অনুকুল ঠাকুরের বানী – Sri Sri Thakur AnukulChandra Bani in Bengali

মানুষ আপন টাকা পর, যত পারিস মানুষ ধর । পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে স্মরণীয় ও অনুসর্তব্য বহুবিধ অমূল্য নির্দেশ দান করেছেন। তিনি ধর্ম, অর্থ, কর্ম, পরমার্থ, অধ্যাত্ন, রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান, শিক্ষা, বিবাহ, কৃষি, শিল্পকলা, বাণিজ্য, বৃত্তি, সত্তা, ব্যষ্টি, সমষ্টি, অতীত ও বর্তমান ভবিষ্যৎ সবকিছুকে এক মহা সমন্বয়-সূত্রে সংগ্রথিত করে এবং সর্বার্থ পরিপূরাণী পূর্ণাঙ্গ জীবনদর্শন তাঁর অমৃতনিষ্যন্দী বাণীনিচয়ের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন। এই মহাবাণীনিচয় জনসাধারণের মধ্যে পরিবেশনকল্পে বিষয়বস্তু বিচারে ভাগে ভাগে ভিন্ন-ভিন্ন গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। সর্বপ্রথম আমাদের দুর্ব্বলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে- সাহসী হতে হবে, বীর হতে হবে। পাপের জ্বলন্ত প্রতিমূুর্তি ঐ দুব্বলতা। তাড়াও যত শীঘ্র পার, ঐ রক্তশোষণকারী অবসাদ-উৎপাদক ভ্যাম্পায়ারকে। স্মরণ কর তুমি সাহসী, স্মরণ করর তুমি শক্তির তনয়, স্মরণ কর তুমি পরমপিতার সন্তান, -আগে সাহসী হও, অকপট হও, তবে জানা যাবে তোমার ধর্ম্মরাজ্যে…ঢোকবার অধিকার জন্মেছে।

অনুকুল ঠাকুরের বানী

1.যার কাছ থেকে সকল ধরনের সহযোগীতা পেয়ে পালন পোষণ পেয়ে আজ আমি পূর্ণ তার শরীর হতে আমার শরীর আর এই মহান মানুষ টিকে-ই আমরা পিতা বলি ।  ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র

2.কারো সাহায্য যখন তুমি না পাও , তখন পিতার কাছে যাও তার সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে তোমাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকবে। কৃতজ্ঞতা বোধ থাকতে হবে নচেৎ অমানুষ সেই সন্তান।  ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র

3.যে শাশুড়ী মা  সে কিন্তু তোমার অর্ধেক অঙ্গের মা অর্থাৎ তুমি আর তোমার স্বামী দুজনে মিলে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ অর্থাৎ তোমার ও মা। আর মা মানেই জগত জননী সর্বেসর্বা। বৌমা আসলে তার আস্তে আস্তে কর্তৃত্ব হরায়, আবার ছেলেকে হারানো ভয় থাকে ছেলেরা আগে মা ঘিরে থাকে বিয়ের পর আস্তে আস্তে কমে যায় । তাই একটু দোষ গুন ধরে একটু রেগে কথা বলে। হয়তো বা মনের কিছু দুঃখ অন্য কাউকে বলে। সব বিষয় গুলো যদি গভীর ভাবে ভাবো দেখতে পাবে মায়ের কোন দোষ নেই। তখন তাকেই মাথায় করে রাখবে তুমি গৃহিণীর কন্যা হয়েই থাকবে। ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র

4.মনের কথা প্রাণের ব্যাথা বলিস কেবল তাকে পেলে উপেক্ষা তোমায় করে না যে জন যায় না তোমায় ঠেলে ফেলে। ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র

5.মাটির শরীর মাটি হবে মাটি ছাড়া নাই বিধান, মাটিরে তুই কররে খাঁটি অমৃতেরই এনে নিদান। ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র 

6.আঁধ কথার সময় হতেই করে করিয়ে যা শেখাবি সেটি হবে মোক্ষম ছেলের হিসাবে চল নয় পস্তাবি। ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র 

7.কেউ যদি তোমার নিন্দা করে করুক, কিন্তু খেয়াল রেখো তোমার চলন চরিত্রে নিন্দনীয় কিছু যেন কোনো ক্রমেই স্তিতিলাভ করতে না পারে নিন্দা ব্যর্থ হয়ে উঠবে এমনি।  ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র 

8.যতই পরের দশ ডিবি তুই নিজের যা দোষ এড়াতে, পেয়ে বসবে সে দোষ তোমায় দেবে না পা বাড়াতে।  ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র 

9.সহিতে তুমি না পারো যদি অন্যের কটু ব্যবহার, কেমন করে সইবে তারা তোমার তিক্ত অত্যাচার। ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র 

10.কাউকে যদি বলিস কিছু সংসদনের তরে, গোপনে তাকে বুঝিয়ে বলিস সমবেদনা ভোরে। ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র 

11.তুমি যায় দেখোনা কেন – অন্তরের সহিত সবার আগে তার ভালোটুকু দেখার চেষ্টা করো আর এই অভ্যাস তুমি মজ্জাগত করে ফেলো। ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র

12. আত্মপ্রতিস্টার তাগিদে যারা শক্তিমান হয় তারা শক্তির দম্ভে সৎলোককে অবমাননা করতে শুরু করে। চাটুকার ছাড়া অন্য লোককে তারা বরদাস্ত করতে পারে না। বহু লোক তাদের আচরণে অন্তরে অন্তরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আর তাই হয় তাদের কাল। অন্তত লোক অন্তরে তাদের কোন আসন প্রতিষ্ঠিত হয় না।  ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র 

13. অশিক্ষিতে শিক্ষা দেওয়া বরং অনেক সোজা হয় ,কুশিক্ষিতের  শিক্ষক হওয়া  সেটাই কঠিন সোজা নয়। ঠাকুর অনুকুল চন্দ্র 

14. যদি সাধনায় উন্নতি লাভ করতে চাও, তবে কপটতা ত্যাগ কর।

15. কপট হয়ো না, নিজে ঠক না, আর অপরকেও ঠকিও না।

16. সরল ব্যাক্তি উদ্ধ্বদৃষ্টি সম্পন্ন চাতকের মত। কপটী নিন্মদৃষ্টিসম্পন্ন শকুনের মত। ছোট হও, কিন্তু লক্ষ্য উচ্চ হোক; বড় এবং উচ্চ হ’য়ে নিন্মদৃষ্টিসম্পন্ন শকুনের মত হওয়ায় লাভ কি?

17. অমৃতময় বারি কপটের নিকট তিক্ত লবন-ময়, তীরে যাইয়াও তার তৃষ্ণা নিবারিত হয় না।

18. তোমার ভাষা যদি কুৎসা-কলঙ্কজড়িতই হয়ে থাকে, অপরের সুখ্যাতি করতে না পারে, তবে যেন কারো প্রতি কোনও মতামত প্রকাশ না করে। আর, মনে-মনে তুমি নিজ স্বভাবকে ঘৃনা করতে চেষ্টা কর, এবং ভবিষ্যতে কুৎসা-নরক ত্যাগ করতে দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ হও।

19. তুমি লাখ গল্প কর, কিন্তু প্রকৃত উন্নতি না হলে তুমি প্রকৃত আনন্দ কখনই লাভ করতে পারবে না। কপটাশয়ের মুখের কথার সঙ্গে অন্তরের ভাব বিকশিত হয় না, তাই আনন্দের কথাতেও মুখে নীরসতার চিহ্ন দৃষ্ট হয়; কারন, মুখ খুললে কী হয়, হৃদয়ে ভাবের স্ফুর্তি হয় না।

20. কপট ব্যাক্তি অন্যের নিকট সুখ্যাতির আশায় নিজেকে নিজেই প্রবঞ্চনা করে, অল্প বিশ্বাসের দরুন অন্যের প্রকৃত দান হতেও প্রবঞ্চিত হয়।

21. পরনিন্দা করাই পরের দোষ কুড়িয়ে নিয়ে নিজে কলঙ্কিত হওয়া; আর, পরের সুখ্যাতি করা অভ্যাসে নিজের স্বভাব অজ্ঞাতসারে ভাল হয়ে পড়ে। তাই বলে কোন স্বার্থবুদ্ধি নিয়ে অন্যের সুখ্যাতি করতে নেই। সে তো খোসামদ। সে ক্ষেত্রে মন মুখ প্রায়ই এক থাকে না। সেটা কিন্তু বড়ই খারাপ, আর তাতে নিজের স্বাধীন মত প্রকাশের শক্তি হারিয়ে যায়।

22. হীরক যেমন কয়লা প্রভৃতি আবর্জ্জনায় থাকে, উত্তমরুপে পরিষ্কার না করলে তা জ্যেতি বেরোয় না, তিনি তো তেমনি সংসারে অতি সাধারন জীবের মত থাকেন, কেবল প্রেমের প্রক্ষালনেই তাঁর দীপ্তিতে জগৎ উদ্ভাসিত হয়। প্রেমীই তাঁকে ধরতে পারে। প্রেমীর সঙ্গ কর, তিনি আপনিই প্রকট হবেন।

23. তোমার নজর যদি অন্যের কেবল কু-ই দেখে, তবে তুমি কখনই কাউকে ভালবাসতে পারবে না। আর, যে সৎ দেখতে পারে না সে কখনই সৎ হয় না।

24. যার উপর যা’কিছু সব দাঁড়িয়ে আছে তাই ধর্ম, আর তিনিই পরম পুরুষ। ধর্ম কখনও বহু হয় না ধর্ম একই আর তার কোন প্রকার নেই। মত বহু হতে পারে, এমনিকি যত মানুষ তত মত হতে পারে কিন্তু তাই বলে ধর্ম বহু হতে পারে না।

25. সব মতই সাধনা বিস্তারের জন্য, তবে তা নান প্রকারে হতে পারে; আর যতটুকু বিস্তারে যা হয় তাই অনুভূতি, জ্ঞান। তাই ধর্ম অনুভূতির উপর।

26. কোন মতের সঙ্গে কোন মতের প্রকৃত পক্ষে কোন বিরোধ নেই, ভাবের বিভিন্নতা, রকমফের একটাকেই নানপ্রকারে একরকম অনুভব!

27. হিন্দু ধর্ম, মুসলমান ধর্ম, খৃষ্টান ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম ইত্যাদি কথা আমার মতে ভুল, বরং ও সবগুলি মত।

28. তুমি যাই দেখ না কেন, অন্তরের সহিত দেখার সর্ব্বাগ্রে তার ভালটুকুই দেখতে চেষ্টা কর, আর এই অভ্যাস তুমি মজ্জাগত করে ফেল।

29. তোমার মন যত নির্মল হবে, তোমার চক্ষ তত নির্মল হবে, আর জগৎটা তোমার নিকট নির্মল হয়ে ভেসে উঠবে।

30.এটা খুবই সত্য কথা যে, মনে যখনই অপরের দোষ দেখবার প্রবৃত্তি এসেছে তখনই ঐ দোষ নিজের ভিতরে এসে বাসা বেধেছে। তখনই কালবিলম্ব না করে ওই পাপপ্রবৃত্তি ভেঙ্গেচুরে ঝেঁটিয়ে সাফ করে দিলে তবে নিস্তার, নইলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।