পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাস্থ সাথী প্রকল্প – Swasthya Sathi Scheme

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনের কাজ শুরু করে দিল তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তর। কেবল টিভি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অপারেটর, সাব অপারেটর, তাঁদের কর্মচারী এবং কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের গ্রুপ হেল্থ ইনসিওরেন্স স্কিম ‘স্বাস্থ্য সাথী’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। পয়লা জুলাই থেকে গোটা রাজ্যজুড়ে এই ব্যক্তিদের নাম নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হচ্ছে। গোটা জুলাই মাস ধরেই চলবে এই কাজ। এরই পাশাপাশি কেবল টিভি’র ব্যবসাকে ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্প দপ্তরের অধীনে আনা হয়েছে।

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পটি মূলতঃ কেন্দ্র সরকারের RSBY প্রকল্পেরই নামান্তর। RSBY প্রকল্প বিনা পয়সায় দরিদ্র মানুষদের দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই RSBY প্রকল্পের ঊর্দ্ধসীমা ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে দেড় লক্ষ টাকা করে তার cotractual / daily rated worker দের জন্য (সিভিক পুলিশ, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী ইত্যাদি যারা Medical Allowance পান না) বিনা পয়সায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেছে। স্থায়ী শিক্ষকরা এই প্রকল্পের আওতায় আসতে গেলে প্রতি মাসে প্রাপ্য Medical Allowance ছেড়ে দিতে হবে।

সরকারী কর্মচারীরাও স্বাস্থ্যবীমার আওতায় পড়েন। ওদের জন্য ২০০৮ সালে WBHS চালু হয়। এতে খরচের কোন ঊর্ধসীমা নেই। কলেজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকরাও কয়েকমাস আগে এর অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। কিন্তু আমরা ওই একই পরিমান Medical Allowance (৩০০ টাকা) কাটিয়ে পাব মাত্র ১.৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবীমা যেটি মূলতঃ অসংগঠিত ক্ষেত্রের জন্য পরিকল্পিত। আইনত, এই প্রকল্পে একবার নাম নথিভুক্ত করার পর পরবর্তী বছরে রিনিউ না করার সুযোগ আছে কিন্তু বাস্তবে অটো রিনিউ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার জন্য সরকার নির্ধারিত প্যাকেজ অনুযায়ী নার্সিংহোমগুলিকে ক্যাশলেস সিস্টেমে সরাসরি টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু এই প্যাকেজ গুলির রেট বর্তমান বাজারদরের চেয়ে অনেক কম। কার্ডের মোট সাম আসিওর্ড ১.৫ লক্ষ টাকা হলেও ওই প্যাকেজের বাইরে কোন টাকা পাওয়া যাবে না। তার ফলে নামী-দামী হাসপাতাল-নার্সিংহোম গুলির মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রিফিউজ করার একটা প্রবণতা দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই ভর্তি হওয়া যাবে, তবে শুধুমাত্র লিস্টেড নার্সিংহোম গুলিতে। ওরা যদি সরকারী রেটে চিকিৎসা করতে রাজী হয় তবেই চিকিৎসা পাওয়া যাবে। ভর্তি না হলে শুধুমাত্র ডাক্তার দেখানোর বা ওষুধ কেনার খরচ পাওয়া যাবেনা। প্যাকেজের রেট গুলি দেখার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন-

http://swasthyasathi.gov.in/PackageDetails.aspx

পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া ভারতের আর কোথাও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চলবে না। কলকাতারও অধিকাংশ বড় প্রাইভেট হাসপাতালগুলি এর মধ্যে নেই, আছে শুধু মফস্বলের ছোট নার্সিংহোম গুলি। তালিকা ভুক্ত হাসপাতালগুলির নাম জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন-

http://swasthyasathi.gov.in/statedistrictwisehospitaldetail…

তবে স্বাস্থ্যসাথীর কয়েকটা সুবিধাও আছে; যেমন-

(১) এতে প্রি-এগজিস্টিং ডিজিজ বলে কিছু নেই। যেদিন থেকে নথিভুক্ত হবেন সেদিন থেকেই ক্লেম পাওয়া যাবে।

(২) মা-বাবা-শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে যুক্ত করার সুবিধা আছে। বয়স্ক মানুষদের আলাদা করে মেডিক্লেম করানো খুব একটা সুবিধাজনক নয়।

দেড় লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিতে গেলে বছরে (১২ x ৩০০) = ৩৬০০ টাকা Medical Allowance ছেড়ে দিতে হবে। স্বামী-স্ত্রী দুজনে চাকরী করলে ছাড়তে হবে (৩৬০০ x ২) = ৭২০০ টাকা। নতুন পে কমিশনে Medical Allowance ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে যদি ৫০০ টাকাও হয় তাহলে সেই হিসাবে একজন কে ছাড়তে হবে বছরে (৫০০ x ১২) = ৬০০০ টাকা। স্বামী-স্ত্রী দুজনে চাকরী করলে ছাড়তে হবে ১২০০০ টাকা। পেনশনভোগী মা-বাবা-শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে যদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তাদেরকেও একইভাবে Medical Allowance ছেড়ে দিতে হবে। নামকরা ইন্সুরেন্স কোম্পানি গুলির কাছ থেকে এর থেকে অনেক বেশি টাকার মেডিক্লেম পাওয়া যায় অনেক কম প্রিমিয়াম দিয়ে।

এই প্রসঙ্গে একটি নামকরা ইন্সুরেন্স পলিসির কথা উল্লেখ করছি যার নাম “ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ন্যাশনাল স্বাস্থ্য বিমা পলিসি”। যেকোনো বয়সের ব্যক্তি যার ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ায় Savings Account আছে তিনি তার স্ত্রী বা স্বামী এবং দুটি সন্তান সহ National Insurance Company থেকে এই মেডিক্লেম পলিসি করাতে পারেন। দেড় লক্ষ টাকার জন্য বছরে ২৭৭০ টাকা প্রিমিয়াম দিতে হয়। ৫ লক্ষ টাকার জন্য দিতে হয় বছরে ৭৪৩৪ টাকা। এটি একটি গ্রুপ মেডিক্লেম পলিসি বলে যেকোনো বয়সের ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম একই লাগে।

ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ন্যাশনাল স্বাস্থ্যবীমা পলিসি সম্বন্ধে জানতে এই লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।

http://oldsite.bankofindia.co.in/english/swasthya.aspx

এই মেডিক্লেম পলিসির নেটওয়ার্ক হাসপাতালের তালিকা জানতে এই লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন-

https://network.medibuddy.in

সব শেষে বলি, কারো যদি এক্সিস্টিং কোন মেডিক্লেম পলিসি থেকে থাকে, তখন সেটা বন্ধ করা বা পরিবর্তন করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা। কারণ যেকোন হেলথ পলিসিতে সিনিওরিটি আর কন্টিনিউটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যসাথী করুন আর নাই করুন, এক্সিস্টিং মেডিক্লেম পলিসি বন্ধ করবেন না।

শেষ কথা 

বন্ধুরা আমাদের জন্মের পরে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানান রকমের সাস্থের অবনতি ঘটে। প্রত্যেকের জীবনে স্বাস্থ কিন্তু একটা বড়ো ভূমিকা পালন করে অর্থাৎ আমরা সবাই জানি আমাদের স্বাস্থ যদি ঠিক না থাকে তাহলে কোনো কাজ করতে পারবো না ঠিক মতন। সেই সূত্রে ছোট বড়ো সব রকমের অসুখ আমাদের করে থাকে। কিন্তু সেই সূত্রে যারা বড়োলোক তারা তো ঠিক মতন চিকিৎসা করে ঠিক হয়ে যান বা যাবেন, কিন্তু একবার ভাবুন তো যাদের নুন আন্তে পান্তা ফুরোয় তাদের কি হবে ? চিকিৎসা তো দূরের কথা ওরা তো ঠিক মতন জীবন জাপানি করতে পারেন না। তাই সব কিছুর কথা মাথায় ররেখে আমাদের বর্তমান সরকার স্বাস্থ সাথী একটা প্রকল্প আনেন যাতে করে সবাই বিনা চিকিৎসায় মারা না যান , সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় বিনা মূল্যে এই চিকিৎসা করে থাকে সরকারি হাসপাতাল গুলিতে। শুধু তাই নয় যাতায়াত এর ভাড়া বাবদ ২০০ টাকা নগদ দেওয়া হতো যা এখন ৪০০ টাকে  করে দেওয়া হয়।  এমনকি বেশ কিছু  বেসরকারি হাসপাতাল মানে নার্সিং হোম ও আছে যেখানে স্বাস্থ  সাথী প্রকল্প প্রযোজ্য। আর চিন্তা কি সাস্থ সাথী যেখানে বিপদ আর ভয় নাই সেখানে।  আপনার কাছে যদি স্বাস্থ সাথির কার্ড না থাকে তাহলে আপনাদের স্থানীয় পৌর পিতা বা পৌর মাতার কাছে গিয়ে একটু যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।