খাটি মধু চেনার ও পরীক্ষা করার উপায় -Real Honey Real Honey vs Fake Honey in Bengali

বন্ধুরা কেমন আছেন আপনারা আশা করি ভালোই আছেন সবাই। আজকে আমরা একটা বিশেষ ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করবো সেটা হল মধু। হ্যা বন্ধুরা মধু আমরা কম বেশি সবাই জানি আর এটা আমাদের অনেক কাজেও লাগে। কিন্তু খাঁটি মধু  কি ? কিভাবে তার পরীক্ষা করতে পারবো বা কিভাবে চান সম্ভব আজকে সেটা নিয়েই আলোচনা করবো। তা বন্ধুরা মধু  এমন একটা জিনিস যাতে করে আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান করে থাকে। মধু কিভাবে হয় সেটা তো আমরা সবাই জানি নতুন করে বলার কিছু নেই।

মানব দেহে মধুর উপকারীতা সবারই কম বেশি জানা আছে। তাই নানা প্রয়োজনে একটুখানি খাঁটি মধুর খোঁজ অনেকেরই করতে হয়। সব মধুর চেহারা একই রকম হওয়ায় বোঝা দায় কোনটি আসল, কোনটি নকল। খাটি মধু চেনার উপায় জানতে হলে আপনার কিছু কৌশল জেনে রাখা দরকার , এক মিনিটেই চিনে নিতে পারবেন আসল মধুটি।মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহের সময় নিজে উপস্থিত থেকে মধু আনতে পারলে তবেই এর আসল-নকল নিয়ে কোন সন্দেহে ভুগবেন না আপনি। কিন্তু আপনার পক্ষে কী মৌচাক থেকে সব সময় মধু সংগ্রহ করা সম্ভব? অনেকের পক্ষেই এটা সম্ভব না। তাই সবচেয়ে ভাল উপায়, কিছু সহজ পরীক্ষা জেনে নেওয়া। যার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন আপনার কেনা মধু খাঁটি না কি ভেজাল। তাহলে চলুন বন্ধুরা আমরা এখন জেনে নেবো যে খাঁটি মধু  ছানার উপায়।

1. মধুতে কখনো পিঁপড়া ধরে না

খাঁটি মধুতে কখনো পিঁপড়া ধরে না। জেনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই? অবাক হওয়ার কিছু নেই। মধুর আসল-নকল নির্ধারণ করতে এক টুকরো কাগজে অল্প একটু মধু লাগিয়ে যেখানে পিঁপড়া আছে সেখানে রেখে দিন। তারপর অপেক্ষা করতে থাকুন। মধুতে যদি পিঁপড়া ধরে তাহলে বুঝে নেবেন আপনার কেনা মধুতে ভেজাল আছে।

2.ঠাণ্ডায় খাঁটি মধু কখনো জমে না

প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় খাঁটি মধু কখনো জমে না। তাই মধুর আসল-নকল পার্থক্য করতে এ পরীক্ষাটাও করতে পারেন। মধু ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। ভেজাল মধু হলে এটা জমে যাবে। আর না জমলেও ভেজাল মধুর নিচে জমাট তলানি পড়বে।

3.জলে মধু মেশে না 

এক গ্লাস জলে এক চামচ পরিমাণ মধু দিন। তারপর আস্তে আস্তে গ্লাসটি নাড়া দিন। মধু জলের  সাথে মিশে গেলে নিশ্চিতভাবেই সেটা ভেজাল মধু। আর মধু যদি ছোট ছোট পিণ্ডের আকারে গ্লাসের জলে ছড়িয়ে যায়, তাহলে সেটা খাঁটি মধু।

4.সাদা কাপড়ে মধুর দাগ লাগে না 

পরিষ্কার সাদা কাপড়ে অল্প একটু মধু লাগিয়ে শুকিয়ে নিন। একটু পর কাপড়টি ধুয়ে ফেলুন। কাপড়ে দাগ থেকে গেলে বুঝতে হবে এই মধু নকল। আর কাপড়ে দাগ না থাকলে সেটা খাঁটি মধু।

5.বুড়ো আঙুলের পরীক্ষা

সামান্য মধু নিন বুড়ো আঙুলে। দেখুন, এটি অন্যান্য তরলের মতো ছড়িয়ে পড়ে কি না। মধু খাঁটি না হলে তা অন্য তরলের মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু আসল মধু ঘন হয়ে আটকে থাকবে। সহজে ছড়াবে না। আবার একটু বেশি পরিমাণ মধু নিয়ে বুড়ো আঙুল উল্টো করে ধরে রাখলে তা সহজে ফোঁটা আকারে পড়বে না।

6.আগুনের পরীক্ষা

হয়তো এ পদ্ধতির কথা এর আগে শোনেননি। খাঁটি মধু কিন্তু দাহ্য পদার্থ। তবে মধুতে আগুন জ্বালানোর আগে সাবধান থাকবেন। নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিপূর্ণ করতে হবে। তবে পরীক্ষা অতি সাধারণ। ম্যাচের একটা কাঠি মধুতে চুবিয়ে নিন। এবার এই কাঠি জ্বালাতে ম্যাচবক্সে আঘাত করুন। জ্বলে উঠলে মধু নিয়ে নিশ্চিত থাকতে পারেন। আর মধুতে ভেজাল থাকলে আগুন জ্বলবে না।

7.ভিনেগারের পরীক্ষা

এক টেবিল চামচ মধু, সামান্য জলে আর সেই মিশ্রণে দুই-তিন ফোঁটা ভিনেগার দিন। যদি এই মিশ্রণ ফোমের মতো ফেনিল হয়ে ওঠে, তাহলে বুঝতে হবে মধুতে অন্য কিছু মেশানো রয়েছে।

8. তাপমাত্রার পরীক্ষা

খাঁটি মধুতে তাপ দিলে তা খুব দ্রুত কেরামেলের মতো হয়ে যাবে। এটা ফোমের মতো ফেনিল হবে না। কিন্তু ভেজাল মধু কেরামেলের মতো ফেটে ফেটে যাবে না। এতে কেবল বুদবুদ উঠবে।

শেষ কথা 

মধু কিনতে গেলে কমবেশি সবাই বিপাকে পড়ে যান। কারণ নকল মধুতে বাজার সয়লাব। সব মধুর চেহারা একই রকম হওয়ায় বোঝা দায় কোনটি আসল, কোনটি নকল। খাটি মধু চেনার উপায় জানতে হলে আপনার কিছু কৌশল জানা প্রয়োজন, খুব সহজেই চিনতে পোরেন আসল মধু। তবে আসল মধু চেনার আগে চিনতে হবে নকল মধু। মধু পছন্দ করেন না, এমন মানুষ মেলা ভার। সব বয়সের মানুষের রয়েছে মধুর প্রতি আশক্তি। এতে রয়েছে ৪৫টিরও বেশি খাদ্য উপাদান যা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে শুরু করে ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যেকোনো খাবারের স্বাদও দ্বিগুণ করে তোলে মধু। বাচ্চা থেকে শুরু করে বড়দের খাদ্য এবং রূপচর্চার তালিকায় রয়েছে এটি। তবে মধু সম্পর্কে ধারণা না থাকলে খাঁঁটি মধু জুটানো প্রায় অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে চিনি পানিই জোটে অনেকের ভাগ্যে। ঘরে বসেই আপনি জানতে পারবেন কোনটা খাঁটি এবং কোনটা নকল মধু। আশা করি আপনাদের ওপরের সকল টিপস গুলো অনেকটাই বলতে পুরোটাই সাহায্য করে থাকবে আসল ও নকল মধু চিনতে।আশা করি ছোট্ট এই টিপসগুলো আপনাকে ‘সকল রোগের মহৌষধ’ হিসেবে পরিচিত খাঁটি মধু চিনতে অনেকটাই সাহায্য করবে। ধন্যবাদ 

লেখক – শান্তনু পাল