মুখ, গলা, হাত, আঙুলের থেকে আঁচিল কীভাবে দূর করবেন সহজ 14টি উপায়

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। কমেন্ট করলে খুশি হবো। কেমন লাগলো আপনার কাছে কমেন্ট করে আমাদের জানান। শুরু করছি আজকের আশ্চর্য বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের জানাবো এক আশ্চর্য বিষয়। আপনার কি শরীরে অনেক আঁচিল ? মুখের আশে পাশে বা গলায় বা শরীরের অনেক জাগায় আঁচিল আছে ? আর চিন্তার করবার কোনো কারণ নেই। আমরা আজকে জেনে নেবো যে – আঁচিলের চিকিৎসা কি, আঁচিল চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি, আঁচিলের ঔষধ, আঁচিল হওয়ার কারন, আঁচিল দূর করার ক্রিম, আঁচিল দূর করার ঔষধ ইত্যাদি ইত্যাদি। 

আপনার মুখ, গলা, হাত বা আঙুলের কোনো জায়গায় আঁচিল হয়েছে, আর তাই নিয়ে আপনাকে সবাই মিলে খেপাচ্ছে, এই অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই আপনার হয়েছে। ভেবে দেখুন তো, আপনার যেখানে সেখানে অবাঞ্ছিত আঁচিল যদি গজিয়ে ওঠে, তাহলে কি বাজেই না লাগে। এদিকে কীভাবে তাদের হাত থেকে মুক্তি পাবেন, তাও ভেবে পান না। আজকের আর্টিকলে রইলো 14টি সহজ ঘরোয়া টিপস। দেখুন।

আপনার হাতে, গলায়, আঙুলে বা মুখের কোনো জায়গায় অনেকসময় চামড়া গোল হয়ে বেড়ে উঠতে থাকে। একেই বলে আঁচিল। এটা হয় কিন্তু ভাইরাস আক্রমণের দ্বারা। এমনিতে এগুলোতে কোনো ব্যথা না হলেও মাঝে মাঝে কিন্তু খানিক ব্যথা হয়। আর যেখানে সেখানে আঁচিল অমন গজিয়ে উঠলে সেটা তো দেখতেও ভালো লাগে না। কিন্তু ওই ছোট্ট আঁচিল তাড়ানোর জন্য কেনই বা পয়সা খরচ করে ক্রিম কিনবেন বা ডাক্তার দেখাবেন? তার থেকে ঘরে বসে আঁচিল দূর করার সহজ উপায় জানুন।

1. কলার খোসা

অবাক হচ্ছেন তো? কলার খোসা কিন্তু সত্যিই আঁচিল দূর করতে দারুণ কাজে দেয়। এতে থাকা এনজাইম আঁচিলকে খুব তাড়াতাড়ি দূর করে আর স্কিনকে রিজুভিনেট করে।

উপকরণ

কলার খোসা।

পদ্ধতি

আপনার আঁচিলের ওপর কলার খোসা কয়েক মিনিট ধরে ভালো করে ঘষুন। এছাড়াও আঁচিলের ওপর কলার খোসা রেখে ব্যান্ডেজ দিয়ে আটকে রাখতে পারেন। নিয়ম করে এটা করে গেলে কিন্তু সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ফল পাবেন।

2. নারকেল তেল

যেকোনো রকমের আঁচিল যদি দূর করতে চান, তাহলে নারকেল তেলকে বানান আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড। কারণ এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিডের অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল গুণ আপনার আঁচিলকে সহজেই দূর করবে। তাছাড়া নারকেল তেল আপনার ত্বককে খানিক আরামও দেবে।

উপকরণ

নারকেল তেল পরিমাণ মতো।

পদ্ধতি

নারকেল তেল সামান্য গরম করে আঁচিলের ওপর ভালো করে মালিশ করুন যতক্ষণ না আপনার স্কিন নারকেল তেলকে পুরোপুরি শুষে নেয়। তবে একদম ধোবেন না। দিনে ২-৩ বার করুন।

3. ক্যাস্টর অয়েল

আঁচিল তাড়াতে আপনি ক্যাস্টর অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু এতে খানিক সময় লাগবে। ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ আপনার আঁচিলের ভাইরাসকে খুব তাড়াতাড়ি মেরে ফেলে। ফলে আঁচিল দূর হয় সহজে।

উপকরণ

ক্যাস্টর অয়েল পরিমাণ মতো।

পদ্ধতি

ক্যাস্টর অয়েল আপনার আঁচিলের জায়গায় নিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। এরপর ওভাবেই রেখে দিন। নিয়ম করে দিনে ২-৩ বার করে যদি করেন, তাহলে তাড়াতাড়ি ফল পাবেন।

4. বেকিং সোডা

জেনিটাল আঁচিলের ক্ষেত্রে আপনি অনায়াসে বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এতে থাকা কস্টিক এজেন্ট আপনার আঁচিলকে ভেতর থেকে ধ্বংস করে দেয়।

উপকরণ

বেকিং সোডা ৩-৪ চামচ, জল ১ টা ছোট বাটি।

পদ্ধতি

এক বাটি জলে বেকিং সোডা গুলে নিন। এরপর আপনার আঁচিলের জায়গাটা ওই জলে চুবিয়ে রাখুন আধঘণ্টা। তারপর এমনিই শুকোন। যতদিন না আঁচিল একেবারে দূর হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এটা করে যাবেন।

5. রসুন

আঁচিল দূর করতে রসুন কিন্তু দারুণ কাজের। কারণ এতে থাকা অ্যালিসিন খুব শক্তিশালী অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল হিসেবে কাজ করে যা নানারকম ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাসকে সহজেই মেরে ফেলে। তাই আঁচিলের ভাইরাস দূর করতেও রসুন দারুণ কার্যকরী।

উপকরণ

রসুন ২-৩ কোয়া।

পদ্ধতি

রসুনের খোসা ছাড়িয়ে থেঁতো করে নিন। এরপর ওই পেস্টটা আপনার আঁচিলের জায়গায় মাখিয়ে রাখুন। এছাড়া রসুন এমনিও খেতে পারেন। যতদিন না আঁচিল দূর হয়, ততদিন এটা নিয়ম করে করে যান।

6. নেল পালিশ

অবাক হবেন না। আপনার জেদি বিচ্ছিরি আঁচিলকে তাড়াতে নেল পালিশ ট্রাই করে কিন্তু দেখতেই পারেন। কারণ নেল পালিশ আঁচিলের ওপর লাগালে ওখানে অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভাইরাস সাফোকেশনের ফলে মরে যায়।

উপকরণ

ক্লিয়ার নেল পালিশ, নেল পালিশ রিমুভার।

পদ্ধতি

আপনার আঁচিলের ওপর মোটা করে নেল পালিশ লাগান। তারপর শুকোতে দিন। কয়েক ঘণ্টা রেখে নেল পালিশ রিমুভার দিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার করে নিন। কয়েক ঘণ্টা ছাড়া ছাড়াই কিন্তু আপনি এটা ট্রাই করে যেতে পারেন।

7. অ্যাপল সিডার ভিনিগার

আঁচিল সহজে তাড়ানোর জন্য এটা কিন্তু দারুণ টিপস। কারণ এতে থাকা অ্যাসেটিক অ্যাসিড আঁচিলের কোষ ধ্বংস করে খুব তাড়াতাড়ি আঁচিল দূর করে।

উপকরণ

অ্যাপল সিডার ভিনিগার ১ চামচ, তুলোর বল পরিমাণ মতো, ব্যান্ডেজ।

পদ্ধতি

তুলোর বল অ্যাপল সিডার ভিনিগারে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর ওই তুলোটা আপনার আঁচিলের জায়গায় ধরুন। ওর ওপরে ব্যান্ডেজ দিয়ে আটকে নিন। সারারাত রাখুন। প্রত্যেক রাতেই নিয়ম করে এটা করুন। দেখবেন এক সপ্তাহের মধ্যে আঁচিল গায়েব হয়ে গেছে।

8. থুজা অয়েল

হোমিওপ্যাথি ওষুধের সাহায্যে আঁচিল দূর করতে চাইলে এই থুজা অয়েল আপনার বেস্ট অপশন হতে পারে। আপনার আঁচিল থেকে গন্ধ বেরোয় বা রক্ত পড়ে, তাহলেও এই তেল কাজে লাগান।

উপকরণ

থুজা অয়েল কয়েক ফোঁটা, ব্যান্ডেজ।

পদ্ধতি

আপনার আঁচিলের ওপর থুজা অয়েল কয়েক ফোঁটা লাগান। তারপর ব্যান্ডেজ দিয়ে ভালো করে জড়িয়ে রাখুন। পরের দিন ব্যান্ডেজ সরিয়ে নতুন করে তেল দিয়ে আবার ব্যান্ডেজ বেঁধে ফেলুন। যতদিন না আঁচিল খসে পড়ে, ততদিনই এটা করে যান।

9. ভিটামিন ক্যাপসুল

আঁচিল দূর করতে ভিটামিন এ কিন্তু দারুণ কাজে দেয়। তাছাড়া এটা ব্যবহার করলে কোনো দাগও থাকবে না। আর এমনিতে ভিটামিন এ কিন্তু আঁচিলের বিরুদ্ধে অনাক্রম্যতাকেও বাড়িয়ে তোলে।

উপকরণ

ভিটামিন এ ক্যাপসুল ১ টা।

পদ্ধতি

ক্যাপসুল ভেঙে তার মধ্যের তেলটা আপনার আঁচিলে লাগিয়ে রাখুন। এই ভিটামিন এ ক্যাপসুলের বদলে আপনি ফিশ অয়েল ক্যাপসুলও ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ভিটামিন সি আর ভিটামিন ই ক্যাপসুলও কিন্তু আঁচিল দূর করতে দারুণ কাজে দেয়। তবে হ্যাঁ, নিয়ম করে ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

10. হলুদ

আপনার ত্বকের যেকোনো সমস্যায় যে হলুদ দারুণ কাজে দেয়, তা তো জানেনই। আর এর অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল প্রপার্টি কিন্তু আঁচিলের ভাইরাসকে সহজে দূর করতেও একনম্বর।

উপকরণ

হলুদ গুঁড়ো ১ চামচ, জল ২ চামচ।

পদ্ধতি

জলে হলুদ গুঁড়ো গুলে পেস্ট বানিয়ে নিন। এরপর আঁচিলের ওপর এই মিশ্রণ ৩০ মিনিট মাখিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। আর আপনার ত্বকে যদি হলুদের বিচ্ছিরি দাগ হয়ে যায়, তাহলে ওর ওপর খানিক লেবুর রস ঘষে নিতে পারেন। দিনে ১-২ বার নিয়ম করে করুন। উপকার পাবেন।

11. আলু

আলুর রসে থাকা অ্যাসিড আপনার আঁচিলের কোষগুলোকে ডি-হাইড্রেট করে আঁচিল সৃষ্টিকারী ভাইরাসকে মেরে ফেলে। তাই সহজে আঁচিল তাড়াতে চাইলে আলুর রসকে ব্যবহার করুন।

উপকরণ

আলুর রস ১ চামচ।

পদ্ধতি

আলুর রস আপনার আঁচিলের জায়গায় লাগান। তারপর একে নর্মালি শুকোতে দিন। ধোবেন না। দিনে বেশ কয়েকবার করে করুন, দেখবেন ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে আঁচিল আস্তে আস্তে ছোট হচ্ছে।

12. নিম তেল

নিম তেলের শক্তিশালী অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ আপনার যেকোনো রকম আঁচিলকেই সহজে ভেতর থেকে নির্মূল করতে পারে।

উপকরণ

নিম তেল ১-২ ফোঁটা, ব্যান্ডেজ।

পদ্ধতি

আপনার আঁচিলের ওপর নিম তেল ভালো করে লাগিয়ে তার ওপর ব্যান্ডেজ চাপা দিয়ে নিন। প্রতিদিন নতুন করে তেল লাগিয়ে আবার ব্যান্ডেজ বেঁধে নিন। যতক্ষণ না আঁচিল খসে পড়ছে, ততক্ষণ এটা করে যান।

13. লবঙ্গ তেল

লবঙ্গের তেলে থাকা ইউজিনিন কম্পোনেন্টের অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ আপনার আঁচিলের ভাইরাসকে ভেতর থেকে মেরে ফেলে এবং ভাইরাসের বার বার বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। তাই পাকাপাকি ভাবে আঁচিল থেকে মুক্ত হতে চাইলে এটা ব্যবহার করতেই পারেন।

উপকরণ

লবঙ্গের তেল কয়েক ফোঁটা, ব্যান্ডেজ।

পদ্ধতি

কয়েক ফোঁটা লবঙ্গের তেল আপনার আঁচিলের ওপর মাখিয়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে নিন। আগের মতোই প্রতিদিন নতুন করে তেল লাগান। দেখবেন কয়েকদিনের মধ্যেই ফল পাবেন।

14. ল্যাভেন্ডার অয়েল

যেকোনো রকমের ইনফেকশন দূর করতে ল্যাভেন্ডার অয়েলের জুড়ি নেই।

উপকরণ

ল্যাভেন্ডার অয়েল কয়েক ফোঁটা।

পদ্ধতি

ল্যাভেন্ডার অয়েল কয়েক ফোঁটা নিয়ে আপনার আঁচিলে মাখিয়ে রাখুন। তারপর বাতাসে নর্মালি শুকোতে দিন। দিনে ২-৩ বার করুন। দেখবেন নিয়ম করে করলে তাড়াতাড়ি উপকার পাবেন।