নারায়ণ পূজোর নিয়ম – Narayan Puja in Bengali

সত্যনারায়ণ পূজার সঙ্গে বাঙালী অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। একবারও সত্যনারায়ণ হয়নি এরকম বাঙালী বাড়ি খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। বাড়িতে কোন শুভকাজের আগে বা পরে সত্যনারায়ণ পূজা বা নতুন বাড়িতে প্রবেশের আগে সত্যনারায়ণ পূজা, যেকোনো শুভ কাজেই নারায়ণ দেবতার আশীর্বাদ আমাদের চাইই চাই। কিন্তু যারা সত্যনারায়ণ পূজার নিয়মবিধি সেভাবে জানেন না, তাঁদের জন্যই থাকল সত্যনারায়ণ পূজার কিছু নিয়মবিধি।

সত্যনারায়ণ পূজার সঙ্গে বাঙালী অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। একবারও সত্যনারায়ণ হয়নি এরকম বাঙালী বাড়ি খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। বাড়িতে কোন শুভকাজের আগে বা পরে সত্যনারায়ণ পূজা বা নতুন বাড়িতে প্রবেশের আগে সত্যনারায়ণ পূজা, যেকোনো শুভ কাজেই নারায়ণ দেবতার আশীর্বাদ আমাদের চাইই চাই। কিন্তু যারা সত্যনারায়ণ পূজার নিয়মবিধি সেভাবে জানেন না, তাঁদের জন্যই থাকল সত্যনারায়ণ পূজার কিছু নিয়মবিধি।

নারায়ণ পুজো শুরুর আগের কিছু নিয়ম

নারায়ণ পূজায় তেমন বাহুল্য নেই বললেই চলে।তাই এই পূজার আয়োজন খুব সহজ। যে যার সাধ্য মত আয়োজন করে। যেকোনো পূর্ণিমার তিথিতেই এই পূজা করা যায়। অনেকে বাড়ির পরিবেশ শুদ্ধ রাখতে, প্রতিটা বড় পূর্ণিমাতেই পূজা করে থাকেন।

পূজার আগের নিয়ম বলতে, সবচেয়ে আগে পূজার স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখুন। পরিষ্কার করে যেখানে ঘট পাতবেন, সেখানে আলপনা দিয়ে দিন। সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজিয়ে দিন। ঘটে আমপাতা, শিষ ডাব দিন। অবশ্যই ঘটে ও ডাবে স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে দেবেন। বিজোড় সংখ্যক আমপাতা রাখবেন। এতে সিঁদুরের ফোঁটা দেবেন।

এরপর নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবেন। একটি থালায় তিনটি জায়গায় একটু করে চাল, ও তার সঙ্গে কলা, বাতাসা, অন্যান্য ফল, তার ওপর সিকি মানে কয়েন, পঞ্চ শস্য এসব দিয়ে সাজান। পঞ্চ শস্য মানে পাঁচ রকম শস্য। এই ভাবেএকটি থালায় তিনটি ও আরেকটি থালায় পাঁচটি নৈবিদ্য সাজিয়ে রাখুন।

সিন্নির জন্য একটি গামলায় ময়দা, গুড়, দুধ, খোয়া ক্ষীর, একটু নারকেল কোরা, কাজু, কিশমিশ ঠাকুরের সামনে রাখবেন। পূজার পর ঠাকুরমশাই সিন্নি তৈরি করবেন। এছাড়াও নারায়ণের ছবির দু’পাশে দুটো পান পাতা রাখুন। এর ওপর একটা সুপারি, একটা কয়েন, একটা কলা রাখুন।

কিংবদন্তি অনুযায়ী, খ্রিস্টীয় ১৫শ শতাব্দীতে রাজা গণেশের কন্যা সত্যনারায়ণ বা সত্যপীরের পূজা করেন। মধ্যযুগে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ ভিক্ষালব্ধ উপকরণের দ্বারা সত্যপীরের পূজা করতেন, সত্যপীরের পাঁচালি গাইতেন এবং প্রসাদী শিন্নি ভাগ করে খেতেন। কালক্রমে হিন্দু-মুসলমানের মিলিত ধর্মাচরণের প্রথাটি বিলুপ্ত হলে মুসলমানেরা পীরের দরগায় শিন্নি উৎসর্গ করতে শুরু করেন এবং হিন্দুরা সত্যপীরের স্থানে সত্যনারায়ণ পূজা শুরু করলেন। অবশ্য হিন্দুদের মধ্যে শিন্নি দেওয়ার রীতিটি এবং ব্রতকথাতে অনেক স্থানে সত্যনারায়ণের সত্যপীর ছদ্মবেশে পূজা প্রচারের কাহিনিটি রয়ে যায়।

পূজা শুরু

নারায়ণ পূজার জন্য প্রথমে নারায়ণ শিলা স্থাপন করতে হয়। চিন্তা নেই, সেটি আপনার ঠাকুরমশাই সঙ্গে করে আনবেন। এবং ইনিই প্রতিস্থাপন করবেন। সেদিন সারাদিন ওই নারায়ণ শিলা থাকবে। পরদিন ঠাকুর মশাই সুতো কেটে সেটি নিয়ে চলে যাবেন। নারায়ণ শিলা স্থাপন করে ও নারায়ণ দেবতাকে প্রণাম জানিয়ে পূজা শুরু করা হয়। সঙ্গে মা লক্ষ্মীকেও ফুল দেবেন, প্রণাম জানাবেন।

এরপর আপনার সমস্ত আয়োজন তাঁকে নিবেদন করার পালা। এই সাধারণ পূজার পর অঞ্জলি। অঞ্জলি শেষ হয়ে গেলে হোম। হোম-যজ্ঞের জন্য ছোট ছোট করে বেশ কয়েকটি হোমের কাঠ,একটি পাত্রে ঘি, ৫১টি বেলপাতা, একটি লাল চেলি কাপড়, একটু দুধ একটি কলা ও একটি সন্দেশ এবং হোমকুণ্ড রেডি রাখবেন। যজ্ঞ শেষে দুধ ঢেলে যজ্ঞ শেষ হবে। এবং সবাই যজ্ঞের টিপ পড়বেন। এইসব কিছু দশকর্মার দোকানে পেয়ে যাবেন। এটিই হল নারায়ণ পূজার নিয়ম।

তাহলে দেখলেন নারায়ণ পূজার আয়োজন করা কত সহজ। শুধু শুদ্ধ, শান্ত মনে পূজার আয়োজন করুন। আয়োজন সামান্য হলেও দেবতা নারায়ণের আশীর্বাদ প্রবেশ করবে আপনার ঘরে।

শেষ কথা 

ওপরের লেখা গুলো সম্পূর্ণ ভালো করে পড়বেন বার বার পড়বেন। সেভাবে সব কাজ গুলো সঠিকভাবে পালন করবেন। আর নারায়ণ পুজোর সময় ঠাকুর মশাই এর সাথে যোগাযোগ করে তবেই করবেন।