এ্যাজমা রোগের চিকিৎসা – Asthma Disease Treatment

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ও স্বাগতম আমার এই পেজ এ। আশা করবো আমার প্রত্যেক লেখা আপনাদের অনেকটাই উপকার করতে সাহায্য করবে ও আশা করবো ভালো লাগবে আপনাদের। বন্ধুরা হাঁপানি একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যার মূল লক্ষণ হল শ্বাস কষ্ট ও সাঁসাঁ শব্দে নিঃশ্বাস ফেলা ও শ্বাসকষ্ট সম্বলিত রোগ । ইংরেজি নাম অ্যাজমা যা এসেছে গ্রিক শব্দ Asthma থেকে। বাংলায় হাঁপানি। যার অর্থ হাঁপান বা হাঁ-করে শ্বাস নেয়া। হাঁপানি আক্রমণের সময় শ্বাসনালীর আস্তরণ ফুলে যায়, যার ফলে শ্বাসনালী এতটাই সংকীর্ণ হয়ে যায় যে প্রশ্বাস ও নি:শ্বাসে শ্বাসবায়ুর গতি অনেকটাই কমে যায়। কার্য তঃ এটি শ্বাসনালীর অসুখ হাঁপানির কারণ।  হাঁপানি বলতে আমরা বুঝি শ্বাসপথে বায়ু চলাচলে বাধা সৃষ্টির জন্য শ্বাসকষ্ট (Dyspnoea) ।

অ্যাজমা আসলে কী?

 অ্যাজমা শ্বাসকষ্টের একটি রোগ। ফুসফুসের রোগ। ধুলাবালি, ধোয়া, ঠান্ডা বাতাস, বৃষ্টিতে ভেজা এসব কারণে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। বাসার ধুলোবালিতে অনেক ধরনের মাইট থাকে। এই মাইটগুলো শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে গেলে একটি অ্যালার্জি জনিত প্রতিক্রিয়া হয়। আবার যাদের অ্যাজমার একটি প্রবণতা আছে, তারা যখন ঠান্ডা বাতাসে যায়, বৃষ্টিতে ভেজে তখন তাদের শ্বাসকষ্ট হয়।

অ্যাজমা হলো শ্বাসযন্ত্রের একটি প্রদাহ। এ সময় শ্বাসনালিটা সরু হয়ে যায়। যেমন আমাদের ঘর থেকে বাতাস বের হয়, জানালা দিয়ে। এখন জানালার পথ যদি বন্ধ হয়ে যায়, তখন কী হবে? বাইরে থেকে অক্সিজেন আমাদের ফুসফুসে প্রবেশ করার যে পথ, সে পথগুলো সরু হয়ে যায়। দুই নম্বর হলো, সেখান থেকে মিউকাস বের হয়। তিন নম্বর হলো প্রদাহের কারণে সেখানে সরু হয়ে যায়।

অ্যাজমার লক্ষণ – অ্যাজমা রোগের লক্ষণ

আমাদের কাছে যখন আসে তখন বলে আমার শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। বুকটা যেন বন্ধ হয়ে আসছে। পাথর যেন চেপে বসে আসে। অনেক সময় ভাইরাস ইনফেকশন থাকে, জ্বর থাকে, কাশি থাকে। এর মধ্যে সব কোটায় পরিস্কার অ্যাজমার লক্ষণ বোঝার জন্য

1. নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়।
2. কাশি থাকে। বিশেষ করে রাতের বেলা কাশি বেড়ে যায়।
3. কফ থাকতে পারে।
4. অনেক সময় বুকে চাপ অনুভব হয়।
5. শারীরিক কর্মকাণ্ড করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। কিছুক্ষন হাঁটলে বা সিঁড়ি দিয়ে উঠা নামা করলে শ্বাস কষ্ট শুরু হয়।

অ্যাজমা রোগীর খাবার

হাঁপানি রোগীর খাবার-দাবারে সতর্ক থাকতে হয়। সাধারণ পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ে গ্রহণ করতে হয়। হাঁপানির সাথে অ্যালার্জির সম্পর্ক থাকায় যেসব খাবারে রোগীর অ্যালার্জির সম্পর্ক থাকায় যেসব খাবারে রোগীর অ্যালার্জি আছে, খাবার তালিকা থেকে সেগুলো বাদ দেয়া উচিত। কী কী খাবার থেকে অ্যালার্জি বা হাঁপানি হতে পারে তার তালিকা অনেক দীর্ঘ; যেমন ডিম, চিংড়ি মাছ ও গরুর গোশত থেকে অ্যালার্জি হতে পারে- এ তথ্য প্রচলিত। এছাড়া যেসব খাবারে অ্যালার্জি হতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে ইলিশ মাছ, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, কলা, পুঁইশাক, ডাল, গমের তৈরি খাবার, চাল, কমলা লেবু,আপেল, আঙুর, তরমুজ, শসা, কাজু বাদাম, চীনা বাদাম, সজিনা ডাঁটা, মুলা, পিঁয়াজ, রসুন, সরিষা, ওলকপি, চকলেট, গুড়, মধু, দুধ এবং দুধ থেকে তৈরি খাবার- যেসব খাদ্য থেকে সবার অ্যালার্জি নাও হতে পারে। ব্যক্তি ভিন্নতায় বিভিন্ন খাদ্যে বিভিন্ন জনের অ্যালার্জি হতে পারে। একই ধরনের খাবারে যে সবারই অ্যালার্জি হবে- এমন কোনো কথা নেই। যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব খাবার খেলেই হাঁপানি রোগীর কষ্ট বাড়ে। তাই হাঁপানি আক্রান্ত রোগীরা সহজেই বুঝতে পারে, তার কোন কোন খাবারে অ্যালার্জি আছে। তাই যেসব খাবারে যার অ্যালার্জি আছে, সেসব খাবার সে এড়িয়ে চললে তার কষ্ট কম হবে।

প্রতিকার 

1. অ্যাজমা ও অ্যালার্জির ওষুধ সব সময় হাতের কাছে রাখুন। যাতে দরকার হলে সহজেই খুঁজে পান।
2. ভিটামিন `এ` জাতীয় খাবার যেমন, কলিজা ও গাজর খাবেন।
3. সবুজ শাকসবজি বিশেষ করে পালং শাক ও মধু অ্যাজমার জন্য উপকারি। তাই এগুলো বেশি খাবেন।
4. ধূমপান করলে অ্যাজমা বেড়ে যায়। তাই ধূমপান করবেন না। আশেপাশে কেউ ধূমপান করলে সেই স্থান থেকে সরে আসুন।
5. ধুলোবালিযুক্ত পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।

অ্যাজমা রোগের চিকিৎসা

অ্যাজমার চিকিৎসা একটু সময়সাপেক্ষ। কারণ,অ্যালার্জেনকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে একটু ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। এখানে ফার্মাকোলজিক্যাল এবং নন ফার্মাকোলজিক্যাল দুটো মাধ্যমেই আমরা রোগীকে চিকিৎসা করে থাকি। ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে কতগুলো পরামর্শ দিই। অ্যাজমা চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য একটা পরিকল্পনা দিয়ে দিই। সেখানে ওনারা তার অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে আছে কি না নিজেই ‘সেল্ফ এসেসমেন্ট’ করতে পারে। অ্যালার্জেন নির্ণয় করার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা রয়েছে। তবে অ্যাজমার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। তার মধ্যে আমরা যেগুলো অ্যালার্জেন দিয়ে পরীক্ষা করি, সেগুলো নাও থাকতে পারে। রোগীকে আমরা বলি, আপনি কি বুঝতে পারেন যে কী করলে এমন হয়। অনেক সময় খাবারে হতে পারে। এ ছাড়া খুব ঠান্ডায় সমস্যা হয়। ধুলাবালিতে যাওয়া ছাড়াও রোগী যখন খুব ঘেমে যায়, প্রচণ্ড ঘাম নিয়ে হঠাৎ করে যখন ঠান্ডা পানি পান করেন, তখনো কিন্তু অ্যাজমার অ্যাটাকটা বেড়ে যায়। এসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।