আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –
নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর সুস্থ আছেন। আজ আমরা জানবো যে আমাদের দেশে ও রাজ্যের অনেক জাগায় অনেক মহিলারা আছেন যারা গর্ভাবস্থার সময় জানেন না তাদের খাদ্য ও সব কিছুর নিয়ম কানুন, হ্যা এই সময়টা আপনার জন্য আর আপনার আসন্ন অথিতির জন্য ভাবতেই হবে। তাই আজকে বেশ কিছু পরামর্শ নিয়ে আপনাদের সাথে ব্যাপার গুলো শেয়ার করছি। আশা করি আপনারা ওএকটাই উপকার পাবেন। শেয়ার করবেন ও কমেন্ট করতে ভুলবেন না।
গর্ভধারণ একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় ব্যাপার। স্বাভাবিক হলেও এ সময় শরীরে কিছু পরিবর্তন ঘটে। সে জন্য গর্ভকালীন কিছু সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। এগুলো তেমন উদ্বেগের বিষয় নয়, সহজে এসবের সমাধান সম্ভব। তবে অনেক সময় কিংবা অনেকের ক্ষেত্রে এসব সাধারণ সমস্যাও বেশ কষ্ট দেয়। প্রত্যেক গর্ভবতী মা-ই ৯ মাসের সুস্থ-স্বাভাবিক গর্ভাবস্থা প্রত্যাশা করেন। সুস্থ গর্ভাবস্থায় কিছু নিয়ম মেনে চলা অবশ্যই প্রয়োজন।
- 1 গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা
- 2 গর্ভবতী মায়ের ইতিহাস
- 3 স্বাস্থ্য পরীক্ষা
- 4 ল্যাবরেটরি পরীক্ষা
-
5
উপদেশ
- 5.1 স্বাস্থ্যকর খাবার
- 5.2 পরিমিত বিশ্রাম
- 5.3 পর্যাপ্ত ঘুম
- 5.4 সিগারেটের ধোঁয়া এড়িয়ে চলুন
- 5.5 প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ পরিহার করুন
- 5.6 বুক জ্বালা
- 5.7 কোষ্ঠকাঠিন্য
- 5.8 ঘন ঘন প্রস্রাব
- 5.9 প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা
- 5.10 নিম্নাঙ্গ বা পায়ের পেশিতে খিঁচুনি ও ব্যথা
- 5.11 পিঠে বা কোমরে ব্যথা
- 5.12 তলপেটে ব্যথা
- 5.13 পায়ে জল আসা
গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা
মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য গর্ভবতী মায়ের ‘প্রসবপূর্ব যত্ন’ করাতে হবে নিয়মিত। এ জন্য আদর্শ হচ্ছে, গর্ভাবস্থায় সময় আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী যেতে হতে হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স বা অন্য কোনো অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে। প্রথম সাত মাসে প্রতি মাসে একবার করে মোট সাতবার (প্রতি চার সপ্তাহে একবার), অষ্টম মাসে প্রতি দুই সপ্তাহে একবার করে মোট দু’বার এবং পরে সন্তান প্রসব হওয়ার আগপর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার করে মোট পাঁচবার, সর্বমোট ১৪ বার যাওয়াটা আদর্শ। কিন্তু এটা অনেক সময়ই সম্ভব হয়ে ওঠে না। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে কমপক্ষে তিনবার যেতেই হবে। প্রথম ২০ সপ্তাহের মধ্যে একবার, ৩২ সপ্তাহের সময় একবার এবং ৩৬ সপ্তাহের সময় একবার।
গর্ভবতী মায়ের ইতিহাস
চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে শেষ মাসিকের ইতিহাস জানতে হবে। শেষ মাসিকের তারিখ থেকেই তারা সন্তান হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করেন। পূর্ববর্তী গর্ভাবস্থা বা প্রসবকালীন ইতিহাসও বলতে হবে। সে হিসেবে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব হবে, না কোনো অপারেশনের প্রয়োজন পড়বে, হাসপাতালে হবে, না বাড়িতে হবে- তার সিদ্ধান্ত নেবেন চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী। ধনুষ্টঙ্কারের টিকা নেওয়া আছে কি-না, সে খবর দিতে হবে। টিকা না নিয়ে থাকলে নিতে হবে।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা
শরীরের উচ্চতা ও ওজন ঠিক আছে কি-না, রক্তশূন্যতা আছে কি-না, উচ্চ রক্তচাপ আছে কি-না- এসবই দেখা হয় ‘প্রসবপূর্ব যত্ন’তে। হাতে, পায়ে বা শরীরের অন্যান্য স্থানে জল এসেছে কি-না (প্রি-এক্লপশিয়া), তা-ও পরীক্ষা করে দেখা হয় গর্ভাবস্থায়।
ল্যাবরেটরি পরীক্ষা
রক্তের গ্রুপ জেনে রাখা জরুরি। সিফিলিস, ডায়াবেটিস আছে কি-না, তা আগেভাগেই পরীক্ষা করিয়ে নিলে সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। গর্ভের ভ্রূণ ঠিকমতো বাড়ছে কি-না, ভ্রূণের কোনো শারীরিক ত্রুটি আছে কি-না, জরায়ুর ভেতর জলের পরিমাণ ঠিক আছে কি-না, জরায়ুর ভেতর ফুলের অবস্থান কোথায় বা কেমন ইত্যাদি দেখার জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে হয়।
উপদেশ
স্বাস্থ্যকর খাবার
খাবারে থাকতে হবে একটু বাড়তি ক্যালরি। এ ছাড়া গর্ভের সন্তানের জন্য বাড়তি খাবার প্রয়োজন। কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয়, সে জন্য খাবারে থাকতে হবে পর্যাপ্ত আঁশ। খাবারের আঁশ ডায়াবেটিসও প্রতিরোধ করবে। খাবারে থাকতে হবে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ। শাকসবজি, ফলমূলে পাওয়া যাবে এগুলো। মাছ খাওয়া ভালো। যথেষ্ট জলও পান করতে হবে প্রতিদিন।
পরিমিত বিশ্রাম
একেবারে শুয়ে-বসে থাকাও নয়, আবার দিনভর হাড়ভাঙা খাটুনিও নয়। কাজের ফাঁকে চাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম। স্বাভাবিক কাজকর্ম করবেন। তবে ভারী কাজ, যেমন কাপড় কাচা, ভারী জিনিস তোলা, দ্রুত চলাফেরা এসব এড়িয়ে চলবেন। পরিশ্রমের ব্যাপারে প্রথম তিন মাস ও শেষ দু’মাস খুবই সতর্ক থাকবেন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা ধীরে করবেন।
পর্যাপ্ত ঘুম
গর্ভবতী মা দিনে অন্তত ২ ঘণ্টা ঘুমাবেন। রাতে ৮-১০ ঘণ্টা ঘুমাবেন। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। আরামদায়ক সুতির ঢিলেঢালা পোশাকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সরবরাহ থাকবে স্বাভাবিক। হাই হিল জুতা স্বাস্থ্যকর নয়। ফ্ল্যাট চটি ভালো, তাতে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্রতা বজায় থাকবে। পিঠ, কোমর ও পায়ের পেশিতে ব্যথামুক্ত থাকা যাবে।
সিগারেটের ধোঁয়া এড়িয়ে চলুন
গর্ভাবস্থায় ধূমপান করলে গর্ভের সন্তান কম ওজনের হয়। পরোক্ষ ধূমপানেও একই ক্ষতি হয়। অর্থাৎ নিজে তো করবেনই না তারপর অন্য কেউ আসে পাশে করলে সেখান থেকে সরব পড়ুন।
প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ পরিহার করুন
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গর্ভের সন্তানের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হতে পারে। তাই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন করা যাবে না।বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
গর্ভাবস্থায় তিন মাস দিনের শুরুতে বমি বমি ভাব হয় বা বমি হয়। এই সমস্যা হলে অল্প করে ঘন ঘন খাবার খেতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে বিস্কুট, টোস্ট-জাতীয় শুকনো কিছু খাবার খেলে উপকার পাওয়া যায়। তৈলাক্ত খাবার কম খেলে উপকার পাওয়া যায়। বমি খুব বেশি হলে কিংবা সমস্যাটা তিন মাসের বেশি স্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বুক জ্বালা
গর্ভকালীন এসিডিটির জন্যও এ সমস্যা হতে পারে। এসিডিটি বা বুক জ্বালাপোড়া হলে অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাবার খেতে হবে। তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া খাবার ও বেশি মসলাযুক্ত খাবার না খেলেও উপকার পাওয়া যায়। খাওয়ার সময় জল কম পান করতে হবে। খাওয়ার পরপরই উপুড় হওয়া বা বিছানায় শোয়া উচিত নয়। চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টাসিড-জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। পরামর্শ ছাড়া কোনো রকম গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য ওষুধ খাবেন না।
কোষ্ঠকাঠিন্য
গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয়, সে জন্য প্রচুর জল পান করতে হবে। দৈনিক অন্তত সাত থেকে আট গ্লাস । আঁশ আছে এ রকম খাবার, যেমন_ শাকসবজি, ফলমূল, বিচিজাতীয় খাবার, ডাল, গমের আটা ইত্যাদি খেতে হবে বেশি বেশি। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পায়খানা নরম করার জন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। ইসবগুলের ভুসির শরবত দৈনিক দু-এক গ্লাস খেতে পারলে উপকার পাওয়া যাবে।
দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে অর্শ হতে পারে। অর্শ হলে পায়খানা করার সময় মলদ্বারের রক্তনালি ছিঁড়ে রক্ত বের হয়। মলদ্বার ব্যথা হয়। অর্শ সমস্যা যেন না হয়, সে জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে আর এ জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে; বেশি বেশি আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত জল খেতে হবে। আর অর্শ হয়ে থাকলে মলদ্বারের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে এক খণ্ড বরফ টিস্যুতে বা কাপড় পেঁচিয়ে মলদ্বারে ধরে রাখলে উপকার পাওয়া যাবে। একটা পাত্রে হালকা গরম জল দিয়ে দিনে কয়েকবার তাতে কিছুক্ষণ বসে থাকলেও উপকার পাওয়া যাবে।
ঘন ঘন প্রস্রাব
গর্ভাবস্থায় জরায়ু বড় হয় এবং প্রস্রাবের থলিতে বাড়তি চাপ প্রয়োগ করে। এ কারণে প্রস্রাবের থলি পূর্ণ হওয়ার আগেই প্রস্রাবের চাপ অনুভূত হয়। সে কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়, এ জন্য দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। ঘন ঘন প্রস্রাব হয় বলে জল কম খাওয়া উচিত নয় বরং পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রস্রাব পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে কোনো ইনফেকশন আছে কি-না কিংবা ডায়াবেটিস আছে কি-না তা দেখে নেওয়ার জন্য। থাকলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।
প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা
সামান্য কাশি হলে কিংবা সামান্য ভারী কিছু ওঠানোর সময় প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই সমস্যা দেখা দেয়। প্রস্রাবের এমন সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রস্রাবের রাস্তা ও মলদ্বারের আশপাশের মাংসপেশির ব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া যাবে।
নিম্নাঙ্গ বা পায়ের পেশিতে খিঁচুনি ও ব্যথা
সাধারণত গর্ভাবস্থার দ্বিতীয়ার্ধে এবং বিশেষ করে রাতের বেলায় হাঁটুর নিচে পায়ের পেছনের পেশিতে (কাফ মাসলা) খিঁচুনি ও ব্যথা হয়। শোবার আগে কাফ মাসলের ব্যায়াম করলে পেশির খিঁচুনি হওয়ার আশঙ্কা কমে, আর খিঁচুনি হলে পায়ের আঙুলগুলো হাঁটুর দিকে বাঁকা করে টান টান করে কাফ মাসলের স্ট্রেচিং ব্যায়াম করতে হবে, তাতে খিঁচুনি কমবে।বিছানা থেকে উঠে একটু হাঁটলেও খিঁচুনি ও ব্যথা কমতে পারে। সাধারণত ক্যালসিয়ামের অভাবে এ ধরনের ব্যথা হয়, কাজেই ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার খেলে উপকার হবে। প্রয়োজন অনুসারে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে।
পিঠে বা কোমরে ব্যথা
গর্ভাবস্থায় শরীরের ওজন বেড়ে যায়। তা ছাড়া অস্থিসন্ধির লিগামেন্টগুলোও কিছুটা নরম ও নমনীয় হয়, এসব কারণে পিঠে ও কোমরে ব্যথা হতে পারে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। দাঁড়ানো বা বসার সময় মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হবে। একটানা বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে না থেকে মাঝেমধ্যে শুয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। উঁচু হিলের জুতা ব্যবহার না করে নিচু হিলের জুতা ব্যবহার করতে হবে।
তলপেটে ব্যথা
জরায়ু ধীরে ধীরে বড় হয়ে এর আশপাশের লিগামেন্টে টান পড়ার জন্য তলপেটে ও কুঁচকিতে হালকা ব্যথা হতে পারে। এ ব্যথা স্বাভাবিক। এ ব্যথা পাঁচ-ছয় মাসের দিকে হয়।
পায়ে জল আসা
গর্ভাবস্থার শেষের দিকে পায়ে কিছু জল আসতে পারে। তবে অতিরিক্ত পা ফোলা বা পা ফোলার সঙ্গে রক্তচাপ বেশি থাকলে প্রি-একলামশিয়ার চিন্তা করা হয়, তখন ডাক্তারের পরামর্শমতে চিকিৎসা নিতে হবে।
শেষ কথা
গর্ভাবস্থার সময়ে বাড়ির লোককে অনেকটাই সচেতন থাকতে হয় যাতে করে গর্ভবতীর কোনোরকম অসুবিধে না হয়। বেশি চিল্লা মিল্লি, জোরে সাউন্ড সোনা।.বা জোরে গান সোনাও খারাপ। ভালো মন্দ খাবার দাবার এর অভ্যাস করতে হবে। নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে। কোনো কিছু দরকারের জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শই একমাত্র কাজ। অন্যের কোথায় না জেনে না শুনে কোনো কিছু করবেন না ,ধন্যবাদ