নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই পেজ chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর সুস্থ আছেন। আজ আমি আমাদের সবার জন্য একটা দারুন টপিক নিয়ে যেটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে ঘরে বাইরে আপনার সঙ্গী হতে পারে। আমরা আজ জানবো যে – আদার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, আদা ও মধু খাওয়ার উপকারিতা, আদা জলের উপকারিতা, আদা খেলে কি ক্ষতি হয়, আম আদার উপকারিতা, আদা বেশি খেলে কি হয় ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমরা অনেকেই জানি যে আদার ভেষজ ও ঔষধি উপকারিতার কথা । আদা শুধু খাবারে স্বতন্ত্র স্বাদ ও গন্ধই সৃষ্টি করেনা বরং সাধারণ ঠান্ডা, কাশি, বদহজম, গলা ব্যথা ও অন্যান্য আরো কিছু রোগে ভোগা থেকে রক্ষা করে। আদা চিবিয়ে খেতে ভালো না লাগলে আদার জুস করে খেতে পারেন। এই ভেষজ গুণের দ্বারা আদা আমাদের শরীরের স্বাস্থ্যরক্ষার সাথে সাথে ত্বকের কাজ করে থাকে। নিত্য প্রয়োজনীয় এ আদায় রয়েছে-ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক, লবণ, পটাশিয়াম, ভোলাটাইল, অয়েল ইত্যাদি। এটি একটি ভেষজ ওষুধ। আদা খাদ্যশিল্পে, পানীয় তৈরিতে, আচার, ওষুধ ও সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। আদা শুকনো অথবা ভেজা দুভাবেই খাওয়া যায়। কেউ কেউ আদার সাথে মধু মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। আমাদের আজকের মূল বিষয় আদার রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।
আদার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, আদা ও মধু খাওয়ার উপকারিতা
1. আদা খেলে কোলন ক্যান্সার এবং জরায়ুর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
2. বাতজনিত গাঁটে ও মাথাব্যথায় আদা বেশ কার্যকর।
3. আদা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
4. আদার নির্যাস শরীরের কোষে গ্লুকোজের শোষণক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে দীর্ঘমেয়াদে সুগারের স্তর ঠিক রাখতে ভূমিকা রাখে এবং কোষগুলোতে নির্বিগ্নে ইনসুলিনের চলাচল ঠিক রাখে।
4. আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপা রোধে আদার রসে খুব উপকার পাওয়া যায়।
5. আদার রস দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে, দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা জীবাণুকে ধ্বংস করে।
6. আদা দেহের ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। আদায় নিহিত অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট যে কোনো কাটাছেঁড়া বা ক্ষতস্থান দ্রুত ভালো করে।
7. আদার রস রক্তশূন্যতা দূর করে।
8. আদায় ভিটামিন-ই এবি ও সি থাকার কারণে চুল পড়া রোধ করে।
9. নিয়মিত কাঁচা আদা খাওয়ার অভ্যাস চুলের গোড়াকে মজবুত করে।
10. আদা পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে, এটি আবার ত্বকের জন্যও উপকারী।
11. নিয়মিত আদা খেলে ত্বকের ব্রণ ওঠা বন্ধ হয় এবং ত্বক পরিষ্কার ও মশ্রিণ রাখে।
12. যারা গলার চর্চা করেন তাদের গলা পরিষ্কার রাখার জন্য আদা আর লবণ খুবই উপকারী।
13. .বাতব্যথা একটি নিত্য সমস্যা, বিশেষ করে আমবাত হলে- ১ চামচ আদার রস ও ১০ গ্রাম পুরনো আখের গুঁড় মিশিয়ে প্রতিদিন রোজ সকালে ১ বার করে ১ মাস খেলে সেরে যাবে।
14. জটিল আমাশয় হলে আদা শুকিয়ে গুঁড়া করে ১ গ্রাম পরিমাণ ইষৎ উষ্ণ জলে মিশিয়ে প্রতিদিন দু’বার করে ভালো না হওয়া পর্যন্ত খেতে হবে।
15. হিক্কা বা হেঁচকির জন্য এককাপ ছাগলের দুধের সাথে ১ চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে সঙ্গে সঙ্গে ঘন ঘন হেঁচকি সমস্যা কমে যাবে।
16. বসন্ত গুটি হলে ১ চামচ আদার রস ও ১ চামচ তুলসি পাতার রস মিশিয়ে দু’বার খেলেই বসন্তের গুটি বের হয়ে যাবে।
17. মাইগ্রেনের ব্যথা, কিডনির জটিলতা দূর করতে আদার ভূমিকা অপরিসীম।
18. বমি বমি ভাব হলে কাঁচা আদা চিবিয়ে খান।
19. অতিরিক্ত ওজন কমাতেও আদা সাহায্য করে।
20 .আদা স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
21. আদার রস শরীরকে শীতল রাখে।
22. আদা লিভারের শক্তি, কৃমি নিঃসরণ করে, নাক, কান, গলাজনিত রোগের উপশম করে।
23. আদা খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে।
24. অনেকে গাড়িতে উঠলে বমি হয় কিংবা বমির ভাব হয়। এ সমস্যা এড়াতে ভ্রমণের আগেই এক টুকরা আদা মুখে ফেলে দিন।
25. প্রতিদিন মাত্র ১ ইঞ্চি পরিমাণের আদা কুচি খাওয়ার অভ্যাস সাইনাসের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
26. প্রতিদিন কাঁচা আদা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে সহজে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়বে না। আদার মধ্যে যে অ্যান্টিএইজিং উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা দেহের টক্সিন দূর করে এবং দেহে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ত্বকে বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করে।
27. আদা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কার্যকরভাবে কমাতে সাহায্য করে।
28. ক্লান্ত মাংসপেশি ও শীতে কুচকে যাওয়া ত্বকের চিকিৎসায়, রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করার জন্য আদার রসের ভূমিকা অতুলনীয়।
29. গরমজলে চার টেবিল চামচ আদাকুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। সেই জলে স্নান করলে ক্লান্ত মাংশপেশি, কুচকে যাওয়া ত্বক ও রক্ত সঞ্চালন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
30. ডায়রিয়ার ব্যাকটেরিয়া দূর করতেও আদার বিকল্প নেই।
31. বার বার আদার রস খেলে ফুড পয়জনিং ও পেটের সমস্যা খুব সহজেই ভালো হয়ে যাবে।
32. অপারেশনের পর কাঁচা আদা খান। দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করবে।
33. আদা বাটা দিনে তিন থেকে চারবার লাগান শ্বেতি রোগ ভালো হয়ে যাবে। একই নিয়মে ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহারে উপকার পাবেন।
আদার জুস তৈরিকরার নিয়ম –
একটি আদা ভালো করে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। তারপর একটি মিক্সারে সামান্য জলের সাথে আদাকুচি দিয়ে ভালো করে চূর্ণ করুন। তারপর ছেকে রসটুকু আলাদা করুন। এর মাঝে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে নিন, ব্যস তৈরি হয়ে গেল আদার জুস।