গ্রহদোষ কাটাতে জেনে নিন রুদ্রাক্ষের কার্যকারিতা ও ব্যবহার

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। রুদ্রাক্ষ আমরা সবাই কম বেশি জানি বা চিনি। এমন আমরা কেউ নেই যারা কিনা রুদ্রাক্ষ চিনি না বা কোনোদিন নাম শুনিনি। আজ এই রুদ্রাক্ষ নিয়েই আলোচনা।

সাধারণ বিবরণ – Small Description

রুদ্রাক্ষ গাছ দেখতে কিছুটা বকুল গাছের মত, পরিপক্ক গাছের শেকড়ে ঝাউ-শিমুল-বুদ্ধনারিকেল গাছের মত অধিমূল বা বাট্রেসিং দেখা যায়। গাছের ফল দেখতে গাঢ় নীল রঙের, যে কারণে এর ইংরাজি এক নাম ব্লুবেরি বিডস্‌। মূলত রঙটা নীল দেখা যায় স্ট্রাকচারাল টেক্সচার-এর কারণে, যেমনটা দেখা যায় ময়ূরের পেখমে। এই ফলের বহিরাবরণ সরিয়ে নিলে রুদ্রাক্ষ বেরিয়ে পড়ে যা হতে পারে বহুমুখী।রুদ্রাক্ষের ক্ষেত্রে এর মুখিতা সম্পর্কে জানা একটি প্রয়োজনীয় বিষয়।

লোকিউল বা বীজকোষের বিভাজন রেখার গভীর দাগ থেকেই এর মুখ-সংখ্যা নিরূপন করা যায়। সাধারণত পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষই দেখতে পাওয়া যায় সবচে বেশি। তবে ১ থেকে শুরু করে ৩৮ মুখী পর্যন্ত রুদ্রাক্ষের সন্ধানও পাওয়া যায়। সহজলভ্য নয় বলে ১৪ থেকে ২১ মুখী রুদ্রাক্ষের মূল্যও বেশী। যাবতীয় নানামুখী রুদ্রাক্ষের মধ্যে সবচেয়ে দুর্লভ বোধ হয় সুশ্রী এবং গোলাকার একমুখী রুদ্রাক্ষ যা আজকাল অতিশয় দুর্লভ। শোনা যায় ভারতের টাটা কোম্পানী ৭০ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি একমুখী রুদ্রাক্ষ বংশ পরম্পরায় রক্ষা করে আসছে।

রুদ্রাক্ষের মালা জপ করলে তাড়াতাড়ি অনেক বেশি ফল পাওয়া যায়। ‘নমঃ শিবায়’ এর প্রধান মন্ত্র। কারণ রুদ্রাক্ষ হল স্বয়ং শিবের আঁখি। এবং ছোট ও বড় দানার কার্যকারিতা সমান। কেবলমাত্র ঘুণ ধরা ও নকল দানা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ। বহু প্রাচীন ধর্মীয় গ্রন্থ ও চিকিৎসার গ্রন্থগুলি থেকে আমরা রুদ্রাক্ষের বিশেষ বিশেষ পরিচয় পেয়ে থাকি। দেবগণ ও মুনি ঋষি এটাকে যথেষ্ট সম্মানের সহিত গ্রহণ করতেন। তাই অদ্যাবধি সেই রুদ্রাক্ষ ফলের ব্যবহার দেখা যায়।

মানবজীবনে রুদ্রাক্ষের প্রভাব অপরিসীম। মানব জীবনে বিভিন্ন গ্রহের অবস্থান অনুসারে এর প্রভাব অনস্বীকার্য। রুদ্রাক্ষ বিভিন্ন প্রকারের হয়। একমুখী, দ্বিমুখী, তিনমুখী, পাঁচমুখী, সাতমুখী ইত্যাদি।

পৃথিবীতে অসংখ্য প্রকার বৃক্ষ পাওয়া যায় কিন্তু রুদ্রাক্ষ বৃক্ষ পাওয়া ভীষণ সমস্যা। রুদ্রাক্ষ অনেক প্রকার হয়, সেগুলি লঙ্কার বীজের আকার থেকে শুরু করে আমলকীর আকারের পর্যন্ত হয়ে থাকে। সব থেকে ছোট আর সব থেকে বড় রুদ্রাক্ষ পাওয়া বড় কঠিন। এ বার দেখে নেওয়া যাক জ্যোতিষশাস্ত্র মতে গ্রহদোষ কাটাতে কী রকম রুদ্রাক্ষ প্রয়োজন।

1. রবির স্থান ভাল হলে জাতক-জাতিকা শিল্পী, জ্ঞানী, সাধু, বুদ্ধিমান ও বিচক্ষন প্রকৃতির হয়ে থাকে। তবে প্রায়ই। এদের পেটের রোগ বা সমস্যা লেগে থাকে। যে কোনও রুদ্রাক্ষ ধারণ করলেই ফল মিলবে।

2. চন্দ্রের ক্ষেত্র খারাপ হলে জাতক-জাতিকা একটু ভীতু প্রকৃতির হয়। এদের মধ্যে কু-সংস্কারের প্রভাব বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে চন্দ্র গ্রহদোষ কাটাতে পঞ্চদশমুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করা উচিত।

3. মঙ্গলের স্থান নীচু হলে জাতক-জাতিকা বেসামাল ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির হয়। সে ক্ষেত্রে তিনমুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে সুফল পাওয়া যায়। অনেকে দশমুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করেও ভাল ফল পেয়েছেন।

4. বুধের স্থান নীচু হলে জাতক-জাতিকার একটু অসৎ পথে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে ক্ষেত্রে সপ্তমুখী রুদ্রাক্ষ ব্যবহার করলে সুফল মিলবে।

5. বৃহস্পতির স্থান নিচু হলে জাতক-জাতিকারা অত্যাচারী ও অবাধ্য প্রকৃতির হয়। সে ক্ষেত্রে পঞ্চমুখী বা অষ্টমুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে সুফল মিলবে।

6.  শুক্রের স্থান খারাপ বা নীচু হলে জাতক-জাতিকা বিদ্বেষী বা একটু অসৎ প্রকৃতির হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চতুর্দশমুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।

7. শনির ক্ষেত্র নীচু হলে জাতক-জাতিকা অবাধ্য, বিদ্বেষী প্রকৃতির হয়। সে ক্ষেত্রে নয়মুখী বা দ্বাদশমুখী রুদ্রাক্ষ ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।

শেষ কথা 

রুদ্রাক্ষের শক্তি সীমাহীন। রুদ্রাক্ষ সাধককে ব্রহ্মজ্ঞান ও ভৌতিক সমৃদ্ধি দান করে। রুদ্রাক্ষের দ্বারা বহু জটিল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। জ্যোতিষশাস্ত্র, আয়ুর্বেদ শাস্ত্র ও বিজ্ঞান এর গুণগান করে থাকে। ভাঙা, হাল্কা ও পোকা ধরা রুদ্রাক্ষে কোনও কাজ হয় না। শাস্ত্র মতে রুদ্রাক্ষ সংস্কার করে ধারণ করতে হয়। এই রুদ্রাক্ষ এক মুখ থেকে একুশ মুখ পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত এক থেকে চোদ্দ মুখ পর্যন্ত রুদ্রাক্ষ পাওয়া খুব কঠিন। যে রুদ্রাক্ষ সবদিকে সমান, কোথাও বাঁকা, উঁচু-নীচু বা ভাঙা-চোরা নেই, সেই রুদ্রাক্ষ সবথেকে ভাল।