থাইরয়েড রোগ হলে কি খাবেন আর কি খাবেন না পুরো ডায়েট চার্ট যেনে নিন – Thyroid Diet Food List In Bengali

আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা  মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর  সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের জন্য থাইরয়েড ব্যাপারে বেশ কিছু জিনিস আলোচনা করবো যেটা আপনাদের অনেকের পক্ষ্যে অনেকটাই লাভজনক হয়ে উঠবে। বন্ধুরা কোনো কিছুর জানার আগে বা বোঝার আগে আমাদের ভালো করে ভালো করে জানতে হবে তার ব্যাপারে, বা একটু পড়াশোনা দরকার। না হলে আপনি কখনোই তার প্রতিকার করতে পারবেন না। সবার আগে আমাদের  জানা দরকার যে – থাইরয়েড কী ?

থাইরয়েড বলতে কী বোঝায় ও থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায়

থাইরয়েড গ্রন্থি আমাদের গলার কাছে অবস্থিত। এই গ্রন্থি থেকে অনেকগুলো হরমোন উৎপন্ন হয়, যাদের বলা হয় থাইরয়েড হরমোন। এই হরমোন আমাদের শরীরের মেটাবলিক হার ও প্রোটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে থাকে। এই হরমোন নিঃসরণের ভারসাম্যহীনতার প্রভাব মানুষের দৈহিক স্বাস্থ্য এমনকী তার মানসিক ও অনুভূতিগত স্বাস্থ্যের উপরেও পড়ে।

একটু বিস্তারিত ভাবে জানতে গেলে থাইরয়েড হল আমাদের গলায় অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রন্থি। এই গ্রন্থি থাইরয়েড হরমোন তৈরীর জন্য দায়ী। প্রথমে ব্রেনের হাইপোথালামাস থেকে TRH নামে একটি হরমোন তৈরী হয়। TRH তারপর পিটুইটারি নামের অন্য একটি গ্রন্থি কে উদ্দিপীত করলে পিটুইটারি গ্ল্যান্ড থেকে TSH নামে একটি হরমোন তৈরী হয়। এই হরমোন আবার থাইরয়েড গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করলে, খাবার থেকে প্রাপ্ত আয়োডিন কে ব্যবহার করে থাইরয়েড হরমোন তৈরী হয়। থাইরয়েড হরমোন দুই প্রকার-T3(০.১%) এবং T4(৯৯.৯%), এই হরমোন দুটি আমাদের শরীরের অনেক গুরত্বপূর্ণ কার্যাবলী সম্পাদনে ভূমিকা রাখে। হাইপোথালামাস, পিটুইটারি ও থাইরয়েড গ্রন্থি এই তিনটার যে কোন একটাতে সমস্যা থাকলেই, শরীরে থাইরয়েড হরমোন এর পরিমাণে বেশকম হয়ে যাবে। তাছাড়া আয়োডিন এর অভাব হলেও, থাইরয়েড হরমোনের পরিমান কমে যাবে। যদি শরীরে থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ কমে যায় তবে তাকে বলে “হাইপোথাইরয়েডিসম” আর যদি বেড়ে যায়, তাকে বলে “হাইপারথাইরয়েডিসম”।

আজকাল বেশির ভাগ ঘরেই নতুন একটা সমস্যা আমদানী হয়েছে। নাম ‘থাইরয়েড’। বিশেষ করে মহিলারদের মধ্যেই এই রোগ বেশি দেখা দিচ্ছে। থাইরয়েড নিয়ে আগের লেখাতে অনেক কথাই আলোচনা করা হয়েছে। আজকের বিষয় হল যে, কি কি খেলে থাইরয়েডের হাত থেকে সুস্থ থাকা যাবে। তাহলে চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক কি কি খাওয়া ভালো থাইরয়েডের রোগীদের জন্য।

থাইরয়েড রোগ হলে কি খাবেন আর কি খাবেন না পুরো ডায়েট চার্ট যেনে নিন – 

আমরা মোটামুটি ভাবে জেনে নোলাম যে থাইরয়েড এর ব্যাপারে। এখন সরাসরি চলে যাবো আজকের মূল বিষয়ের ওপর। থাইরয়েড রোগ হলে কি খাবেন আর কি খাবেন না পুরো ডায়েট চার্ট ।

ব্রাউন রাইস বা বাদামী ভাত

ব্রাউন রাইসে থাকে কার্বোহাইড্রেট। যা থাইরয়েডের সমস্যায় মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে অনেক সময় হজম ঠিক মত হয় না খাবার। বাদামী ভাত হজম হয়ে যায় সহজে। পাশাপাশি হজমের সমস্যা কমায়। তাই চেষ্টা করুন সাদা ভাতের বদলে লাল চালের ভাত যা ব্রাউন রাইস নামে পরিচিত তা খাওয়ার। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে ব্রাউন রাইস গেলে তা খান থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার ১ ঘণ্টা আগে।

নারকেল বা নারকেলের দুধ 

নারকেল বা নারকেলের দুধ অনেক দিন আগে থেকেই থাইরয়েডের কার্যকরী উপাদান হিসেবে পরিচিত। থাইরয়েডের গ্রন্থিকে কার্যকরী রাখে। সঠিক মাত্রায় হরমোন তৈরি করে। ফলে শরীরে থাইরয়েডের ব্যালেন্স ঠিক থাকে।

দই 

দই স্থাস্থের জন্য উপকারি এটা সবার জানা। দইয়ে থাকা ভিটামিন ডি থাইরয়ের বাড়া কমাকে নিয়ন্ত্রন করতে প্রয়োজন হয়। ভিটামিন ডি’র অভাব হলে শরীরে অন্য সমস্যার পাশাপাশি থাইরয়েডের সমস্যাও বেড়ে যায়। তাই যাদের থাইরয়েড আছে তারা রোজ ৫০ গ্রাম মত টক দই খেতে পারেন।

ডিম

ডিমের উপকারিতা নিয়ে নতুন করে কিছু লেখার নেই। থাইরয়েডের ক্ষেত্রে ডিমের থেকে ভালো বন্ধু আর কিছু হয় না। ডিমে থাকা নানা পুষ্টিকর উপাদান থাইরয়েডের সমস্যার সাথে অনায়াসে মোকাবিলা করতে পারে। তাছাড়া আরও হাজার একটা সমস্যার সহজ সমাধান ডিম। তবে সেদ্ধ ডিম খাওয়া বাঞ্ছনীয়। ভাজা নয়।

থাইরয়েডের রোগীদের যা কখনোই করা উচিত নয়

মাছ 

যেকোনো ছোট মাছ খাওয়া উচিত থাইরয়েডের রোগীদের। তবে বিশেষ করে স্যামন মাছ বেশি কার্যকরী থাইরয়েডের ক্ষেত্রে। আমাদের এখানে এই মাছটি খুব একটা বিশেষ পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে ছোট চারাপোনা মাছ খাওয়া যেতে পারে।

অন্যান্য খাবার 

থাইরয়েডের সাথে মোকাবিলা করতে শরীরে প্রয়োজন সঠিক মাত্রায় কপান ও আয়োডিন। তাই যে সব খাবারে কপার, আয়োডিন বেশি মাত্রায় আছে সেইসব খাবার বেশি করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। সবুজ শাক-সবজি, আঁশওয়ালা মাছ, কাজুবাদাম, ক্যাপ্সিকাম, বিন্স, মেথি শাক ইত্যাদি। তবে খেয়াল রাখুন বিশেষ করে নিজের মানসিক অবস্থার। অধিক মাত্রায় চিন্তা করলে থাইরয়েড বেড়ে যাবে বইকি কমবে না। সে যত ভালো খাবার খান না কেন! তাই চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন বেশি করে। আর রেগুলার ডাক্তারের কাছে চেকাপ অবশ্যই করান। দেখবেন এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে সঠিক ডায়েট চার্ট ফলো করতে থাইরয়েডের সমস্যা থেকে নিজেকে কিছুটা হলে ভালো রাখতে পারবেন।