বর্ষার কবিতা – Borshar Kobita

বন্ধুরা কেমন আছো তোমরা ? আমি আশা করসি তোমরা সকলেই ভালো আছো। আর কিছুদিন পর থেকেই শুরু হতে চলেছে বর্ষাকাল। আর এই বর্ষার মনসুনে প্রেমটা কিন্তু অনেকটাই জমে ওঠে। শুধু প্রেম কোনো বন্ধুত্ব আড্ডা অনেক মজা আরও কত না কি। হ্যা তবে রাস্তা ঘাট এর জন্য বা বৃষ্টি বাদলের জন্য ঠিক থাকে বাইরে বেরোনো সমস্যা তবে যারা বর্ষাকাল ভালোবাসেন তাদের কোনো ব্যাপার না। আর আজকের তাদের কথা  ভেবে বা তাদের জন্য সাথে অন্যদের জন্য আমার আজকের সম্ভার বর্ষাকালের কবিতা। অনেকটাই তোমাদের ভালো লাগবে বলে আমার মনে হয়। সরাসরি চলে যাবো কিছু মন মাতানো বর্ষাকালের কবিতা গুচ্ছ নিয়ে।

1.বৃষ্টির কথা থাক, বিরহের কথা বলি।
শুনাই দুজনে বিদ্যাপতির বিষণ্ন পদাবলী,
বর্ষার কথা থাক, বকুলের কথা বলি।
ঝরা বকুলেই ভরে রাখি এই প্রশস্ত অঞ্জলি।
আকাশের কথা থাক, হৃদয়ের কথা শুনি।
যদিও বিরহ তবু মিলনের স্বপ্নজালই বুনি,
অশ্রুর কথা থাক, আবেগের কথা শুনি-
সহস্র রাত কেটে যাক
দূর আকাশের তারা গুনিব।
গরিমার কথা থাক, বিনয়ের পাঠ ধরি।
কলহের কোনো কাজ নেই, কিছু করুণার গান করি।
বিদ্যার কথা থাক, প্রেমের কবিতা পড়ি।
চারদিকে এই জলধারা তবু সৃষ্টির দ্বীপ গড়ি।

2.সকাল হতেই নেমেছে বৃষ্টি, আজকে সারাবেলা,
আকাশ জুড়ে কালো মেঘের, লুকোচুরি খেলা।
বৃষ্টির ধারা ঝরিছে অঝোরে,
নদী খেত মাঠ, জলে আছে ভরে,
বেড়ার ধারে, রাঙীগাই এক, বৃষ্টিতে ভিজে একেলা।
বাছুরীর কাছে নিয়ে এসো তারে, নিয়ে এসো এইবেলা।

3.বৃষ্টি ভেজা বাদল দিনে, মাঝিরা নাহিক খেয়াঘাটে,
বিজলী চমকায় আকাশের গায়, মেঘে মেঘে বেলা কাটে।
দূরে গাঁয়ের পথের বাঁকে,
এক হাঁটু জল জমে থাকে,
একটা সাপে ব্যাঙ ধরেছে, গাঁয়ের তালপুকুরের ঘাটে।
কালো জলে তার, রাজহাঁসের দল, বৃষ্টিতেও সাঁতার কাটে।

4.অজয় নদে বান ডেকেছে, উপছে পড়ে প্রবল ঢেউ,
মাঝি একা বসে ঘাটে, নাইকো কূলে আর কেউ।
মুষলধারায় বৃষ্টি পড়ে,
পলাশ বনে পাতা নড়ে,
বর্ষায় ভিজে রাস্তার কুকুর, ডাক ছাড়ে ঘেউ ঘেউ,
আমি দেখি জানলা খুলে, আর দেখে না কেউ।

5.ঝম ঝমা ঝম বৃষ্টি পড়ে, গাঁয়ে ঢোকে জল,
বাসায় ভিজে পাখিরা সব, করছে কোলাহল।
বৃষ্টি পড়ে মুষলধারে,
মেঘ জমেছে আকাশপারে,
সকাল বিকাল অঝোর ধারায়, বৃষ্টি ঝরে অবিরল,
সকাল হতে আজিকে দেখি, নেমেছে বৃষ্টি বাদল।

6.কাগজ কলম লয়ে বসিয়াছি সদ্য,

আষাঢ়ে লিখতে হবে বর্ষার পদ্য

কি যে লিখি কি যে লিখি ভাবিয়া না পাই রে,
হতাশে বসিয়া তাই চেয়ে থাকি বাইরে।
সারাদিন ঘনঘটা কালো মেঘ আকাশে,
ভিজে ভিজে পৃথিবীর মুখ খানা ফ্যাকাশে।
বিনা কাজে ঘরে বাঁধা কেটে যায় বেলাটা,
মাটি হল ছেলেদের ফুটবল খেলাটা।
আপিসের বাবুদের মুখে নাই ফুর্তি,
ছাতা কাঁধে জুতা হাতে ভ্যাবাচ্যাকা মূর্তি।
কোনখানে হাটু জল কোথা ঘন কর্দম –
চলিতে পিছল পথে পড়ে লোকে হর্‌দম।
ব্যাঙেদের মহাসভা আহ্লাদে গদ্‌গদ্,
গান করে সারারাত অতিশয় বদ্‌খদ্।

7.গীতগোবিন্দের জলে ভেজে বালি হাঁস

স্বরচিত মেঘদূতে মজে কালিদাস
পদ্মায় রবীন্দ্রনাথ সজল তাকায়
কাদম্বরী ভেজা চুলে ফিরে ফিরে চায়জল পড়ে পাতা নড়ে বনে আর মনে
সপ্তর্ষির বজ্রবাঁশি গগনে গগনেচকিতে তোমার রূপ দেখি আনমনে

যে যায় সে দীর্ঘ যায় ।।

8.আমি বলি মেঘ-বিষ্টি তারা ভাই-বোন
‘জলধর’ ‘পয়োধর’ বলে তোরা শোন।

‘তোয়ধর’ ‘অম্বুদ’ যাই বলি তারে
আষাঢ়ের ‘বলাহক’ ভালোবাসি যারে
চারিদিক কালো কালো ‘ঘন’ অভিসারে
এই যদি দেয় ছুট আসে চুপিসারে!

সাগরের বুক হতে মেঘ ভেসে আসে
বাতাসের সাথে প্রেম বলে ইতিহাসে!
আকাশের সীমানায় কালো হয়ে ভাসে
কাতুকুতু খেয়ে মেঘ ভিজা ভিজা হাসে!

সাদা মেঘ তারা বেশ! আরামেই থাকে
তুলো হয়ে উড়ে যায় হিমালয়ের নাকে!
কিছুক্ষণ হিমালয় আরামেই রাখে
শিশু-মেঘ হিসি করে জমিনের টাকে!

9.বর্ষা খুলে খুলে আমাকে তার
বিভা দেখায়, দেখি-
অভিরূপ মল্লারের দল
সুরে আর জলে
উপগত আনন্দে-শীর্ষসুখে
আকার পায় সব নিহিত রোদন।
একলা বাগান, কুসুমশোভা
ভূমিকম্প শেষ হয়
অশেষ শুধু হৃদ-কদমের কম্প;
এই আমি
মাহ ভাদরের শূন্য মন্দিরে
বিরহে ঘেমে-নেয়ে পূর্ণতা পাই।
বৃষ্টিকান্তা মেয়ে
ঊষর আকাশ-প্রেমে
উড়ে যায় ঝাঁকে ঝাঁকে;
মেঘলা রুমাল। রোদ-বৃষ্টির খেলা

14. জানালায় বৃষ্টির ছটা
হৃদয়ের কপাট খোলা,
তুমি আমি বসি মখোমুখি
কিছু কথা যায়না বলা।

পাশে এসে হাত খানি ধরো
এই বর্ষার ঋতু আগমনে,
নি:সঙ্গতার রিম ঝিম ভেঙ্গে দাও
চোখে চোখ প্রেম নিবেদনে।

এভাবেই বসি কিছু কাল
যতো দিন বৃষ্টি না ফুরায়,
ততো দিন নেশা লেগে থাক
যতো দিন চোখ না জুড়ায়।

15. চৌকিতে শীতল পাটি
মাটির ঘর টিনের চালা ,
টিপ টিপ বৃষ্টি চুঁয়ায়
খোলা তবু সেই জানালা!

রাত আরো গভীর হলে
বারে যেন বৃষ্টি ধারা ,
তুমি আমি শুধু জেগে রই
কথা নয় কাব্য ছাড়া।

সারা দিনের ক্লান্তি ভুলে
পাশা পাশি শুই দুজনে,
রিম ঝিম বৃষ্টির গানে
কত কথা পরছে মনে!

কতো কথা হয়নি আজো
কতো স্বপ্নের বিমূর্ত নাচ,
চোখে চোখে কতো কথা হয়!
শিহরিত মুহূর্ত রাঙ্গা লাজ।

আজ ভালোবাসো গো আমায়
মায়া ভেঙ্গে একটু তাকাও,
বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে
তুমি আজ আমায় ভেজাও ।

শেষ কথা 

এখানে শেষ কথা বলতে একটাই কথা সবাইকে বলতে চাই যে অনেক সময় অনেকের এক হয় যে ফেইবুক বা হোয়াটস্যাপ এ বা কাউকে পার্সোনালি ম্যাসেজ করে কোনো কবিতা সোনায় বা কবিতা পাঠায় সেই সূত্রে আজকে আমাদের এই চেষ্টা। আশগা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে, আর অনেকটাই আপনাদের জেক আসবে। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।