মহিলাদের জন্য সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে গ্যাস দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী গ্যাস যোজনা,উজ্জ্বলা যোজনা – Pradhan Mantri Ujjwala Yojana

বন্ধুরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বেঁচে থাকার জন্য আমরা খাবার খেয়ে থাকি, যা আমাদের সকলের বাড়িতেই রান্নার বান্নার পর খাবার তৈরী হয়ে সেই খাবারটা আমরা খেয়ে থাকি আর সেই রান্নার বান্নার কিন্তু একটা বেশ বড়োসড়ো ভূমিকা পালন করে থাকে। আর সেই রান্না বান্না কিন্তু কোনো জাতি পাতি জায়গা বিশেষ নয় দেশে বিদেশে সব জায়গায় কিন্তু এটা প্রযোজ্য। আর বর্তমানে সেই রান্না বান্নার জন্য যেই জিনিসটা আমাদের অনেকটাই দরকার সেটা হল রান্নার গ্যাস। অনেক গরিব মানুষ বা এমন অনেক মানুষ আছেন আমাদের দেশে যারা রান্নার গ্যাস কিনতে পারেন না। আমাদের দেশে বহুসংখক লোক আছেন যারা রান্নার গ্যাস কিনতে পারে না। রান্নার গ্যাস তো দূরের কথা ঠিক মতন কয়লা বা কোনো রকম জ্বালানিও কিনতে হিমশিম খেয়ে যায়  কিনতে পারে না। আর এই সমস্ত কথা বা সমস্ত ব্যাপার মাথায় রেখে ভারত সকারের উদ্যোগে এই যোজনা জন সাধারণের জন্য লঘু করা হয়েছে। দেশের দরিদ্রতম পরিবারগুলির কোটি কোটি মহিলা সদস্যের কল্যাণে এই ধরনের একটি কর্মসূচি এই প্রথম চালু করতে চলেছে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক। Pradhan Mantri Ujjwala Yojana

বি পি এল পরিবারগুলির কোন মহিলা সদস্যের নামে বিনা খরচে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে ‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’ (Pradhan Mantri Ujjwala Yojana)নামে একটি কর্মসূচি অনুমোদিত হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বৈঠকটি আজ এখানে অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচির আওতায় বি পি এল পরিবারগুলিতে ৫ কোটি রান্নার গ্যাসের সুযোগ পৌঁছে দিতে ৮ হাজার কোটি টাকার সংস্থান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বি পি এল পরিবারগুলিতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পিছু ১,৬০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা বরাদ্দ করা হয়েছে। বি পি এল পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করা হবে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে পরামর্শক্রমে। ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ – এই তিনটি আর্থিক বছরে রূপায়িত হবে এই কর্মসূচিটি।

উল্লেখ্য, আমাদের দেশের দরিদ্র পরিবারগুলি সাধারণভাবে রান্নার গ্যাসের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। শহর ও আধা-শহর এলাকায় মূলত উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষরাই এই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। দরিদ্র পরিবারগুলিতে রান্নাবান্নার কাজে যে জীবাশ্ম জ্বালানি সচরাচর ব্যবহার করা হয়, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র এক সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতে ৫ লক্ষ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে শুধুমাত্র এই ধরনের জ্বালানি ব্যবহারের ফলে। অধিকাংশ মৃত্যুই হৃদরোগ, শ্বাসজনিত সংক্রমণ এবং ফুসফুসের কারণে যার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের। এই কারণে দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারের ছেলে-মেয়েরা নানা ধরনের শ্বাসজনিত সংক্রমণের শিকার হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রান্না ঘরে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে আগুন জ্বলতে থাকায় যে ক্ষতি হয় তা প্রতি ঘণ্টায় ৪০০টি সিগারেট পুড়ে যাওয়ার ফলে পরিবেশের যে ক্ষতি হয় তার সমান।

বি পি এল পরিবারগুলিতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার ফলে এল পি জি-র আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে দেশের সবক’টি পরিবারকেই। শুধু তাই নয়, মহিলাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং তাদের ক্ষমতায়নেও এই ব্যবস্থা বিশেষ কার্যকর হয়ে উঠবে। রান্নার গ্যাসের যোগান তথা সরবরাহের কাজে যুক্ত থেকে গ্রামীণ যুবক-যুবতীরা কর্মসংস্থানেরও সুযোগ পাবেন।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী গত ২৯ ফেব্রুয়ারির বাজেট ভাষণে ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরের জন্য ২ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের কথা ঘোষণা করেছিলেন দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী একজন করে মহিলা সদস্যের নামে মোট ১.৫ কোটি রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে। তিনি তাঁর বাজেট ভাষণে আরও উল্লেখ করেছিলেন যে পরবর্তী দুটি অর্থ বছরেও এই কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ অব্যাহত রাখা হবে যাতে মোট ৫ কোটি পরিবারকে এর আওতায় নিয়ে আসা যায়।

মুফতে রান্নার গ্যাস,গরিবের বন্ধু মোদী!

নিজেদের গরিব-দরদী প্রমাণ করতেই হবে। তাই আগামী লোকসভা ভোটের আগে গরিব পরিবারে নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার রূপরেখা তৈরি করে ফেলল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

অরুণ জেটলি বাজেটেই ঘোষণা করেছিলেন, দারিদ্র সীমার নীচের পরিবারগুলির মহিলাদের নামে নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেবে সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে তিন বছরে ৫ কোটি দরিদ্র পরিবারকে নিখরচায় গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হবে। বিপিএল পরিবারে রান্নার গ্যাসের সংযোগের জন্য এখন ১৬০০ টাকা দিতে হয়। এ বার বিনামূল্যে সেই সংযোগ মিলবে। কোন কোন পরিবার সুবিধা পাওয়ার যোগ্য, তা বিপিএল-তালিকার ভিত্তিতে রাজ্যের সঙ্গে তেল সংস্থাগুলির আলোচনায় ঠিক হবে।

‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’ নামের এই প্রকল্পে মোদী সরকার তিন বছরে বরাদ্দ করবে ৮ হাজার কোটি। আগামী এক বছরে, অর্থাৎ ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে দেড় কোটি পরিবারে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়া হবে। বাজেটে এ জন্য ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ‘‘এক ঘণ্টা কাঠকয়লার উনুন জ্বালানোর অর্থ ৪০০ সিগারেটের ধোঁয়া শরীরে প্রবেশ করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে এতে ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ জন্যই গ্রামের গরিব মহিলাদের কাছে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিতে চাই।’’

কিন্তু প্রশ্ন হল, রান্নার গ্যাসের সংযোগ নিখরচায় দিলেও গরিব পরিবারগুলি যে নিয়মিত সিলিন্ডার কেনার অর্থের সংস্থান করতে পারবে, তার নিশ্চয়তা কোথায়? জেটলির জবাব, ‘‘আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে দারিদ্র সীমার নীচের পরিবারগুলির আয়ও বাড়ে। পাশাপাশি সরকার বিভিন্ন ধরনের নগদ ভর্তুকি সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিচ্ছে।’’ তবে তেল সংস্থাগুলির সূত্রের বক্তব্য, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার কাজে চ্যালেঞ্জ যথেষ্ট। এই লক্ষ্য পূরণে তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাকেই পরিকাঠামোয় অর্থ লগ্নি করতে হবে। রান্নার গ্যাসের আমদানি, পরিবহণ, সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার পরিষেবার পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। সূত্রের খবর, ভারত পেট্রোলিয়াম পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় রান্নার গ্যাসের আমদানির জন্য একটি টার্মিনাল তৈরি করবে। এর জন্য ব্যয় হবে ৮০০ কোটি টাকা। ৩৫ একর জমি অধিগ্রহণও হয়ে গিয়েছে। টার্মিনালটি তৈরি করতে তিন বছর লাগবে। সেখানে ১৫ হাজার টন আয়তনের দু’টি ট্যাঙ্ক তৈরি হবে।

এইচপিসিএল-ও ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পূর্বাঞ্চলে একটি টার্মিনাল তৈরি করবে।  তৈরি হবে ৭ থেকে ১০টি নতুন  বটলিং প্ল্যান্ট। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ২ হাজার কোটি টাকা। ইন্ডিয়ান অয়েলও পারাদীপে ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এলপিজি আমদানির ব্যবস্থা তৈরি করবে। এই কাজগুলি শেষ না হলে কী ভাবে সমস্ত গরিব পরিবারে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়া যাবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। একই ভাবে নতুন ডিস্ট্রিবিউটরও নিয়োগ করতে হবে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর অবশ্য দাবি, এখন ১৩ হাজার ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছেন। ১০ হাজার ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগ করা হবে।

তবে এখনও স্পষ্ট নয় গরিব পরিবারগুলিকে ১৪.২ কিলোগ্রামের সিলিন্ডারই দেওয়া হবে নাকি ছোট মাপের সিলিন্ডার সরবরাহ করা হবে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সূত্রের ইঙ্গিত, ছোট সিলিন্ডার সরবরাহেই জোর দেওয়া হবে। কারণ গ্রামে এখন যারা রান্নার গ্যাস ব্যবহার করেন, তাদের ৯১ শতাংশই কাঠ-কয়লা-ঘুঁটেও জ্বালানি হিসেবে কাজে লাগান। তাতে পরিবারে জ্বালানির খরচও কমে।

শেষ কথা 

বাজেট অধিবেশনে অরুণ জেটলি বলেছিলেন, দারিদ্র সীমার নীচের পরিবারগুলির মহিলাদের নামে নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেবে সরকার। সেই কথাই রাখল মোদি সরকার ৷‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’ নামের এই প্রকল্পে মোদী সরকার তিন বছরে বরাদ্দ করবে ৮ হাজার কোটি। আগামী এক বছরে, অর্থাৎ ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে দেড় কোটি পরিবারে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়া হবে। বাজেটে এ জন্য ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ‘এক ঘণ্টা কাঠকয়লার উনুন জ্বালানোর অর্থ ৪০০ সিগারেটের ধোঁয়া শরীরে প্রবেশ করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে এতে ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ জন্যই গ্রামের গরিব মহিলাদের কাছে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিতে চাই।’আর সকারের এরকম চিন্তা ভাবনাকে আমরা কুর্নিশ জানাই। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনাকে আমরা অনেক ধন্য ব্যাড জানাই জয়ের সাথে।