কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতা – Benefits Of Eating Raw Onion

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ও স্বাগতম আমার এই পেজ এ। আশা করবো আমার প্রত্যেক লেখা আপনাদের অনেকটাই উপকার করতে সাহায্য করবে ও আশা করবো ভালো লাগবে আপনাদের। ভালো লাগলে আপনারা সবাইকে শেয়ার করবেন কারণ আজকের বিষয় বস্তু হল কাঁচা পেঁয়াজ এর উপকারিতা।

পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে কোয়ারসেটিন আছে যা পেয়াজের বাইরের হালকা বেগুনী ত্বকে থাকে। কোয়ারসেটিন রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়, রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে, হাঁপানির সমস্যা কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ব্রঙ্কাইটিস সমস্যার সমাধানে সহায়তা করে। গবেষকদের মতে দিনে মাত্র একটি মাঝারী আকৃতির রান্না করা কিংবা কাঁচা পেঁয়াজ খেলেই এই উপকারিতা পাওয়া যায়।

“যত কাঁদবেন, তত হাঁসবেন”- পেঁয়াজের ক্ষেত্রে এই কথাটা দারুনভাবে কার্যকরী। কারণ এই সবজি কাটতে গিয়ে চোখ ফুলিয়ে কাঁদতে হয় ঠিকই। কিন্তু এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরেরও কম উপকার লাগে না! একাধিক গবেষণায় এ কথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে পেঁয়াজের শরীরে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি উপাদান একাধিক রোগের চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।  আমাদের সেই বিশেষ কিকগু উপকার যা পাতিষ্কদের অবসসই জানা দরকার।

1. জ্বরের প্রকোপ কমায়: শুতে যাওয়ার আগে একটা পিঁয়াজ কেটে নিন। তার সঙ্গে অল্প করে আলু এবং ২ টো রসুনের কোয়া মিশিয়ে মোজার মধ্যে রেখে সেই মোজা পরে শুয়ে পড়ুন। এমনটা কয়েকদিন করলেই দেখবেন সুস্থ হতে শুরু করেছেন।

2. ইনসমনিয়ার মতো রোগের প্রকোপ কমায়: আপনি কি রাতের তারা? ঘড়ীর কাঁটা সকালের দিকে এগিয়ে গেলেও চোখের পাতা এক করতে পারেন না? তাহলে তো প্রতিদিনের ডায়েটে পেঁয়াজের থাকা চাইই চাই। কারণ ইনসমেনিয়ার মতো রোগের উপশমে এই সবজিটি দারুন কাজে আসে।

3. ডায়াবেটিসের মতো রোগকে দূরে রাখে: একেবারে ঠিক শুনেছেন! ২১ শতকের সব থেকে ভয়ঙ্কর এই রোগকে দাবিয়ে রাখতে পেঁয়াজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই সবজিটিতে উপস্থিত বেশ কিছু উপদান রক্তে শর্করার মাত্রাকে বাড়তে দেয় না। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের ঘাটতি যাতে দেখা না দেয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে ডায়াবেটিসের প্রকোপ বৃদ্ধির সুযোগই থাকে না।

4. আঁচিল দূর করে: গোল করে পেঁয়াজ কেটে আঁচিলের উপর রেখে একটা কাপড় দিয়ে বেঁধে দিন। যাতে সেটি পরে না যায়। প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে এমনটা করলে অল্প দিনেই দেখবেন আঁচিল খসে পরে গেছে।

5. ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখে: ব্রেন, কোলোন এবং ঘারের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে শূন্যতে এসে দাঁড়ায় যদি প্রতিদিন পেঁয়াজ খাওয়া যায়। কারণ এই সবজিটিতে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান শরীরের অন্দরে ক্যান্সার কোষের জন্ম হতে দেয় না। ফলে এমন ধরনের মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।

6. কাশির প্রকোপ কমায়: একটা পেঁয়াজকে কেটে নিয়ে তার রস সংগ্রহ করে নিন। তারপর তাতে কয়েক ড্রপ মধু মিশিয়ে এই মিশ্রন দিনে কম করে দুবার পান করলেই কাশি কমে যেতে শুরু করবে।

7. বুকে ইনফেকশন পেঁয়াজ কুরিয়ে নিয়ে ১-২ টেবল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই পেস্ট বুকে লাগিয়ে তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন। ইনফেকশন কমে যাবে।

8. কাটা-ছেঁড়া পাতলা করে পেঁয়াজের সাদা ফিল্ম কেটে নিয়ে কাটার ওপর লাগিয়ে গজ দিয়ে বেঁধে রাখুন। রক্ত পড়া সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে।

9. কাশি পেঁয়াজ অর্ধেক করে কেটে নিন। দুটো আধা ভাগের ওপর এক টেবল চামচ করে ব্রাউন সুগার দিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিন। দিনে দু’বার করে খেলে কাশি কমে যাবে।

10. পুড়ে গেলে কাজে আসে : রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়ে যাওয়ার ঘটনা গৃহিণীদের সঙ্গে আকছারই হতে থাকে। এক্ষেত্রেও পিঁয়াজ দারুন উপকারে লাগে। কেমন ভাবে? এবার থেকে পুড়ে গেলে, ক্ষতস্থানে এক টুকরো পিঁয়াজ কিছু সময়ের জন্য রেখে দিন। অল্প সময়েই দেখবেন জ্বালা ভাব কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতও সেরে গেছে।

11. কানের ব্যথা পেঁয়াজ কুরিয়ে পাতলা কাপড়ে বেঁধে নিন। ব্যথা কানের কাছে কাপড় বেঁধে রাখুন।

12. শিশুদের পেটের সমস্যা  হলুদ পেঁয়াজ ডুমো করে কেটে জলে ফুটিয়ে অনিয়ন টি বানিয়ে নিন। শিশুদের এই চা খাওয়ালে সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে।

13. আপনার কি বার বার বমি হচ্ছে? পেঁয়াজ বেটে রস তৈরি করে নিন। সঙ্গে বানিয়ে রাখুন পেপারমিন্ট টি। দু’চা চামচ পেঁয়াজের রস খেয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন।

14. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: শরীরে ভাল কোলেস্টেরল বা এইচ ডি এল-এর মাত্রা বাড়িয়ে একদিকে যেমন শরীরকে চাঙ্গা রাখে, তেমনি অন্যদিকে খারাপ কোলেস্টরলের পরিমাণ কমিয়ে হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। এই ভাবে নিজের বিশেষ ক্ষমতা বলে পেঁয়াজ আমাদের আয়ু বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।

15. মুখের বদ-গন্ধ দূর করে: কাঁচা পেঁয়াজ খেলে মুখ গহ্বরের উপস্থিত ব্যাকটেরিয়াগুলি মরতে শুরু করে। ফলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। সেই সঙ্গে মাড়িতে নানাবিধ রোগ হওয়ার আশঙ্কাও কমে।

16. স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটায়: সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুসারে নিয়মিত কাঁচা পেঁয়াজ খেলে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্মৃতিশক্তির যেমন উন্নতি ঘটে, তেমনি নার্ভাস সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে একাধিক ব্রেন ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।