এখন যার শীল যার নোরা তারই ভাঙে দাঁতের গোড়া
নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই পেজ chalokolkata.com এ স্বাগতম। আজ আমি আবার চলে এসেছি আপনাদের জন্য বা আমাদের সবার জন্য একটা দারুন টপিক নিয়ে যেটা সব ঘরে ঘরেই হয়ে থাকে। আমি সব সময় চেষ্টা করে থাকি আপনাদের প্রতি নিয়ত চাহিদা বা জানকারী দেবার। আপনাদের যদি কোনো রকম অন্য কিছু বিষয়ে জানার থাকে যে কোনো বিষয়ে …তাহলে আমাকে কমেন্ট বক্স এ জিজ্ঞাসা করতে পারেন আমি যথাসাদ্ধ চেষ্টা করবো আপনাদের সাহায্য করার। বন্ধুরা আমাদের শরীরের মধ্যে যুক্ত থাকা অনেক কিছু মূল্যবান জিনিসের মধ্যে দাঁত হলেও এমন একটা জিনিস যাদের নেই তারাই একমাত্র জানে এর কদর কতটা। আমাদের বাংলা ভাষায় একটা প্রবাদ আছে যেটা আমরা অনেকেই ব্যাবহার করে থাকি যে “দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝা” । আমরা আজ জেনে নেবো যে দাঁতের বেশকিছু সমস্যা যেমন – দাঁতের গর্ত দূর করার উপায়, দাঁতের ব্যথা দূর করার উপায়, দাঁতে পোকা হলে করনীয়, দাঁতের মাড়ি ব্যথা কমানোর উপায়, দাঁতের মাড়ি শক্ত করার উপায়, দাঁতের শিরশির দূর করার উপায়, দাঁতের ব্যথার ঔষধ কি ইত্যাদি ইত্যাদি।
দাঁতের ব্যথা দূর করার উপায়
বন্ধুরা আমাদের দাঁত ব্যথার হবার অন্যতম কারণ হল ক্যারিজ বা দন্তক্ষয়। অনেকের কাছে এই রোগটি দাঁতের পোকা নামে পরিচিত। যদিও চিকিৎসা বিজ্ঞানে এরআলাদা কোনো মানে নেই নেই। দাঁতের সব রোগের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি হয়। বর্তমানে দাঁত ক্ষয় ও দাঁতে ছিদ্র হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত শিশু, টিনএজার ও বয়স্কদের এই সমস্যাটি বেশি হতে দেখা যায়। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলেই দাঁত ক্ষয়(Tooth decay) হয়ে থাকে। এখনকার ছেলে মেয়েরা বেশির ভাগই ঘন ঘন স্ন্যাক্স ও ড্রিঙ্কস খায়। আর বাচ্ছাদের ভাত রুটি সারা দিন না দিলেও চলবে সবার আগে এইগুলো চাই তাদের যেটা একদমই ঠিক নয়। কিন্তু আমাদের অনেকক্ষণ যাবত দাঁতের মধ্যে খাবার লেগে থাকা, ( অর্থাৎ খাবার চেবানোর পর বা খাবার খাওয়ার পর মুখ ভালো করে দুয়ে নি না যে কোনো খাবার হোক না কোনো ) ফ্লোরাইড এর অপর্যাপ্ততা, মুখ শুকনো থাকা থাকা, মুখের স্বাস্থ্যবিধি না মানা, পুষ্টির ঘাটতি এবং ক্ষুধামন্দার সমস্যা থাকা ইত্যাদি কারণে দাঁতে ছিদ্র ও দাঁত ক্ষয় রোগ হয়ে থাকে। আমরা
1. দাঁতে প্রচন্ড ব্যাথা হয়
2. কোন কিছু খাওয়া বা পান করার সময় হালকা থেকে তীব্র ব্যাথা হয়
3. আক্রান্ত দাঁতে গর্ত দেখা যায় এবং
4. দাঁতের উপরে সাদা, কালো বা বাদামী দাগ দেখা যায়।
যদি প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করা না হয় তাহলে ইনফেকশন বৃদ্ধি পেয়ে ব্যাথা ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে এবং দাঁতটি হারানোর সম্ভাবনা ও দেখা দিতে পারে। ক্যাভিটির চিকিৎসায় দাঁতে ফিলিং করা হয় ও ক্যাপ পরানো হয় এবং দাঁত এর অবস্থা খুব খারাপ হলে রুট ক্যানেল করা হয়। এই সব চিকিৎসা খুব ব্যায় বহুল এবং কষ্টদায়ক।
শুনলেচমকে যাবেন যে ঘরোয়া কিছু উপায়ে দাঁতের ব্যাথা কমানো যায়। জেনে নিন সেই উপায় গুলো সম্পর্কে
1. হলুদ গুঁড়ো (Yellow powder)
দাঁতের ছিদ্রের সমস্যায় হলুদ গুঁড়ো ব্যাবহার খুবই উপকারি। হলুদে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী উপাদান আছে যা দাঁতের ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন কে ধ্বংস করতে পারে এবং এর প্রদাহ রোধী উপাদান দাঁত এর ব্যাথা উপশম করতে পারে। হলুদ গুঁড়া ও জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং আস্তে আস্তে ব্যাথার দাঁতে লাগান,ব্যাথা কমে যাবে।
2. পেঁয়াজ (Onion)
পেঁয়াজের একটি স্লাইস আক্রান্ত দাঁতের উপরে চেপে রাখুন দাঁত এর ব্যাথা কমে যাবে। নিয়মিত পেয়াজ খেলে দাঁত ক্ষয় এর সমস্যা কমায়। নিয়মিত পেঁয়াজ দিয়ে খাবার খেলে দাঁত ক্ষয় সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন – দাঁতের যত্ন ও দাঁতের চিকিৎসা
3. লবণ (Salt)
লবনে অ্যান্টিসেপ্টিক ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে, যা মুখে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ব্যাহত করে প্রদাহ কমাতে ও ব্যাথা কম করতে সাহায্য করে থাকে । ১ গ্লাস কুসুম গরম জলে ১ টেবিল চামুচ লবণ মিশিয়ে মুখে নিয়ে ১ মিনিট রাখুন এবং আক্রান্ত দাঁতের প্রতি মনোযোগ দিন অর্থাৎ ভালো করে কুলুকুচি করে নিন। মাথায় রাখবেন মুখে জলটা নিয়েই কিন্তু ফেলে দেবেন না। কিছুক্ষন মানে ১ মিন ঘড়ি ফেলে কুলুকুচি করলেই হবে।
এভাবে দিনে ৩ বার করে করুন ব্যাথা কমে যায়। এছাড়াও ১ টেবিল চামুচ লবণ অল্প সরিষার তেলের সাথে অথবা লেবুর রসের(Lemon juice) সাথে মিসিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাড়িতে ম্যাসাজ করুন কয়েক মিনিট। তারপর অল্প গরম জল দিয়ে কুলুকুচি করে নিন করে নিন। এভাবে দিনে ২ বার করে কয়েকদিন করুন, আমি বলছি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে। আর আপনি অনেকটাই ভালো হয়ে যাবেন।
এছাড়াও বেকিং সোডা, অ্যালোভেরা, লবঙ্গ, রসুন, পুদিনা, আপেল সিডার ভিনেগার ইত্যাদি ব্যবহার করেও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন ও দাঁতের ব্যাথা কমানো যায়। সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করুন। দাঁত পরিষ্কার করতে ফ্লস ব্যবহার করুন এবং প্রতিদিন জিহ্বা পরিষ্কার করুন। ব্যাস আর কি চাই এটুকু করলেই আপনার দাঁতের আর কোনো সমস্যায় থাকবে না।
শেষ কথা
শেষ কথা বলতে একটাই কথা এখানে বলবো যে যদি দেখেন যে সব রকম ঘরোয়া পদ্ধতি আপনার ব্যাবহার করা হয়ে গেছে তাও কিছুতেই কিছু হচ্ছে না তাহলে সত্তর ডাক্তারের (অবশ্যই দাঁতের ডাক্তার) পরামর্শ করবেন বা একবার দেখিয়ে নিলে ভালো হয়। আপনাদের যদি কোনো রকম অন্য কিছু বিষয়ে জানার থাকে যে কোনো বিষয়ে …তাহলে আমাকে কমেন্ট বক্স এ জিজ্ঞাসা করতে পারেন আমি যথাসাদ্ধ চেষ্টা করবো আপনাদের সাহায্য করার। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর দাঁতের মর্ম টা বুঝে চলবেন।