আদা খাওয়ার নিয়ম – Benefits of Ginger

নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ও স্বাগতম আমার এই পেজ এ। আশা করবো আমার প্রত্যেক লেখা আপনাদের অনেকটাই উপকার করতে সাহায্য করবে বা আশা করবো ভালো লাগবে আপনাদের। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করি। বন্ধুরা আমরা আদার ব্যাপারে বা আদার সমন্ধে সবাই জানি কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে আদার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম। আমরা আজকে সেই আমাদের আদি পরিচিত ও বেশির ভাগ বা বলাই যেতে পারে প্রতিটি রান্নার অন্যতম সঙ্গী আদার আমি আদার উপকারিতা জানবো।

আদা একটি ভেষজ ঔষধি কিন্তু এটি মশলা হিসাবে পরিচিত। আদার ইংরেজি কথার অর্থ হল জিনজার। জিনজার সাধারণ নাম জিংবার এফিসিনেলের। আদা মূলত চীনে চাষ করা হয়। পড়ে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এটি অনেক দেশে ঔষুধি উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আনেক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে, আবার কেউ বলে এটি মাথা ব্যথা, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, বমি ভাব কমাতে সক্ষম।

দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিকারে আদা ব্যবহারের সুপারিশ করেছেন চাইনিস মেডিসিন। শরীরের বিপাকীয় হারকের উন্নতি করার সময় এটি দেহের শক্তি সঞ্চালন করে। আদার গুনাগুণ কম বেশি সবাই জেনে থাকি। কিন্তু এটি খাওয়ার পদ্ধতি অনেকেই জানি না। সঠিক পদ্ধতিতে আদা খেলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারি। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক আদা খাওয়ার নিয়ম –

আদার ক্ষতিকর দিক – আদা খেলে কি ক্ষতি হয়

গরম চায়ে আদার রস

বিশেষত শীতকালে আমরা আদার চা পান করতে পছন্দ করি। এটি শুধু গরম রাখতে নয় পেটের সমস্যা দূর রাখতে সাহায্য করে। সকালে এক কাপ আদার চা – বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা, দুর্বলতা কাটিয়ে তোলে।

চা করার সময় ফুটন্ত জলে এক টুকরো ছোট আদার রস সঙ্গে একটু লেবুর রস, একটি নিখুঁত শীতকালীন টনিক। নিয়মিত আদার চা কাশির সিরাপও বলা যেতে পারে।

মাছের সঙ্গে আদা

আদার গুণাগুণ প্রচুর। আদা ঠাণ্ডা লাগা কমানোর পাশাপাশি রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, পেশীর ব্যথা কমায়, হৃদ রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।

আমাদের বাঙালীদের মাছ খুব প্রিয়। এটা ছাড়া খাবার সম্পূর্ণ হয় না। তাছাড়া আমরা সবাই একটু স্পাইসি খাবার খেতে পছন্দ করি। তাই আপনাদের জন্য এখানে আদা খাওয়ার নিয়ম এ আদা দিয়ে মাছ রান্না করতে পারেন।

আদা, লেবু ও মধু

সকালে উঠে অনেকেই ওজন কমানোর জন্য এবং দেহ ফিট রাখার জন্য লেবু ও মধুর জল পান করেন। তার মধ্যে যদি একটু আদা যোগ করে নেন, সেটি স্বাস্থ্যের জন্য দ্বিগুণ উপকারী হয়ে উঠবে। আদায় উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, পেট পরিষ্কার রাখে এবং হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলে। জ্বর, সর্দি – কাশি, মাথা ব্যথায় আদা, লেবু ও মধুর জল অনেক উপকারি।

সকালে ঘুম থেকে উঠে

সকালে ঘুম থেকে উঠে একটুকরো আদা খাওয়ার নিয়ম বা অভ্যাস থাকে অনেকের। কিন্তু এক্ষেত্রেও সচেতন হতে হবে। কারন খালি পেটে আদা খেলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। আদা খাওয়ার নিয়ম জানিনা বলেই আমরা উপকারি এই আদার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকি। যদি সঠিক প্রক্রিয়া আর পরিমাণমত আদা গ্রহন করতে পারতাম তাহলে আরো আধিক পরিমাণে উপকৃত হতাম। তাই খালি পেটে আদা না খেয়ে হালকা কিছু খেয়ে আদা খেতে পারেন। তবে খালি পেটে খেলে যদি আপনার সমস্যা না হয়ে থাকে তাহলে আপনি খালি পেটেও খেতে পারেন।

আদার তৈরি জুস

যদি চা খাওয়ার অভ্যাস আপনার না থাকে তাহলে এক গ্লাস গরম জলে আদার জুস বানিয়ে ফেলুন। আদা কুচি করে কেটে তিন চার মিনিট রেখে সে জল পান করুন। প্রতিদিন এক গ্লাস আদার জুস খাওয়ার অভ্যাস আপনার ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে আরো শক্তিশালি করবে। তাই আদা খাওয়ার নিয়ম মেনে প্রদিদিন এক গ্লাস আদার তৈরি জুস খাওয়ার অভ্যাস করুন।

চিবিয়ে আদা খাওয়ার নিয়ম

দ্যা ইউনাইটেড স্টেসস ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) একটি নিরাপদ খাদ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তারা কিছু আদা খাওয়ার নিয়ম বাতলে দিয়েছেন। তাছাড়া দৈনন্দিন কিছু ছোট খাটো স্বাস্থ্য সমস্যা যেমনঃ হজম, বমি বমি ভাব, শীত কালিন সমস্যা, ব্যাথা বেদনা দূরে, কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রদাহ হলে আমরা আদার ব্যবহার করতে পারি। তাছাড়া পেট ব্যাথা বা ক্ষুধা বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন কয়েক টুকরো চিবিয়ে আদা খাওয়ার নিয়ম করতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় আদা

বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা গুড়ো-কাঁচা মিলিয়ে আদা প্রতিদিন ৪ গ্রামের বেশি গ্রহন যাতে না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন। আর গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে দৈনিক ১ গ্রাম আদা খাওয়ার নিয়ম করাই যথেষ্ট বলে মনে করেন তারা।

খালি পেটে আদা খাওয়া থেকে সাবধান

তাই খালি পেটে আদা খাওয়া থেকে সাবধান! তবে খাওয়া দাওয়ার পর বা হালকা নাস্তার পর আদার জুস বা আদা চা শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

শেষ কথা

আদার ব্যাপারে বলতে গেলে কিছু  কথা আমাদের সবার মাথায় রাখতে হবে টুকরো টুকরো কথা যেগুলো আমাদের সবার অনেকটাই উপকার করবে নিজে জানুন ও অন্যকে জানান।

পরিমিত আদা খাওয়ার অভ্যাসে রক্ত – সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়। যানবাহনে চড়ার সময় কেউ কেউ অস্বস্তিতে ভোগেন বা কিছুক্ষণ গাড়িতে থাকার পর বমির প্রবণতা চলে আসে। অর্থাৎ মোশন সিকনেস এড়াতে আদা বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডায়াবেটিস জনিত কিডনির জটিলতা দূর করে আদা।

গর্ভবতী মায়েদের সকালবেলা, বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম দিকে সকালবেলা শরীর খারাপ লাগে। কাঁচা আদা এ সমস্যা দূর করে।

আদার রস দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে, দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা জীবাণুকে ধ্বংস করে।

প্রতিদিন নিয়মিত সামান্য আদা খাওয়ার অভ্যাস আপনার শরীরের রোগ – প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

বিভিন্ন রোগে অক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুলাংশে কমে আসে।

দেহের কোথাও ক্ষতস্থান থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে আদা। পেট ফাঁপা রোধে আদা চিবিয়ে বা রস করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

এছাড়া যারা গলার চর্চা করেন তাদের গলা পরিষ্কার রাখার জন্য আদা খুবই উপকারী। সকালে ঘুম থেকে কেউ কেউ অসুস্থ বোধ করেন বা অনেকের ক্লান্ত লাগে। সেক্ষেত্রে নিয়মিত আদা খান। এ সমস্যা থেকে অচিরেই নিষ্কৃতি পাবেন।