বন্ধুরা আমরা আমাদের শরীর স্বাস্থ নিয়ে অনেকটাই সচেতন থাকি বা রাখি। কিন্তু আমরা অনেকেই আছি যারা নিজেকেই নিয়ে ব্যস্ত একবার ভাবিনা আমাদের বাচাদের কথা যারা কিছু বলতে পারেনা বা বুঝতে পারেনা, এখানে শিশুমূলক বাচাদের কথা বলা হচ্ছে । আর যাদের বাচ্চা আছে তাদের কোথায় বলা হচ্ছে। আমরা জানি বাস্তব রূপে অনেক মা বাবা আছেন যারা তাদের বাচাদের অনেকটাই কেয়ার করে থাকেন।কিন্তু অনেক ব্যাপার আছে বা অনেক কিছু জানার দরকার যেগুলো আমরা একদমই জানি না। বা একবার জানার প্রয়োজনও মনে করি না। বন্দুরা আমরা বড়রা নিজেদের নিয়ে একটু আধটু রিস্ক নিতে পারি কিন্তু বাঁচা শিশুদের নিয়ে নেওয়া তো দূরের কথা ভাবাটাও খুব পারে।
আর সব বড়ো কথা হল একটা জিনিস আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে আমরা আমাদের বাচ্চাদের খেয়াল কিন্তু জন্মানোর পর থেকেই নেবো না বরং জন্মানোর আগেই অর্থাৎ মা ও শিশু স্বাস্থ্য, মা ও শিশুর যত্ন, শিশুর স্বাস্থ্য পরিচর্যা ইত্যাদি ইত্যাদির খেয়াল আমাদের নিজেদের রাখতে হবে।
একজন শিশু পৃথিবীতে আসার পর বাবা মায়ের দায়িত্ব আরো বেড়ে যায়। কারণ একটাই তা হল সন্তানকে যে কোন উপায়ে সুস্থ রাখতে হবে এবং মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শিশুর শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধির সাথে সাথে মানসিক বিকাশের সম্পর্কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক বিকাশ হলো শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক, আবেগিক ও সামাজিক বিকাশের সমন্বিত রুপ। শিশু বয়স থেকেই বাবা-মাকে সন্তানের সুস্থতার জন্য অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। শুধুমাত্র ভাল খাবার, পুষ্টি নয়, পাশাপাশি তার যথাযথ যত্ন, আদর, স্নেহ, ভালোবাসা, হাসি আনন্দ ও অনুভুতির বিষয়গুলোর দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। পুষ্টি বাড়িতে আপনার অতি আদরের ছোট্ট সোনামণির জন্য খুবই দরকারি কিছু Bangla Baby Health Tips সম্পর্কে জানাব, আশা করি অনেক উপকারে আসবে।
1. কখনও আপনার নবজাতক শিশুকে বুকের শাল দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতে দিবেন না। অনেকে না জেনেই জল, মধু, চিনির জল বা মিসরির জল খেতে দেন, এতে শিশুর অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে । শিশু জন্মের পর প্রথম তিন দিন পর্যন্ত শিশুকে স্নান করাবেন না।
2. প্রথম ৬ মাস শিশুকে বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতে দিবেন না। শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজন খাদ্য ও পুষ্টি। মায়ের দুধ শিশুর জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটি ছোট শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশের জন্য যে সমস্ত খাদ্য উপাদান প্রয়োজন সে সমস্ত উপাদান মায়ের বুকের দুধে উপযুক্ত মাত্রায় বিদ্যমান।
3. শিশুর বয়স ছয়মাস পূর্ণ হলে বুকের দুধের পাশাপাশি তাকে বাড়তি খাবার দিতে হবে। কারণ এ সময়ের পরে মায়ের বুকের দুধ কমে আসতে থাকে এবং শিশুর দেহ বৃদ্ধির সাথে তার শারীরিক চাহিদা বেড়ে যায়।
4. শিশু যদি না খেতে চায় তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। আপনার শিশুকে বাইরের কোন খাবার, দীর্ঘ দিনের ফ্রিজের খাবার বা বাসি খাবার দেবেন না। নিজে হাতে তৈরি করুন তার খাবার।
5. ফল জাতীয় খাবার না ধুয়ে খাওয়াবেন না।অনেকের ধারনা কলা, কমলা ও অন্যান্য ফলমূল খেলে শিশুর ঠাণ্ডা লাগে বা বেড়ে যায়। এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। সব ফলমূল খেতে দিন আপনার শিশুকে।
6. রাতে ঘুমের মধ্যে বুকের দুধ ছাড়া অন্য কোন খাবার যেমন ফিডারে করে দুধ দেবেন না।
7. ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে স্যালাইন এর পাশাপাশি সব খাবার দিবেন শিশুকে। কোন খাবার বন্ধ করবেন না।
8. শিশুকে কখনোই একা একা উঁচু স্থানে বসিয়ে রেখে আপনি দূরে কোথাও যাবেন না। শিশু যতদিন না নিজে নিজে হাঁটতে পারে ততদিন শিশুকে ওয়াকার দিয়ে হাঁটানোর চেষ্টা করবেন না।
9. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে শিশুকে কখনো কোন ওষুধ খাওয়াবেন না। ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে কোন খাবার বন্ধ করবেন না। জ্বর হলে মোটা জামাকাপড় বা কাঁথা-কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখবেন না।
10. জন্মের পরপরই শিশুদের জন্ডিস হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়৷ এর নানা কারণ থাকে এবং সবসময় তা এড়ানোও সম্ভব হয় না৷ তাই লক্ষ্য রাখতে হবে যে নবজাতকটি যেন যথেষ্ট পরিমাণে মায়ের দুধ পান করে৷
11. না খেলে বা দুষ্টমি করলে কখনো আপনার শিশুকে ভয় দেখাবেন না। এতে মানসিক বিকাশে সমস্যা হতে পারে। শিশুকে কখনো মারবেন না, সে কোন খারাপ কিছু করলে তাকে বুঝিয়ে বলুন।
12. শিশুকে সাথে নিয়ে কোন ধরনের ভয়ের সিনেমা বা নাটক দেখবেন না। শিশুর সামনে বসে কখনো ধূমপান করবেন না।
13. সবরকম ওষুধ শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন। কোন ধরনের ধারালো জিনিস যেমন সুই, কাঁচি, ছুরি এগুলো শিশুর সামনে রাখবেন না। রান্নাঘর বা টয়লেটে আপনার শিশুকে একা ছাড়বেন না।
শেষ কথা
সন্তান হওয়ার পর প্রতিটি বাবা-মায়ের দায়িত্ব বেড়ে যায় অনেক গুণ। কারণ একটাই তা হল সন্তান যেন সুস্থ-সবল ভাবে বেড়ে উঠে। শিশুকে নিরাপদে রাখতে মেনে চলুন সব ধরনের সতর্কতা। সন্তানের যেন সঠিক মানসিক বিকাশ ঘটে এবং সন্তানের সুস্থতায় অনেক কিছুই বাবা-মাকে মেনে চলতে হয়। তাই জেনে রাখুন Bangla Baby Health Tips বা যা হয়তো অনেকেরই অজানা। ভালো থাকুক আপনার সোনামণি। হাসি থাকুক আপনার মুখে সবসময়।