মাঝে মধ্যে জীবন এতটাই কষ্টে ভরে যায় যে ভগবানের ছবির দিকে তাকিয়ে বলতে ইচ্ছা করে, হে ভগবান এমন কি কোনও রাস্তা নেই যা অনুসরণ করলে মনের সব ইচ্ছা পূরণ হবে এবং সেই সঙ্গে এমন খারাপ সময় থেকে বেরিয়ে আসাও যাবে। উত্তর মেলে না কোনও। মন ভেঙে যায়। শরীর সঙ্গ ছেড়ে দেয়। এক সময় গিয়ে ইচ্ছাগুলি মনেই মরে যায়। আর একদিক সেই সব ইচ্ছার শবদেহগুলো তুলে ভেজা চোখে পৃথিবী ছাড়তে হয়। কিন্তু আর নয়! আমার জীবন এমন হয়েছে তো কী! আপনাদের হবে না। তাই তো এই প্রবন্ধে ভগবান শিবের এমন একটি মন্ত্রের সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা নিয়মিত জপ করলে যে কোনও ইচ্ছা পূরণ হবে। হয়তো আমার কথায় বিশ্বাস রাখতে পারছেন না, তাই না! ক্ষতি নেই। একবার মন্ত্রটা আউড়েই দেখুন না। লাভ ছাড়া যে কোনও ক্ষতি হবে না, সে কথা হলফ করে বলতে পারি।
ভগবান শিব হলেন যোগী। যার শরীরে কোনও দোষের দাগ নেই। তিনি পবিত্র। তিনি কারও চোখের জল দেখতে পারেন না। তাই তো যে কারও মনের মনের ইচ্ছা পূরণ করতে পিছপা হন না। সেই কারণেই ভগবান শিবের এই মন্ত্র একবার উচ্চারণ করে দেখুন, আপনার জীবনের ছবিটাই বদলে যাবে। ফিরে পাবেন মনের শান্তি। শুধু তাই নয়, আমাদের মনের সব দোষ, সব পাপও ধুয়ে যাবে। তাই আর অপেক্ষা না করে একবার চোখ রাখুন বাকি প্রবন্ধে। দেখবেন আপনার জীবনটাই বদলে যাবে।
এই মন্ত্রটিকে শাস্ত্রে “রুদ্র মন্ত্র” বলা হয়ে থাকে। মন্ত্রটি হল- “ওম নম ভগবতে রুদ্রায়ও”। এটি জপ করলে দেখবেন শান্তি পাবেন, সুখ পাবেন। তবে মন্ত্রটি পাঠ করার আগে কিছু নিয়ম মানতে হয়। যেমন…
১. স্নান করার পর পরিষ্কার জামা কাপড় পরে কম করে ১০৮ বার এই মন্ত্রটি পাঠ করতে হবে। শাস্ত্রে লেখা আছে এমনটা প্রতিদিন করলে মনের ইচ্ছা সব পূরণ হবে, সেই সঙ্গে জীবনে শান্তি ফিরে আসবে।
২. ভগবান শিবের ছবিকে সামনে রেখে মন্ত্রটি পাঠ করবেন।
৩. দেবাদিদেবের পছন্দের ফুলে তাকে সাজিয়ে তুলবেন। তার পরে মন্ত্রটা পাঠ করা শুরু করবেন।
৪. সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জপের সময় বাড়াবেন।
৫. সাধুরা মনে করেন রুদ্রাক্ষের মালা হাতে নিয়ে এই মন্ত্রটি জপ করলে তাড়াতাড়ি ফল পাওয়া যায়। এই বক্তব্য কতটা সঠিক তা যদিও জানা নেই।
রুদ্র মন্ত্র পাঠ করার ৮ টি উপকারিতা:
1.এই মন্ত্র প্রতিদিন জপ করলে আমাদের পাপ এবং দোষ সব ধুয়ে যাবে।
2. মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর হবে এবং ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পাবে। শুধু তাই নয়, অ্যাংজাইটি এবং ডিপ্রেশন কমাতেও এই মন্ত্রটি দারুনভাবে সাহায্য করে।
3. এই মন্ত্র যারা জপ করেন তাদের কেউ, কোনও ক্ষতি করতে পারে না।
4. জীবন খুশিতে ভরে ওঠে। আর সফলতা রোজের সঙ্গী হয়।
5. শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে এনার্জির ঘাটতি দূর হয়।
6. যে কোনও মনের ইচ্ছা পূরণ হয়।
7. ভয় চলে যায়।
8. দুঃখ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।
প্রতি সোমবার এই শিব মন্ত্র জপ করুন, সব অমঙ্গল দূর হয়ে যাবে
হিন্দু ধর্মের উপর লেখা একাধিক প্রাচীন বইয়ে এমন বহু স্তোত্রের সন্ধান পাওয়া যায়, যা দেব-দেবীর পুজে করার সময় পাঠ করা হয়ে থাকে। অনেকে এই সব স্তোত্র, মন্ত্র হিসেবে জপ করেন, তো কেউ কেউ ভজনের মতো করে গেয়ে থাকেন।
কিন্তু মজার বিষয় কি জানেন, এই সব স্তোত্র পাঠ করলে কী কী উপকার পাওয়া যাতে পারে সে সম্পর্কে অনেকেই খোঁজ রাখেন না। যেমন শিব ‘পঞ্চ অক্ষর’স্তোত্রের কথাই ধরুন না। একাধিক প্রাচীন বই অনুসারে প্রতি সোমবার দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনা করার পর যদি এই ‘পঞ্চ অক্ষর’শ্লোকটি পাঠ করা যায়, তাহলে একাধিক উপকার মেনে। বিশেষত খারাপ শক্তির প্রভাবে কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়, সেই সঙ্গে আর্থিক ও শারীরিক উন্নতিও ঘটে ৷ ছবি: সংগৃহীত ৷ পঞ্চ অক্ষর স্তোত্রের অন্দরে পাঁচটি শব্দ লুকিয়ে রয়েছে, তাই তো এই শ্লোকটিকে পঞ্চকশরা অর্থাৎ পাঁচ অক্ষর সমৃদ্ধ স্তোত্র নামে ডাকা হয়ে থাকে। ‘পঞ্চ অক্ষর’স্তোত্রে মোট পাঁচটি ধাপ থাকে।
প্রথম ধাপ হল -“নাগেদ্র হারায়া ত্রিলোচনায়া, ভাশমাঙ্গে রাগায়া মহেশ্বরায়া, নিত্যায়া শুদ্ধায়া দিগমবারায়, তাসমৈ না কারায়া নমহ শিবায়”।
দ্বিতীয় পাঠটি হল – “মন্দাকিনি শলিল চন্দ্রায়া চার্চিতায়া, নন্দিশ্বারয়া প্রমথা নাথ মহেশ্বরায়া, মন্দ্র পুষ্প বাহু পুষ্প সুপজিতায়া, তাসমৈ মা কারায়া নমহ শিবায়।”
তৃতীয় ধাপটি হল -“শিবায় গৌরি বাদানা যা বৃন্দ, সূর্য দকশ ধোওয়ারা নশকায়া, শ্রী নীল কন্ঠ বিষ ধরায়, তসমৈ শ্রী কারায়া নমহ শিবায়”।
চতুর্থ ধাপটি হল -“বশিষ্ঠ কুম্ভদ ভাবা গৌতম আচার্য মুনিন্দর দেভা আর্চিতা শিখারায়া। চন্দ্র আর্ক বৈষবানারায় লোচনায়, তসমৈ ভা কারায় নমহ শিবায়”।
পঞ্চম পাঠটি হল -“ইজানায়া স্বরুপায়া জাটা ধারায় পিনাকা হাস্তায় সনাতনায়, দিব্যা দিবায় দিগম্বরায়া তসমৈ কারায়া নমহ শিবায়”।
শেষ কথা
ভগবান শিব হলেন যোগী। যার শরীরে কোনও দোষের দাগ নেই। তিনি পবিত্র। তিনি কারও চোখের জল দেখতে পারেন না। তাই তো যে কারও মনের মনের ইচ্ছা পূরণ করতে পিছপা হন না। সেই কারণেই ভগবান শিবের এই মন্ত্র একবার উচ্চারণ করে দেখুন, আপনার জীবনের ছবিটাই বদলে যাবে। ফিরে পাবেন মনের শান্তি। শুধু তাই নয়, আমাদের মনের সব দোষ, সব পাপও ধুয়ে যাবে। তাই আর অপেক্ষা না করে একবার চোখ রাখুন বাকি প্রবন্ধে। দেখবেন আপনার জীবনটাই বদলে যাবে।