আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –
নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের বলবো যে মাইগ্রেন থেকে মুক্তির উপায়। আমরা যে – মাথা ব্যথা কমানোর উপায়, মাথা ব্যাথার ঔষধের নাম, মাথার ডান পাশে ব্যথা, মাথা ব্যথার ওষুধের নাম, মাথা ব্যথা ও বমি ভাব, মাথা ব্যাথার ট্যাবলেট এর নাম, মাথার এক পাশে ব্যাথা, মাথা ব্যাথার ঔষধের নাম কি ইত্যাদি ইত্যাদি।
মাইগ্রেন হল একধরনের মাথাব্যথা। এই ব্যাথা মাথার একদিকে হয় আবার কখনো কখনো দুদিকেও হতে দেখা গেছে। আবার আমরা অনেকেই বিশ্বাস করি মাইগ্রেন কোনো সাধারণ মাথা ব্যথা নয়, এটি এক ধরণের নিউরোলজিক্যাল সমস্যা। তীব্র মাথা ব্যাথার সঙ্গে সঙ্গে বমি বমি ভাব, চোখে ব্যথা এমনকী মুখ ও চোয়ালেও ব্যথা হতে পারে।যাদের মাইগ্রেন হবার প্রবণতা আছে, তাদের শব্দ, আলো, গন্ধ, বাতাসের চাপের তারতম্য ও কিছু খাবার যেমন চকলেট, আঙুরের রস, পনির ইত্যদির প্রভাবে পুনরায় নতুন করে ভয়ঙ্কর মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। তবে মাইগ্রেনে শুধু মাথাব্যথাই হয় না, তার সঙ্গে আরো কয়েকটি স্নায়বিক উপসর্গ হয়ে থাকে (যেমন কিছু আলো বা শব্দের অনুভুতি)। উপসর্গ অনুযায়ী মাইগ্রেনের মধ্যেও অনেক রকমফের আছে। কারো কারো মতে সেরকম কয়েকটি মাইগ্রেনের উপসর্গ থাকলে মাথা ব্যথা না থাকলেও মাইগ্রেন হয়েছে বলা যেতে পারে।
মাইগ্রেন কেন হয় তা এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে এটি বংশগত বা অজ্ঞাত অন্য কোনো কারনেও হতে পারে। সাধারণত পুরুষের চেয়ে মহিলাদের এটি বেশি হয়। পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে এই অনুপাত ১:৫। মহিলাদের মাসিকের সময় এই রোগটি বেশি দেখা দেয়। চলুন মাইগ্রেনের আরো কিছু কারনজানা যাক
মাইগ্রেনের কারন
1. চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া,
2. মহিলাদের হরমোনাল পরিবর্তন। ওরাল কনট্রাসেপ্টিভ পিল (জন্মবিরতিকরণ বড়ি) খেলে কিংবা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নিলে অনেকের মাইগ্রেন বেড়ে যেতে পারে।
3. দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ,
4. অতিরিক্ত ভ্রমণ,
5. অতিরিক্ত ব্যায়াম করা,
6. অনিদ্রা,
7, অনেকক্ষন ধরে টিভি দেখা,
8. দীর্ঘক্ষন যাবত কম্পিউটারে কাজ করা,
9. মোবাইলে কথা বলা
10. দীর্ঘক্ষণ ধরে অতি উজ্জ্বল আলোতে অবস্থান করা।
11. কিছু খাবার যেমন চিজ, বেশি লবণযুক্ত খাবার , প্রসেসড খাবার ইত্যাদি। এমনকি কোনো বেলার খাবার মিস করা, দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা।
12. মদ বিশেষ করে ওয়াইন, বেশি ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়।
13. অতিরিক্ত স্ট্রেস।
14. উজ্জ্বল আলো, উচ্চশব্দ।
15. বেশি ভারী কাজ, অনেকক্ষেত্রে যৌনসংসর্গও।
16. আবহাওয়ার পরিবর্তন।
মাইগ্রেনের ব্যথা যদি শুরুই হয়ে যায়, তখন করণীয় কি?
1. নিরিবিলি পরিবেশ খুঁজে নিন।
2. আলো ও শব্দ থেকে দূরে থাকুন।
3. ব্যথার স্থান ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করুন।
4. চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী এসপিরিন/প্যারাসিটামল+ বমি নিরোধক জাতীয় ওষুধ খেতে হতে পারে।
মাইগ্রেন যদি প্রতিরোধ করতে চাই?
1. প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ করুন।
2. শোবার ঘর পরিষ্কার ও ঝামেলামুক্ত রাখুন।
3. নির্দিষ্ট সময়ে পরিমিত খাবার গ্রহণ করুন।
4. কোনো খাবার মাইগ্রেনের কারণ হলে তা পরিহার করুন।
5. জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খেতে থাকলে তা বন্ধ রাখুন।
6. পরিবেশগত কারণে যদি ধোঁয়া, ধুলাবালি, প্রচণ্ড গরম বা শীতের বাতাসের মাঝে বের হতে হয় তবে মাস্ক বা রুমাল ব্যবহার করুন।
আর ওষুধের ওপর নির্ভরতা না। এবার ঘরোয়া উপায়েই দূর হবে মাথার ব্যথা। মাইগ্রেনের ব্যথার থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে আজকের আয়োজন। আসুন এক নজরে চোখ বুলিয়ে নিই।
অত্যাধিক আলো এড়িয়ে চলুন
অত্যাধিক আলো চোখে পড়া মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে। এছাড়াও দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা মোবাইল এর সামনে তাকিয়ে থাকলে চোখে চাপ পড়তে পারে। তাই লাইট বন্ধ করে বা কম আলোতে চশমা পরে কাজ করতে পারেন।
আদা
আদা আমাদের মানসিক চাপ এবং ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এটি মাইগ্রেন দূর করতেও অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। লেবু ও আদার রস কিংবা আদা চা বা আদা বাটা মাইগ্রেন দূর করতে অত্যন্ত সাহায্য করে।
দারুচিনি
দারুচিনি আমাদের খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি মাইগ্রেনও উপশম করে।ো জলের সঙ্গে দারুচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে কপালে মেখে আধঘণ্টা পর গরম জলে ধুয়ে নিলে মাইগ্রেনের ব্যথা কমে যায়।
আঙুরের রস
আঙুরের রস মাইগ্রেন থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। আঙুরে প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে। এছাড়াও আঙুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সাইট্রাস সমৃদ্ধ ফল যা মাইগ্রেন উপশমকারী ঘরোয়া টোটকা হিসাবে পরিচিত। সামান্য পরিমাণ জল সহযোগে তাজা আঙুর ব্লেন্ড করে পান করুন এবং মাইগ্রেন থেকে মুক্তি পান। দিনে দু’বার পান করলে ফল পাবেন।
ক্ষতিকর সূর্যরশ্মি এড়িয়ে চলুন
যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে দেখা যায় তারা সূর্যের তাপ ও আলোতে বেশিক্ষণ থাকলে মাইগ্রেনের ব্যথা বেড়ে যায়। এমন সমস্যা থাকলে চেষ্টা করতে হবে প্রখর রোদে কম বের হতে। এক্ষেত্রে বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই রোদ-চশমা বা ছাতা নিয়ে বের হতে হবে।
ম্যাসাজ
মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল ম্যাসাজ। যদি হুট করে মাইগ্রেনের ব্যথা উঠে তাহলে কাউকে ম্যাসাজ করে দিতে বলতে পারেন। মাথায় এবং ঘাড়ে ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় ফলে আপনি আরাম পাবেন এবং মাইগ্রেনের ব্যথা দূর হবে।
হট্টগোল বা উচ্চ-শব্দ থেকে দূরে থাকা
অত্যাধিক হট্টগোল বা উচ্চ-শব্দ থেকে সহজেই মাইগ্রেনের ব্যথা উঠতে পারে। মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুক্তভোগীদের এমন উচ্চ মাত্রার আওয়াজ, শোরগোল বা হট্টগোল এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। যদি হুট করে মাইগ্রেনের ব্যথা উঠে তাহলে তাত্ক্ষণিক শব্দহীন অন্ধকার ঘরে থাকলে স্বস্তি পাওয়া যায়। মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করতে যে কোন রাসায়নিক ওষুধের বদলে ঘরোয়া টোটকা বেছে নেওয়া বেশি ভালো। কোনও রকম ওষুধপত্র ছাড়াই উপরে বর্ণিত ঘরোয়া উপায়ে দূর হবে মাইগ্রেনের ব্যথার মত সমস্যা। তাও আবার ঘরে বসেই।
শেষ কথা
সর্বক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন এই উপায়টি অনুসরণ করার আগে।