একবার দেখে নিন থাইরয়েডের অসুখের জন্য মূখ্য ১০ টি ঘরোয়া প্রতিকার

আপনি কি থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন ? আপনি কি কিছু কার্যকরী ঘরোয়া প্রতিকার খুঁজছেন ? তার আগে থাইরয়েড কি, থাইরয়েড এর কারণ ও এর প্রকার সম্পর্কে আপনাদের কিছু জানাই। থাইরয়েড হল একটা গ্রন্থি, যা আপনার শারীরিক বিপাক ক্রিয়া (metabolism) নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও থাইরয়েড বলতে আমারা একটি শব্দই বুঝি, কিন্তু এ দুই প্রকারের হয়। প্রথমটি “হাইপোথাইরডিসম” এবং দ্বিতীয়টি “হাইপারথাইরডিসম”। থাইরয়েড হরমোনের অপর্যাপ্ত ক্ষরণ দ্বায়ী হাইপোথাইরডিসমের জন্য, অপরদিকে থাইরয়েড হরমনের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষরণকে হাইপারথাইরোডিসম বলে। যদিও, এই অনিয়মিত থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণের আসল কারণ দেহে আয়োডিনের অভাব। কখোন কখোন এমন কিছু পরিস্থিতিতে পেতে পারেন, যেখানে গলগণ্ড, ক্যান্সার বা সিস্ট-এর মতোন কিছু গুরুতর অসুখও থাইরয়েড রোগের একটি সংকেত হতে পারে।  আমরা দেখে নেবো থাইরয়েড সমস্যার সমাধান। থাইরয়েড কি খাওয়া বারণ ও থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায়, থাইরয়েড নিষিদ্ধ খাবার। আসুন একবার দেখেনি এই সমস্ত্র ব্যাপার গুলোর সমন্ধে।

যদিও থাইরয়েডের রোগ নিরাময় ও প্রতিরোধে একাধিক চিকিৎসা রয়েছে, তবুও আপনি আপনার নির্ধারিত ওষুধের সাথে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার নিয়েও দেখতে পারেন। এই প্রতিকার গুলোর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, ফলে এগুলো ব্যবহারও নিরাপদ। ঘরোয়া প্রতিকারগুলির মধ্যে কিছু কিছু তো দুই ধরনের থাইরয়েডের সমস্যার জন্যই কার্যকর। থাইরয়েডের সমস্যার প্রতিকারের জন্য নিচে কিছু মুখ্য ঘরোয়া প্রতিকার, নিচে দেওয়া হল। এই প্রতিকারগুলির ব্যাবহার, আপনাকে অবশ্যই থাইরয়েডের সমস্যা নিরাময়ে, নিয়ন্ত্রণে ও নিবৃত্ত করতে সাহায্য করবে। আসুন দেখে নেওয়া যাক।

১০ টি ঘরোয়া প্রতিকার

পালং শাক

থাইরয়েডের সমস্যার প্রতিকারের দশটি মুখ্য ঘরোয়া প্রতিকারের মধ্যে অন্যতম হল পালং শাক। পালং শাক প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-এ দ্বারা সমৃদ্ধ, যা একজন মানুষের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। থাইরয়েডের নিয়ন্ত্রণ এবং সমস্যার নিবারনে স্থিতি আনতেও সাহয্য করে ভিটামিন-এ। আপনার দেহে, থাইরয়েড-এন্ডোক্রাইন গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থিও থাইরয়েড ক্ষরণের জন্য ভিটামিন-এ ব্যবহার করে। ফলতঃ বোঝাই যাচ্ছে, থাইরয়েডের সমস্যার নিরাময়ে পালং শাক একটি অন্যতম ঘরোয়া প্রতিকার।

কেল্প

কেল্প একটি আয়োডিনসমৃদ্ধ সমুদ্র-শৈবাল, যা থাইরয়েড এর সমস্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়। তাই স্যালাড বা সুপের সাথে মিশিয়ে, কেল্প অবশ্যই আপনার প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।

নারকেল তেল

থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ যখন বেরে যায় তখন সাথেসাথে ইস্ট্রোজেনের উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়, যা থাইরয়েড গ্রন্থির ক্রিয়াকে বাধা দেয়। নারকেল তেল এই অতিরিক্ত মাত্রায় এস্ট্রোজেনের উৎপাদন কে কমিয়ে আনে এবং দেহের বিপাক ক্রিয়ার হার বারিয়ে তোলে। ফলে আপনার সঞ্চিত মেদ শক্তিতে রুপান্তরিত হয়ে যায়। থাইরয়েডের সমস্যার নিরাময়ে, ১ কাপ দুধের সাথে ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে রোজ সেবন করা আরেকটি অন্যতম ঘরোয়া প্রতিকার।

হলুদ

বেশিরভাগ ভারতীয় খাবারে, হলুদ একটি অন্যতম প্রচলিত মশলা। হলুদে “কারকিউমিন” রয়েছে, যা থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তাই থাইরয়েডের সমস্যার নিরাময়ে, হলুদ খুবই কার্যকরী।

সাধারণ লবন

সাধারণ লবন আয়োডিন সমৃদ্ধ হয়ে থাকে, যা থাইরয়েড ক্ষরণকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই, আপনার রান্নাঘরের থেকেই প্রতিদিনের ব্যবহারের কিছু মশলা, থাইরয়েডের সমস্যার নিরাময়ে ও নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকর বলে প্রমানিত।

আদা

আদায় রয়েছে, “জিনজেরল” যা প্রদাহ নিরাময়ক হিসাবে পরিচিত। জিনজেরল, থাইরয়েড প্রদাহ উপশমেও সাহায্য করে আর তাই আদা থাইরয়েডের সমস্যার নিরাময়ের ১০ টি ঘরোয়া প্রতিকারের মধ্যে একটি।

ডিমের কুসুম

ডিমের কসুম কপার সমৃদ্ধ হয়। কপার থাইরয়েড গ্রন্থির ক্রিয়াকে মসৃন রাখে ও থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণকে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। তাই থাইরয়েডের সমস্যাকে কিনারা করতে ডিমের কুসুমকে প্রায়শই খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে পারে।

যোগ ব্যায়াম

যোগ ব্যায়ামের কিছু নির্দিষ্ট আসন, থাইরয়েডের সমস্যার নিরাময়ে আশ্চর্যজনক ফল দেয়। যদিও এই যোগ ব্যায়ামের এই নির্দিষ্ট আসন গুলি সবসময় একজন যোগ ব্যায়ামের শিক্ষকের তত্ত্বাবধনে করা উচিৎ।

আখরোট

আখরোট একটি সহজলোভ্য ড্রাইফ্রুট, প্রায় সব রান্নাঘরেই পাওয়া যায়। আখরোট ম্যাগনেশিয়াম ও আয়োডিনে সমৃদ্ধ, যা থাইরয়েড হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে। ফলে, আখরোটও থাইরয়েডের সমস্যার নিরাময়ের আরেকটি ঘরোয়া প্রতিকার।

ব্যায়াম

যদি আপনি থাইরয়েডের সমস্যার ভুগছেন, তাহলে এই সমস্যায় সমাধানে ব্যায়াম অন্যতম প্রধাণ একটি প্রতিকার। যদিও ব্যায়ামের সবসময় একজন ব্যায়ামের শিক্ষকের তত্ত্বাবধনে করা উচিৎ, নইলে তা আপনার পক্ষে হানিকারকও হয়ে উঠতে পারে।