প্রয়াত প্রাক্তন লোকসভা অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় – জেনে নিন তাঁর ব্যাপারে কিছু অজানা কথা।

১৯২৯ সালের ২৫ শে জুলাই অসমের তেজপুরে জন্মগ্রহন করেন সোমনাথ চট্ট্যোপাধ্যায়। ওনার পিতা, নির্মল চন্দ্র রায় ছিলেন একরোখা স্বাধীনতাবাদী এবং পেশায় ছিলেন উকিল। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় মহাশয়, স্কুল জীবন মিত্র ইনস্টিটিউশনে শুরু করেন, এবং তারপর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আইন নিয়ে স্নাতক পর্যায়ে পড়েন ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ন হন, এবং পরে কেমব্রিজের জেসাস কলেজ থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন।

সোমনাথ বাবুর কর্ম জীবনের শুরু হয় কলকাতায়, উচ্চ আদালতে ওকালতি দিয়ে, এবং ধীরে ধীরে তিনি সর্ব ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির এক অত্যন্ত গুরত্বপূর্ন সদস্য হয়ে ওঠেন। পার্টির কাজ ও রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য সামাজিক ভাবে সর্ব ভারতীয় স্তরে তাঁর একটি বিশেষ পরিচিতির সৃষ্টি হয় এবং রাজনৈতিক ওঠা পড়ার সঙ্গে তিনি প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন টানা তিন দশক। এই সময় জুড়ে তিনি লোকসভায় বিরোধী দলের ও ওনার দলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এরপর তাঁর লোকসভার অধ্যক্ষ জীবন শুরু হয়।

 সোমনাথবাবু লোকসভার অধক্ষয় ছিলেন। তাঁর কর্মজীবনের এই সময়ে তিনি সেরা পার্লামেন্টারিয়ানের পুরস্কারও পান।  ভারতীয় রাজনৈতিক ইতিহাসে সেরা ও গুরুত্বপূর্ণ অধ্যক্ষদের মধ্যে যিনি অন্যতম।

পার্লামেন্টে এমন কঠিন হয়ে থাকা মানুষটি আদতে ভেতর থেকে ছিলেন আদ্যন্ত সাধারণ হাসিখুশি একজন মানুষ। গান শুনতে ভালোবাসতেন, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিশেষত কৌশিকী দেশিকানের গান পছন্দ করতেন খুব। এছাড়া আর পাঁচটা বাঙালি মানুষের মতই তিনি ছিলেন ফুটবল অন্ত প্রাণ, ফুটবল খেলা দেখতে অত্যন্ত পছন্দ করতেন, জানা যায় এই বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার সমর্থনে মেয়ের সাথে জোরালো তর্ক বিতর্ক চলেছে তাঁর।

বিগত জুন মাস থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে অবনতি হতে থাকে। গত ১৩ই অগাস্ট সকাল ৮টা নাগাদ শহরের এক হাসপাতালে সোমনাথবাবু তাঁর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মরদেহ হাসপাতাল থেকে তার বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়, প্রচুর মানুষ আসেন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। এমন এক মহান মানুষের আত্মার শান্তির কামনা করি।