রাশিফল গননা জন্মদিন অনুসারে – Horoscope According to Birth Date

জ্যোতিষশাস্ত্রে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান আর সংখ্যাতত্বের পর্যালোচনায় রাশিচক্র অনুযায়ী আগাম ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। তবে এটা মনে রাখতে হবে রাশি কখনো ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হতে পারে না। মানুষের কর্মই নিয়ন্ত্রণ করে তার ভাগ্যকে। জ্যোতিষশাস্ত্র কেবল কিছু সূত্র ধরে সম্ভাবনার পথ বলে দেয়। আপনি যদি আপনার জন্মতারিখ (ইংরেজি মাস অনুযায়ী) আপনার রাশি কি সেটা বের করতে চান এজন্য তবে সায়ন (Tropical) তথা পাশ্চাত্য মতে প্লাসিডাস হাউজ সিষ্টেমে তা সহজেই করতে পারেন। নিচে তারিখ অনুসারে মানুষের রাশির নামগুলো দেয়া হলো। # ২১ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল তারিখের মধ্যে জন্ম হলে মেষ (Aries) রাশি। Bengali Horoscope By Date of Birth and Time

২১শে  এপ্রিল থেকে ২০ মে তারিখের মধ্যে জন্ম হলে বৃষ (Taurus) রাশি। ২১ মে থেকে ২০ জুন তারিখের মধ্যে জন্ম হলে মিথুন (Gemini) রাশি।  ২১ জুন থেকে ২১ জুলাই তারিখের মধ্যে জন্ম হলে কর্কট (Cancer) রাশি। ২২ জুলাই থেকে ২২ আগস্ট তারিখের মধ্যে জন্ম হলে সিংহ (Leo) রাশি।  ২৩ আগস্ট থেকে ২২ সেপ্টেম্বর তারিখের মধ্যে জন্ম হলে কন্যা (Virgo) রাশি। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ অক্টোবর তারিখের মধ্যে জন্ম হলে তুলা (Libra) রাশি।  ২৩ অক্টোবর থেকে ২১ নভেম্বর তারিখের মধ্যে জন্ম হলে বৃশ্চিক (Scorpion) রাশি। ২২ নভেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে জন্ম হলে ধনু (Sagittarius) রাশি। ২২ ডিসেম্বর থেকে ২১ জানুয়ারী তারিখের মধ্যে জন্ম হলে মকর (Capricorn) রাশি।  ২২ জানুয়ারী থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারী তারিখের মধ্যে জন্ম হলে কুম্ভ (Aquarius ) রাশি। ২০ ফেব্রুয়ারী থেকে ২০ মার্চ তারিখের মধ্যে জন্ম হলে মীন (Pisces) রাশি। উল্লেখ্য যে, যারা শুরু বা শেষ তারিখ গুলিতে জন্মেছেন তাদের রাশি আগেরটি অথবা পরেরটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তখনকার গ্রহাবস্থান হিসাব করে নির্ণয় করতে হবে। আসুন, রাশিচক্র অনুযায়ী জেনে নেয়া যাক ২০১৮ সাল আপনার কেমন যাবে?

একঝলকে দেখে নেওয়া যাক hide

জন্ম তারিখ হিসাবে রাশিফল নিয়ে কিছু তথ্য ও হিসাব

মেষ (২১ মার্চ – ২০ এপ্রিল) রাশিফল

শুভ রং: লাল, সাদা, গোলাপি ও লাল-সাদা মেশানো

শুভ সংখ্যা: ৯

পাথর: সর্ব প্রথম পাথর রক্ত প্রবাল, এর সাথে রুবি, ব্লাড স্টোন, রক্ত প্রবাল ও হীরা

শুভ ধাতু: লোহা, ইস্পাত।

শুভ দিন: মঙ্গলবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী: ধনু, সিংহ।

আপনি যখন মেষ

রাশিচক্রের প্রথম রাশি হলো মেষ। রাশিচক্রে মেষ নবজাতক এক শিশু, সম্পূর্ণভাবে যে তার নিজের চিন্তাতে মগ্ন। তার কাছে নিজের প্রয়োজনীয়তাই মুখ্য। কোনো মেষ জাতকের মনে নতুন কোনো ভাব বা পরিকল্পনার উদয় হলে সে তাত্ক্ষণিক সেটা প্রকাশ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সে হয়তো কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব বা সংকোচ ছাড়াই তার বন্ধুকে ভোর চারটায় ফোন করে বসবে। শিশুদের মতোই মেষেরাও ভাবে জগতটা শুধু তাদের জন্যই তৈরি। মেষ জাতকেরা খুবই ‘সরাসরি’ গোছের মানুষ। জটিলতা, প্রতারণা, ঠকানো ইত্যাদি মেষ জাতকদের বিষয় নয়। মেষ জাতকেরা বেশ খোলামেলা মেজাজের এবং চিত্তাকর্ষী সততার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও বড় অঙ্কের আর্থিক ঝুঁকি তেমন একটা নেন না। তারা জীবন অত্যন্ত সাহসিকতা, কর্মোদ্দীপনা আর উদ্যোগের সঙ্গে যাপনে অভ্যস্ত। তারপরও তাদের সাহসী চরিত্রগুণেও একটা অদ্ভুত দুর্বলতা রয়েছে। এই রাশির জাতকেরা কখনো কখনো হয়তো ঘরের চারপাশে চকিতে তাকিয়ে নেয় এবং যদি তাদের মধ্যে এ ব্যাপারটি লক্ষ করেন, তবে বুঝে নেবেন সে আর আপনার সঙ্গে এখন কথা বলতে আগ্রহী নন। তার মনে এখন অন্যকিছু ঢুকেছে এবং আপনাকে সে এই মুহূর্তে ভুলে গেছে। মেষ জাতকদের ধৈর্যশক্তিটাও একটু কম। একজন মেষ জাতকের শারীরিক কাঠামো দেখে শনাক্ত করতে পারাটা খুব সহজ। এদের শারীরিক অবকাঠামোটা স্থির, প্রায়শই তীক্ষ, অবশ্য মাঝে মাঝে নম্র ও অস্পষ্ট। প্রায়শ তাদের স্পষ্ট ভুরুযুগল নাকের মাঝে এসে মিলিত হয়ে যায় এবং মেষের চিহ্নটা তৈরি করে। এই রাশির জাতকেরা খুব সাহসী হন। যতবারই ব্যর্থ হন, তারা আবারও একই উদ্দীপনা নিয়ে চেষ্টায় লিপ্ত হন। মেষ জাতকেরা এটা-ওটা অনেক কিছুকেই বিশ্বাস্য করে তুলতে পারে, তারা সুন্দর অনেক স্বপ্নের জালও কারও মধ্যে জন্ম দিতে সক্ষম, কিন্তু তারা শিশুসুলভ মিথ্যা আশ্বাসটি দিতে অক্ষম। অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাস অনেক মেষকে অথৈ সাগরে ফেলে দেয়। দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে অনেক অপকর্ম করে বসে তখন। একরাশ হতাশা ওই সময় এমনভাবে তাকে গ্রাস করে যে, পরাজয়ের ভয়ে জীবনের বাকি কাজগুলো করার ইচ্ছা আর থাকে না।

 

বৃষ (২১ এপ্রিল – ২১ মে)

শুভ রং: আকাশি, নেভি ব্লু, লাল, কমলা ও সাদা

শুভ সংখ্যা: ৬

পাথর: সর্ব প্রথম পাথর পান্না, এর সাথে হীরা, পোখরাজ।

শুভ ধাতু : তামা, ব্রোঞ্জ।

শুভ দিন : শুক্রবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী : মকর, কন্যা, কর্কট।

 

 বৃষ রাশির জাতক 

বৃষ রাশির জাতকদের চোখের দৃষ্টি প্রশান্ত, নির্মল ও স্থির হয়। বৃষরা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি দারুণভাবে আকৃষ্ট হয়। তারা সময়ের মতোই ধৈর্যশীল আর বনানীর মতোই গভীর এবং নির্ভর করার মতো শক্তিমান, যে শক্তি দিয়ে সে পর্বতও সরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু সে জেদি। বৃষের কাছ থেকে অর্থ-সম্পদ খুব কমই আলাদা হতে দেখা যায়। কষ্টজনক হলেও সত্য যে, বৃষরা তাদের টাকা-পয়সার সঙ্গে ক্ষমতার প্রতিও বেশ আগ্রহী। এটি প্রয়োগের জন্য যতটা নয়, তারচেয়েও বেশি তার মনের স্বস্তির জন্য। টাকা-পয়সার পাশাপাশি তার যে ক্ষমতাও রয়েছে, তা যখন সে বুঝতে পারে শুধু তখনই সে নিরাপদ বোধ করে। বৃষ রাশির জাতক ও জাতিকারা বেশ স্বাস্থ্যবান আর শক্ত শারীরিক কাঠামোর অধিকারী হয়। তাদের অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়তে হলে যথেষ্ট কারণ থাকতে হবে। কিন্তু একবার বৃষ যদি বিছানায় পড়ে তো সেরে উঠতেও তার প্রচুর সময় লাগে। ঠাণ্ডা প্রায়শই তার গলা ফোলার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, আর খাবারের প্রতি তার অতি আগ্রহ ও ভালোবাসা ওজনটাও বাড়িয়ে দেয়। খাবারের প্রতি তীব্র আগ্রহের ব্যাপারে বৃষকে পেটুক বলে আখ্যা দেওয়ার কোনো মানে নেই। বৃষ মনে করে যে, সে মোটেও জেদি নয়, সে হলো ধৈর্যশীল। বৃষ নিজের অবস্থান ও মতামতের ক্ষেত্রে আঠার মতো লেগে থাকে। এমনকি পরিণত চিন্তাবুদ্ধি ও ধৈর্যশীলতার চমত্কার স্বাক্ষরও রাখতে সক্ষম। হিংসা বৃষের সবচেয়ে বড় দোষ। তারা নিজেরা সৃষ্টি করতে পারে, নিজেরা ভাঙতে পারে, নিজেরা বিশ্লেষণ করতে পারে। তাই তারা মেনে নিতে চায় না অন্যরাও বড় কিছু করুক। তারা চায় সবাই তাদের উপর নির্ভরশীল হোক। একগুঁয়েমি মনোভাব ষাঁড়ের একটা বড় বৈশিষ্ট্য, বৃষেরও। নিজের সাফল্যগুলো তাকে ভীষণভাবে অহংকারী করে তোলে এবং সে চায় তার উন্নয়ন যেন কেবল তার হাতে হয়।

 

মিথুন (২২ মে – ২১ জুন)

শুভ রং: হালকা সবুজ, আকাশি, কমলা ও লাল

শুভ সংখ্যা: ৫

পাথর: পান্না, ফিরোজা, জেড ও বেরিল

শুভ ধাতু : রুপা ও প্লাটিনাম।

শুভ দিন : বুধবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী : কুম্ভ, তুলা, সিংহ।

মিথুন রাশির জাতক 

মিথুন পুরুষ বা নারীকে বেশির ভাগ সময় রক্ষণশীল হিসেবে দেখা যায়। মিথুনেরা সাধারণত অন্যদের তুলনায় আকর্ষণীয়ভাবে চিকন, লম্বা, প্রাণশক্তিপূর্ণ হয়; যদি না তাদের উপর গ্রহ-নক্ষত্রের নেতিবাচক প্রভাব থাকে। লেখালেখির সঙ্গে মিথুনের একটা অদ্ভুত যোগাযোগ রয়েছে। এই রাশি নিজেই লেখালেখির ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই প্রায় সব মিথুনই যেকোনো একটা বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্য করে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আরও কিছু শব্দ সহজেই জুড়ে দিতে পারে। প্রচুর সংখ্যক মিথুন আছেন; যারা বিজ্ঞাপনচিত্র, ভাষণ, প্রামাণ্য চিত্র, নাটক, বই ইত্যাদি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু বইগুলো হবে উপন্যাস, পাঠ্যবই, বাস্তবভিত্তিক কাহিনি কিংবা জীবনবৃত্তান্ত। মিথুনেরা সন্দেহবাতিক একটু বেশি, যা অনেক সময় ভারি ঝামেলার সৃষ্টি করে। তারা ভাবগম্ভীর এবং অনেক সময় তীব্র বদমেজাজি হয়। তারা অনেকটা খেয়ালি মনোভাবের। মিথুনদেরকে কোনো মানসিক ক্ষিপ্রতার চ্যালেঞ্জ করাটা সম্পূর্ণ বৃথা, কেননা তারা কথা দিয়ে নিজেদেরকে খুব ভালোই প্রমাণ করতে পারে, আর খুব সহজেই তা করতে পারে। তারা নিজের পায়ে দাঁড়ানো অবস্থায় কিংবা অন্য যেকোনো অবস্থায়ই খুব তীক্ষভাবে বিদ্রূপাত্মক হতে পারে, আর তারা চালাকিতে প্রায় সবাইকেই ছাড়িয়ে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে। কিছু কিছু মিথুন জাতক-জাতিকা অন্য যারা ধীর-স্থিরভাবে চিন্তা করে অভ্যস্ত তাদেরকে নিজেদের ক্ষীপ্র মানসিক ক্ষমতার দ্বারা বোকা বানিয়ে কিংবা চিন্তামগ্ন করে তুলে একধরনের দুষ্টু প্রকৃতির আনন্দ উপভোগ করে থাকে। মিথুনদের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো দ্বৈততা। তারা দুটো কাজ একসঙ্গে খুব সহজেই করতে পারে। প্রত্যেক মিথুনের মধ্যেই নিজেদের ভেতরের আসল লক্ষ্য আর উদ্দেশ্যকে চেপে রাখার একটা দৃঢ় সংকল্প থাকে।

 

কর্কট (২২ জুন – ২২ জুলাই)

শুভ রং: হালকা সবুজ, ক্রিম, কমলা ও সাদা

শুভ সংখ্যা: ২

পাথর: সর্ব প্রথম পাথর রক্ত প্রবাল, এর সাথে পান্না, মুন্না ও মুনস্টোন।

শুভ ধাতু : রুপা ও প্লাটিনাম

শুভ দিন : সোমবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী : মীন, বৃশ্চিক, বৃষ।

কর্কট রাশির জাতক 

জীবনকে পুরোপুরি উপভোগের সবগুলো পথ বুঝি কর্কটই সবচেয়ে ভালো জানে। অন্য কোনো রাশিই কর্কটের মতো এতটা কৌতুকপ্রিয় নয়। আর তার শান্ত, সুবোধ বহিরাবরণ ভেদ করে মজার মানুষটা যদি একবার দুঃসাহসিকভাবে জেগে ওঠে তাহলে তো কথাই নেই। চন্দ্রের রসিকতাবোধ সব সময়ই গভীর। এটা কখনই সস্তা কিংবা অতিরঞ্জিত নয়, কেননা মানুষের আচরণ সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করে তবেই এই রসিকতা তারা করে। কর্কটের হাসি পাগল করা। আর এ হাসি অদম্যভাবে সংক্রামক। কর্কট যখন পার্টির কেন্দ্র হওয়ার ভাবাবেগে থাকে, তখন তাকে চিনে নেওয়া যায় সহজে। কর্কটের বিষণ্নতা খুবই গভীর। কর্কট তার স্বাভাবিক ভয়-ভীতিগুলো তার দুষ্টুমিভরা পাগলামি আর কৌতুক দিয়ে আচ্ছাদিত করে রাখে। কিন্তু তারপরও সেই ভয়গুলো দিনে কি রাতে তার মনের মধ্যে অনর্থক কোনো আশঙ্কা কিংবা নামহীন বিপদের শঙ্কা হয়ে ছায়ার মধ্যে জেগে থাকে। কর্কটরাই পারে কল্পনার মাধুরী মিশিয়ে সবচেয়ে সুন্দর কোনো স্বপ্ন নিয়ে তারাদের রাজ্যে ঘুরে বেড়াতে। জীবন তাদেরকে যা কিছু শিখিয়েছে কিংবা ইতিহাস মানবজাতিকে যা কিছু শিখিয়েছে, তার কোনোটাই তারা ক্ষণিকের জন্য বিস্মৃত হয় না। একজন কর্কট তার অতীতকে পোষণ করে, আর তারা সাধারণত খুবই গভীরভাবে দেশপ্রেমিক। কর্কটেরা প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতো মানসিকতার গভীর থেকে গভীর পর্যন্ত শুধু অদ্ভুত সুন্দর সবকিছু খুঁজে চলে। প্রত্যেক কর্কটেরই অভিব্যক্তি প্রকাশের ক্ষেত্রে একটা বিস্ময়কর ক্ষমতা রয়েছে। আর কল্পনার উপর কর্কটদের নিয়ন্ত্রণ এতই মাধুর্যময় আর তাদের ভাবাবেগও এতই তীব্র যে, তারা আপনাকেও কল্পনার জগতটা দেখিয়ে দিতে পারবে। তাদের কল্পনাজুড়ে থাকে সুখ-দুঃখ, ভয়, সহানুভূতি, আনন্দ আর যন্ত্রণা। তার দ্রুত স্মৃতিচারণক্ষম মস্তিষ্ক এসব অনুভূতিগুলো সহজেই খুঁজে নেয়।

 

সিংহ (২৩ জুলাই – ২৩ আগস্ট)

শুভ রং: লাল, সোনালি, হলুদ চকোলেট

শুভ সংখ্যা: ১

পাথর: রুবি, পোখরাজ, প্রবাল

শুভ ধাতু : সোনা ও পিতল

শুভ দিন : রবিবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী : ধনু, মেষ, মিথুন।

 

সিংহ রাশির জাতক 

সিংহ অতিমাত্রায় বিশ্বাসপ্রবণ। তারা শত্রুর কথা যেমন বিশ্বাস করে, হুঙ্কার দিয়ে ওঠে, তেমনি মিত্রের কথায় বিশ্বাস করে ঝাপিয়ে পড়ে। কোনোরকম যাচাই-বাছাই করে দেখে না। একের পর এক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে থাকে এবং অসহনীয় এক পরস্থিতি তারা নিজেরাই সৃষ্টি করে। বিচারক হিসেবে এরা ভালো নয়, কারণ গায়ের জোর ও আবেগের বশে অনেক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে, যা উত্তম বিচারকের বৈশিষ্ট্য নয়। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো, যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করার ক্ষেত্রে তারা বেশ পারদর্শী এবং কারও জীবনের খুঁটিনাটি সমস্যাগুলোও তারা বিচক্ষণতার সঙ্গে মোলায়েম করে তুলতে সক্ষম। তবে খুবই খারাপ হলো যে, তারা তাদের নিজের জীবনের সমস্যাগুলোকে একই রকম দক্ষতা কিংবা আরামের সঙ্গে সমাধান করতে পারে না। তারপরও এই গুণটিই তাদেরকে এত প্রত্যক্ষভাবে ভালোবাসার মানুষে পরিণত করে; তার নির্ভেজাল শ্রেষ্ঠত্ব আর চমকপ্রদ ক্ষমতাগুলো আবার যেন দুঃসাহসীভাবে একরকম শোচনীয় ও দুর্বল আত্মঅহংকারের সঙ্গে মিশে যায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এই গর্বিত, মর্যাদাশালী বিড়ালটিই ভঙ্গুর? বস্তুত তাই। সে গভীরভাবে আহত হয় যদি কেউ তার জ্ঞান ও মহত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করে। সিংহকে বশ করার জন্য আর কিছু নয়, শুধু একটু প্রশংসা করতে হবে। সিংহ যখন নিজের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য নিবেদিত, তখন তাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য একজনকে বেশ সাহসী হতে হয়। কিছু কিছু সিংহ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অনেক নম্র হয়ে ওঠে, কিন্তু তারা তাদের গর্বিত মস্তক কখনোই নত করে না। এই রাশির রাজকীয়তার পূর্ণ বিকাশ দেখা যায় যখন তারা আতিথেয়তায় নিয়োজিত হয়। তারা এমন একটা অনুভূতি দেবে যেন আপনি রাজকীয় প্রাসাদে আমন্ত্রিত হয়েছেন।

 

কন্যা (২৪ আগস্ট – ২৩ সেপ্টেম্বর)

শুভ রং: ধূসর, নেভি ব্লু

শুভ সংখ্যা: ৫

পাথর: পান্না, মুক্তা ও ওপাল

শুভ ধাতু : রুপা, প্লাটিনাম

শুভ দিন : বুধবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী : মকর, বৃষ

 

কন্যা রাশির জাতক 

কন্যার জাতক-জাতিকারা সামাজিক মেলামেশায় তেমন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। কন্যা হলো সতীত্বের প্রতীক, কিন্তু আক্ষরিকভাবে এটা বুঝে নেওয়া ঠিক হবে না। বিবাহিতই হোক কিংবা ব্যাচেলর, কন্যা জাতককে অনেকের মধ্যে শনাক্ত করে নেওয়াটা নেহাতই সহজ। তার একটা কারণ হলো কন্যা জাতকেরা নিশ্চুপ থাকতে পছন্দ করে। অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলার মানুষও সে নয়, বরং সে একাকী এক কোণায় স্থান নিয়েই স্বস্তিবোধ করে। কন্যারা বিড়াল, পাখি, ছোট ও অসহায় জীবজন্তু ভালোবাসে। তারা সত্যকেও ভালোবাসে, ভালোবাসে সময়ানুবর্তিতা, মিতব্যয়িতা, বিচক্ষণতা, ও স্বতন্ত্র পছন্দবোধ। তারা ঘৃণা করে লোক দেখানো আবেগ, ধুলা, অশ্লীলতা, অলসতা ও শুয়ে বসে কাটানো। তারা স্বভাবে খুবই বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন, তাদের মধ্যে চরম মাত্রায় বৈষম্য লক্ষ করা যায়। তারাই সত্যিকার স্বাতন্ত্র্যবাদী, তাদের আগ্রহ-উপলব্ধি তাদের আকাঙ্ক্ষাকে বাজে এবং বেদনাদায়ক ভাবনার সঙ্গে যুক্ত করে না। কন্যার গুণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দোষও আছে অনেক। তিলকে তাল বানানো এদের সবচেয়ে বড় দোষ। কন্যা জাতককে দেখে আপনার মনে তার সম্পর্কে যে ধারণাটা প্রথমে উদ্ভব হবে, সেটা হলো সে কোনো একটা বিশেষ সমস্যায় আছে এবং সমস্যাটার সমাধানের জন্য চেষ্টা করছে। কিংবা মনে হবে সে গোপনে কোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে। কন্যাদের মনে প্রাকৃতিকভাবেই দুশ্চিন্তা চলে আসে। তবে তাদের চোখে বুদ্ধিমত্তা আর চিন্তা-ভাবনার স্বচ্ছতা ঝলমল করে। তাদের অধিকাংশই অত্যন্ত আকর্ষণীয়, তাদের নাক তীক্ষ, কান, ঠোঁট সুন্দর। নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে সৌন্দর্যের কিংবা আকর্ষণের কোনো অভাব নেই, কিন্তু কিছু কিছু খারাপ মুহূর্তে তাদের আত্মঅহংকারের ছটা এসে লাগতে পারে।

 

তুলা (২৪ সেপ্টেম্বর – ২৩ অক্টোবর)

শুভ রং: সবুজ, ফিরোজা, আকাশি ও সাদা

শুভ সংখ্যা: ৬

পাথর: সর্ব প্রথম পাথর পান্না, এর সাথে ফিরোজা, ওপাল, ক্যাটস আই।

শুভ ধাতু : তামা ও ব্রোঞ্জ

শুভ দিন : শুক্রবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী : কুম্ভ, মিথুন

 

তুলা রাশির জাতক 

তুলা জাতকেরা খুবই বুদ্ধিমান। একই সঙ্গে তারা চরমভাবে সরল। সহজেই এরা অন্যের প্রতারণার শিকার হয়। তারা কথা বলে আপনার কান পাকিয়ে ফেলবে, কিন্তু একই সঙ্গে তারা আপনার খুব ভালো শ্রোতাও হবে। তুলারা অস্থির প্রকৃতির মানুষ। কিন্তু কোনো কাজে কদাচিত্ তারা তাড়াহুড়ো করে। কথাগুলো শুনে বিভ্রান্ত হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু এই রাশির কার্যকলাপ, বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এত হতাশাব্যঞ্জক অসামঞ্জস্য কিংবা ধারাবাহিক স্থিরতার অভাব রয়েছে যে অন্য মানুষ তো বটেই, তারা নিজেরাও একেক সময় নিজেদের আচরণে অবাক হয়ে যায়। এই রাশির জাতকের ব্যক্তিত্বের মধ্যে এ রকম একটা সমন্বয় পাওয়া যায়, কিন্তু সেটা দিনের অর্ধেকটার জন্য। দিনের বাকি অর্ধেকটা সময় সে বিরক্তিকর, ঝগড়াটে, জিদি, অস্থির, হতাশ ও বিভ্রান্ত হয়ে থাকে। এমন কোনো তুলা জাতককেই খুঁজে পাওয়া যাবে না, যার হাসিটা এক টুকরো নরম সাদা মেঘের মতো সুশ্রী নয়। তুলারা মানুষ ভালোবাসে, কিন্তু অনেক মানুষের ভিড় তাদের অপছন্দ। শান্তির পায়রাদের মতোই সুশীলভাবে তারা অন্যদের ঝগড়া-বিবাদে মধ্যস্থতা ও মীমাংসার জন্য এগিয়ে যায়। তারা সুশীল এবং তাদের সঙ্গ আনন্দদায়ক। অনেক মানুষই আপনাকে বলবে যে, তুলা হলো ভালোবাসা, সৌন্দর্য, মিষ্টতা, আলোর রাশি। সেটা ভালো, যতক্ষণ এভাবে চলছে। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছাবার আগেই থেমে যাওয়া তার অভ্যাস। তুলার হাসি শক্ত একটা চকলেটকেও নিমিষে গলিয়ে দিতে পারে। আর যখন এই হাসি আপনার উপর পূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে, তখন একদম বদখত মুখটিকেও আপনার চমত্কার সুন্দর বলে মনে হবে। প্রথমে তারা কথার ঝড় বইয়ে দেবে এবং একাই কথা বলে পুরো আলোচনাটা মুখর করে রাখবে। প্রশংসনীয় আগ্রহের সঙ্গে শ্রোতারাও মনোযোগ দিয়ে শুনবে। বলাবাহুল্য ছন্দপতনেও কোনো কমতি নেই তাদের। তুলা মাঝে মাঝে ছ্যাবলামি করে বসে, যা তার বড় দোষ। তারা অনেক সময় মানসম্মানের ধার ধারে না, বরং উল্টাপাল্টা কথা বলে বসে। সঙ্গে উল্টাপাল্টা কাজও করে। এর ফলে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়।

 

বৃশ্চিক (২৪ অক্টোবর – ২২ নভেম্বর)

শুভ রং: নীল, ঘিয়ে, চকোলেট, সবুজ ও লাল

শুভ সংখ্যা: ৯

পাথর: রক্ত প্রবাল, হলদে পোখরাজ ও ক্ষেত্রবিশেষে পান্না ও হীরে

শুভ ধাতু: লোহা ও ইস্পাত

শুভ দিন: মঙ্গলবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী: কর্কট, মীন।

বৃশ্চিক রাশির জাতক 

বৃশ্চিক মানুষই শারীরিক দিক থেকে শক্ত-সমর্থ। তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষণীয়ভাবে দৃঢ়, তীক্ষ ও পরিষ্কার। তাদের নাক হবে খাড়া, কখনো কখনো টিয়ার ঠোঁটের মতো। সাধারণত তাদের গায়ের রং হয় মলিন, যেন প্রায় স্বচ্ছ এবং তাদের ভ্রূ মোটা। তা নাকের উপরে এসে মিলিত হয়। বৃশ্চিকের উপস্থিতিতে আপনি মৃদু কোলাহল আর তীব্র গতিময় প্রাণশক্তির আভাস পাবেন, আর সেটাই আপনার কাছে তার পরিচয় তুলে ধরবে। সে যতই শান্ত থাকতে চাক না কেন তার এই তীব্র প্রাণোদ্দীপনাকে লুকিয়ে রাখতে পারবে না। ব্যক্তিত্বের উপর বৃশ্চিকের এমন প্রবল নিয়ন্ত্রণ দেখে অনেককেই ঈর্ষাকাতরতায় ভুগতে হয়। যত তীব্রভাবেই তাদের আবেগে নাড়া লাগুক না কেন, বৃশ্চিকদের শীতল এবং ভাবলেশহীন মুখে সে ছাপ কমই দেখা যায়। এই মানুষগুলো স্বেচ্ছায় এবং গৌরবের সঙ্গেই নিজেদের মুখে ভাবলেশহীনতা ফুটিয়ে তোলে। তাদের হাসি খুব দুর্লভ, তবে সেটা নিখাদ। তাদের শরীরও তাদের অভিব্যক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখে। হঠাত্ করে লাফিয়ে ওঠা, হঠাত্ যাত্রা শুরু করা কিংবা ভীত আচরণ করা এসব তাদের মধ্যে দুর্লভ। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে যেমন সে কুণ্ঠিত হয়ে উঠবে না, তেমনি অহংকার করার মতো পরিস্থিতিতে ফুলেও উঠবে না। নিজের প্রতিক্রিয়াকে সে চরমভাবে দমিয়ে রাখে, কেননা বৃশ্চিক অন্যদের স্বভাব এবং উদ্দেশ্যকেই বিরামহীনভাবে খুঁজতে থাকে। একই সঙ্গে নিজেকে অন্যের সম্ভাব্য অনুসন্ধানী চোখের দৃষ্টি থেকে মুক্ত রাখে। এ ব্যাপারে সে অত্যন্ত দক্ষ। বৃশ্চিকদের স্বাস্থ্য তাদের স্বভাবের প্রতিফলন ঘটায়। নিজের স্বাস্থ্য সে কঠোর পরিশ্রম করে কিংবা বিষণ্নতায় ভুগে নষ্ট করে ফেলতে পারে, কিন্তু জটিল কোনো রোগ থেকেও শুধু ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সে সেরে উঠতে সক্ষম। রাশির অবস্থান তাকে কয়েকটি পথের মধ্য থেকে যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়। বৃশ্চিকের স্পর্শ হতে পারে শীতল, কোমল আবার উষ্ণও। স্পর্শকাতর মনোভাব তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। অতি সহজে তারা আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং পাল্টা আক্রমণ করে বসে। ফল হয় মারাত্মক!

 

ধনু (২৩ নভেম্বর – ২১ ডিসেম্বর)

শুভ রং: হলুদ, বেগুনি, ক্রিম

শুভ সংখ্যা: ৩

পাথর: সর্ব প্রথম পাথর পোখরাজ।

শুভ ধাতু : রুপা, প্লাটিনাম।

শুভ দিন : বৃহস্পতিবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী : মেষ, সিংহ, ধনু।

ধনু রাশির জাতক 

ধনুরা সাধারণত অস্থির প্রকৃতির। তারা এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়াতে বা বসতে ঘৃণাবোধ করে। যেকোনো পার্টিতে যান এবং সেখানে সবচেয়ে প্রাণবন্ত দলটিকে লক্ষ্য করুন। হাসিখুশি-আনন্দে আপ্লুত যে মানুষটি ওখানে বসে আছে, সে একজন ধনু এবং সে একটু আগেই এমন একটি কথা বলেছে যে সবাই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কী ঘটেছে তা সম্পর্কে তার বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। যখন সে তার বক্তব্য নিয়ে ঘটিত স্তব্ধতার কারণ অনুধাবন করতে পারবে, তখন অবশ্য তাকে কিছুটা হতভম্ব মনে হবে এবং দলটিতে তার চারপাশের মানুষগুলোকে দেখে মনে হবে যেন তারা এক একটি ধারালো ছুরির ফলা। মুখে একটা প্রফুল্ল হাসি এনে ধনু এমন একটা মন্তব্য করে বসতে পারে যা কেউ কল্পনাও করেননি। সেক্ষেত্রে ধনুর বন্ধুদেরকে বলছি, নিজের মেজাজ ঠাণ্ডা রাখুন। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। কিন্তু ভাববেন না সে আসলেই কাউকে ইচ্ছে করে কষ্ট দিতে চায়। না, মনের ভেতরে তার আপনার জন্য একটা যত্নের জায়গা তৈরি আছে। ধনুর দৃষ্টি চড়ুইয়ের দৃষ্টিশক্তির মতোই প্রখর ও উজ্জ্বল। ধনুদের মধ্যে জটিলতা কিংবা ক্ষুদ্রতার ছিটে ফোঁটা মাত্র নেই। সে নিষ্কলুষভাবে তার কষ্টদায়ক কথাগুলো বলে ফেলে। সে যে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিতেও ছাড়ে না, সেটা আসলে ঘা সারাতে গিয়েও তার অদক্ষতাই তুলে ধরে। অধিকাংশ ধনুই আন্তরিকভাবে চায় যে আপনি প্রাণবন্ত হয়ে উঠুন। অন্তত এটাই তারা করতে চেষ্টা করে। কিন্তু নিজের সদিচ্ছাকে ফলাতে গিয়ে প্রায়ই তারা অঘটন ঘটিয়ে বসে। বহির্মুখীই হোক কিংবা আত্মকেন্দ্রিক, ধনুরা সবসময়ই হূদয়কে উদ্দীপ্ত করতে পছন্দ করে। সেই সব দুর্লভ কিছু ধনু যারা তেমন একটা কথাবার্তা বলে না, তারা হয়তো মনে মনে এমন চমত্কার কোনো পরিকল্পনা করছে যেটা বিশ্বকে চমকে দিতে পারে। তার জিহ্বা যখন স্থির, তখন তার মস্তিষ্ক আরও ব্যস্ত। একজন ধনু যখন সরাসরি তার লক্ষ্যে দৃষ্টি দেয়, তখন সে এতটাই উঁচুতে তীর ছুড়তে পারে, যেখানে মানুষের দৃষ্টিশক্তি পৌঁছতে পারে না। সেখানেই তার স্বপ্নগুলো সব সত্যি হয়ে যায়।

 

মকর (২২ ডিসেম্বর – ২০ জানুয়ারি)

শুভ রং: নীল, চকোলেট, ক্রিম, সবুজ

শুভ সংখ্যা: ৮

পাথর: সর্ব প্রথম পাথর ইন্দ্রনীলা, এর সাথে এমিথিস্ট, রক্ত প্রবাল, গোমেদ।

শুভ ধাতু: লোহা, সীসা।

শুভ দিন: শনিবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী: বৃষ, কন্যা, মীন ও বৃশ্চিক।

 

মকর রাশির জাতক 

মকররা দায়িত্ব এবং কর্তব্যবোধ মেনে চলতে শিখেছে আর হতাশাকেও সহ্য করে থাকতে জানে। কিছু কিছু মকরের মধ্যে নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা লুকিয়ে রাখার ব্যাপারে অসতর্কতা দেখা যেতে পারে। এদেরকে শীর্ষপদে অভিষিক্ত না করা হলে কাজ করার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানায়। তখন সে জেদি মকর হয়ে ওঠে। সে চায় যে, মইয়ের সবচেয়ে উপরের তাকটাতেই সে দাঁড়াবে! কেননা সেখানে দাঁড়ানোর যোগ্যতা কেবল তারই আছে। শনি-শাসিত মকরের মাঝে একটা বিষণ্নতা লক্ষ করা যায়। এদের মাঝে একটা ক্ষীণ আভাস আর গাম্ভীর্যের সমন্বয় লক্ষ করা যায়। তাদের কেউই শনির প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। এ কারণে তাদের মধ্যে খুবই নিয়মানুবর্তিতা এবং আত্ম-অস্বীকৃতির প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তারা অবিরত অপমান, চাপ ও হতাশার বোঝা হজম করে চলে। মকররা তাদের খাড়া এবং সুন্দর আকৃতির নাকটাকে অন্যের ব্যাপারে গলায় না। সাধারণত তারা নিজেদের ব্যাপারেই নিমগ্ন থাকতে বেশি পছন্দ করে। তারা হয়তো যেচে পড়ে আপনাকে পরামর্শ দিতে যাবে না, কিন্তু আপনি যদি স্বেচ্ছায় তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের ভিত্তিতে কোনো পরামর্শ শুনতে চান তাহলে তারা তাদের পরামর্শ দিতে মোটেও দ্বিধা করবে না। মকরের সবচেয়ে বড় গুণ তারা আন্দাজে কোনো কাজ করে না বা করতে চায় না। সুনির্দিষ্ট ফল চায়, কোনো কাজে নামার আগে সুচিন্তিতভাবে সে কাজের পরিণাম যাচাই করে তবেই নামে। যেসব জায়গায় নিজের যোগ্যতাবলে উপরে ওঠার সুযোগ আছে এদের টার্গেট সেসব জায়গায় প্রবেশ করা। বস হিসেবে এরা দারুণ সফল। মকর জাতক ও জাতিকাদের অধিকাংশেরই ত্বক হয় খুব সংবেদনশীল। স্নায়ুবিক চাপের দরুণ সৃষ্ট ফুটি ফুটি, অ্যালার্জি, চামড়া ওঠা এবং ত্বকের রুক্ষতা, ঘামের অস্বাভাবিকতা, অ্যাকনি এবং বড় লোমকূপের সমস্যায় তাদের ভুগতে হতে পারে। শরীরের সঙ্গে মানানসই নয় এমন খাবার গ্রহণে এবং মানসিক চাপের ফলে তাদের পরিপাকে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তারা গভীর চিন্তাশীল মানুষ। কাজের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো তারা আগেভাগেই বুঝে ফেলতে পারে। শিক্ষা ও জ্ঞানের প্রতি মকরের আকর্ষণ দুর্নিবার।

 

কুম্ভ (২১ জানুয়ারি – ১৮ ফেব্রুয়ারি)

শুভ রং: নীল, সবুজ ও বেগুনী

শুভ সংখ্যা: ৪

পাথর: সর্ব প্রথম পাথর ইন্দ্র নিলা, এর সাথে পান্না ও হীরা।

শুভ ধাতু: সোনা, রুপা, হোয়াইট গোল্ড।

শুভ দিন: শুক্র ও শনিবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী: মিথুন, তুলা।

কুম্ভ রাশির জাতক 

এই রাশির জাতক ও জাতিকারা স্বভাবতই বুদ্ধিমান, ঠাণ্ডা মাথার মানুষ এবং কাজকর্মে ভীষণ রকম স্বচ্ছ। এদের কল্পনাশক্তি প্রখর। যেকোনো ভালো কাজ এদের অনুপ্রেরণা জোগায় এবং সেই জাতীয় কাজে অংশগ্রহণের জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠে। বৃহত্ কিছু করার ইচ্ছা তাদের থাকে সবসময়। কুম্ভদের সঙ্গে পরিকল্পনা করা খুব কঠিন। কারণ তারা কোনো কিছু এত সুদূরে চিন্তা করে পরিকল্পনা করে যে তার উপরে আস্থা আনা কঠিন হয়। তাই অনেক বন্ধু থাকার পরেও কুম্ভ তার বন্ধুদের সঙ্গে মিলে কোনোকিছু করতে পরে না। কুম্ভরা মিথ্যাচার ও প্রতারণা ঘৃণা করে এবং তারা ধার দেওয়া ও নেওয়া অপছন্দ করে। তারা আপনাকে টাকা উপহার হিসেবে দিতে পারে, কিন্তু তাদের কাছে টাকা ধার চেয়ে লাভ হবে না। আপনার সঙ্গে কথা না বলেই সে বুঝতে পারবে আপনার মধ্যে কোনো একটা কিছুর গভীর প্রয়োজন রয়েছে, যেটা হয়তো আপনার নিজের কাছেও অস্পষ্ট। ইউরেনাস শাসিতদের অজানা ব্যাপার বুঝে নেওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে। তারা তাদের অনুমান দিয়েই এসব বুঝে নিতে পারে। আর অনুমানশক্তি তাদের মধ্যে একধরনের পূর্ব-উপলব্ধির জন্ম দেয়। কোনোকিছু ঠিকমতো জানার পর সেটাতে বিশ্বাস বা আস্থা আনা সহজ, কিন্তু কুম্ভদের লক্ষ্য যদিও ভবিষ্যতের কোনো অস্থির নীলাকাশের দিকে, তবুও তারা বাস্তববাদী। যদি ভালো বন্ধু খুঁজে থাকেন, তাহলে রাশি মিলিয়ে একজন কুম্ভর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। একটু আলসে হলেও বন্ধুর প্রয়োজনে এই মানুষটি তার সব সুখ-আহ্লাদ ভুলে যেতে প্রস্তুত। কুম্ভ জাতকদের মনোযোগী হয়ে ওঠার ক্ষমতা সত্যিই অসাধারণ। কুম্ভ জাতক বা জাতিকাদের বন্ধুদের প্রতি বাত্সল্য ছাড়া তেমন ঘনিষ্ঠ কিছু নেই বললেই চলে। গুণের সমাবেশ না দেখে তারা বরং বন্ধুদের সংখ্যার দিকেই বেশি মনোযোগী। একটা নির্দিষ্ট সময়ের বেশি কোনো সম্পর্কেই তাদের স্থায়িত্ব থাকে না।

 

মীন (১৯ ফেব্রুয়ারি – ২০ মার্চ)

শুভ রং: সাদা, নীল, সবুজ

শুভ সংখ্যা: ৭

পাথর: সর্ব প্রথম পাথর হলুদ পোখরাজ, এর সাথে রক্ত প্রবাল, মুনস্টোন।

শুভ ধাতু: রুপা।

শুভ দিন: বৃহস্পতি ও সোমবার।

শুভ সঙ্গী/সঙ্গিনী: কর্কট, বৃশ্চিক।

মীন রাশির জাতক 

মীনের স্বভাবে অন্যান্য রাশিগুলোর বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ থাকে, আর সেটা বহন করা একজন মীন জাতকের পক্ষে যথেষ্ট কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। যত বেশি শৈল্পিক ও সৃষ্টিশীল পরিবেশ হবে, যত বেশি অবসর এবং দুর্বোধ্য পরিবেশ হবে তত বেশি এমন স্থানে মীনকে খুঁজে পাওয়া যাবে। বিয়ের সূত্রে কিংবা উত্তরাধিকার সূত্রে না পেলে মীনদের মধ্যে কাড়ি কাড়ি টাকাওয়ালা মানুষ তেমন একটা নেই। তাই বলে টাকার বিরুদ্ধে তাদের কোনো ক্ষোভ নেই। আর দশটা রাশির মানুষরা যাকে পুরোনো কয়েন হিসেবে বিবেচনা করেন, মীন সেগুলো আনন্দ সহকারে গ্রহণ করে নিজের কাছে স্বযত্নে সাজিয়ে রাখবে। নেপচুনসুলভ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যেকোনো হূদয় সাধারণত লোভহীন হয়। মীনও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে তাদের মধ্যে তীব্রতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এরা ভবিষ্যতের ব্যাপারে পুরোপুরি পরোয়াহীন হয়। আশপাশের সবাই যখন মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে ফ্ল্যাটের দাম কমলো কী বাড়লো সেই চিন্তাতে অধীর, মীন হয়তো তখন ভাবছেন নিজের পছন্দের কোনো পারফিউম একটা এক্সট্রা কিনে রাখার কথা। বর্তমানকে ঠাণ্ডা মাথায় মেনে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। মীনের কল্পনাশক্তি ও বুদ্ধিমত্তা যেখানে প্রয়োগের সুযোগ আছে সেখানে মীন দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারে। এদের শৈল্পিক প্রতিভা অসাধারণ। যুক্তি প্রয়োগে কোনো জিনিস অনুধাবনের চেয়ে সামান্য মনোযোগেই তারা অনেক জটিল সমস্যার গভীরে প্রবেশ করতে পারে। তারা বিশ্বস্ত, গৃহবিমুখী, দয়ালু ও সংযমী। নতুন নতুন আইডিয়া তাদের মাথা থেকে বের হয়। আন্তরিক আচরণ ও অলসতাপূর্ণ ভালোমানুষীর কারণে তারা সবাই খুব দ্রুত সবার প্রিয় মানুষটি হয়ে ওঠেন। নিজেদের স্বপ্ন এবং জীবনযাপনের ব্যাপারে নিজস্ব স্টাইলের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ছাড়া অন্য সব বাধার ব্যাপারেই তারা খুবই নির্লিপ্ত। অপমান, অপবাদ, ঝগড়া-বিবাদ এসব ব্যাপারেও তারা একেবারেই ভাবলেশহীন। মীন হলো অন্য রাশিগুলোর বৈশিষ্ট্য নিয়ে গঠিত একটি জটিল রাশি।

 

শেষ কথা 

একটা কোথায়  চাই যে এই রাশি ফল বা ভাগ্য নিয়ে অনেকেই অনেক দুশ্চিন্তায় থাকেন।  কিন্তু এখনকার সমাজে এই রাশিফল নিয়ে অনেক ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে অলিতে গলিতে। সাবধান হন আগে থেকেই। আমাদের ভাগ্য কেউ  বদলাতে পারে না।  তবে সঠিক জ্যোতিষ শাস্রে বা জ্যোতিষী রা কিছু রাস্তা বলে দেয়  অনেক সুবিধে হয়। বাজে কোনো খোপ[পরে  দেবেন না।  ভালো লাগলে শেয়ার করুন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।