অষ্টমী পূজা Ashtami Puja – দুর্গা পূজা

দুর্গাপুজো Durga Puja আমাদের কাছে ধর্মীয় আচরণের থেকেও অনেক বেশি উৎসব, তাই না!! কিন্তু, তাও পুজোর তো কিছু রীতি আছে। আজ আপনাদের সঙ্গে অষ্টমীর সেই নিয়ম-কানুনই ভাগ করে নেব…

পুজো তো চলেই এলো বলুন। কথায় বলে মন তুলসী ভক্তি চন্দন। আপনার পুজো আপনি যদি নিজে করতে পারেন তাহলে কি ভালোই না হয় বলুন তো। কিন্তু আপনি ভাববেন পদ্ধতি তো আপনি জানেন না, পুজো করবেন কি ভাবে!! কোনো চিন্তা নেই। আমরা তাই হাজির হয়েছি আপনাকে অষ্টমী পূজার পদ্ধতি জানাবার জন্য। আসুন দেখে নেওয়া যাক।

অষ্টমী – Ashtami Puja

অষ্টমী পূজা – অষ্টমীর সকালে স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্রে ঠাকুরের সামনে বসুন। তিনবার হাতে গঙ্গাজল নিয়ে আচমন করুন। এবার হাতে ফুল নিন ও তিনবার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র পড়ে ঠাকুরের চরণে তা প্রদান করুন। এবার প্রণাম মন্ত্র অর্থাৎ “ ওঁ সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থ সাধিকে, শরণ্যে ত্রম্ব্যকে গৌরী নারায়ণী নমস্তুতে’’ ইত্যাদি বলে অঞ্জলি প্রদান শেষ করুন। সকল মেয়েই মা দুর্গার অংশ, তাই মৃন্ময়ী প্রতিমাকে পুজো করার পাশাপাশি কম বয়সের ছোট মেয়েদেরও পুজো করা হয় এদিন। মহাষ্টমীর দিন কুমারী মেয়ে বিশেষত যে সকল মেয়ের বিবাহে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে বা বিবাহ স্থির হয়েও ভেঙে যাচ্ছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ শুভ ফলপ্রদ। লাল বা হলুদ বস্ত্র মা’কে প্রদান করুন। লাল বা হলুদ সুতো মায়ের কাছে নিবেদন করে হাতে বাঁধুন। চিনি, ডাব, মিষ্টি, ফল, দিয়ে পুজো করুন। নিজের মনবাসনা পূরণের জন্য সংকল্প করান। নিরামিষ আহার গ্রহণ করুন। ঘিয়ের প্রদীপ জালান।

 অঞ্জলি

অষ্টমী মানেই কিন্তু পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া নতুন জামাকাপড় পড়ে। স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্রে ঠাকুরের সামনে বসুন। তিনবার হাতে গঙ্গাজল নিয়ে আচমন করুন। এবার হাতে ফুল নিন ও তিনবার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র পড়ে ঠাকুরের চরণে তা প্রদান করুন। এবার প্রণাম মন্ত্র অর্থাৎ “ ওঁ সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থ সাধিকে, শরণ্যে ত্রম্ব্যকে গৌরী নারায়ণী নমস্তুতে’’ ইত্যাদি বলে অঞ্জলি প্রদান শেষ করুন।

কুমারী পুজো

 সকল মেয়েই মা দুর্গার অংশ, তাই মৃন্ময়ী প্রতিমাকে পুজো করার পাশাপাশি কম বয়সের ছোট মেয়েদেরও পুজো করা হয়। বেলুড় মঠে স্বামী বিবেকানন্দ প্রথম কুমারী পূজা করেন ১৯০১ সালে। ষোলো বছরের মেয়ে পর্যন্তই কুমারী হিসাবে পুজো করা যায়। একটি মেয়েকে প্রথমে আমন্ত্রণ করে তাকে শাড়ি ও গয়না উপহার দিতে হয়। সেই শাড়ি ও গয়না তাকে পড়িয়ে মাতৃমূর্তির সামনে এনে উঁচু আসনে বসাতে হয়। কুমারীর পা জল দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয়। তারপর তার পূজা শুরু হয়। তাকে মিষ্টান্নাদি নৈবেদ্য প্রদান করা হয়। তার উদ্দেশে অঞ্জলি দেওয়া হয়। এইদিন ওই কুমারীকে দেবী দুর্গার রূপ হিসাবেই ধরা হয়।

সন্ধি পুজো

 এটি দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মূলত অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিস্থলে অর্থাৎ অষ্টমী শেষ হবার ২৪ মিনিট ও নবমী শুরু হবার ২৪ মিনিট এই সময়ের মধ্যে এই পূজা হয়। এই সময়ে মূলত দেবী চামুন্ডার পূজা করা হয়। এই পূজাতেই ১০৮ টি পদ্মফুল দেবীকে উৎসর্গ করা হয়। এর মূলে রামায়ণের কাহিনী আমরা সবাই জানি। রাবণ বধের জন্য রাম ১০৮ পদ্ম দিয়ে দেবীর পূজা করেন ও তারপর রাবণ নিধন হয়। সেই সূত্রেই এই সন্ধি পূজা করা হয়। দেবীর সামনে নানা রকম খাদ্যদ্রব্য কাঁচা অবস্থায় এবং রান্না করা ভোগ হিসাবেও রাখা হয়। ১০৮ টি মাটির প্রদীপ দেবীর সামনে জ্বালানো হয়। কোনো কোনো জায়গায় এই দিন বলিও দেওয়া হয়। বলি হিসাবে পশুবলি নিয়ে অনেক নিষেধাজ্ঞা জারি আছে বলেই আঁখ, চালকুমড়ো এইসব বলি হিসাবে প্রদত্ত হয়।

শেষ কথা 

এই হল মোটামুটি অষ্টমী পুজোর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ। আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন। আপনার ভক্তি আপনি নিজে দেবীর কাছে পৌছে দিন, ‘দাশবাস’ আপনার সঙ্গে আছে।