পা ফাটা শুরু? শীতের আগে থেকে পায়ের যত্ন নিন – Foot Care Home remedies Tips In Bengali

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম।   আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আমরা আমাদের ত্বক নিয়ে অনেকটা  চিন্তা করি সব সময়। কিভাবে আমাদের ত্বক একটু ভালো রাখতে পারি। কিভাবে আমরা আমাদের ত্বকের প্রত্যেক পার্টস এর কেয়ার করতে পারি যেমন – নাক Nose , কান Ear , গাল Cheek ঠোঁট Lip ইত্যাদি ইত্যাদি । এর মধ্যে আজ আমি আপনাদের এমন একটা পার্টস এর কথা বলবো যা সবাইকে আকর্ষণ করে থাকে বন্ধুরা। একটু অন্য রকম জিনিস যা অনেক সময় দেখা যায় আবার অনেক সময় দেখা যায় না সেটা যদিও আমাদের ওপর। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য এটা খুব কষ্টকর। জিনিস টা কি তাই তো ? কি আবার পায়ের গোড়ালি। শীত তো পড়েছে আর আমি ভালো মতনই জানি যে আপনার পা অর্থাৎ পায়ের গোড়ালি ফেটে এক্কেবারে চৌচির অবস্থা। কোনো কিছুতেই কোনো কিছু হচ্ছে না তাই না ? আজ আমি আপনাদের সবাইকে বিশেষ করে মেয়েদের পা ফাটা নিয়ে আলোচনা করবো। আর তার সাথে সাথে এটাও বলবো যে কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।আমরা আরও জন্য যে –পা ফাটার চিকিৎসা কি, হাত পা ফাটা দূর করার উপায়, পা ফাটা থেকে মুক্তির উপায়, পা ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে, পায়ের গোড়ালি ফাটার ক্রিম, পায়ের গোড়ালি ফাটার চিকিৎসা ইত্যাদি ইত্যাদি।

পা ভালো রাখতে, পা ফাটা থেকে দূরে থাকতে অনেকতো ফুট স্পা করলেন। কিন্তু পা ফাটা তো বার বার ফিরেই আসছে তাই না ? তাই এবার এমন কিছু করুন ,যা সত্যি ভেতর থেকে পা কে করে তুলবে নরম কোমল। সহজেই পা ফাটা সারিয়ে তুলবে। করাও খুব সহজ। জাস্ট এক রাতেই পা ফাটা থেকে মুক্তি। তাই এবার বাড়িতে বসেই পায়ের যত্ন নিন। আর সত্যি কথা বলতে কি আমরা শীত যেতে না যেতেই ভুলে যাই পায়ের কথা আবার এক বছর পর শীতকালে এর যত্ন নি। কি ঠিক বলছি তো নাকি ? হাহাহাহাহাহা না না চিন্তার কোনো কারণ নেই তবে একটা কথা বলি সেটা হলো শীতকাল ছাড়াও আমাদের অল্প স্বল্প পায়ের যত্ন নিতে হবে বা.অল্প নিলেই হবে।

1. নারকেল তেল

বন্ধুরা আপনাদর সবার বাড়িতে নারকেল তেল নিশ্চয়ই আছে ? তাহলে চিন্তা কি, পায়ের যত্নে ব্যবহার করুন নারকেল তেল। দেখে নিন কিভাবে করবেন।

উপকরন – 

২চামচ নারকেল তেল ও পাতলা সুতির মোজা –

পদ্ধতি –

জাস্ট নারকেল তেল হালকা হাতে পায়ে মালিশ করুন। তারপর পাতলা সুতির মোজা পরে শুয়ে পড়ুন। পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন। পায়ের অবস্থা খুব খারাপ হলে এটি টানা একসপ্তাহ করুন। নারকেল তেল পায়ের মরা কোশ সরিয়ে পাকে হাইড্রেড করে তোলে।

২. মধু

ত্বককে নরম কোমল রাখতে মধুর বিকল্প নেই।  শুধু কোমল নয়, পায়ের পাতাকে ফর্সা করতেও সাহায্য করবে।

উপকরন –

হাফ কাপ মধু ও একটু গরমজল

পদ্ধতি –

পরিমাণ মত গরমজলে হাফ কাপ মধু ফেলে মিশিয়ে নিন। তাতে পা ডুবিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রেখে পা হালকা ঘষুন। তারপর পা সরিয়ে নিন। এটিও রোজ রাতে করতে পারেন। দেখবেন পা কেমন নরম কোমল থাকছে।

3. লেবু

পা ভালো রাখতে শুধু ভেসলিন ব্যবহার করছেন? তার সঙ্গে যোগ করুন একটু লেবুর রস। ব্যাস সারাদিন এই পা নিয়ে আর চিন্তা করতে হবেনা।

ঊপকরন –

৪ থেকে ৫ ফোঁটা লেবুর রস, ১চামচ ভেসলিন, ও একটু গরম জল

পদ্ধতি –

প্রথমে কিছুটা গরম জল নিয়ে তাতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। তারপর ১চামচ মত ভেসলিন নিয়ে, তাতে ৫ ফোঁটা লেবুর রস দিন। জল থেকে পা তুলে এই মিশ্রণটা গোড়ালিতে লাগান। এবং সঙ্গে সেখানে পা এর অন্যান্য জেয়গায় যেখানে পা ফাটার সম্ভবনা রয়েছে সেখানে লাগান। এটা লাগিয়ে উলের মজা পরে সারারাত রাখুন। পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন। এটা রোজই করতে পারেন পা নরম রাখার জন্য।

4.  গোলাপ জল ও গ্লিসারিন

গ্লিসারিন আমরা জানি স্কিনকে নরম কোমল রাখে। আর গোলাপজলে আছে ভিটামিন এ,ভিটামিন বি-৩, ভিটামিন ডি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা পায়ের ত্বকে পুষ্টি যোগায়। এবং পায়ের ত্বককে হেলদি ও গ্লোয়িং করে তোলে।

উপকরন –

২চামচ গোলাপজল ও ২চামচ গ্লিসারিন।

পদ্ধতি –

জাস্ট রাতে শুতে যাবার আগে, এই দুটো উপকরনের মিশ্রণ তৈরি করুন। হালকা হাতে একটু ম্যাসাজ করে নিন। তারপর শুয়ে পড়ুন। সকালে স্নানের সঙ্গেই পা ধুয়ে যাবে। সপ্তাহে তিনদিন করুন।

5. কলা ও অ্যাভোকাডো

ছুটির দিনে ব্যবহার করুন কলা ও অ্যাভোকাডো ফুট মাস্ক। অ্যাভোকাডো আছে বিভিন্ন রকমের এসেনসিয়াল অয়েল আর কলায় আছে ভিটামিনস। এই দুটো উপকরনই পা কে সুন্দর কোমল রাখতে সাহায্য করবে।

উপকরন –

১টা কলা, ১টা অ্যাভোকাডো

পদ্ধতি –

দুটো জিনিস ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট বানান। ঘন পেস্ট হলে সেটি পায়ে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০মিনিট। তারপর হালকা গরমজলে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন পা কেমন সুন্দর থাকবে।

তাহলে এখন পা ফাটা নিয়ে নো চিন্তা! অফিস থেকে ফিরে রাতে এক একদিন এক একটা উপকরন ব্যবহার করুন। মাঝে মাঝে একদিন ফাঁক দেবেন। আর ছুটির দিনে করুন ফুট মাস্কটি। ব্যাস সারাবছরই পা থাকবে সুন্দর।

6.  অলিভ তেল

পা ফাটা থেকে মুক্ত থাকতে আরেকটি খুব উপকারি উপাদান হল অলিভ তেল।

উপকরন –

১চামচ অলিভ তেল 

পদ্ধতি –

অলিভ তেল পা ফাটার জেয়গা সহ গোটা পায়ে হালকা ম্যাসাজ করুন। তারপর পায়ে পাতলা সুতির মোজা পরে নিন। এক ঘণ্টা পর পা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন করুন।

7. ভিটামিন ই ক্যাপসুল

ভিটামিন ই ক্যাপসুল নিশ্চয়ই রূপচর্চার কাজে ব্যবহার করেছেন? এবার পা ভালো রাখার জন্যও ব্যবহার করুন।

উপকরন –

৩ থেকে ৪টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল।

পদ্ধতি –

ক্যাপসুল ফাটিয়ে তেলটা বের করে, সেটি পায়ে মাখুন। পায়ের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় হালকা ম্যাসাজ করুন ২মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দুদিন করুন। পা ভালো থাকবে।

শেষ কথা 

পা ফাটা সাদারনত শীতকালেই বেশি দেখা দেয় কিন্তু অনেকেই আছেন যাদের পা ফাটার সমস্যায় সারা বছর ভোগেন তাদের জন্য আমার আজকের আর্টিকেল। ওপরের ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো মাত্র ১ দিন রাতে ব্যবহার করলেই পরের দিন সকাল বেলা আপনার পা ফাট পুরোপুরি ঠিক হয়ে পা নরম কোমল ও মসৃণ হয়ে যাবে। আর এই রেমেডি গুলো বানানোও খুবই সহজ তাই যদি আপনার পা সারা বছর ফাটতে থাকে তবে অবশ্যই এই রেমেডি টি একবার ব্যবহার করে দেখুন কথা দিচ্ছি ১ দিনেই পা ফাটা থেকে মুক্তি পাবেন। কমেন্ট করে জানান কেমন লাগলো। আর কোনো রকম সাহায্য লাগলে অবশ্যই জানাবেন। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।