ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ, ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। আজ আমরা জানবো যে  আমাদের দেশে ও রাজ্যের অনেক জাগায় যে বিদ্যুৎ এর ব্যাপার গুলো একবার দেখে নেবো। আজ আমরা জন্য যে – ভারতের ভূ-তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম, ভারতের ভূতাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম, ভারতের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, ভারতের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, ভারতের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, ভারতের বৃহত্তম বায়ু শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র ভারতের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কোনটি, ভারতের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি ইত্যাদি। 

 

স্বাধীনতা লাভের পর প্রায় সাতটি দশক অতিক্রান্ত। কিন্তু দেশের ১৮ হাজার গ্রাম এখনও অন্ধকারে পড়ে রয়েছে বিদ্যুতের অভাবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে ঘোষণা করেছিলেন যে অন্ধকার এই গ্রামগুলিতে আগামী ১ হাজার দিনের মধ্যে বিদ্যুতের সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হবে। তাই, গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণের লক্ষ্যে এক উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণের কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে। আর এই কর্মসূচির সর্বত্র রয়েছে এক অভাবনীয় স্বচ্ছতা। একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এবং একটি ওয়েব ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে যে গ্রামগুলিতে ইতিমধ্যেই বিদ্যুতের সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে তার একটি তালিকা দেখতে পাওয়া যাবে। এই কর্মসূচিটিকে তাই গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজ হিসেবেই চিহ্নিত করলে চলবে না, গ্রামবাসীদের জীবনে যে স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও অগ্রগতির স্বপ্ন একদা অধরা ছিল, তাই এখন চলে এসেছে তাঁদের আয়ত্তের মধ্যে।

একথা বিস্মৃত হওয়া কঠিন যে ২০১২-র জুলাই পর্যন্ত দেশের ৬২ কোটি মানুষকে দিন কাটাতে হয়েছে ঘোর অন্ধকারের মধ্যে। ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাকে কাজে লাগানো যায়নি শুধুমাত্র গ্যাস ও কয়লার মতো জ্বালানির অভাবে। অতিরিক্ত উৎপাদনক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও এই ক্ষেত্রটি তখন কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। বিদ্যুতের উৎপাদন ও যোগান সংক্রান্ত নীতিটিও উদ্যোগের অভাবে হয়ে পড়ে অপ্রাসঙ্গিক। একদিকে বিনিয়োগ করা অর্থের সদ্ব্যবহারের অভাব এবং অন্যদিকে ব্যাপক বিদ্যুৎ ছাঁটাইয়ের ফলেজনজীবনে নেমে আসে অন্ধকার।

এনডিএ সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার সময় দেশের কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির দুই-তৃতীয়াংশেরই কয়লা মজুতজনিত পরিস্থিতি ছিল খুবই সঙ্কটজনক। মাত্র সাতদিনের জন্য বিদ্যুৎউৎপাদনের মতো কয়লা মজুত ছিল ঐ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির। এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিকে এমন এক অবস্থায়উন্নীত করে কেন্দ্রীয় সরকার যেখানে এমন কোন বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট নেই যেখানে কয়লা এখনঅপ্রতুল বা অপর্যাপ্ত।

সকলের কাছে বিদ্যুতের সুযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার বিশুদ্ধ জ্বালানির বিষয়টিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির উৎসগুলিকে ব্যবহারের মাধ্যমে ১৭৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে ১০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে সৌর শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষেত্রটির কাঠামোগত বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে এক সার্বিক ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি রূপায়ণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহের প্রতিটি দিনেই যাতে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুতের যোগান নিরবচ্ছিন্ন রাখা যায় সেই লক্ষ্যে সরকার বিশেষভাবে সচেষ্ট রয়েছে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রটির বিকাশ ও উন্নয়নের দিকে একবার দৃষ্টি দেওয়া যাক। শিল্পোৎপাদনের সূচক অনুযায়ী অক্টোবর মাসে বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ছিল ৯ শতাংশ। অন্যদিকে, কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের উৎপাদন ক্ষমতা ৯ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এপ্রিল-নভেম্বর – এই সময়কালে। বিগত চার বছরের উৎপাদনকে যুক্ত করলে যা দাঁড়ায় তার থেকে অনেক বেশি উৎপাদন সম্ভব করে তোলে কোল ইন্ডিয়া। এর সুবাদে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় কয়লা আমদানির পরিমাণ হ্রাস পায় ৪৯ শতাংশ। বিভিন্ন উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের হার ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বৃদ্ধি পায় ১২.১২ শতাংশ যা ছিল এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২১৪টি কয়লা ব্লক বন্টনের বিষয়টি শীর্ষ আদালত বাতিল বলে ঘোষণা করায় যে সঙ্কট দেখা দিয়েছিল তা কাটিয়ে উঠতে এক স্বচ্ছ কয়লা ব্লক বন্টন কর্মসূচির কাজ হাতে নেওয়া হয় প্রযুক্তি পরিচালিত নিলাম ব্যবস্থার মাধ্যমে। এবাবদ আয়ের প্রায় সবটাই পৌঁছে গেছে রাজ্যগুলির হাতে। বিশেষত, পূর্ব ভারতের অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলি তা থেকে বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছে।

গত বছরটিতে ২২,৫৬৬ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে যা এযাবৎকালের মধ্যে এক রেকর্ড বিশেষ। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও যোগানের ক্ষেত্রে ঘাটতির মাত্রাকেও ২০০৮-০৯-এর ১১.৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে ৩.২ শতাংশে। এযাবৎকালের মধ্যে এটিও ছিল নিঃসন্দেহে এক বিশেষ সাফল্য। জ্বালানি ঘাটতির পরিমাণও ২০০৮-০৯-এর ১১.১ শতাংশের তুলনায় হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২.৩ শতাংশে। ভারতে জ্বালানি উৎপাদনের ইতিহাসে এটিও এক উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত।

বিদ্যুৎ যোগানের ক্ষেত্রে যে সমস্ত রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাত্রা ছিল উদ্বৃত্ত, সেই সমস্ত রাজ্য থেকে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ঘাটতি রাজ্যগুলিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজে ছিল বিস্তর বাধা-বিপত্তি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ উৎপাদন গ্রিডটিকে ‘এক জাতি, একটি গ্রিড, একটি ফ্রিকোয়েন্সি’তে উন্নীত করতে দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৩-১৪ সালে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যেখানে ৩,৪৫০ মেগাওয়াট উৎপাদিত বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়, সেখানে পরে এই কাজকে ৭১ শতাংশ উন্নীত করে নিয়ে যাওয়া হয় ৫,৯০০ মেগাওয়াটে।

বিদ্যুতের উৎপাদন ও যোগানের ক্ষেত্রে যাবতীয় দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে ‘উদয়’ যোজনাটির সূচনা হয় যাতে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, প্রধান সচিব, ডিসকম-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সহ উচ্চতম পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে ‘উদয়’ কর্মসূচিটিকে রূপায়িত করা হচ্ছে। এমনকি, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। একসময় ডিসকম হয়ে পড়ে ঋণ জর্জরিত। ‘উদয়’ কর্মসূচির মাধ্যমে ডিসকম-কে এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করা হয়। বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতেও সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর সুবাদে ২০১৮-১৯ সালের মধ্যে সবক’টি ডিসকম লাভজনক সংস্থা হয়ে উঠতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যভাবে বলতে গেলে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রটির সংস্কারের লক্ষ্যে অতীতে গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ ও ব্যবস্থার তুলনায় ‘উদয়’ কর্মসূচিটি এক বিশিষ্টতা লাভ করবে বলে আশা করা যায়।

জ্বালানি সাশ্রয়ের বিষয়টিতেও সরকার বিশেষভাবে সচেষ্ট রয়েছে। এলইডি বাল্বের মূল্য হ্রাস পেয়েছে ৭৫ শতাংশেরও বেশি। মাত্র এক বছরের মধ্যে বন্টন করা হয়েছে ৪ কোটিরও বেশি এলইডি বাল্ব। সচরাচর ব্যবহৃত বাল্বগুলির পরিবর্তে এলইডি বাল্বের ব্যবহার বাড়াতে ২০১৮ সালের মধ্যে বন্টন করা হবে ৭৭ কোটি এলইডি বাল্ব। শুধুমাত্র ঘর-গৃহস্থালির কাজেই নয়, এলইডি বাল্বের সাহায্যে আলোকিত করা হবে বিভিন্ন অঞ্চলের পথ-ঘাটও। এর ফলে, দিনের যে সময়টিতে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি, সেই সময়ে ২২ গিগাওয়াটের মতো চাহিদা কমিয়ে আনতে বিশেষভাবে সহায়ক হবে এলইডি বাল্বের কার্যকর ব্যবহার। আর এর ফলশ্রুতিতে বছরে বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে ১১,৪০০ কোটি ইউনিটের মতো। একইসঙ্গে প্রতি বছর কার্বন ডায়অক্সাইড নির্গমণের মাত্রাও হ্রাস পাবে ৮.৫ কোটি টনের মতো। ২২ গিগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার বিষয়টিকে একটি সাফল্য হিসাবে চিহ্নিত করা যায় ঠিক কথা, কিন্তু ব্যয়সাশ্রয়ী এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী এলইডি বাল্বেব সাহায্যে যদি এই অতিরিক্ত উৎপাদনের খরচ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়, সেটি পরিবেশ রক্ষার দিক দিয়েও একটি কম সাফল্যমাত্র নয়।