প্রধান মন্ত্রী মুদ্রা লোন – Mudra Bank Loan Apply Online SBI

চাকরি বাকরির যা অবস্থা তার থেকে আমরা যদি ছোট খাটো ব্যবসা শুরু করি তাহলে কেমন হয় ? আপনি ভাব্যেন যে হা ব্যবসা করতে কার না ভালো লাগে কিন্তু টাকা কোথায় পাবো, বা অনেকের মনে এটাই আসবে বা আসাটাই স্বাভাবিক যে ব্যবসা করতে তো টাকা লাগে সেই টাকা আমরা কোথায় পাবো। ব্যবসা শুরু করেও তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত মূলধন নেই? আবার ব্যাঙ্ক থেকে যে ঋণ নেবেন, তার জন্য বন্ধক রাখার মতো সম্পত্তি নেই? সমস্যা অনেক।

এসব চিন্তা না করে বরং ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা’-য় ঋণের জন্য আবেদন করুন। ৫০ হাজার থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই ঋণের জন্য কোনও রকম বন্ধক রাখার দরকার নেই। দেশের ছোট ব্যবাসায়ীদের সুবিধার জন্যই এই ঋণের ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র। নাম দেওয়া হয়েছে,‘প্রধানমন্ত্রী মূদ্রা যোজনা’।

তিনটি শ্রেণিতে এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। শিশু, কিশোর ও তরুণ। যাঁরা সদ্য ব্যবসা শুরু করেছেন বা করছেন, তাঁরা ‘শিশু’। ঋণ পাবেন ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। পাঁচ বছরের মধ্যে এই ঋণ শোধ করলেই আপনি হয়ে উঠবেন ‘কিশোর’। এবার ‘কিশোর ঋণ’ পেতে পারেন ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। সেটা শোধ করে দিলেই ‘তরুণ ঋণ’। পাবেন ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত।

ঋণ মানেই তো সুদ। কেন্দ্রীয় সরকার এই ঋণের জন্য নেবে মাসিক ১ শতাংশ হারে সুদ। অর্থাৎ বছরে ১২ শতাংশ সুদ। আর এই ঋণের জন্য কোনও প্রসেসিং ফিজ লাগছে না।

ভাবছেন, খুব কঠিন এই ঋণ পাওয়া। মোটেও তা নয়। কারণ ইতিমধ্যেই দেশের ২ কোটি ২৬ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই ঋণ পেয়েছেন। মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। চলতি মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ঋণ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা।

অধিকাংশ মানুষেরই কাজ না থাকা সত্ত্বেও কৃষিজমি উপলব্ধ নেই, তাদের নিজেদের খাদ্য গ্রহন ও বেঁচে থকার জন্য কোনও সৃজনশীলতা নেই। তারা অর্থের বিনিময়ে এটা-ওটা কাজ করা বা তাদের সেবা বিনিময়ের উপায় চিন্তা করে। এই মানুষগুলির অধিকাংশই তপশিলী জাতি, তপশিলী উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর সম্প্রদায়ভূক্ত। এটি উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ক্ষুদ্র এন্ট্যারপ্রাইজ, খুচরো বিক্রেতা বা ব্যবসায়ীকরণের কার্যকলাপের অধিকাংশই মহিলাদের দ্বারা প্রবর্তিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়, যেখানে শিক্ষা, আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ বা ব্যাঙ্কিং সমর্থনের কোনরূপ গঠনের উপলব্ধতার কোনও অবকাশ নেই। এখন দৃষ্টিগোচর করা যাক। যদি ভারত এই এন্ট্যারপ্রাইজের মুক্ত সারমর্মকে সামঞ্জস্য প্রদান করতে পারে এবং জি.ডি.পি-কে সম্ভাব্য তাৎক্ষণিক উর্দ্ধমুখী করতে কিছু নির্দেশিকা, সমর্থন, প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দিতে পারে, যা সেখানে খুবই দরকার। নরেন্দ্র মোদী এটি উপলব্ধি করেছেন এবং এই অনু্চ্চ ফলাফলের সম্ভাবনা সুস্পষ্ট ছিল। যদি মুদ্রা, সুবিধাবঞ্চিতদের উপর আলোকপাত করাকে অব্যাহত রাখতে পারে এবং এটির প্রসারণ অন্তস্থলগুলিতেও পৌঁছে দেওয়া যায়, তবে এটি একটি বড় সাফল্যের গল্প হিসাবে বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংকের তুলনায় আরোও ভালোভাবে উত্থান করা যেতে পারে। এখানে একটি পুরনো কথা প্রচলিত আছে যা এই প্রসঙ্গে বলা চলে  “আপনি একদিন একজন মানুষকে একটি মাছ খেতে দিন, তাকে শিখিয়ে দিন মাছ কিভাবে আসবে এবং তিনি আর কখনই ক্ষুধার্ত থাকবেন না”। মুদ্রা ব্যাংক হল সরকারের দ্বারা নেওয়া একটি পদক্ষেপ যা উদ্যোক্তাদের একটি নতুন সঙ্কল্পের জন্ম দিতে একটি দফা পরিবর্তনকারী হতে পারে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন যারা উচ্চ মহিমায় থাকতে পারেন, তারা আজকের দিনে এটিকে কল্পনা করতে পারবেন না। এটি ভর্তুকি প্রদানের তুলনায় অনেক ভালো, প্রথমে স্বাগত হতে পারে, তবে একজন ব্যাক্তির এক উন্নত জীবনের সংগ্রামে একটু কিছু হলেও সাহায্য করবে। মুদ্রা হল সক্রিয়তার একটি অভিনব পথ। মুদ্রা ব্যাংকের কার্যকারিতার প্রকারতার জায়গা আছে এবং এটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে তহবিলের কাজকর্ম মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলির দ্বারাই সম্পন্ন করা হবে। যদিও, ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলিকে মুদ্রা ব্যাংকের উপর সম্পূর্ণ তথ্য পেতে এবং কারা কারা ঋণের জন্য যোগ্য তার উপর স্বচ্ছ ধারণা ও এই প্রকল্পের সুবিধা কিভাবে পাবেন, এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

কেমন করে আবেদন করবেন ?

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনায় শিশু, কিশোর ও তরুণ তিন ক্যাটাগরিতে ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।

ব্যবসা করার পরিকল্পনা আছে কিংবা ব্যবসা করছেন এমন যে কেউই মুদ্রা ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন। ছোট উৎপাদন শিল্প থেকে খুচরো ব্যবসার জন্য ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের আবেদন করতে পারেন।

২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, ১৭টি প্রাইভেট ব্যাঙ্ক ছাড়াও দেশের ৩১টি আঞ্চলিক ব্যাঙ্কের মাধ্যেমে এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও বেশ কিছু আর্থিক সংস্থা এবং কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের মাধ্যমেও ঋণের আবেদন করা যাবে।

বিস্তারিত তালিকা দেখতে চলে যান কেন্দ্রীয় সরকারের www.mudra.org.in ওয়েবসাইটে। সেখানেই পেয়ে যাবেন এই ঋণের জন্য আপনাকে নাগরিক পরিচয়পত্র, স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণ ছাড়া আর কী কী নথি জমা দিতে হবে।

মুদ্রা ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য 

1. মহাজন বা ঋণদাতা ও ক্ষুদ্রঋণ সংস্থান বা মাইক্রোফাইন্যান্সের ঋণগ্রহীতাদের নিয়ন্ত্রণে আনা এবং প্রবিধান ও অন্তর্ভূক্তিকরণ অংশগ্রহণের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ পদ্ধতিতে স্থিতিশীলতা আনা।

2. ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান (এম.এফ.আই) ও সংস্থাগুলির সহযোগিতার্থে অর্থ ও আমানত প্রসারিত করা, যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, খুচরো বিক্রেতা, আত্ম-নির্ভর গোষ্ঠী ও ব্যাক্তিবর্গকে অর্থ ধার দেয়।

3. সমস্ত এম.এফ.আই-গুলির নিবন্ধীকরণ এবং পূর্ণসংসাধনের প্রথা প্রবর্তিত করা এবং প্রথমবারের জন্য স্বীকৃতি দেওয়া। এটি শেষ-পর্যায়ের অর্থের ঋণ গ্রহীতাদের নির্ণয় করতে ও এম.এফ.আই-তে অভিগম্যতায় সাহায্য করে; যাদের অতীতের নথি সবচেয়ে সন্তোষজনক, তাদের প্রয়োজনীয়তা ভালোভাবে পূর্ণ করে। এছাড়াও এটি এম.এফ.আই-দের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক উপাদানকেও উপস্থাপিত করবে, যাতে প্রকৃতপক্ষে ঋণগ্রহীতারাই সুবিধাভোগী হবে।

4. ঋণ-গ্রহীতাদের ব্যবসার ব্যর্থতা এড়ানোর জন্য কাঠামোগত নির্দেশিকার অনুসরণ ও সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপের উপদেশ প্রদান করা। ‘মুদ্রা’ নির্দেশিকার অধীনে তৎপর হতে এবং অক্ষমতার ক্ষেত্রে মহাজনের কাছ থেকে অর্থের পুনুরুদ্ধারে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিগুলির অনুসরণে সাহায্য করে।

5. সংগতিপূর্ণ অঙ্গীকারের বিকাশ যা ভবিষ্যতে শেষ পর্যায়ের ব্যবসার দৃঢ়তা গঠন করতে পারে।

6. ক্ষু্দ্র ব্যবসায় প্রস্তাবিত, প্রদত্ত ঋণের অঙ্গীকারের জন্য একটি আমানত অঙ্গীকারবদ্ধ প্রকল্পের নিবেদন।

7. কর্মক্ষম মহাজন বা ঋণ-দাতা, ঋণ-গ্রহীতা ও মূলধন বন্টণের পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ার সহায়তার জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিতিকরণ।

8. ছোট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় এক কার্যকর শেষ পর্যায়ের আমানত বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ণশীলতার জন্য প্রধান মন্ত্রী মুদ্রা যোজনার আওতায় একটি উপযুক্ত কাঠামো নির্মাণ।

শেষ কথা 

এখানে শেষ কথা একটাই বলার আছে যে আমাদের একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে যে আমাদের প্রয়োজন বা আমার প্রয়োজন কিন্তু আমাকেই দেখতে হবে। বন্ধুরা আমরা তো জানি কেউ বাড়িতে এসে আপনাকে সাহায্য করে যাবে না সেটা ব্যাঙ্ক হোক বা অন্য কেউ। কোনোরকম সমস্যা হলে আপনি সরাসরি ব্যাঙ্ক গুলোর সাথে সাথে যোগাযোগ করবেন। ধন্যবাদ।