সাহসী হতে না পেরে কেরিয়ারের শীর্ষে থাকতেই ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যান বলিউডের আর এক স্বপ্নসুন্দরী

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। মাধুরীর পর তাঁর রূপেই মুগ্ধ হয়েছিলেন মকবুল ফিদা হুসেন। এঁকেছিলেন অনেক ছবি। হুসেনের মতো গুণমুগ্ধ ছিলেন আরও অনেকে। কিন্তু তার পরেও বলিউডে তাঁর স্থায়িত্ব ছিল অল্পসময়ের। হঠাৎ এসে এক ঝলক তাজা বাতাস ছড়িয়ে ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যান অমৃতা রাও।

১৯৮১ সালের ৭ জুন অমৃতার জন্ম মুম্বইয়ের এক রক্ষণশীল পরিবারে। স্বাধীনতা সংগ্রামী অমৃত রাওয়ের নামে তাঁর নামকরণ করেন তাঁর ঠাকুরদা। অমৃতার বাবা একটি বিজ্ঞাপনের এজেন্সি চালান। তাঁর যমজ বোন প্রীতিকাও অভিনেত্রী।

রক্ষণশীলতার বেড়াজাল পেরিয়ে কলেজজীবনেই শুরু মডেলিং। নবাগতা হিসেবে অমৃতা নজর কাড়েন আলিশা চিনয়ের ‘ও প্যায়ার মেরা’ মিউজিক অ্যালবামে। ২০০২ সালে প্রথম অভিনয় ছবিতে। ‘অব কে বরস’ ছবিতে তিনি ছিলেন ‘অঞ্জলি থাপা-র’ চরিত্রে।সে ছবিতে তাঁকে দেখে মুগ্ধ হন চলচ্চিত্র সমালোচকরা। অভিনয় প্রতিভার পাশাপাশি প্রশংসিত হয় তাঁর নৃত্যদক্ষতা এবং নিষ্পাপ সৌন্দর্য।

সে ছবিতে তাঁকে দেখে মুগ্ধ হন চলচ্চিত্র সমালোচকরা। অভিনয় প্রতিভার পাশাপাশি প্রশংসিত হয় তাঁর নৃত্যদক্ষতা এবং নিষ্পাপ সৌন্দর্য।পরের বছর, ২০০৩ সালে তিনি অভিনয় করেন শাহিদ কপূরের বিপরীতে ‘ইশক ভিশক’-এ। বক্স অফিসে সুপারহিট হয় সেই রোমান্টিক ড্রামা। এর পর বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে অ্যাডাল্ট কমেডি ‘মস্তি’-ও দাগ কেটে যায় দর্শকদের মনে।

পাশাপাশি তারকাখচিত ছবি ‘ম্যায়ঁ হু না’ এবং ‘দিওয়ার’-এও অন্যান্য অভিনেতা অভিনেত্রীদের পাশে সাবলীল অভিনয়ের ছাপ রেখে যান অমৃতা।

২০০৬ সালে মুক্তি পায় শাহিদ কপূর-অমৃতা রাওয়ের সুপারহিট ছবি ‘বিবাহ’। এই ছবির সুবাদে অমৃতা চলে আসেন জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে। এটাই তাঁর কেরিয়ারের সফলতম ছবি।

ঠিক এখান থেকে তাঁর কেরিয়ার উঠতে পারত রকেট গতিতে। কিন্তু তার বদলে কেরিয়ারগ্রাফ নেমে যায় খাদের দিকে। ২০০৮ সালে নবাগত নিখিল দ্বিবেদীর বিপরীতে তাঁর ছবি ‘মাই নেম ইজ অ্যান্টনি গঞ্জালভেস’ ছবিটি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়।

খাদের মুখে চলে গিয়েও অমৃতা ফিরে এসেছিলেন শ্যাম বেনেগালের ‘ওয়েলকাম টু সজ্জনপুর’ ছবির হাত ধরে। সমালোচকদের দরবারে ছবিটি উচ্চ প্রশংসিত হয়। শ্রেয়স তলপাড়ের বিপরীতে অমৃতার অভিনয় ছিল ছবির অন্যতম মূল সম্পদ।

কিন্তু সাফল্যের রেশ ধরে রাখতে পারেননি অমৃতা। তাঁর ‘ভিকট্রি’ ছবিটি সাফল্য পায়নি। ‘হে বেবি’, ‘লাইফ পার্টনার’-এর মতো ছবিতে অতিথি ভূমিকায় অভিনয় করেও কেরিয়ারের ভাঙা পালে নতুন বাতাস লাগেনি।

প্রায় তিন বছরের বিরতি নিয়ে অমৃতা আবার ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরে আসেন ২০১৩ সালে। দ্বিতীয় ইনিংসে বেছে বেছে ছবিতে সই করেন তিনি। এই পর্বে তাঁর সাফল্য অনেক বেশি।

‘জলি এল এল বি’, ‘সিং সাব দ্য গ্রেট’, ‘সত্যাগ্রহ’-র মতো ছবি অমৃতার কেরিয়ারে নতুন পালক যোগ করে। কিন্তু অমৃতা নিজের কেরিয়ার লম্বা করতে চাননি। সাত বছরের প্রেমপর্বের পরে ২০১৬ সালে তিনি বিয়ে করেন রেডিয়ো জকি আনমোলকে।

বিয়ের পরে কাজ করা অনেক কমিয়ে দিয়েছেন অমৃতা। তবে স‌ংক্ষিপ্ত কেরিয়ার নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁর। জানিয়েছেন, তিনি বিভিন্ন রকমের ভূমিকায় অভিনয় করতে চেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু কোনওদিন পর্দায় তথাকথিত ‘সাহসী’ হতে চাননি।

সে কারণে তাঁর কেরিয়ার দীর্ঘ হয়নি বলে মনে করেন অভিনেত্রী। কিন্তু কোনও কারণেই নিজের মূল্যবোধের সঙ্গে আপস করতে চাননি তিনি। শুটিঙের আগে চরিত্র সম্বন্ধে না জেনে রাজি হননি কোনও ছবির জন্যেই। চরিত্র নিয়ে অস্পষ্টতা ছিল বলে ফিরিয়ে দিয়েছেন শ্যাম বেনেগালের মতো পরিচালককেও।

রাজি হননি শ্যাম বেনেগালের ‘ওয়েলডান আব্বা’ ছবিতে অভিনয় করতে। অসম্মত হন ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’-তে সলমন খানের বোনের ভূমিকায় অভিনয় করতে। রণবীর কপূরকে পর্দায় চুমু খেতে হবে বলে ছেড়ে দেন যশরাজ ফিল্মসের ছবিও। ফিরিয়ে দেন হলিউডের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগও।