জেনে নিন আত্মহত্যার সহজে বোঝার ৫টি লক্ষণ – Suicide Causes In Bengali

আপনি কি কাউকে সন্দেহ করছেন যে সে কিছু একটা করে বসতে পারে ? বা আপনি কি কাউকে সন্দেহ করছেন যে সে আত্মহত্যা বা তেমন কিছু একটা করে বসতে পারে তাহলে আমার এই পোস্ট তা একটু মন দিয়ে পরে নিন।

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের আত্মহত্যার বোঝার কিছু কারণ বলবো। অর্থাৎ আপনি কীভাবে বুঝতে পারবেন যে অন্য একজন আপনার যে কাছের মানুষ বা কেউ একজন মানুষিক অশান্তিতে আছেন সে আত্মহত্যা করবেন  বা আত্মঘাতী হবেন কিনা ? চলুন একটু   দেখে নেওয়া যাক।

ল্যাটিন ভাষায় সুই সেইডেয়ার থেকে আত্মহত্যা শব্দটি এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে নিজেকে হত্যা করা। যখন কেউ আত্মহত্যা করেন, তখন জনগণ এ প্রক্রিয়াকে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে। ডাক্তার বা চিকিৎসকগণ আত্মহত্যার চেষ্টা করাকে মানসিক অবসাদজনিত গুরুতর উপসর্গ হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।

Sushant Singh Rajput – সুশান্ত সিং রাজপুতের এই খারাপ পরিণতি হয়তো আমাদের আরও একবার মনে করিয়ে দিল, মানসিক সমস্যা নিয়ে মুখ বুজে থাকলে এ ভাবেই তাঁর খেসারত দিতে হতে পারে৷ কিন্তু এই সময়  ‘ডিপ্রেশন’ শব্দটির সঙ্গে বর্তমান যুগের পরিচয়টা খুবই স্বাভাবিক ও খুব দ্রুত নানান কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সব থেকে বড়ো কথা যে এই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বহুল প্রচলিত একটি শব্দ- ‘ডিপ্রেশন‘। রবিবার সকালে মুম্বইয়ের বান্দ্রার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় সুশান্ত সিংহ রাজপুতের দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের দাবি, গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। আমাদের চেনা পরিসরেও এই ধরনের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন বা প্রতিনিয়ত । কিন্তুন কেন সবাই এই রকম করছে ? আমার এলাকায় ৬ মাসে ৭ জন এমন মানুষ আছেন যারা এটার শিকার হয়ে এই কাজটি করেছেন। একটাই প্রশ্ন কেন কি জন্য ? বলতে  সুন্দর পৃথিবী থেকে একটা একটা করে বহু মানুষ আছেন যারা এই আত্মঘাতী শিকার হয়ে উঠছেন দিনের পর দিন।

আমাদের নিজেদের জীবন শেষ করার ক্ষমতা রয়েছে ৷ প্রতিবছর এক মিলিয়ন মানুষ এই পথ বেছে নেয় ৷ এমনকি যে সব সমাজে আত্মহত্যা বেআইনী বা নিষিদ্ধ সেখানেও মানুষ আত্মহত্যা করে ৷ যাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয় তাদের মনে হয় আর কোনো পথ নেই ৷ সেই মুহুর্তে মৃত্যুই তাদের জগতের বর্ণনা হয়ে ওঠে এবং এদের আত্মহননের এই সুতীব্র ইচ্ছাশক্তিকে কখনওই অগ্রাহ্য করা উচিত না- এই অনুভূতি সত্যিকার, শক্তিশালী ও তাত্ক্ষনিক৷ জাদুবলে এটা সরিয়ে তোলা যায় না ৷

কখনও কাজের চাপে বলা যেতে পারে, কখনও বা অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ার ভয়ে, রোজকার জীবনে অবসাদ গ্রাস করে চলেছে। গোটা বিশ্বেই ডিপ্রেশন বা বিষন্নতাকে এক ভয়াবহ ব্যাধি বলে মনে করা হয়। মন খারাপ, স্ট্রেস, কাজের চাপ এ সব আজকাল আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। চাইলেও আপনি তার থেকে পালিয়ে যেতে পারবেন না। তার মধ্যে থেকেই কেউ বেড়াতে গিয়ে, কেউ ছবি তুলে, কেউ বা গান শুনে ভালো থাকা চেষ্টা করেন। আর এই ছোট ছোট আনন্দের মুহূর্তগুলির মধ্যেই জীবনের কঠিন সময়টা এড়িয়ে যাওয়া যায় সহজেই।

কিন্তু যারা ডিপ্রেশনে ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে অঙ্কটা এত সহজ হয় না। মন খারাপের অন্ধকারে তাঁরা ক্রমশ তলিয়ে যেতে আরম্ভ করে। এমনকী কাছের মানুষের সঙ্গেও ভাগ করে নিতে পারেন না সে মলিনতা। মোটামুটিভাবে এই পাঁচটি লক্ষণ তদের মধ্যে দেখা গেলেই বোঝা যাবে যে তাঁরা ডিপ্রেশনের শিকার হতে চলেছেন। যাইহোক আর সময় নষ্ট না করে আসল কোথায় আসি, চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী-

নিরাশ লাগবে সারাক্ষণ:-

যে কোনও পরিস্থিতিতেই আগে নেগেটিভ চিন্তাভাবনা তার মাথায় আসবে। অবসাদগ্রস্থ হওয়ায় সে নিজেকে অসহায় মনে করবে। কোনও কাজই তার করতে ইচ্ছে হবে না।

আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না:-

কান্না, রাগ, বিরক্তি – কোনওটার উপরই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন না সে। সোজা কথায় ধরতে গেলে মুড সুইং হতে থাকবে। খেলাধুলো, গান শোনা, বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা দেখতে যাওয়ার নাম শুনলেই ক্লান্তি আসবে। উৎসাহ পাবে না কিছুতেই। কোনও হবি বা বিনোদনই তাকে আর আকর্ষণ করবে না।
ঘুমের সমস্যা:-

ডিপ্রেশন প্রথমেই আপনার এনার্জির ভাঁড়ারে থাবা বসাবে, যে যে কাজগুলো করতে একটা সময়ে ভালো লাগত, সেগুলো আর উপভোগ করবেন না এবং সারাদিন ক্লান্তিতে ভুগবেন। অথচ ঘুম আসবে না।

নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া:-

পরিবার-পরিজন থেকে নিজেকে দুরে সরিয়ে রাখবে। একসময় যাদের পছন্দ করত তাদের থেকেও সরে আসবে। সামাজিক যে কোনও অনুষ্ঠান থেকে নিজেকে বিরত রাখবে সে। নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মাবে। মনে হবে সে কোনও কর্মের নয়।

আত্মহত্যার জন্য নিজেকে প্রসতুত করবে:-

নিজে ব্যক্তিগত সম্পত্তি অন্য কাউকে দিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। অথবা গুরুত্বপূর্ণ দলিল গুলিতে স্বাক্ষর করে রাখা। এই সমস্ত লক্ষণগুলি দেখলে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক হন।

শেষ কথা 

আমরা সবাই একটা কথা জানি যে আত্মহত্যা করা উচিত নয়, এটা করা খুব খারাপ, এটা করা পাপ ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু বিশ্বাস করুন আত্মহত্যা করার সময় সত্যি এইসব কিচু মাথায় আসেনা। সে বিনা কারণে এই পথ বেঁচে নেয় না। অনেক কারণে শেষ পর্যন্ত এটাকেই বেছে  নিতে বাধ্য হয়। একমাত্র আমরাই পারি একে অপরকে সাহায্য করতে। আসুন না আমি বা আপনি বা আমরা সবাই মিলে একসাথে একে ওপরের সাহায্য করি, কথা বলি, একটু ঘুরতে যাই। আপনার চেনা পরিচিত এমন কিছু ঘটনার করাবার আগেই আপনাকেই সাহায্য করতে হবে। বাঁচাতে হবে একটি প্রাণ। ভালো থাকবেন ভালো রাখবেন। র মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান ইত্যাদির কথাটা একটু ভাববেন।