শামসুর রহমান – জীবনী সংক্ষেপ
শামসুর রাহমান (জন্মঃ অক্টোবর ২৩, ১৯২৯, মাহুতটুলি, ঢাকা – মৃত্যুঃ আগস্ট ১৭, ২০০৬ ) বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ভাগে দুই বাংলায় তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও জনপ্রিয়তা প্রতিষ্ঠিত। তিনি একজন নাগরিক কবি ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তাঁর দুটি কবিতা খুবই জনপ্রিয়।
জন্ম নানাবাড়িতে। বাবা মুখলেসুর রহমান চৌধুরী ও মা আমেনা বেগম। পিতার বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরায় পাড়াতলী গ্রামে। কবিরা ভাই বোন ১৩ জন। কবি ৪র্থ। পুরোনো ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ১৯৪৫ সালে। ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই এ পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে ভর্তি হন এবং তিন বছর নিয়মিত ক্লাসও করেছিলেন সেখানে। শেষ পর্যন্ত আর মূল পরীক্ষা দেননি। পাসকোর্সে বিএ পাশ করে তিনি ইংরেজি সাহিত্যে এম এ (প্রিলিমিনারী) পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেও শেষ পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।
শামসুর রহমান হলেন বাংলাদেশের তথা ভারতের একজন অন্যতম সেরা কবি, যার লেখায় বরাবর ভারত ও বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক এসেছে। একজন সাধারণ মানুষ যে সমাজের একেবারে মাটির কাছাকাছি থেকে সেরম জায়গা থেকে, সেই দৃষ্টি কোন থেকে দেখা সমাজ ও দেশের কথা বলেছেন তিনি তার লেখার মধ্যে দিয়ে। কর্মক্ষেত্রে বহুদিন সংবাদ মাধ্যমের সাথে থাকার ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও চাপান উতর খুব কাছ থেকে দেখেন তিনি, এবং সেই সমস্ত কথাই ধরা পরে তার লেখায়। বার বার যুব সম্প্রদায়ের ওঠার কথা বিদ্রোহের কথা বলেন তিনি। উনিশ শতকে ভারত ও বান্গ্লাদেশে জুড়ে চলতে থাকা ধর্মীয় রাজনীতি ও শোষণ এর বিরুদ্ধে কথা বলেন তিনি, এবং লেখক জীবনের শুরু থেকেই পড়তে হয় বিভিন্ন ধর্মীয় ও রাজনৈতিনক চরম পন্থীদের রোষের মুখে। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ইংরাজি সাহিত্যে বি এ করেন কিন্তু কোনো পরীক্ষা দেন নি। তারপর সেখান থেকেই এক ই বিষয়ে এম এ করেন। এবং বেশ অনেক বছর সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। এর সঙ্গে সঙ্গে চলে তার লেখা, তিনি ১৮ বছর বয়স থেকে লেখা শুরু করেন, শামসুর রহমানের প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই হল প্রথম জ্ঞান দ্বিতীয় মৃত্যুর। আগে। রহমানের কবিতা বেশির ভাগ অক্ষরবৃত্তে লেখা হাত, যা আমরা দেখতে পেয়েছি জীবননান্দ দাসের লেখায়। এছাড়াও তিনি কিছু কিছু খেলা মাত্রা বৃত্ত ও স্বরবিরত্বেও লেখেন। তাঁর লেখা আসাদের শার্ট বাংলায় লেখা অন্যতম গুরত্বপূর্ন একটি রচনা।
শামসুর রহমান
শামসুর রহমানের লেখা আমাদের বাংলাইদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় কারন,আসল জীবনে তিনি একজন অত্যন্ত শান্ত নম্র মানুষ হলেও লেখার মধ্যে তিনি একজন অসম্ভব দুঃসাহসী একজন মানুষ, কোনো ভয় তাকে যে কোনো রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে লিখতে বিন্দুমাত্র ভয় দেখতে পারতো না। ফলত লেখক জীবনের শুরু থেকে তাকে বহু বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। শামসুর রহমানের লেখার মধ্যে ৯৯ দশকের বাংলায় হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় তর্জা ও মতভেদের সম্মন্ধে যে দৃষ্টি কোন ফুটে উঠেছে তা খুব কম লেখকদের মধ্যে পাওয়া গেছে। তার লেখায় যুব সমাজের বিপ্লব, যুবশক্তিকে অকুতভয় হয়ে ওঠার কথা বলা হয়েছে বার বার। তিনি তার লেখার মধ্যে বিপ্লবের রোমাঞ্চ ও তার প্রয়োজনের কথা তুলে ধরেছেন অসাধারন নিপুণতায়। প্রেম সম্পর্কিত লেখা তার এখনো পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও তা থাকবে সারাজীবন। প্রেম নিয়ে তার ভাবনা ও বিপ্লব ও যে এক প্রকার প্রেম ও তার সাথেই এক অন্য সম্পর্কে থাকা যায় কোনো নারী চরিত্র ছাড়া তা অসামান্য ছন্দে বেঁধে বুঝিয়েছেন শামসুর রহমান। কবিতা প্রেমিক হোক আর জীবন প্রেমিক শামসুর রহমানের কবিতা সবার জন্যেই এক ই স্বপ্ন বয়ে নিয়ে আসে, গড়ে দেয় সেই আশা যা দিয়ে গড়া যায় নতুন পৃথিবী।
1. রুপালি স্নান – শামসুর রহমান
2. জার্নাল, শ্রাবন
3. প্রেমিকের গুণ
4. কবিতার অন্তঃপুরে
5.১৩৫৭-র একটি দিন
6. বৃষ্টির দিনে
7.
8.
9.
10.
শেষ কথা
বাঙালি জীবনে কবিতা এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, প্রেম মানেই কবিতা আর ভয়ঙ্কর প্রেম মনে উপন্যাস। আর যেখানে শামসুর রহমান থাকে সেখানে হয় অন্য সমস্ত কবিতা যা পড়লে প্রেম আপনার কাছে হয়ে ওঠে একটি মূর্ত অনুভূতি যা আপনার খাওয়া – ঘুমের মতই প্রয়োজনীয় ও অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। প্রেমের থাকা বা না থাকা কোনোটাই আপনাকে শামসুর রহমানের এই সমস্ত অসামান্য সৃষ্টির রসাস্বাদন থেকে আটকে রাখবেন কোনো তাই। রক্ত মাংসের মানুষ হলে, রাগ – ক্ষোভ – ভালো লাগা র মত অনুভূতি গুলো কাজ করলে আপনি শামসুর রহমানের কবিতা বুঝবেন আর শুধু বুঝবেন ই না সেই নিয়ে ভাববেনও, কারন শেষ মেশ সমস্ত সৃষ্টির উদেশ্যই হল আমাদের ভাবানো, আমাদের মত সাধারণ মানুষের জীবনে যে সাধারণত্বের খোলস ছেড়ে আমরা বেরিয়ে আস্তে পারিনা, সেই খোলস ছাড়িয়ে এক অসাধারণত্বে উত্তরণ ঘটানোই সমস্ত সৃষ্টির উদ্যেশ্য। আর সেই অসাধারণত্বের পথে খানিকটা এগিয়ে দেওয়ার ই চেষ্টা হল এখানে।