মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারীতা

মোবাইল ফোনের গুরুত্ব

আধুনিক সভ্যতায় বিপ্লব এনেছে মোবাইল ফোন। এখন সবার হাতে দেখি মোবাইল ফোন। কী আনন্দে লাঠির মাথায় বেঁধে সেলফি তুলে, আর হাসে! শিশু, বৃদ্ধ, কৃষক, রিকশাওয়ালা, ড্রাইভার, গার্মেন্ট কর্মী, খেয়া নৌকার মাঝি- সব শ্রেণীর মানুষের হাতে এখন মোবাইল ফোন। যে কোনো সময় যে কোনো প্রান্তের মানুষের সঙ্গে যে কোনো খোঁজখবর, সংবাদ, ছবি পাঠাতে, মেসেজ দিতে এটা খুবই জরুরি। সস্তা এবং সময় স্বল্পতা, সবদিক বিবেচনায় মোবাইল ফোন জরুরি হয়ে উঠেছে। আর তার সাথে বেড়ে উঠেছে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব।

মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা 

ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম একটি মাধ্যম। ভাব বিনিময় করা সহজ। এ কারণে প্রেম করা এখন সহজ। তাই বর্তমানে প্রেমের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ছেলেদের এখন ফুটবল মাঠে দেখি না; দেখি মোবাইল মার্কেটে। ঘরের কোণে বাচ্চারা মোবাইল ফোনে গেম খেলে। অনেক ছেলেমেয়ে খারাপ ছবি দেখে। পড়াশোনা বাদ দিয়ে অযথা সময় অপচয় করে। এটা টিপতে টিপতে মাদকের মতো নেশা হয়ে যায়। সেদিন দমদম রেললাইনে টাই পরনে এক ভদ্রলোক মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে ট্রেনের নিচে পড়ে মৃত্যুবরণ করে।
মোবাইল ফোনের এ নেশা বাদ দিতে হবে। মাদকের মতো মোবাইল ফোনও যেন আমাদের জ্ঞানশূন্য না করে, এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। প্রযুক্তির অনেক খারাপ দিক রয়েছে। তাই বলে কি আমরা প্রযুক্তিকে গ্রহণ করব না? সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাব না? অবশ্যই প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে হবে। প্রযুক্তির ভালো-মন্দ দুটো দিকই রয়েছে। সব কিছু ব্যবহারের মধ্যে একটা নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। আসলে ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে ভালো-মন্দ। আমরা মোবাইল ফোনকে যতই খারাপ বলি না কেন, এটাকে বাদ দেয়ার উপায় নেই। এটা ছাড়া এখন সভ্যতা অচল। একদিন মোবাইল ফোন বন্ধ থাকলে দুনিয়াটা অন্ধকার মনে হবে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপে আছি, এমন মনে হবে।

মোবাইল ফোনের সুফল ও কুফল সংলাপ

প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতির ফলে মোবাইল ফোন এখন মানুষের জীবনে এক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষে পরিণত হয়েছে। দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে মোবাইল ফোনের উপকারীতা অনস্বীকার্য। কিন্তু এর অপব্যবহার যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে করে মোবাইল ফোনের অপকারীতার পাল্লাই যেন দিন দিন ভারী হচ্ছে। কারণ যত্রতত্র মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে নানা ধরনের অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্নে মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপকারীতা ও অপকারীতা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো-

উপকারীতা : 1. দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা, 2. মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার।

অপকারীতা :1. অর্থ অপচয়, 2. ব্ল্যাক মেইলিং, 3. সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজির মতো অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি, 4. মোবাইলে পর্ণোছবি ও ভিডিও ব্যবহার এর ফলে যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয়, 5. ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার ব্যাঘাত সৃষ্টি…… ইত্যাদি। কাজেই যত্রতত্র মোবাইল ব্যবহারে বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী এবং প্রয়োজনীয়ও বটে।

স্মার্টফোনের দ্বিতীয় বৃহৎ বাজার ভারত। দেশটিতে ফিচার ফোনের চেয়ে স্মার্টফোনের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। স্মার্টফোন ডিভাইসের চাহিদার বৃদ্ধির সঙ্গে সাক্ষরতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত রয়েছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাইবার মিডিয়া রিসার্চের সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। খবর: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

সাক্ষরতার হার ও স্মার্টফোন বিক্রির ক্ষেত্রে গভীর সম্পর্ক রয়েছে কিনা, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট গবেষণা হয়নি। তবে তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভারতের যেসব রাজ্যে সাক্ষরতার হার বেশি, সেসব রাজ্যের মানুষ বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের যেসব রাজ্যে সাক্ষরতার হার বেশি, সেসব রাজ্যের মানুষ ফিচার ফোনের চেয়ে স্মার্টফোন বেশি ব্যবহার করেন। এ কারণে কেরালা, মহারাষ্ট্র, হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাটের নাগরিকদের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

শেষ কথা

শেষ কথা বলতে যায় বলিনা কোনো বিজ্ঞানের প্রত্যেকটা জিনিস আমাদের কাছে একদিকেআশীর্বাদ এর মতো আবার অন্যদিকে অভিশাপ এর মতো। আমরা কেউ এটা বলতে পারবো না যে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের এই জিনিসটা ভালো বা খারাপ। ভালো মন্দ মিশিয়েই আমাদের সব জিনিস সেটা বিজ্ঞানের আবিষ্কার হোক বা প্রকৃতির নিয়ম।