লেবু ও গরম জল পান করলে আপনার শরীরে যা পরিবর্তন আসবে দেখলে অবাক হবেন! লেবু, সাধারণত আমরা খাবারের স্বাদ বাড়াতে এবং গরমের দিনে শরবত তৈরি করতে ব্যবহার করি। কিন্তু ঈষদুষ্ণ গরম জলে দু-চার ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে সেটি পান করুন। নিয়মিত পানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর গুণাগুণ প্রচুর। বিশেষ করে এর ভিটামিন সি এবং খনিজ উপাদানসমূহ আমাদের প্রচুর উপকার করে। হৃদযন্ত্রের ধড়ফড়ানি কমানো থেকে ফুসফুসকে ঠিকভাবে কাজ করতে পর্যন্ত সাহায্য করে এই লেবু ও গরম জল। ওজন কমায়, ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আমরা দেখে নেবো আমাদের বেশ কিছু টিপস লেবুর ব্যাপারে যে গরম জল এর সাথে লেবুর ব্যাবহার কি কি কাজে লাগে বা প্রতিদিন মধু ও লেবু মেশানো জল পানের উপকারিতা।
লেবুর রসের স্বাস্থ্য উপকারিতা
1. অর্থাৎ লেবুতে থাকে ইলেকট্রোলাইটস ( যেমন পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি)। সকাল সকাল লেবু জল আপনাকে হাইড্রেট করে, শরীরে যোগান দেয় এইসব প্রয়োজনীয় উপাদানের।
2. হাড় জয়েনট ও মাসল পেইন কমায় দ্রুত।
3. লেবুতে থাকে সাইট্রিক এসিড। সকাল সকাল উষ্ণ জলের সাথে পান করলে সেটা আপনার হজমতন্ত্রকে উন্নত করে সমস্যা রাখে দূরে।
4. অন্য যে কোন খাবারের চাইতে লেবু জলের ব্যবহারে লিভার অনেক বেশী দেহের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি করতে পারে।
5. লেবু জল টক্সিক উপাদান দূর করে লিভারকে পরিষ্কার রাখে।
6. পেট পরিষ্কার ও ভালো টয়লেট হতে সহায়তা করে।
7. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
8. আপনার নার্ভাস সিস্টেমে দারুণ কাজ করে। সকাল সকাল লেবুর পটাশিয়াম আপনার বিষণ্ণতা ও উৎকণ্ঠা দূর করতে সহায়ক।
9. লেবু জল শরীরের রক্তবাহী ধমনী ও শিরাগুলোকে পরিষ্কার রাখে।
10. উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
11. শরীরের পি এইচ লেভেল উন্নত করে। পি এইচ লেভেল যত উন্নত, শরীর রোগের সাথে লড়াই করতে তত সক্ষম।
12. ইউরিক এসিড সমস্যা দূর করতে সহায়ক।
13. আপনার ত্বককে কর তোলে সুন্দর ও পরিষ্কার।
14. বুক জ্বলা পড়া দূর করে। যাদের এই সমস্যা আছে রোজ আধা কাপ জল র মাঝে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
15. কিডনী ও প্যানক্রিয়াসের পাথর দূর করতে অসাধারণ কার্যকর।
16. ওজন দ্রুত কমাতে সহায়তা করে। লেবুতে থাকে পেকটিন ফাইবার যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে।
17. গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই ভালো লেবু জল । এটা শুধু নারীর শরীরই ভালো রাখে না। বরং গর্ভের শিশুর অনেক বেশী উপকার করে। লেবুর ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম শিশুর হাড়, মস্তিষ্ক ও দেহের কোষ গঠনে সহায়তা করে। মাকেও গরভকালে রোগ বালাই থেকে দূরে থাকে।
18. দাঁতের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। দাঁত ব্যথা কমায়।
19. ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
20. মেটাবলিজম বা হজমশক্তি বাড়ায়। এতে ওজন কমাতেও প্রভাব পড়ে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি আছে। উচ্চ রক্তচাপ বাড়ায়। ঠাণ্ডা এবং ফ্লু থেকে রক্ষা করে। গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে পান করলে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে। হাফানির জন্যেও উপকারি।
পেট পরিষ্কার রাখে
লেবু খানিকটা অ্যাসিডিক ঠিক,কিন্তু এর উপকারিতাও অবহেলা করার মতো নয়। ক্ষারীয় এই খাবারটি আপনার শরীরে পিএইচের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখে। তাই চিকিত্সকেরা বলেন, হালকা গরম জলে লেবুর রস খাওয়ার অভ্যাসটির উপকারিতা অনেক। এর ফলে যেমন লিভার ভালো থাকে তেমন শরীর থেকে নানান টক্সিন বেরিয়ে যায় সহজে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে – লেবু ও গরম জল
নিয়মিত রোজ সকালে খালিপেটে মধু ও লেবুর এক গ্লাস শরবত খেলে ওজন কমতে বাধ্য। ওজন বেশি থাকলে দেখতেও খারপ লাগে পাশাপাশি নানা রোগের আবির্ভাব হয়। তাই সহজ উপায়ে সঠিক শরীরের অধিকারি থাকতে হলে নিয়মিত মধু ও লেবুর শরবত খান। সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট পেতে চাইলে হালকা গরম জলে লেবু ও মধু মিশিয়ে রোজ একবার করে পান করুন।
ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে – লেবু জল খাওয়ার নিয়ম
মধু ও লেবু একসাথে খুবই লাভদায়ক। শরীরের যেকোনো ব্যাথা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায়। আমাদের শরীরে অ্যাসিড জমে নানা ধরণের ব্যাথা শুরু হয়। নিয়মিত লেবু ও মধুর জল পান করলে শরীরের অতিরিক্ত অ্যাসিড দূর হয়ে যায় ফলে ব্যাথা থেকে আরাম মেলে।
উজ্জ্বল ত্বক – Bright Skin
উজ্জ্বল ত্বক পেতে হলে অবশ্যই প্রতিদিন এক গ্লাস মধু ও লেবুর জল পান করুন। তাছাড়া মধু ও লেবুর মিশ্রণ বানিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে উঠবে। ত্বকের যাবতীয় রুক্ষতা দূর করে দেয় লেবু ও মধুর মিশ্রণ।
সতেজ নিঃশ্বাস – Fresh Breath
লেবুতে থাকা অ্যাসিড আমাদের নিঃশ্বাসে থাকা গন্ধকে দূর করে। ফলে সতেজ শ্বাস নির্গত হয়। নিয়ম করে লেবু ও মধুর জল পান করলে শরীরে থাকা দূষিত পদার্থসমূহ পরিষ্কার হয়ে যায়। ফলে শরীর সতেজ থাকার পাশাপাশি নিঃশ্বাসও সতেজ থাকে।