Happy Independence Day in Bengali Language – স্বাধীনতা দিবস কোটস

১৯৪৭ সালের ১৫ই অগাস্ট ভারতবর্ষ টানা ২০০ বছর ব্রিটিশ গভমেন্টের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পায়, টানা ২০০ বছর ধরে ব্রিটিশ সরকারের লুঠ-তরাজের শোষণের মধ্যে দিয়ে গর্জে ওঠে একসময়। একের পর এক আন্দোলন, বিপ্লব সশস্ত্র আন্দোলন করে, বহু রক্তক্ষয়ের পর আমরা এই পরাধীনতা থেকে মুক্তি পাই.  স্বাধীনতার ঠিক আগের মুহূর্তে  ব্রিটিশরা ধর্মের র্ভিত্তিতে ভাগ করে এই অখন্ড ভারতকে এবং তার ফলে ভারত ও পাকিস্তান অধিরাজ্যের জন্ম ঘটে। দেশভাগের সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। অনেক মানুষ প্রাণ হারান এবং ১ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুহারা হন। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের পর দিল্লির লহরী গেটের উপর ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তারপর থেকে  প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।অনুষ্ঠানটি জাতীয় চ্যানেল দূরদর্শনের মাধ্যমে সারা দেশে সম্প্রচারিত হয়। রাজ্য রাজধানীগুলিতেও পতাকা উত্তোলন সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। অন্যান্য শহরে রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীগণ নিজ নিজ কেন্দ্রে পতাকা উত্তোলন করেন। নানা বেসরকারি সংস্থাও পতাকা উত্তোলন ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্কুল-কলেজেও পতাকা উত্তোলন ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা এই দিনে বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সাজপোশাক পরে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করে। সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যেই ইউরোপীয় শক্তিগণ তাঁদের বাণিজ্যকুঠি প্রতিষ্ঠা করে তাদের উপনিবেশ দেশ গুলির নানান অংশে, যার মধ্যে একটি ছিল ভারত বর্ষ। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের প্রধান শক্তি হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৮৫৭ সালে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের পরের বছর ব্রিটেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতের শাসনভার স্বহস্তে তুলে নেয়। এই সময়কার সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি হল ১৮৮৫ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় প্রশাসন ব্যবস্থার কিছু সংস্কার সাধনে প্রবৃত্ত হয়, মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কারছিল এর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু সেই সঙ্গে রাওলাট আইনের মতো দমনমূলক আইনও পাস হয় । এর পরবর্তীকালে   মহনদাস করমচাঁদ গান্ধী  (মহাত্মা গান্ধী) নেতৃত্বে অহিংস অসহযোগ ও আইন অমান্য আন্দোলন ঘনীভূত হয়। ১৯৩০ এর দশকে প্রশাসনিক সংস্কার আইনে যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেই নির্বাচনগুলিতে জয়লাভ করে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। পরবর্তী কয়েকটি দশক ছিল চরম রাজনৈতিক অস্থিরতার দশক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারতের অংশগ্রহণ, শেষবারের জন্য অসহযোগের পথে কংগ্রেসের আন্দোলন এবং অল ইন্ডিয়া মুসলিম লিগের নেতৃত্বে মুসলিম জাতীয়তাবাদের  উত্থানের মতো ঘটনাগুলি ঘটে এই দশকেই । ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়া রাজনৈতিক উত্তেজনা হ্রাস পায় ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সঙ্গে। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের এই মধুর আনন্দের মধ্যে বিষাদের এক চরম সুর শোনা গিয়েছিল যাছিলো ভারত ও পাকিস্তানের ভাগ ।

Happy Independence Day in Bengali Language – স্বাধীনতা দিবস

১৯৪৬ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে ব্রিটেনের রাজকোষ শূন্য হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় ব্রিটেনের পক্ষে অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক কোনোরকম সাহায্য লাভ অসম্ভব হয়ে পড়ে। ব্রিটেনের সরকার বুঝতে পারে এই পরিস্থিতে ভারতে রাজনৈতিক অস্থিরতাকে সামাল দেওয়ার ক্ষমতা বা অর্থবল ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী হারিয়ে ফেলেছে।তাঁরা ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৪৭ সালের গোড়ার দিকে ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করে দেন যে, ১৯৪৮ সালের জুন মাসের মধ্যে ভারতের শাসনক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। স্বাধীনতা ঘোষণার সময় যত এগিয়ে আসতে থাকে, পাঞ্জাব ও বাংলা প্রদেশের হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তত বৃদ্ধি পায়। ১৯৪৭ সালের জুন মাসে জওহরলাল নেহেরু , আব্দুল কালাম আজাদ ,  মহম্মদ আলি জিন্নাহ ,  ভীমরাও আম্বেদকর প্রমুখ জাতীয়তাবাদী নেতৃবৃন্দ ধর্মের ভিত্তিতে ভারত বিভাগ প্রস্তাব মেনে নেন। হিন্দু ও শিখ অঞ্চলগুলি ভারতে ও মুসলমান সংখ্যাগুরু অঞ্চলগুলি নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানে যুক্ত হয়; পাঞ্জাব ও বাংলা প্রদেশ ভাগ হয়ে যায়। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট নতুন পাকিস্তান জন্ম নেয়। মহম্মদ আলী জিন্নাহ এই রাষ্ট্রের প্রথম গভর্নর-জেনারেল হিসেবে শপথ নেন। মধ্যরাতে অর্থাৎ, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট সূচিত হলে জওহরলাল নেহেরু তাঁর বিখ্যাত নিয়তির সঙ্গে অভিসার অভিভাষণটি প্রদানের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ভারতীয় ইউনিয়নের জন্ম হয়। নতুন দিল্লিতে নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী রূপে কার্যভার গ্রহণ করেন। মাউন্টব্যাটেন হন স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর-জেনারেল।

1. ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা 

ধন ধান্য পুষ্প ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা,
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা,
ওসে স্বপ্ন দিয়ে তৈরী সেদেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,
সকল দেশের রানী সেযে আমার জন্মভূমি,
সেযে আমার জন্মভূমি, সেযে আমার জন্মভূমি।

2. ভারত আমার ভারতবর্ষ। 

ভারত আমার ভারতবর্য
স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো
তোমাতে আমরা লভিয়া জনম
ধন্য হয়েছি ধন্য গো ||

3. চল নাগরিক। 

চল চল চল!
ঊর্দ্ধ গগনে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণি তল,
অরুণ প্রাতের তরুণ দল
চল রে চল রে চল
চল চল চল।।

4. পরাধীনতার ব্যথা।

অত্যাচারী বিদেশী এসে,
কেড়ে নিল স্বাধীনতা,
বুঝলেন কবি ভারত মায়ের
পরাধীনতার ব্যথা।

5. স্বাধীন দেশ

মাষ্টারদা সূর্যসেন তরুণ বিপ্লবী
বিনয় বাদল দিনেশ,
যাঁদের ত্যাগে ও প্রাণ বলিদানে
হইল স্বাধীন এদেশ।

6. বীরগাথা 

রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ
বীর সুভাষের মহান দেশ
নাহি তো ভাবনা, করি না চিন্তা
হৃদয়ে নাহি তো ভয়ের লেশ ||

7. একই দেশ। 

আমাদের একই ভাষা আমাদের একই দেশ
সহজ সরল মায়া মমতায় নাইকো যার শেষ।।

8. দেশের জন্য বলিদান। 

দেশকে যাঁরা করিল স্বাধীন
প্রাণ দিল বলিদান,
ফাঁসির মঞ্চে প্রাণ দিল যাঁরা
গাহি তাদের জয়গান।

9. বাঙালি গাথা। 

বাংলার বীর জোয়ান ছেলে,
গাহে ভারত মাতার জয়,
বিদেশীদের বুঝিয়ে দিল
বীর বাঙালী তুচ্ছ নয়।

10. ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা। 

ভাইয়ের মায়ের এতো স্নেহ, কোথায় গেলে পাবে কেহ,
ও মা তোমার চরণ দুটি বুকে আমার ধরি,
আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি।

শেষ কথা 

আমাদের স্বাধীনতার জন্য যারা তাদের  দিয়েছেন, তাদের সমস্তটা দিয়ে লড়েছেন, তাদেরকে আমরা  অনেক ক্ষেত্রেই তাদের প্রাপ্য সন্মান টুকু দিতে সময় পাইনা, আর বাস্তবতায় থাকলে এখনকার অবস্থায় রোজকার জীবনে আমাদের স্বাধীনতা বোধটা অনুভব করা বেশ জটিল কারন আমরা  আমাদের চরম চক্ষে যে সেই অত্যাচারটা দেখি নি, জন্মে থেকেই আমরা আমাদের দেশের স্বাধীন রূপ তাই দেখে আসছি, ফলে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা এই বিষয় গুলির প্রতি একটু আনমনা হয়ে যাই। তাঁরা তাদের জীবনের বাজি রেখে কোনো রকম স্বার্থ ছাড়া শুধু মাত্র ভবিষ্যৎ অর্থাৎ আমাদের কথা ভেবেই সমস্ত লড়াইটা লড়েছিলেন। কত তাজা প্রাণ সে সময়ে অকালে শেষ হয়ে গেছে শুধু মাত্র আজ আমাদের এই শান্তর জীবনটুকু দেওয়ার জন্য। একমাত্র স্বাধীনতার জন্য লড়ে গেছেন এটাই ছিল তাদের একমাত্র স্বার্থ দেশের জন্য আর দশের জন্য। আজ আমরা স্বাধীন একমাত্র তাদের জন্য। তাই তাদের কথা স্মরণ করি বার বার, আর কুর্নিশ জানাই হাজারবার সেই বীর সৈনিকদের। পোস্ট টি  ভালো লাগলে শেয়ার করবেন ধন্যবাদ। বন্দেমাতরম, জয় হিন্দ, জয় ভারত।

লেখক – শান্তনু পাল