মানসিক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

বন্ধুরা আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম।   আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আজ আমরা জন্য এক দারুন সমস্যার কথা যা আমাদের সকলের কম বেশি হয় এখন সেটা হল – আমাদের মানুষিক দিক থেকে অনেকটাই ভেঙে পড়ি মাঝে মাঝে সেটা নিয়েই আজ জন্য বিস্তারিত ভাবে। আমরা জন্য যে – মানসিক রোগের তালিকা, মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ, মানসিক রোগের কারণ, মানসিক রোগে শারীরিক সমস্যা, মানসিক রোগের ঔষধের নাম, মানসিক রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র, মানসিক রোগের লক্ষণ কি  ইত্যাদি ইত্যাদি। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

আমদের মন খুব চঞ্চল ও প্রাণবন্ত। মনের কাজই হল চিন্তা করা। কিন্তু যত চিন্তা বাড়বে ততই মন ক্লান্ত হয়ে পড়বে। আমদের যত রোগ হয়, ৭০ শতাংশ মানসিক। অর্থাৎ মানসিক রোগ থেকেই উৎপন্ন হয় শারীরিক রোগ। মানে, মন যদি চিন্তা না করে তাহলে শরীর সুস্থ ও সবল রাখা সম্ভব। মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন এ যেমন মনের ভূমিকা অনন্য, ঠিক তেমনি মনের অসুস্থতার ক্ষেত্রেও মনের ভূমিকা অপরিহার্য।

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন এর প্রতিকার করার আগে আমাদের জানতে হবে মানসিক অসুস্থতা বা মানসিক রোগ কী-

মানসিক রোগ কী ?

মানসিক রোগের প্রধান কারণ মনের দুশ্চিন্তা। একটুতেই ব্যতিব্যস্ত হওয়া, কী হবে বা কী হবে না ভেবে অস্থির হয়ে ওঠা। দুশ্চিন্তা কারণ। দুশ্চিন্তা অনেক রকমের হয়ে থাকে।

স্ট্রেসজনিত দুশ্চিন্তা

কোন কিছু যখন পাওয়া সম্ভব হয় না বা জীবনে ব্যর্থতা এলে, ভুল হলে তা বারবার মনে করতে থাকেল, আশানুরূপ ফল না পাওয়া গেলে তখন স্ট্রেসজনিত দুশ্চিন্তা দেখা যায়।

ভাবনাত্মক দুশ্চিন্তা

কেউ কেউ খুব সামান্য কারণজনিত দুশ্চিন্তা করেন। কারো সামান্য কথায় বা সামান্য আঘাত পেলে। এই ধরণের চিন্তা করতে করতে মানসিক ও শারীরিক অসুস্থ হয়ে পড়ে।

সম্পর্কজনিত দুশ্চিন্তা

পরিবার হোক বা কর্মস্থলে হোক কিংবা সামাজিক স্তরে সম্পর্কের টানাপোড়ন চলতে থাকে। সেক্ষেত্রে সহনশীলতা ও মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা কম থাকায় এই ধরণের দুশ্চিন্তার প্রকট বাড়ে।

প্রাকৃতিক দুশ্চিন্তা

কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কারণে দুশ্চিন্তা দেখা যায়। ব্যবসায় মন্দার কারণে, আর্থিক সংকটের কারণে, কঠিন রোগ হলে বা অহেতুক বদনাম হলে এই ধরণের দুশ্চিন্তা হয়ে থাকে।

মানসিক রোগের প্রতিকার

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন এর জন্য কিছু উপায় দেওয়া হল যা নিয়মিত অভ্যাস করলে ৯০ শতাংশ সুফল পাওয়া সম্ভব

1. মনের স্বাস্থ্যের যত্ন এর জন্য চাপ মুক্ত রাখা খুব জরুরী। যা রোজ হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে করা সম্ভব। নিয়মিত সকালে ১৫-২০ মিনিট প্রাণায়াম করলে মানসিক চাপ মুক্ত হয়।

2. দুশ্চিন্তা এলে বই পড়ুন, গান শুনুন বা সেবা মূলক কাজে যুক্ত থাকুন।

3. অনিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস মনের চাপ সৃষ্টকারী হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে তোলে। যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই নিয়মিত সুষম খাদ্য ও পরিমাণ মতো জল পান করতে পারেন।

4. নিজেকে কাউন্সিলিং করতে পারলে মানসিক রোগ থেকে উপকৃত হবেন। তাই নিজের সমস্যাগুলি একটি খাতায় লিখে নিন। এবার মন একাগ্র করে সমাধান খুঁজে বের করুন। দেখবেন এইভাবে অধিকাংশ সমস্যা নিজেই সমাধান করতে পারছেন।

5. আমাদের সবারই পর্যাপ্ত ঘুমের দরকার। নিয়ম হচ্ছে রাতে ঠিকমতো ঘুমানো আর দিনে কাজ করা। ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম মনের স্ট্রেস দূর করে।

6. মানসিক কোন সমস্যা হলে পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে ভাগ করে নিন। এতে মন হালকা লাগবে। দেখবেন সমস্যার সমাধানও হয়তো খুঁজে পাবেন।

7. মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন এর জন্য পারিবারিক সদস্যদের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহে অন্তত ১ দিন তাদের সঙ্গে বেড়াতে যান, আড্ডা দিন, খাওয়া- দাওয়া করুন। এতে মনের রোগ অনেকটাই সেরে যায়।

8. মন থেকেই দুশ্চিন্তার উৎপত্তি হয়। এই দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখার একমাত্র পথ মেডিটেশন। এটি হল মনের একাগ্রতা ও ইতিবাচকতা। এতে মনের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং সব পরিস্থিতিতে সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব হয়। এই কারনে মেডিটেশনকে অ্যান্টিবায়োটিকও বলা হয়ে থাকে। যা মানসিক সমস্যা দূরীকরণে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে থাকে।

9. মনের সমস্যা যে কোন কারনে হতে পারে। যেমন- ঘুমের সমস্যা, কথাবার্তা পরিবর্তন, অহেতুক মন খারাপ, অতি উত্তেজনা, ভাঙচুর করা, ভ্রান্ত বিশ্বাস ইত্যাদি। বিষয়টি এড়িয়ে না গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ বা সাইকোথেরাপি গ্রহণ করতে হবে।

10. রোজ সকালে উঠে ভালো চিন্তা করবেন। সুচিন্তা করার অভ্যাস হয়ে গেলে, সবকিছু মানিয়ে নেওয়ার অভ্যাসও হয়ে যাবে। দুশ্চিন্তা সমাধানের পথ নয়। এতে সমস্যা আরও জটিল হয়ে দাঁড়ায়। সুচিন্তা সমাধানের পথ দেখায়। শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হতে দেয় না।