আমাদের প্রত্যেকের ভেতরেই একজন রবীন্দ্রনাথ আছেন, যিনি আমাদের নিজস্ব এক্কেবারে নিজের। যার সাথে আমরা আমাদের একা সময়, দোকা সময়, কষ্টে-দুঃখে-আনন্দে-বিরহে আমাদের হাতটি চেপে ধরে থাকেন। আমরা রবীন্দ্রনাথকে নিশ্বাস্বের মত প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে জীবন দিয়ে টেনে নি আমাদের একদম অন্তরে। রবীন্দ্রনাথ শুধুমাত্র আমাদের চিরদিনের সাথীই নন, তিনি অন্তহীন। আমাদের জীবনের এমন কোনো অবস্থা, এমন কোনো অনুভূতি নেই যা তাঁর লেখায় আমরা পাইনা, কবিগুরুর একটি অসামান্য বিরাটত্ব যা আমরা তাঁর লেখায় খুঁজে পাই আমাদের জীবনের চলার পথের প্রত্যেকটি কোন, প্রত্যেকটি মোর এ আমাদের হাসি মুখে পার করান।এমনই এক অস্তিত্ব যার বিশালত্ব আমাদের বাধ্য করে তাকে প্রায় প্রায় ভগবানের আসনে বসাতে। প্রায় প্রথম থেকেই তার মত লেখা তাঁর মত মনন ও তাঁর মত বিবৃতি কেউ পারেনি দিতে। রবীন্দ্রনাথ তার লেখা, গান, নাটক সমস্ত দিয়ে আমাদের প্রত্যহ জীবনের মধ্যে আছেন, এমন ভাবেই মিশে গেছেন যে কোনখান থেকে রবীন্দ্রনাথ আর কোথা থেকে জীবন তা লাদা করে বলে দেওয়া যাবেনা। জীবনের চালচিত্রে আমাদের আঁকা স্বপ্নগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ দেখায়, পথ টাকে ভালোবাসতে শেখায়। এমনই কিছু কথা উদ্ধৃতি বা আদর্শ আমরা তাঁর লেখা থেকে পাই যা আমাদের জীবন বোধের উত্তরণ ঘটায়।
Rabindranath Tagore Quotes in Bengali – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি
আমাদের জীবনের প্রেক্ষাপটে রোজ আমরা পাই জীবনের রূপরেখা, এবং তাকেই তুলির টানে রাঙিয়ে চলায় আমাদের জীবনের স্বার্থকতা। এবং এই তুলির রঙের রসদই আমরা পাই কবিগুরুর লেখা থেকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান এই সব আমাদের ভাবায়, জীবন টাকে নতুন রঙে-রূপে চিনতে শেখায়। এমনি কিছু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি আমরা এখানে দিলাম যা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর রচনা থেকে নেওয়া।
1. আমার আমি
“আমার এই আমির মধ্যে যদি ব্যর্থতা থাকে তবে অন্য কোনো আমিত্ব লাভ করিয়া তাহা হইতে নিষ্কৃতি পাইব না।”
2. গুণবিচার
“নিজের গুণহীনতার বিষয়ে অনভিজ্ঞ এমন নির্গুণ শতকরা নিরেনব্বই জন, কিন্তু নিজের গুণ একেবারে জানে না এমন গুণী কোথায়?”
3. সু- কু মানুষের দুই দিক।
” মানুষের মধ্যে দ্বিজত্ব আছে; মানুষ একবার জন্মায় গর্ভের মধ্যে, আবার জন্মায় মুক্ত পৃথিবীতে। মানুষের এক জন্ম আপনাকে নিয়ে, আর-এক জন্ম সকলকে নিয়ে।”
4. সময় কারুর জন্য
“ সময়ের সমুদ্রে আছি,কিন্তু একমুহূর্ত সময় নেই ”
5. বিনয়ী মানুষ।
“বিনয় একটা অভাবাত্মক গুণ। আমার যে অহংকারের বিষয় আছে এইটে না মনে থাকাই বিনয়, আমাকে যে বিনয় প্রকাশ করিতে হইবে এইটে মনে থাকার নাম বিনয় নহে।”
6. আগুন নিয়ে খেলা।
“ আগুনকে যে ভয় পায়, সে আগুনকে ব্যবহার করতে পারে না ”
7. সংসার ধর্ম।
“সত্যকার আদর্শ লোক সংসারে পাওয়া দুঃসাধ্য। ভালবাসার একটি মহান্ গুণ এই যে, সে প্রত্যেককে নিদেন এক জনের নিকটেও আদর্শ করিয়া তুলে।”
8. মান আর হুঁশ দুই একত্রে মানুষ।
“ মনুষ্যত্বের শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা আর সমস্তই তার অধীন ”
9. লেখক ও সংসারী
“ সংসারের কোন কাজেই যে হতভাগ্যের বুদ্ধি খেলে না, সে নিশ্চয়ই ভাল বই লিখিবে ”
10. চাওয়া পাওয়ার মাঝে।
“পৃথিবীতে সকলের চেয়ে বড়ো জিনিস আমরা যাহা কিছু পাই তাহা বিনামূল্যেই পাইয়া থাকি , তাহার জন্য দরদস্তুর করিতে হয় না । মূল্য চুকাইতে হয় না বলিয়াই জিনিসটা যে কত বড়ো তাহা আমরা সম্পূর্ণ বুঝিতেই পারি না ।”
শেষ কথা
রবীন্দ্র নাথ আমাদের শয়নে-স্বপনে-জাগরনে সমস্তটাই ছেয়ে আছে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের জীবনের পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুভূতি বিবৃত করে গেছেন তাঁর লেখার মধ্যে দিয়ে। আমাদের জীবন শুধু না আমাদের বাংলা সাহিত্যের গেছেন স্বর্ণ খচিত। তিনি একাধারে একজন অগ্রণী বাঙালি, কবি, লেখক, নাট্যকার, সুরকার, চিত্রকর, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, ও দার্শনিক। তাঁর লেখায় আমরা আমাদের রোজকার জীবনে আবার নতুন উদ্যমে চলার, ভালোবাসার, বেঁচে ওঠার অনুপ্রেরণা পাই। আর সেরকমই কিছু উদ্ধৃতি আজকে আমরা এখানে দিলাম, যা আপনাদের রোজকার জীবনের কিছু ধোঁয়াশা জায়গা একটু পরিষ্কার হয়ে ওঠে।