নেতাজীর বাণী – নেতাজীর বিখ্যাত উক্তি

“তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব” এই উক্তি বা কথাটা আমরা যখনি শুনিনা কেন  আমাদের একজনের কথাই খালি মাথায় আসে সে হল ভারতের স্বাধীনতার এক অন্যতম অধিনায়ক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।

ভারতের জাতীয় রাজনীতি তথা সমাজবোধে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা কোনও দিনই ম্লান হবে না। তিনি একটা গোটা জাতিকে ঝুঁকি নিয়ে লড়বার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। আর তাই তিনি সকলের ‘নেতাজি’। ‘নেতাজি’ বলতে বাঙালি একজনকেই বোঝে তিনি সুভাষ চন্দ্র বসু। ১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি এই ‘দেশনায়ক’ -এর জন্ম লগ্ন । আর সেই জন্মদিবস আজও সসম্মানে পালিত হয় এদেশের বিভিন্ন জায়গায়। তিনি শুধু ভারতেই নন সারা বিশ্বের মধ্যে এক অন্যতম বিপ্লবী বলাই চলে। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, নাম বললেই লোকে বোঝে দৃঢ়তা, বোঝে প্রাণ প্রাচুর্য্য, বোঝে শক্তি, বোঝে স্বাধীনতা, আর এক মাস পরেই ঠিক ২৩শে জানুয়ারী নেতাজির জন্মদিন  কিন্তু শুধু জ.ন্মদিন পালনেই কি আমাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? নেতাজীর জন্মদিন ২৩শে জানুয়ারীকে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবী জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আসলে শুধু ছুটি ঘোষণাতেই একটা মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা পুরোপুরি জানানো যায় না। তার জন্য প্রয়োজন নেতাজীকে সঠিকভাবে অনুধাবন করা। তাঁর জীবন ও বাণী সব মানুষের কাছেই আদর্শ।  বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নেতাজীর কিছু বাণী দেওয়া হলো –

1. “নিজের প্রতি সত্য হলে বিশ্বমানবের প্রতি কেউ অসত্য হতে পারে না ।”

2. “মানুষ যতদিন বেপরোয়া, ততদিন সে প্রাণবন্ত ।”

3. “নরম মাটিতে জন্মেছে বলেই বাঙালীর এমন সরল প্রাণ”।

4. “জগতের সব কিছু ক্ষণভঙ্গুর। শুধু একটা জিনিস ভাঙে না, সে বস্তু, ভাব বা আদর্শ”।

5. প্রকৃতির সঙ্গ ও শিক্ষা না পাইলে, জীবন মরুলোকে বির্বাসনের মত, সকল রস ও অনুপ্রেরণা হারায়।

6. “ জীবনে প্রগতির আশা নিজেকে ভয়, সন্দেহ থেকে দূরে রাখে এবং তার সমাধানের প্রয়াস চালাতে থাকে। ”

7. “A true soldier needs both military and spiritual training”.

8. “Freedom is not given – it is taken”.

9. “ No real change in history has ever been achieved by discussions.

10. “Give me blood and I will give you freedom”.

11. “Remember that the greatest crime is to compromise with injustice and wrong.”

12. “It is our duty to pay for our liberty with our own blood”

নেতাজীর বিখ্যাত উক্তি

নেতাজির জীবনদর্শনই ছিল স্বাধীন দেশের সামাজিক উন্নতি। আর সেই পথে এগোবার জন্য তাঁর বিভিন্ন উক্তিগুলি রীতিমত অনুপ্রেরণা দেয়। একনজরে দেখে নেওয়া যাক তাঁর কয়েকটি বিখ্যাত উক্তি বা বার্তা –

স্বাধীনতা নিয়ে বার্তা

শুধুমাত্র রক্ত দিয়েই স্বাধীনতা জেতা যায়। তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।

লড়াই নিয়ে বার্তা

ভারত ডাকছে। রক্ত ডাক দিয়েছে রক্তকে। উঠে দাঁড়াও আমাদের নষ্ট করার মতো সময় নেই। অস্ত্র তোলো!….যদি ভগবান চান , তাহলে আমরা শহিদের মৃত্যু বরণ করব।

চিন্তন ঘিরে অনুপ্রেরণা

কোনও একটা চিন্তনের জন্য একজন মৃত্যুবরণ করতে পারেন। কিন্তু সেই চিন্তনের মৃত্যু হয় না। সেই চিন্তন একজনের মৃত্যুর পর হাজার জনের মধ্যে ছড়িয়ে যায়।

এগিয়ে চলার বার্তা

মানুষ, টাকাকড়ি ,বাহ্যিক আড়ম্বর দিয়ে জয়লাভ বা স্বাধীনতা কেনা যায় না। আমাদের আত্মশক্তি থাকতে হবে, যা সাহসী পদক্ষেপ নিতে উৎসাহ দেবে।

আজাদহিন্দ ফৌজ নিয়ে বার্তা

আমরা যখন দাঁড়াব, আজাদহিন্দ ফৌজকে গ্র্যানাইটের দেওয়াল হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা যখন মার্চ করব তখন আজাদহিন্দ ফৌজকে স্টিমরোলার হতে হবে।

সংগ্রাম নিয়ে বার্তা

যদি জীবনে সংগ্রাম, ঝুঁকি না থাকে , তাহলে জীবন বাঁচাটা অনেকটা ফিকে হয়ে যায়.

সত্যতা নিয়ে বার্তা

জীবনকে এমন একটি ভাব ধারার মধ্য়ে তুলে ধরতে হবে, যাতে সত্যতা পূর্ণমাত্রায় থাকে ।

জীবনদর্শন নিয়ে বার্তা

সত্যান্বেষণ না করা পর্যন্ত আমরা চুপ করে বসে থাকব না, বা থাকা উচিত নয়।

সমস্যা কাটাবার উপায় নিয়ে বার্তা

আমাদের সবচেয়ে বড় জাতীয় সমস্যা হল, দারিদ্র, অশিক্ষা, রোগ, বৈজ্ঞানিক উৎপাদন। যে সমস্যাগুলির সমাধান হবে, কেবলমাত্র সামাজিকভাবনা চিন্তার দ্বারা।

বাস্তববোধ

বাস্তব বোঝা কঠিন। তবে জীবনকে সত্যতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সত্যকে গ্রহণ করতে হবে

শেষ কথা 

নেতাজি আজ আমার মধ্যে বেঁচে নেই স্বশরীরে। কিন্তু তিনি প্রত্যেক বাঙালিদের ও প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে আজ ওমর ও সারাটা জীবন জতদিন এই পৃথিবী থাকবে ততদিন তিনি আমাদের ও সবার মধ্যে বেঁচে থাকবে। অনেকের মতে নেতাজী সোভিয়েত রাশিয়ার কাছে বন্দী অবস্থায় সাইবেরিয়াতে মৃত্যুবরণ করেন। তবে, এই মহান দেশনায়কের মৃত্যু রহস্য এখনও একটি রহস্যই হয়ে রয়েছে দেশবাসীর কাছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুভাষচন্দ্রকে ‘দেশনায়ক’ আখ্যা দিয়ে ‘তাসের দেশ ‘ নৃত্যনাট্যটি তাঁকে উৎসর্গ করেন। উৎসর্গপত্রে লেখেন: “স্বদেশের চিত্তে নূতন প্রাণ সঞ্চার করবার পূণ্যব্রত তুমি গ্রহণ করেছ, সেই কথা স্মরণ ক’রে তোমার নামে ‘তাসের দেশ’ নাটিকা উৎসর্গ করলুম।” ধন্যবাদ আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।