গর্ভাবস্থায় , গর্ভাবস্থায় খাবার

বিয়ের পরে মা হবার স্বপ্ন কে না দেখে, আর এই স্বপ্ন যখন সত্যি হয়ে যায় তখন একটা মায়ের কাছে সেটা পৃথিবীর সেরা সুখ ও সেরা অনুভূতি। আমরা সবাই জানি যে এর পিছনে আছে অনেক কষ্ট অনেক জ্বালা যন্ত্রনা। কিন্তু আমাদের এই পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তা একমাত্র এই ক্ষমতা দিয়েছেন একজন মা কে। বন্ধুরা আজ আমরা জানবো যে গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবারে কী কী উপকারিতা আছে।

 আমাদের দেশে প্রত্যেক দিনে হাজার হাজার লক্ষ্য লক্ষ্য মহিলারা মা হন। তার জন্য অনেক সময় ধরে  অপেক্ষা করতে হয়। মোটামুটি  ৮ থেকে ১০ মাস অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে এখন আর এত্ত সময় লাগে না কারোর ৭, কারোর ৮, আবার কারোর ৯ মাসেই মা হয়ে যান। আর এই সময় ধরে থাকে নানানা সাবধানতা থেকে শুরু করে খাবার দাবার এরভালো  পরিচর্চা। তার থেকে উঠে আসে ভালো বিশ্রাম আর নানান ধরণের খাবারের কথা।

গর্ভবতী মহিলাদের স্বভাবতই খুব বেশি খিদে পায় এবং সেই সময়ে সঠিক পরিমাণে ও গুণমানের খাওয়ার খাওয়া তাঁদের জন্য খুব জরুরী। কেননা এই খাবার ও ভিটামিন মায়ের সাথে সাথে শিশুরও শরীর গঠন ও বেড়ে ওঠায় কাজে লাগে। গর্ভবতী অবস্থায় সব মায়েরই প্রয়োজন পড়ে সঠিক পরিমান বিশ্রাম ও খাওয়াদাওয়া ইত্যাদির।

বন্ধুরা আজ আমি একটা কথা দায়িত্ব গর্ভাবস্থায় নারীদের খুব সচেতন থাকতে হয় কি তাই তো নাকি ? এ সময় চলাফেরা, জীবনধারণ ও খাদ্যের ব্যাপারে সচেতন হলে অনেক ঝুঁকি এড়ানো যায়। তাই পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার তথা সুষম খাবার খাওয়া জরুরি। গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকায় ড্রাই ফ্রুটস ও বাদাম থাকা ভালো। এপ্রিকট, ডুমুর, আপেল, আখরোট, বাদাম, কিসমিস ও পেস্তা বাদাম গর্ভবতী মায়েদের জন্য স্বাস্থ্যকর।   কারণ এতে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিন এবং খনিজ যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন রয়েছে। গর্ভাবস্থায় ডাব ও গর্ভাবস্থায় বাদাম খাওয়াও খুব ভালো। তাহেল জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় কিছু খাবারের উপকারিতা।

গর্ভাবস্থায় মধু খাওয়ার উপকারিতা

বন্ধুরা আমরা মধু কম বেশি সবাই খাই তবে মধু বেশিরবাগ মানুষ শীতকালেই সেবন করে থাকে। আর মধু শুধু সুস্বাদুই নয় এবং পরিমার্জিত চিনির জন্য খুব ভাল বিকল্পই নয়, এতে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহ এবং বিভিন্ন ধরণের অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি রয়েছে । হাজার হাজার বছর ধরে মধুকে খাদ্য ও ঔষধে ব্যবহার করা হয়েছে এবং এটি প্রাকৃতিক মিষ্টিকারক হিসাবে সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে । রান্নাতেও এর অনেক কাজ। মধুকে বিশেষত মা হতে চলা মহিলাদের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয় ।

গর্ভবতী মহিলারা বা মেয়ের যা খেতে পারে সে সম্পর্কে অনেক রকম সতর্কতা অবলম্বন করে এবং বিশেষত নষ্ট বা অস্বাস্থ্যকর খাবার  গ্রহণের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে । বেশিরভাগ মিষ্টি খাবার যাদের জীবনের কম সময় থাকে, তবে মধু, যখন সিলযুক্ত পাত্রে সংরক্ষণ করা হয় তখন বেশ কয়েক বছর ধরে স্থায়ী হতে পারে কারণ অধিকাংশ মাইক্রোবায়াল প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ওঠে না ।

গর্ভাবস্থায় মধু প্রায়ই অপরিবর্তনীয়। যদি ভবিষ্যতে মায়ের এই পণ্য এলার্জি না থাকে, তবে এটি শীতলতা জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও, শরৎ-শীতের সময় ঠান্ডা প্রতিরোধ করার জন্য মধু নিখুঁত।

গর্ভবতী মহিলাদের বিষাক্ত রোগে আক্রান্ত হওয়া, মধু উদ্ধারের জন্যও আসতে পারে, কারণ এটি বিরক্তিকর এবং বমি বমি ভাব প্রতিরোধ করতে পারে। একটি সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর ত্বক সংরক্ষণ করতে, মধু চামড়া সমস্যা যাকে আমরা চর্ম রোগ বলি তার জন্য খুব উপকারী। গর্ভাবস্থায় মধু অত্যন্ত কার্যকর, কারণ এটি ভবিষ্যতে মায়ের সব প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মাইক্রোএইচমেন্টের পাশাপাশি অ্যামিনো এসিড সরবরাহ করে যা কোষ ও টিস্যুর গঠনে অংশ নেয়। একটি গর্ভবতী মহিলার জন্য মধুর প্রস্তাবিত ডোজ হয় পঞ্চাশ এক শত গ্রাম একটি দিন বা দুই থেকে তিন টেবিল চামচ। শুধু পড়লেই হবে না একটু মেনে চলুন।

গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা

বন্ধুরা আমরা অনেকেই জানি যে ডালিমে ক্যালসিয়াম, ফোলেট, লোহা, প্রোটিন এবং ভিটামিন সি রয়েছে। সুতরাং, গর্ভাবস্থায় তাদের অত্যন্ত সুপারিশ করা হয়। আর তাছাড়া ডালিম বা বেদনা মানেই উপকার সেটা আমরা সবাই জানি। ছোট হলে ডালিম আর বড়ো লাল রঙের হলে বেদনা বলি আমরা।

ডালিম ফলটি খাওয়া একটা স্বাস্থ্যকর পছন্দ,কারণ এতে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান যা গর্ভাবস্থায় আপনার দেহে সরবরাহ হয়ে থাকে। ডালিম আপনার ডায়েটে অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে আপনার গর্ভাবস্থার ঠিক প্রথম মানে ওই ৩ মাস থেকে। ডালিমের দানাগুলি স্বাদে অতুলনীয় এবং সেগুলি যে বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানগুলি সরবরাহ করে থাকে সেগুলি ভ্রূণের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমি একটা কথা বলবো যে ডালিম খাওয়ার সময় ভালো করে চিবিয়ে তার রস খাওয়া ভালো, আর ছিবড়ে গুলো ফেলে দিন। যখন কোনও মহিলা গর্ভবতী হন,তিনি এমন ধরণের খাবারগুলির দিকে ঝোঁকেন যেগুলি তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পূরণ করতে সহায়তা করে এবং তার সাথে তার স্বাদকোরকগুলিকেও পরিতৃপ্ত করে তলে।যদি আপনি সন্তানসম্ভবা হয়ে থাকেন,তবে স্বাস্থ্যকর খাবারগুলি খাওয়া আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। 

গর্ভাবস্থায় বেল খাওয়ার উপকারিতা

বেল এমনি একটা জিনিস যা আমরা অনেকেই খাই আবার বেলের শরবত হলে তো আর কোনো কোথায় নেই। বন্ধুরা আমরা বাজারে অনেক ফলই কিনি। কিন্তু একটি ফল আমরা তেমন কিনি না সেটি হল বেল। বেল অনেকেই পছন্দ করেন না, আবার অনেকেই পছন্ধও করেন। আসলে যারা পছন্দ করেন না তারা এর উপকারিতা কি সেটা জানেন না তাই পছন্দ করেন না।  কিন্তু প্রচণ্ড গরমের দাবদাহে একটু বেলের সরবতে যেন প্রান জুড়িয়ে যায়। গরমে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে বেলের সরবতের উপকারিতা নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। কিন্তু শুধু পেট ঠাণ্ডা নয়, বেলের আছে আরও নানা রকম গুণ। যেগুলি আমরা তেমন জানি না। বেলে আছে এমন কিছু উপাদান যা খুব কম ফলেই পাওয়া যায়। যেমন এতে আছে প্রোটিন, শর্করা, থায়ামিন, ক্যারোটিন, নিয়াসিন ও আরও অনেক পুষ্টিগুন। একটা কথা আমরা সবাই জানি যে বেল ২ রকমের হয়ে থাকে ১. পাকা বেল ২. কৎবেল। কৎবেল মানেই বাঙালি মেয়েদের ভালোবাসা, বাঙালি মেয়েদের সবচেয়ে প্রিয় চটপটি খাবার। আর আপনি যদি সন্তানসম্ভবা হন, তা হলে তো কথাই নেই। লঙ্কা, তেল দিয়ে কৎবেল মাখাই যেন অমৃতসমান তখন। মুখে রুচি না থাকলে আগেভাগেই বেল মেখে খেতে শুরু করে দিই আমরা। মৌসুমী ফল হিসেবে কৎবেলের জুড়ি মেলা ভার! উষ্ণ গরমের এই সময়ে টকস্বাদের কৎবেলের ভর্তা বা শরবতই শরীর ঠান্ডা করবে, তেমনই এর নানা ওষধি আর পুষ্টিগুণ সুস্থ-সবলও রাখবে আপনাকে।

কৎবেলে আছে এমন কিছু উপাদান, অন্য় ফলে একসঙ্গে যা পাওয়া যায় না বললেই চলে। এই পুষ্টিকর উপাদানগুলির মধ্য়ে অন্য়তম হল কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন-সি, ক্য়ালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ইত্য়াদি। এত গুণসমৃদ্ধ ফল, গর্ভাবস্থায় খেলে তা হলে অসুবিধা কী? এই প্রশ্ন আপনার মনে জাগতেই পারে এখন। তা হলে আগে দেখে নিন কৎবেল কেন ভালো। তারপরে এর ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়েও আলোচনা করব আমরা!

প্রতি ১০০ গ্রাম কৎবেলে থাকে ৮৫.৬ গ্রাম জলীয় অংশ, খনিজ পদার্থ ২.২ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৪৯ কিলো ক্যালোরি, আমিষ ৩.৫ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, শর্করা ৮.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫৯ মি. গ্রাম, ভিটামিন সি ৩ মি. গ্রাম।

 

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা ফলের তালিকার শীর্ষে রয়েছে কারণ ফোলেট, ভিটামিন সি, বি6, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো মূল পুষ্টি রয়েছে। ফোলেট স্নায়ু টিউব ত্রুটি থেকে ভ্রূণকে রক্ষা করার কাজ করে, ভিটামিন বি6 আপনার সোডিয়াম মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ভারসাম্যহীন তরলের মাত্রা গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে বমি বমি ভাব এবং বমি করাতে পারে, কিন্তু কলার মধ্যে পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ একটি সুস্থ তরল ভারসাম্য নিশ্চিত করে। সাধারণত, আপনার প্রথম ত্রৈমাসিকের সময় প্রতিদিন একটি কলা খেতে সুপারিশ করা হয়।