ব্রণ, ফুসকুড়ি সমস্যায় ? জেনে নিন ৫টি অব্যর্থ ভেষজ সমাধান

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের ব্রণ ও ফুসকুড়ি সমস্যা নিয়ে কথা বলবো।

বয়ঃসন্ধিকাল , আমাদের কৈশোর থেকে যৌবনে যাওয়ার  সময় । এই সময় থেকেই আমদের শারীরীক এবং মানসিক নানান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ব্রণ শব্দটার সাথে আমরা মোটামুটি সবাই পরিচিত।১০০ জনের মধ্যে ৯০ জনের এই রোগটা দেখা যায়। কখনো কখনো  কুড়ি কিংবা তিরিশ বছর বয়সেও এই রোগ দেখা যায়। এর স্থায়ীত্ব দীর্ঘকালীনও হতে পারে । ব্রণ নিয়ে সকলেই চিন্তিত কারণ, আমাদের মুখমন্ডলের সৌন্দর্য আমাদেরকে আকর্ষণীয় করে তোলে।বয়ঃসন্ধিকালে এই ত্বকের পরিচর্যার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে। কিন্তু সবার আগে জানা দরকার যে ব্রণ আসলে ঠিক কি? আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

ব্রণের প্রকারভেদ:

1. ট্রপিক্যাল একনি: অতিরিক্ত  আর্দ্রতায় বা বেশি ঘাম হলে পিঠে এবং হাঁটুতে ব্রণ দেখা যায়।
2. প্রিমেন্সট্রুয়াল একনি: মহিলাদের মাসিকের সপ্তাহ খানেক আগে  পাঁচ থেকে দশটি ব্রণ দেখা যায়।
3.  একনি কসমেটিকা : অতিরিক্ত মেকআপ ব্যবহার করলে মুখে ব্রণ দেখা যায়। বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে নানান পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যার ফলে মুখে ব্রণ দেখা যেতে পারে।
4. একনি ডিটারজিনেকস : দৈনিক ১থেকে ২ বারের বেশি সাবান দিয়ে মুখ ধুলে মুখে রুক্ষতা বাড়তে দেখা যায়, যার ফলে মুখে ব্রণ দেখা যায়।
5. স্টেরয়েড একনি :  স্টেরয়েড ঔষধ ব্যবহারের ফলে ব্রণ দেখা যায়। একই ঔষধ অনেকদিন ধরে ব্যবহারের ফলে ব্রণ দেখা যায়।

 ব্রণ বা ফুসকুড়ি নিয়ে চিন্তিত? ঠিকঠাক চিকিৎসায় ব্রণ বা ফুসকুড়ির হাত থেকে মুক্তি মেলে ঠিকই, কিন্তু তার জন্য যে সব ওষুধ বা ক্রিম বাজারে উপলব্ধ সেগুলি যেমন ব্যয়বহুল, তেমনই তা থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ও থেকে যায়। কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়েও এই ধরনের সমস্যা সহজেই দূর করা যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত কার্যকরী ভেষজ উপায়গুলি সম্পর্কে…

1. পাতিলেবুর রস

পাতিলেবুর রস যাঁদের ব্রণর পরিমাণ অত্যধিক বেশি তাঁরা পাতিলেবুর রস দিনে দু’তিনবার ব্রণর জায়গাগুলোতে লাগান। তবে একটানা ১০ মিনিটের বেশি রাখবেন না। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

2. নিমপাতা

নিমপাতা খুব ভাল জীবাণুনাশক। তাই ব্রণ সারাতে নিমপাতা খুবই উপকারী। নিমপাতা বেটে সঙ্গে চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণ ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

3. গোলাপ জল

গোলাপ জল গোলাপ জলের নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ কমে যায়। দারুচিনি গুঁড়োর সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণ ব্রণের ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সংক্রমণ, চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।

4. পুদিনা পাতার রস

পুদিনা পাতার রস করে নিয়ে সেটা দিয়ে আইস কিউব তৈরি করুন। ফুসকুড়ি ও ব্রণের এই আইস কিউব ঘষুন ১০-১৫ মিনিট। এতে ফুসকুড়ি ও ব্রণের সংক্রমণ তো কমবেই সঙ্গে ত্বকের জ্বালাপোড়া ভাবও দূর হবে।

5. পাকা পেঁপে

পাকা পেঁপে চটকে নিন (এক কাপের মতো)। এর সঙ্গে মেশান এক চামচ পাতিলেবুর রস এবং প্রয়োজন মতো চালের গুঁড়ো। মিশ্রণটি মুখ-সহ গোটা শরীরে লাগান। ২০-২৫ মিনিট মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। পেঁপে ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস

প্রতিকারের উপায়

প্রতিরোধক নিলেও আমাদের যৌবন নিয়ম না মানার অভ্যাসের দাস। এই ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস যুগে ফাস্ট ফুড আমরা সকলেই খাই। সবসময় নিয়ম মেনে তো চলা যায় না। যার কারণে হাজার নিয়ম মানা সত্ত্বেও , ত্বকের যত্ন নিলেও ব্রণকে রোখা যায় না।  ব্রণ হলে কি করবেন? আপনার জন্য রইল কয়েকটা দাওয়াই

1. দিনে দুই থেকে তিনবার ফেসওয়াশ  দিয়ে মুখ ধুলে ব্রণের সংক্রমণ থেকে নিজের মুখমণ্ডলকে বাঁচানো সম্ভব।


2. বেশির ভাগ সময় ব্রণতে হাত দিলে তাকে খুটলে, তা বেড়ে যায় । যা আমাদের মুখে এক গর্তের সৃষ্টি করে।তবে যদি ফুসকুড়ির গোড়া থেকে তুলে আনা হয়, তবে এর দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব। রাতের বেলা গরম সেঁক দিয়ে , মাস্ক ব্যবহার করলে ব্রণ কমে।

3. প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পি অ্যাকনি ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধক রূপে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল বেনজয়েল পার অক্সাইড  সল্যুশন ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বক যদি সংবেদনশীল হয় তবে এটিকেও মৃদু হতে হবে। একদিন অন্তর এই লোশ্ন মেখে রাতে ঘূমোতে গেলে ব্রণের দ্রূত উপশম সম্ভব।
4. সপ্তাহে একদিন স্টিম ক্লিনজিং  করলে ব্রণের প্রভাব কমে। বাষ্প দিয়ে মুখ পরিষ্কার করবার পর তাকে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড দিয়ে পরিষ্কার করলে ব্রণের প্রতিকার সম্ভব।
5.  রোদে চলাফেরা করবার সময় ব্রণ কিছুটা দমে যায়। কিন্তু অতি প্রখর রোদে ঘুরলে ব্রণ বেড়ে যায়।
6.  কম তৈলাক্ত ক্রিম বা প্রসাধণী ব্যবহার করলে ব্রণের দ্রুত চিকিৎসা সম্ভব।    
7. প্রতিদিন সকালে নন ইরিটেটিং ক্লিঞ্জিং লোশন ব্যবহার করে ত্বককে তেল মুক্ত করা যায়। তারপর তাতে পরিষ্কার হাতে ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে , অ্যাসট্রিনজেট ব্যবহার করে মুখের মরা কোষ গুলি বেড়িয়ে যায় যার ফলে ব্রণের পরিমাণ কমে।
8. মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা , অনিদ্রা থেকে ব্রণ পরিমাণ বাড়ে তাই আমাদের মন ভালো থাকলে মুখমণ্ডলও থাকবে সুন্দর।