হরমোন চিকিৎসা – Hormone Therapy,Treatment in bengali

বন্ধুরা আমরা অনেকেই হরমোন এর ব্যাপারে অনেক ভুল ভাল জানি। আমরা অনেকেই জানি হরমোন কি মেয়েদের হরমোন কি, হরমোন কাকে বলে, হরমোন কত প্রকার ও কি কি, হরমোন কি কত প্রকার ?

হরমোন হচ্ছে এক প্রকার জৈব-রাসায়নিক তরল যা শরীরের কোনো কোষ বা গ্রন্থি থেকে শরীরের একটি নির্দিষ্ট অংশে নিঃসরিত হয়। হরমোন হল একটি আভ্যন্তরীন উদ্দীপক। হরমোনের মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য অংশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পরিবর্তনের সংকেত পাঠানো হয়। উদাহরণস্বরূপ, বিপাকক্রিয়ার পরিবর্তনের জন্য অল্প একটু হরমোনই যথেষ্ট। এটি একটি রাসায়নিক বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করে যা এক কোষ থেকে অপর কোষে বার্তা বহন করে। সকল বহুকোষীয় জীবই হরমোন নিঃসরণ করে। গাছের হরমোনকে ফাইটোহরমোনও বলা হয়। প্রাণীর ক্ষেত্রে বেশির ভাগ হরমোনই রক্তের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।

পুরুষের যে সমস্যা প্রায়ই হয়

অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে করতে হাঁপ ধরে গেছে? অবসাদের একটা ভাব এসে গেছে? এমনটি হতেই পারে। মানুষ তো, যন্ত্র তো আর নন। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি, কেন এই অবসাদ বা ক্লান্তি?

অনেকে এই অবসাদের পেছনে এখনকার ছুটোছুটি ও অস্থির জীবনযাপনের দোহাই দেন। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটাই কারণ হতে পারে। অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়া এখন এতই সাধারণ বিষয় হয়ে গেছে, এর পরিচিতি দাঁড়িয়ে গেছে ‘টিএটিটি’ বা ‘টায়ার্ড অল দ্য টাইম’ নামে।

জীবনযাপনে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনলে এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এর মধ্যে আছে যথেষ্ট ঘুমানো, সামাজিক যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা, পুষ্টিমানসম্পন্ন খাবার খাওয়া, বেশি করে তরল-জাতীয় খাবার গ্রহণ, ভিটামিনকে প্রাধান্য দিয়ে মদ-জাতীয় খাবার কমানো। এসব পরিবর্তনে যদি অবসাদ ভাব না কাটে, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

যেসব কারণে অবসাদ পেয়ে বসে 

রক্তাল্পতা: রক্তে লোহিত কণিকা কমে গেলে রক্তাল্পতা হয়। এ থেকে তৈরি হতে পারে অবসাদ ভাব। সব সময় যদি ক্লান্ত লাগে, দুর্বল বোধ হয়, ঘুম ও মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে, হৃৎস্পন্দন দ্রুত হয়, বুক ও মাথাব্যথা হয়, তবে তা রক্তাল্পতার কারণে কি না, পরীক্ষা করতে পারেন। শরীরে লৌহের ঘাটতি হলে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। লৌহের ঘাটতি পূরণে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

নিদ্রাহীনতা

ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসে বিঘ্ন ঘটে যে সমস্যা তৈরি হয়, এর কারণে নিদ্রাহীনতা দেখা দেয়। নাক ডাকার উপসর্গ দেখে নিদ্রাহীনতার বিষয়টি ধরা যায়। নিদ্রাহীনতার মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হচ্ছে শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধার কারণে ঘুম ঠিকমতো না হওয়া। এতে মস্তিষ্ক জেগে থাকে। সারা দিন এতে ক্লান্তি শরীরে থেকে যায়। চিকিৎসকের কাছে পরীক্ষার মাধ্যমে নিদ্রাহীনতা পরীক্ষা করতে পারেন। তবে জীবনযাপনে পরিবর্তন আনলে এ সমস্যা দূর হবে। ধূমপান ছাড়া, ওজন কমানো, মদ ছাড়া, শারীরিক ব্যায়ামে উপকার পাবেন।

থাইরয়েড সমস্যা

গলার ওপর প্রজাপতি আকৃতির এই থাইরয়েড গ্রন্থি যে হরমোন নিঃসরণ ঘটায়, তা নানা উপায়ে শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে কত দ্রুত ক্যালরি পোড়ানো হবে বা কত দ্রুত হৃৎস্পন্দন হবে, এ বিষয়টিও রয়েছে। থাইরয়েড গ্রন্থিটি দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কয়টি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি দেহের সামগ্রিক ক্রিয়াকে প্রভাবিত করে, থাইরয়েড তাদের অন্যতম। থাইরয়েডের সমস্যা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করে, যা দেহের থাইরয়েড গ্রন্থির ওপর প্রভাব ফেলে। এখন অনেকেরই থাইরয়েডের সমস্যা দেখা যায়। থাইরয়েড হরমোন কমে গেলে অবসাদ তৈরি হয়। সাধারণ রক্ত পরীক্ষায় থাইরয়েডের সমস্যা ধরা পড়ে। এটি চিকিৎসায় সহজে সারে। যাঁরা অবসাদ বা মাংসপেশির দুর্বলতায় ভোগেন, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

টেস্টোস্টেরন কম

টেস্টোস্টেরন একটি হরমোন। এটি শুক্রাশয়ে তৈরি হয়। বয়স বেড়ে গেলে টেস্টোস্টেরন উৎপাদন কমে যায়। টেস্টেটোরন কমে গেলে কয়েক ধরনের উপসর্গ দেখতে পাবেন। সব সময় ক্লান্তি বা অবসাদ তার মধ্যে একটি। ঘুমের মধ্যে অধিক টেস্টোস্টেরন তৈরি হয় বলে অবসাদ কাটাতে ও টেস্টোস্টেরন তৈরিতে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। সুষম খাবারও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফল-সবজি, কম মাত্রায় সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খেতে হবে।

শেষ কথা

অবসাদের আরও কিছু কারণের কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা, যার মধ্যে আছে যকৃৎ, বৃক্ক ও হৃদ্‌যন্ত্রসংক্রান্ত নানা ক্রনিক রোগ। শ্বাসযন্ত্র ও পেটের পীড়া, বিষণ্নতা ও অতিরিক্ত কোমল পানীয় সেবনের কারণেও হতে পারে অবসাদ। নিয়মিত হাঁটা, যোগব্যায়াম ও শারীরিক কসরত করে সুস্থ থাকতে পারেন। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি অনলাইন।