবো আমার প্রত্যেক লেখা আপনাদের অনেকটাই উপকার করতে সাহায্য করবে ও আশা করবো ভালো লাগবে আপনাদের। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করি। কিডনি আমাদের শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। প্রত্যেক মানুষের শরীরে দুটি করে কিডনি থাকে। এর আকার খুব বড় নয় কিন্তু এর কাজ অনেক ব্যাপক। যেমন- –কিডনি আমাদের শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। কিডনি অকেজো হলে শরীরে দূষিত পদার্থ জমে যায় ফলে নানান উপসর্গ দেখা দেয়। – কিডনি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরি করে যা শরীরের অন্যান্য ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, শরীরে রক্ত তৈরি করা। তাই কিডনি অকেজো হলে শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দেয় এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। – কিডনি আমাদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং ইলেক্ট্রোলাইট (ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম) – এর সমতা রক্ষা করে। কিডনি কাজ না করলে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায় যেটা জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আমার দেখে নেবো কিডনি রোগের কারণ, শিশুদের কিডনি রোগের লক্ষণ, কিডনির ব্যাথা কেমন? কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা ইত্যাদি।

কিডনির নানান ধর নের রোগের লক্ষণ আলাদা আলাদা হয় , যার মধ্যে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি প্রধানত দেখা যায়:

  • সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে চোখ ফুলে যাওয়া।
  • মখ এবং পা ফুলে যাওয়া।
  • ক্ষুধামান্দ্য , বমি ভাব , দুর্বল ভাব।
  • বার বার প্রস্রাবের বেগ , বিশেষ করে রাত্রে।
  • কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপ
  • শারীরিক দুর্বল ভাব , রক্ত ফ্যাকাসে হওয়া।
  • অল্প হাঁটার পরে, নি শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা তাড়াতাড়ি ক্লাস্তি অনুভব করা।
  • ৬ বছর বয়সের পরেও রাত্রে বিছানায় প্রস্রাব করা।
  • প্রস্রাব কম আসা ।
  • প্রস্রাব করার সময় জুলন অনুভব করা এবং প্রস্রাবে রক্ত বা পুজ-এর উপস্থিতি।
  • প্রস্রাব করার সময় কষ্ট হওয়া। ফোটা ফোটা করে প্রস্রাব হওয়া।
  • পেটের মধ্যে গিট হওয়া , পা আর কোমরের যন্ত্রণা।

উপরোক্ত লক্ষণগুলির মধ্যে কোনও একটি লক্ষণের উপস্থিতি থাকলে কিডনির রোগের সম্ভাবনা থাকতে পারে , এবং তৎক্ষণাৎ ডাক্তারবাবুর কাছে গিয়ে চেক-আপ করানো দরকার।

এখন বিস্তারিত ভাবে আরও কিছু লক্ষণ আমরা আলোচনা করবো। 

1. প্রস্রাবে পরিবর্তন

কিডনি রোগের একটি বড় লক্ষণ হলো প্রস্রাবে পরিবর্তন হওয়া। কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাব বেশি হয় বা কম হয়। বিশেষত রাতে এই সমস্যা বাড়ে। প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়। অনেক সময় প্রস্রাবের বেগ অনুভব হলেও প্রস্রাব হয় না।

2. প্রস্রাবের সময় ব্যথা

প্রস্রাবের সময় ব্যথা হওয়া কিডনির সমস্যার আরেকটি লক্ষণ। মূলত প্রস্রাবের সময় ব্যথা, জ্বালাপোড়া- এগুলো ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের লক্ষণ। যখন এটি কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে তখন জ্বর হয় এবং পিঠের পেছনে ব্যথা করে।

3. প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া

প্রস্রাবের সাথে রক্ত গেলে এটি খুবই ঝুঁকির বিষয়।এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষণ।

4. দেহে ফোলা ভাব

কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য এবং বাড়তি জল বের করে দেয়। কিডনিতে রোগ হলে এই বাড়তি জল বের হতে সমস্যা হয়। বাড়তি জল শরীরে ফোলাভাব তৈরি করে।

5. মনোযোগ দিতে অসুবিধা হওয়া

লোহিত রক্তকণিকা কমে যাওয়ার কারণে মস্তিস্কে অক্সিজেন পরিবহন কমে যায়। এতে কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হয়।

6. সবসময় শীত বোধ হওয়া

কিডনি রোগ হলে গরম আবহাওয়ার মধ্যেও শীত শীত অনুভব হয়। আর কিডনি তে সংক্রমণ হলে জ্বরও আসতে পারে।

7. ত্বকে র‍্যাশ হওয়া

কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে রক্তে বর্জ্য পদার্থ বাড়তে থাকে। এটি ত্বকে চুলকানি এবং র‍্যাশ তৈরি করতে পারে।

8. বমি বা বমি বমি ভাব

রক্তে বর্জ্যনীয় পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় কিডনির রোগে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে।

9. ছোটো ছোটো শ্বাস

কিডনি রোগে ফুসফুসে তরল পদার্থ জমা হয়। এ ছাড়া কিডনি রোগে শরীরে রক্তশূন্যতাও দেখা দেয়। এসব কারণে শ্বাসের সমস্যা হয়, তাই অনেকে ছোট ছোট করে শ্বাস নেন।

10. পেছনে ব্যথা

কিছু কিছু কিডনি রোগে শরীরে ব্যথা হয়। পিঠের পাশে নিচের দিকে ব্যথা হয়। এটিও কিডনি রোগের একটি অন্যতম লক্ষণ।

শেষ কথা 

মাত্র দুটি পরীক্ষায় জানা যায় কিডনি রোগ আছে কি-না এবং একটি সহজ সমীকরণে বের করা যায় কিডনি শত ভাগের কত ভাগ কাজ করছে। একটি হলো- প্রস্রাবে অ্যালবুমিন বা মাইক্রো অ্যালবুমিন যায় কি-না এবং অন্যটি রক্তের ক্রিয়েটিনিন।  একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে, সচেতন হলেই এবং একটু কষ্ট করে যদি লাইফস্টাইল বা জীবনযাত্রার প্রণালি বদলে স্বাস্থ্যকর উপায়ে চলা যায়, তাহলে কিডনি বিকল হওয়ার এসব কারণ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ করা সম্ভব। হ