প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা – Pradhan Mantri Fasal Bima Yojna

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরাআমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে ভারতবর্ষের সরকার প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা / বাংলা ফসল বীমা যোজনা আয়োজন করেছে বেশ কিছু দিন আগেই। কিন্তু অনেকেই জানেন না। আজকের আমাদের এই আর্টিকেল টা সংবাইকে জানানোর জন্য লেখা হচ্ছে। আপনারা একটু চাষি ভাইদের সঙ্গে কথা বলুন। তাদের সমস্যা জানুন আর যদি কোনো সমস্যা থাকে ফসল নিয়ে তাহলে এই প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা / বাংলা ফসল বীমা যোজনা সম্পর্কে বলুন।

কৃষি আমাদের দেশের মেরুদণ্ড এবং কৃষক হিসেবে আপনার অবদান দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী রাখে। দুর্ভাগ্যবশত আপনার সমস্ত প্রচেষ্টাই প্রকৃতির করুণার ওপর, যা প্রচণ্ড অনিশ্চিত। অনেক বছরে আপনার নিশ্চয়ই প্রচুর শস্যসম্ভার ছিল, কিন্তু একথাও আপনার স্পষ্ট মনে আছে খারাপ বছরগুলি যখন ফসল উৎপাদন কম বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রাকৃতিক আগুন এবং বজ্রপাত, ঝঞ্ঝা, প্রচণ্ড ঝড়, সাইক্লোন, টাইফুন, টর্নেডো, শিলাবৃষ্টি, বন্যা, প্লাবন, ভুমিস্খলন, খরা, পোকামাকড় এবং অসুখ অথবা খারাপ আবহাওয়ার জন্যে এবং আপনার সমস্ত প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।
ইফকো-টোকিও-র“প্রধান মন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা” বীমা পলিসি শস্যক্ষতি নামক পীড়ার সঠিক উপকার।

খরা, বন্যা, সাইক্লোন, ঝড়ঝাপটা, ভূমিধ্বস, ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক কিছু কারণবশত ভারতীয় কৃষি উৎপাদন অ কৃষি রোজগার ক্রমাগত ধাক্কা খাচ্ছে । মহামারি প্রাদুর্ভাবে ও মনুষ্যসৃষ্ট অগ্নিকান্ড, সঞ্চিত বীজ বিক্রয়, সার, কীটনাশক ও আগাছানাশক এর অত্যাধিক ব্যবহারে এবং ফসলের দাম পড়ে যাওয়ার কারণে কৃষিকার্যের চলমানতা ক্রমাগত জটিল হচ্ছে। এই সমস্ত কারণে চাষীদের স্বার্থ আর সুরক্ষিত থাকছে না এবং এই ফসলের লোকসান কখনো কখনো এমনই মারাত্মক আকার ধারণ করছে যে টা সামাল দেওয়াই কৃষকের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। কৃষিজ পণ্যের বাণিজ্যের ক্রমাগত বৃদ্ধি, ফসলের মূল্যের ভারসাম্যতা হারিয়ে যাচ্ছে যাতে দিনের পর দিন ক্ষতির পরিমাণ আরও উর্ধমূখী হয়ে চলেছে । এখন প্রশ্ন হচ্ছে কী করে কৃষকদের এই ভয়াবহ প্রতিনিয়ত ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো যায়? ভারতীয় আইন অনুযায়ী কৃষকদের নির্দিষ্ট ফসলে লোকসানের পরিমাণের কিছুটা ন্যূনতম সমর্থন মূল্য(MSP) প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের আয়যোগ্যতা পরিমাপ করে  প্রদান করা উচিত। কিন্তু অধিকাংশ ফসলের উপড় বা অধিকাংশ রাজ্যে এখনও এই MSP প্রযুক্ত হয় নি।

কৃষিক্ষেত্রের জন্য বিশেষ উৎসাহব্যঞ্জক উদ্যোগ

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’ নামে কৃষকদের কল্যাণের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি অনুমোদিত হয়েছে। এই কর্মসূচির মূল বিষয়গুলি নিম্নরূপ :–

ক) এই বিমার জন্য কৃষকদের খরিফ শস্যের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে মাত্র ২ শতাংশ এবং রবিশস্যের ক্ষেত্রে ১.৫ শতাংশ হারে প্রিমিয়াম দিতে হবে। বার্ষিক বাণিজ্যিক এবং উদ্যানজাত ফসলের ক্ষেত্রে কৃষকদের মাত্র ৫ শতাংশ প্রিমিয়াম দিতে হবে। অত্যন্ত অল্প প্রিমিয়ামযুক্ত এই বিমা প্রকল্পের প্রিমিয়ামের অবশিষ্ট অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার বহন করবে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ফসল নষ্ট হলে কৃষকরা বিমাকৃত অর্থের পুরোটাই ফেরৎ পাবেন।

খ) এই প্রকল্পে সরকারি ভর্তুকির কোনও সর্বোচ্চ সীমা থাকবে না। এমনকি, এই বিমা প্রিমিয়ামের অবশিষ্টাংশ ৯০ শতাংশ হলেও সরকারই তা বহন করবে।

গ) এর আগে শস্য বিমার ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম ভর্তুকি হারের সর্বোচ্চ সীমা থাকায় কৃষকরা কম পরিমাণে বিমাকৃত অর্থ পেতেন। বিমার ক্ষেত্রে ভর্তুকিবাবদ সরকারের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। নতুন বিমা প্রকল্পে প্রিমিয়ামের ভর্তুকির সর্বোচ্চ সীমা তুলে দেওয়ার ফলে কৃষকরা বিমাকৃত ফসলের পুরো অর্থই পাবেন।

ঘ) এই বিমার প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হবে। স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে ফসল তোলা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ এবং আপলোড করা হবে। ফলে, কৃষকদের শস্য বিমার অর্থ পেতে আর বিলম্ব হবে না। এছাড়া, ফসল সংগ্রহে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দূরসংবেদী ব্যবস্থা কাজে লাগানো হবে।

নতুন এই শস্য বিমা প্রকল্পটি ‘এক জাতি – এক প্রকল্প’-এর ধরনে রূপায়িত হবে। নতুন এই প্রকল্পে পূর্ববর্তী বিমা প্রকল্পগুলির ভালো বৈশিষ্ট্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং আগের প্রকল্পগুলির ত্রুটি-বিচ্যুতি অপসারণ করা হবে।

বিভিন্ন ধরণের শস্য বিমা প্রকল্পগুলির মধ্যে তুলনা করলে দেখা যাবে সবকটির মধ্যে নতুন বিমা প্রকল্পেই কৃষকদের প্রিমিয়ামের হার সবচেয়ে কম। একটি মরশুমে মাত্র একবারই প্রিমিয়াম দিতে হবে। এর আগে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, নতুন প্রকল্পে তাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফসল তোলার পর ক্ষতি হলে নতুন এই প্রকল্পে সারা দেশেই সাইক্লোন বা অসময়ে বৃষ্টিজনিত কারণে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে ফসল বোনা না গেলেও ক্ষতিপূরণ দাবি করা যাবে। প্রযুক্তির ব্যবহার এই বিমার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বর্তমান সময়ে চুক্তি চাষ ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্য ব্যবস্থার মতো ব্যবস্থা তৈরী হওয়াতে আশা করা যাচ্ছে যে কিছু মূল্য বীমা হিসাবে পণ্যমূল্যের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকবে। কিন্তু কৃষিক্ষেত্রে বেশীরভাগ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয় সাধারণত উৎপাদনের ও আয় সংক্রান্ত ঝুঁকির নিরিখে যেই সমস্ত ক্ষতিগুলি বিবিধ প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে ঘটে থাকে। কৃষি বীমা হল সেই ব্যবস্থা যা সাধারণত কৃষকদের কিছু অপূরণীয় ক্ষতিকে সামলাবার জন্য করা হয় যে সমস্ত ক্ষয় ক্ষতিসমূহ কিছু অজানা প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণের প্রভাবে ঘটে থাকে। বলতে গেলে এটি কৃষকদের অনিশ্চয়তাজনিত অস্বাভাবিক ক্ষতিপূরণের একটি ভবিষ্যতব্যবস্থা স্বরূপ। ভারত কৃষিপ্রধান দেশ যেখানে কৃষিকে ভিত্তি করে বেশীর ভাগ গ্রামীণ অর্থনীতি গড়ে ওঠে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৬ সালে ১৩ই জানুয়ারী কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার তাগিদে গড়ে তোলেন প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা (PMFBY) পরিকল্পনাটি। এই পরিকল্পনা অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত ও ঋণগ্রস্ত কৃষকের মাথা থেকে ক্ষতি বা ঋণের বোঝা কমাতে সফল হবে। এই পরিকল্পনা কৃষকদের ঝুঁকি নেওয়ার শক্তি দেবে যাতে তারা পরিবেশের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করার রসদ যোগাবে।

এই পরিকল্পনার সাহায্যে কৃষক তার ক্ষতিগ্রস্থ অংশের বীমাকৃত ক্ষতিপূরণও দাবী করতে পারেন, এবং তা অত্যন্ত সহজ ও দ্রুত প্রক্রিয়ায়, যাতে কৃষকদের বীমাকৃত ফসলের অর্থ প্রাপ্তিতে  কোনোরূপ অসুবিধার সৃষ্টি না হয় । এই পরিকল্পনা ভারতের সমস্ত রাজ্যে চালু করা হবে, যা কাজে সহযোগিতা করবে প্রতিটি রাজ্যসরকার। এই পরিকল্পনার প্রশাসনিক দায়িত্ব থাকবে Ministry Of Agriculture and Farmer Welfare, Government Of India.