কলকাতা মানেই বাঙালী, আর বাঙালী মানেই অসাধারণ কিছু খাওয়ার। আমিষ থেকে নিরামিশ সমস্ত এলাকাতেই আমাদের অনায়াশ আনাগোনা। শাক চচ্চড়ি হোক বা কচি পাঁঠার ঝোল কিম্বা তেঁতুলের অম্বল সমস্ত রকম স্বাদই পাওয়া যায় বঙ্গ দেশের খানায়। সমস্ত দেশের সমস্ত প্রান্তে একাধিক বাঙালী খাওয়ারের দোকান বা রেস্তোরা তো আছেই আর তাতে ভিড়ও হয় বেশ, সমস্ত ভারতই এক কথায় স্বীকার করে বাঙালী রান্নার সু-স্বাদের কথা। কিন্তু কথায় আছে, “যস্মিন দেশে যদাচার”, তাই বাঙালী রান্নার যদি স্বাদ নিতেই হয় তবে তার সেরা ঠিকানা হল কলকাতা, এখানে আপনি পাবেন সমস্ত বাঙালী রান্নার সেরা স্বাদ। তাই আপনি যদি থাকেন এরমই কিছু অসাধারণ বাঙালী রান্নার খোঁজে তবে আপনার জন্যেই এই লেখা; এখানে দেওয়া হল কলকাতার সেরা দশটি খ্যাতনামা বাঙালী রেস্তোরাঁর (10 Best Authentic Bengali Restaurants in Kolkata) খোঁজ।
10 Best Authentic Bengali Restaurants in Kolkata – কলকাতার বাঙালী রেস্তোরাঁ
কলকাতার বুকে এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে ভালো খাওয়ার পাওয়া যায়, কিন্তু ভালো বাঙালী খাওয়ার পেতে গেলে যেতে হবে কিছু বিশেষ রেস্তোরাঁয়। সেরমই কিছু রেস্তোরাঁর খোঁজ দেওয়া হল এখানে। ট্রাই করে দেখতে পারেন এই সেরা কতগুলি রেস্তরাঁ যেখানে গেলে আপনি পাবেন খাঁটি স্বাদের বাঙালী খাওয়ার।
1. Saptapadi [সপ্তপদী, হিন্দুস্থান পার্ক]
বাঙালীদের কাছে ইলিশ মাছ আর উত্তম কুমার এই দুইয়ের কোন জুরি নেই, বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী অভিনেতা উত্তম কুমার ভারত বর্ষে অন্যতম বিখ্যাত ও জনপ্রিয় একজণ অভিনেতা, আর সুচিত্রা সেন ও। এই দুয়ে মিলে বাঙালী জাতীর সেরা প্রাপ্তি তাদের জীবনে হল ‘সপ্তপদী’; এই নামের মাহাত্ম জানেনা এমন বাঙালী মেলা ভার। আর এই নামের সাথেই জড়িয়ে আছে বাঙালীর , বিষেশত কলকাতার বাঙালীর এক অনন্য স্বদের গল্প। হিন্দুস্থান পার্কের বুকে অবস্থিত রেস্তোরাঁ, নাম ‘সপ্তপদী’ এক অসাধারণ মানের বাঙালী রেস্তোরাঁ। এখানে এলে পাওয়া যাবে বাঙালী স্বাদের সেরা জিনিস গুলি, কাঁচা কুমড়োর ইলিশ মাছ, মাংসের পাতুরি, ডাব চিংড়ীর মত অসাধারণ সমস্ত বাঙালী রান্না পাওয়া যায়। তবে এখানকার সব থেকে বড় আকর্ষণ হল, এখানে বিভিন্ন পুরনো বাঙালী রান্না নিয়ে বিভিন্ন রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা ও করা হয়, যা এখানকার জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে তোলে।
- কী খাবেন- মাংসের পাতুরি, ডাব চিংড়ী, কষা মাংস, মিষ্টি দই, কিম্বা যে কোন থালি।
- এক্স ফ্যাক্টর- এখানকার সাজ, নামের সাথে মিল রেখে এখানে খুব সুন্দর ভাবে সপ্তপদী সিনেমাটির ছবি ও নানান ছোটো ছোটো পিস দিয়ে সাজানো এই রেস্তোরাঁ আপনাকে নিয়ে যাবে বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের মধ্যে, এ এক দারুণ অভিজ্ঞতা। এছাড়া এখানকার সার্ভিস দারুণ, ও এখানকার কর্মচারীদের ব্যবহার ও বেশ রুচীপূর্ণ।
- জনমত- “চারিদিকে উত্তম-সুচিত্রা তার সাথে অসাধারণ স্বাদের খাওয়ার সব মিলিয়ে বাঙালীয়ানার সেরা জায়গা।”
- সময়- দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০ঃ৪৫।
- খরচ- ২ জনের জন্য খরচ প্রায় ৯০০ টাকা।
- শাখা- যাদবপুর।
2. Padma Parer Rannaghor [পদ্মা পাড়ের রান্না ঘর, গড়িয়া হাট]
গড়িয়াহাটের হকারের ভীড় পেরিয়ে খুঁজে পাবেন পদ্মা পাড়ের রান্না ঘর, যেখানে কলকাতার এদেশিয় বাঙালী রান্না তো পাওয়া যায়ই তার সাথে বাংলা দেশের নানান স্বুস্বাদু খাওয়ার এখানকার বিশেষত্ব। পদ্মা পাড়ের রান্নাঘরের পরিবেশ ও সার্ভিস অত্যন্ত ভালো, এখানকার কর্মচারীদের খাঁটি বাঙালী স্টাইলের পাঞ্জাবী-পাজামা এখানকার সৌন্দর্য আরও বাড়ীয়ে তোলে। এখানকার খাওয়ারের স্বাদের সাথে সাথে দাম ও অত্যন্ত কম ও সাধ্যের মধ্যে। আপনি যদি থাকেন গড়িয়া হাটে, তবে কেনাকাটার মাঝে এখানে উদরপূর্তির জন্য আসতেই পারেন।
- কী খাবেন- পদ্মা সর্ষে, কষা মাংস, ফালুদা, ভেটকী পাতুরি, চিকেন দোসা।
- এক্স ফ্যাক্টর- এখানকার ভীষণ কম দাম, আর এখানকার খাঁটি বাঙালী ও বাংলাদেশী খাওয়ার যার মধ্যে তালের বড়া, নারকোলের চাটনি, ও মাণ কচু বাটা এবং বেগুণের ভরতা।
- জনমত- গড়িয়াহাটের বুকে খাওয়ার জায়গা গুলির মধ্যে সবথেকে ভালো বাঙালী খাওয়ারের ঠিকানা হল এই পদ্মা পাড়ের রান্নাঘর।
- সময়- দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা।
- খরচ- ২ জনের জন্য প্রায় ৫০০ টাকা।
- শাখা- নেই।